অপ্রত্যাশিত!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
শাওনের সাথে আমার পরিচয় ক্লাস সিক্স থেকে। আমি যমুনা শাখায় এবং শাওন ছিল মেঘনা শাখায়। তবে একদিন টিফিন টাইমে স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলার সময় শাওনের সাথে আমার পরিচয় হয়। তখন মোটামুটি চেনা-জানা ছিল। কিন্তু এই পরিচয় টা আরও বৃদ্ধি পায় ক্লাস নাইন থেকে। আমরা দুইজনই একই বিভাগে ভর্তি হয়। নাইন এবং টেন এ পড়া সময়ে শাওনের সাথে আমার আরও মিল হয় আরও সক্ষতা বাড়ে। তবে আমি যখন কলেজে ভর্তি হয় তারপর জানতে পারি শাওন ও আমার কলেজেই ভর্তি হয়েছে। এবং আমাদের ডিপার্টমেন্ট এক গ্রুপও এক। এবং আমাদের বাড়ি একই শহরে। সেজন্য কলেজে গিয়ে আমাদের মিলটা একটু বেশিই হয়। শাওনের বাবা সরকারি চাকরি করে। ওর বাবা বিদ্যুৎ বিভাগে আছে। শাওন তার বাবার একমাএ ছেলে। ছেলের কোন আবদারই বাবা অপূর্ণ রাখত না।
আমার মনে আছে আমার যখন শুধু একটা বাটন ফোন শাওন তখন ভালো একটা স্মার্টফোন ব্যবহার করত। যাইহোক পরবর্তীতে আমাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়। একসঙ্গে কলেজে যাওয়া আসা সহ অনেক মূহূর্ত দুজন ভাগ করে নিয়েছি। শাওন ছেলেটা অনেক ভালো । বেশ শান্ত ভদ্র কথাবার্তা কম বলে তবে বেশ মিশুক। তারপর করোনা আসলে আমাদের যোগাযোগ কিছুটা কমে যায়। একেবারেই কমে যায় বললেই চলে। কিন্তু করোনার পর কলেজ শুরু হলে আবার আমাদের কথাবার্তা শুরু হয় নিয়মিত। তো এটা বছর খানেক আগের কথা। তখনও আমি সেরকম কিছু জানতাম না। প্রায়ই শাওন আমাকে রাতে অথবা সন্ধ্যায় ফোন দিয়ে বলত ইমন আমাকে কিছু টাকা ধার দিবি। আমি ঠিক সময়ে দিয়ে দিব। ও এমনভাবে অনুরোধ করত আমি কিছু বলতে পারতাম না।
আমার কাছে যে অনেক টাকা থাকত সেটা না। কিন্তু ওর ডিমান্ড থাকত ৩০০,৫০০ এইরকম। আমার কাছে থাকলে আমি দিয়ে দিতাম। এইরকম বেশ কয়েক বার দিয়েছি। আবার অনেক বার আমার কাছে না থাকায় আমি বলেছি না রে আমার কাছে নেই হবে না। এভাবে অনেক দিন কেটে যায়। কিন্তু কিছুদিন আগে আমি এমন একটা কথা জানতে পারি যেটা শোনার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। গালিবের সাথে দেখা হয় আমার। গালিব শাওন আমরা একসঙ্গেই পড়তাম। তবে গালিবের সঙ্গে শাওনের মিল মেলামেশা বেশি। তখন কথায় কথায় হঠাৎ গালিব আমাকে বলে ফেলে শাওন ড্রাগ আসক্ত। কথাটা আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। পরবর্তীতে গালিবের থেকে ভালো করে শুনে জানতে পারি ও অনেক দিন ধরেই ড্রাগ নিচ্ছে। ব্যাপার টা আমি মোটেও মেনে নিতে পারিনি।
শাওন ছেলেটা বেশ হ্যান্ডসাম। তবে ইদানিং দেখি ওর স্বাস্থ্যের অনেক অবনতি হয়েছে। তখন আমি পুরো ব্যাপার টা ধরতে পারি। শাওন ওর পারিবারিক কিছু ঝামেলার কারণে নাকী ড্রাগ নেওয়া শুরু করে। কিন্তু যতদূর জানি ওর বাবা সবসময় ওকে সকল সুযোগ সুবিধা অনেক সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত দিয়েছে। ব্যাপার টা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছিল ঐদিন। ছেলেটাকে আমি প্রায় দশ বছর ধরে চিনি। আর আজ তার এই অবস্থা । ওর সঙ্গে আমি একদিন খোলাখুলি কথা বলার চেষ্টাও করেছি। কিন্তু বিষয়টি শাওন পুরোপুরি এড়িয়ে যায় এবং বলে তুই ভুল শুনেছিস। আমাকে তোর এইরকম মনে হয়। শাওনের ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হতে পারি আমি অনুমান করতে পারছি। কিন্তু ব্যাপার টা খুবই খারাপ লাগছে আমার কাছে। ওকে যদি এখনই সঠিক পথে না ফেরানো যায় তাহলে পুরোপুরি ওর ক্যারিয়ার টা নষ্ট হয়ে যাবে। যেটা ওর বাবা মায়ের সাথে সাথে আমরা বন্ধুরাও মেনে নিতে পারব না।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে একটা ভালো ছেলে যার সাথে আপনার প্রায় দশ বছর ধরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিলো তাঁর সম্পর্কে হঠাৎ করে এরকম কথা জানতে পারাটা অপ্রত্যাশিতই হওয়ার কথা। যাইহোক চেষ্টা করবেন যতটুকু সম্ভব আপনার তরফ থেকে ওনাকে একটু বোঝানোর। ধন্যবাদ