বাড়ি ফেরা।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
নিজের শহর নিজের বাড়ির প্রতি সবসময়ই আলাদা একটা টান থাকে। সেটা ঢাকা ঘুরতে গিয়ে বেশ ভালোই বুঝেছিলাম। শেষদিন রবিবার এসে বাড়ির জন্য মনটা একটু বেশিই খারাপ ছিল। এই প্রথমবার আমি চারদিন বাড়ির বাইরে। রবিবার রাত এগারোটার সময় ছিল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছিল আমাদের ট্রেন। টিকিট অনলাইন থেকে দুইদিন আগেই কেটে নিয়েছিলাম। যাইহোক রবিবার বিকেলে আমার অন্য বন্ধুরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে গেলেও আমি যায়নি। ওদের সঙ্গে কথা বলি যে রাত দশটায় স্টেশনে দেখা হবে। এবং তারপর আমি আমার চাচাতো ভাইদের বাসায় চলে যায়। ভাইয়াদের বাসা থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনটা বেশ কাছেই ছিল। সন্ধ্যার সময় ভাইয়াদের বাসায় গিয়ে আমি সর্বপ্রথম গোসল করে নেয়। সকালে বের হয়ে সারাদিন ঘুরেছি সেজন্য বেশ অস্বস্তি লাগছিল। এরপর আমি আমার নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নেয়। রাত তখন সাড়ে আট টা। যথারীতি আমি খেতে বসি। আমি চলে আসব সেজন্য সেদিন আমার জন্য বেশ ভালো খাবারের আয়োজন ছিল। ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, মাংস সবকিছুই ছিল।
খাওয়া শেষ করে আমি তৈরি হয়ে নেয়। এরপর আমি বাসা থেকে বের হয় সাড়ে নয়টার দিকে। আমার চাচাতো ভাই আমাকে একটা রিক্সায় উঠিয়ে দেয়। স্টেশনে যাওয়ার সময় রিক্সাওয়ালা মামার সঙ্গে আমার বেশ অনেক কথা হয়। যাইহোক এরপর উনি আমাকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে নামিয়ে দেয় তখন মাএ দশটা বাজে ট্রেন আসতে এখনো একঘন্টা দেরী। যাইহোক আমি স্টেশনের মধ্যে যায় গিয়ে দেখি আমাদের ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেস কোন প্লাটফর্মে আসবে সেটা এখনো দেয় নাই এবং ট্রেন লেট। ততক্ষণ আমি আমার অন্য বন্ধুদের খুঁজে বের করি। যাইহোক এরপর সবাই বসে ছিলাম। কমলাপুর স্টেশনটাও একটু ঘুরে দেখলাম। তারপর ট্রেন আসলে আমরা গিয়ে আমাদের সিটে বসে পড়ি আমাদের সিট ছিল ঝ বগিতে। এবং আমি জানালার পাশের সিটেই বসি। ঠিক ১২ টার সময় আমাদের ট্রেন ছাড়ে কমলাপুর স্টেশন থেকে। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন টা খুব বেশি স্টেশনে দাঁড়ায় না এজন্য এই ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম আমরা।
প্রথমবার রাতে এইরকম ট্রেনভ্রমণ বেশ ভালো লাগছিল। আর সঙ্গে যদি বন্ধুরা থাকে তাহলে তো ইয়ার্কি ফাজলামি হবেই হা হা। এরপর আমরা চলে যায় ট্রেনের ক্যান্টিনে। বলতে গেলে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না চা বাদে। সেজন্য আমরা রং চা খাই। চা টা মোটামুটি ছিল। চা খাওয়ার পরে আমরা সিটে এসে বসি। এরপর রাত দুইটার দিকে ট্রেন বঙ্গবন্ধু সেতু স্টেশনে দাঁড়ায়। মূলত ওখানে ট্রেন মিনিট ২০ এর মতো বিরতি দেয়। যথারীতি আমরা নেমে আমাদের জন্য কিছু খাবার কিনে নিয়ে এলাম। তারপর আবার ট্রেন ছাড়ল। অনেক শুনেছি যমুনা সেতুতে ট্রেন খুবই আস্তে যায়। এবং ট্রেন ও সাধারন যানবাহনের লাইন পাশাপাশি। যমুনা সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা ট্রেনের গেটে চলে যায়। সত্যি বেশ দারুণ লাগছিল দৃশ্যটা। এবং ট্রেন এতোটাই আস্তে যাচ্ছিল যে মনে হচ্ছিল নেমে আবার পরের বগিতে উঠতে পারব। যমুনা সেতু পার করে সবাই আবার সিটে এসে বসলাম। এবার কিছুক্ষণ ঘুমাতে হবে।
অনেক চেষ্টা করে মোটামুটি ঘন্টাখানেক ঘুমিয়েছিলাম। যাইহোক এরপর যখন ঘুম ভাঙল তখন দেখি ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে এবং বেশ শীত লাগছে। জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস আসছে। এরপর ট্রেন ঈশ্বরদী স্টেশনে থামলো। তারপর যেন ক্রমেই আমরা আমাদের গন্তব্য স্টেশনের দিকে পৌছাতে লাগলাম। যাইহোক বেশ কিছুক্ষণ পর হার্ডিঞ্জ ব্রীজ অতিক্রম করলাম। মোটামুটি সকাল ৬ টার সময় আমরা পোড়াদহ স্টেশনে নামি। তখন আমাদের চোখে ঘুম জড়িয়ে রয়েছে। পোড়াদহ স্টেশনে বেশিক্ষণ দাঁড়ায়নি। তারপর আমরা একটা গাড়ি ঠিক করে চলে আসি চৌড়হাস এবং চৌড়হাস থেকে কুমারখালী। সকাল সাড়ে সাত টার দিকে আমি বাড়িতে আসি। সবমিলিয়ে প্রথমবার এমন ভ্রমণ বেশ উপভোগ করেছিলাম আমরা।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | মে,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন, নিজের শহর নিজের বাড়ির প্রতি আলাদা একটা টান থাকে। আপনি এই প্রথম চার দিন বাহিরে ছিলেন এবং বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছিলেন দেখে বুঝতে পারছি। খাওয়া দাওয়ার আয়োজন তো দেখছি অনেক বেশি ভালো ছিল। আপনি চলে আসবেন সেজন্য বেশ ভালো ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, মাংস সবকিছুই ছিল তাহলে। সকাল ৭:৩০ টার দিকে আপনি বাড়িতে এসে পৌঁছেছিলেন। আপনার এত সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের মাঝে ভাগ করে নিলেন দেখে ভালো লাগলো।
যে যেখানেই থাকুক নিজের বাড়ির প্রতি টান থাকবেই। আপনিও ঢাকা থেকে নিজের বাড়ির প্রতি টান আছে বলেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আপনার ভ্রমণের খুব সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। বর্ণনা পড়ে আমারই এখন ট্রেন ভ্রমণ করতে ইচ্ছে করছে। সুস্থ্য দেহে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন জেনে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।