বই রিভিউ ( চাঁদের পাহাড় - বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায়)।

in আমার বাংলা ব্লগlast month


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ রবিবার, ২৮ ই জুলাই, ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000559012.jpg


বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য



-----------
বইয়েয নামচাঁদের পাহাড়
লেখকবিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায়
প্রকাশনীসূর্যোদ্বয় প্রকাশন
দাম২৩০ টাকা


কাহিনী সংক্ষেপ


1000558929.jpg

1000558930.jpg

1000558926.jpg


ভারতবর্ষের বাংলা মায়ের ছেলে শংকর। ছোটবেলা থেকেই বেশ বুদ্ধিমান। এফ এ পাশ করে বাড়িতেই বসে ছিল। পরবর্তীতে কলকাতায় পাঠিয়ে লেখাপড়া করাবে সেই ক্ষমতা তার বাবার নেই। বাধ‍্য হয়ে পাটকলে চাকরি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তার স্বপ্ন অনেক বড়। ভাগ‍্যের পরিহাসে তার পাটকলের বাবু হওয়া হয় না। সে এসে পড়ে সূদুর আফ্রিকায়। প্রথম অবস্থায় সে ইউগান্ডা রেলওয়ে নির্মানের কাজ করছিল। কিন্তু সেখানে শুরু হয় সিংহের উৎপাত। সিংহের উৎপাতে একে একে অনেক মানুষ মারা যায়। শংকর দের কাজও শেষ হয়। এরপর শংকরের চাকরি হয় একটা রেলওয়ে স্টেশনে স্টেশন মাস্টার হিসেবে। সেখানে কোন জনমানব নেই। দিনে মাএ একটা ট্রেন। সেটা চলে গেলেই সারাদিন শংকর একা। সেখানে থাকতে শুরু করে শংকর।

কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সে বুঝতে পারে জায়গাটা মোটেই ভালো না। একদিন রাতে সিংহের উৎপাত। তারপর একদিন সরাসরি ঘুমন্ত শংকরকে প্রায় মৃত্যুলোক দর্শন করিয়ে দেয় আফ্রিকার বিখ‍্যাত ব্ল‍্যাক মাম্বা। সে যাএায় শংকর বেঁচে যায়। একদিন শংকর কাছেই একজন অসুস্থ বৃদ্ধ কে দেখতে পাই। তাকে নিয়ে এসে সুস্থ্য করে তোলে। লোকটার নাম দিয়েগো আলভারেজ। তার বয়স ৬০ বছর। সে একজন পর্তুগিজ। জীবনের অনেক টা সময় সে আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গাই হীরের সন্ধান করে বেড়িয়েছে। কিন্তু সে হীরের দেখা পাইনি। ঘটনাচক্রে একদিন সাহসি শংকর স্টেশন মাস্টারের পাট চুকিয়ে আলভারেজের সাথে হীরের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে।


1000558933.jpg

1000558931.jpg

1000558927.jpg

1000558926.jpg


তারপর দিন যায় সপ্তাহ যায় মাস যায় কিন্তু তাদের খোঁজা শেষ হয় না। এরই মধ্যে এক আদিবাসী গ্রাম থেকে তারা জানতে পারে হীরের সম্পর্কে এবং বুনিপ নামক একটা প্রাণীর কথা। যে কীনা পাহাড়া দেয় ঐ হীরা। যাইহোক এরপর প্রায় রাতেই শংকরদের তাবুর বাইরে কোন কিছুর আওয়াজ পাওয়া যেত। কিন্তু রাত হওয়াই সর্বদা আলভারেজ তাকে বের হতে নিষেধ করত। এভাবে অনেক দিন কেটে যায়। পাহাড় জঙ্গল পাড়ি দিয়ে তারা যেতে থাকে। একপর্যায়ে আলভারেজ বুঝতে পারে তার কাছে যে ম‍্যাপ রয়েছে সেটা বিশ্বাসযোগ্য না। তারপরও তারা এগিয়ে যায়। কিন্তু আফসোস একদিন রাতে সেই বুনিপের হামলায় আহত হয় আলভারেজ এবং পরবর্তীতে সে মারাও যায়। তারপর শংকর একা।

সে না পারবে ঐ ম‍্যাপ বুঝতে না পারবে নক্ষত্র দেখে দিক নির্ণয় করতে। ভাগ‍্যের উপর ভরসা করে সে চলতে থাকে। একদিন একটা গুহার মধ্যে প্রবেশ করে আটকে যায় শংকর। গুহা টা ছিল একটা গোলকধাধা। গুহার মধ্যে একাধিক পথ বার বার যেন শংকর একই জায়গাই ফিরে আসছিল। এরপর সে গুহার মধ্যেই একটা নদীর দেখা পাই। কিন্তু সেই নদীর অনেক গুলো শাখা। নদীর পথে চলার জন্য সে কিছু নুড়ি সংগ্রহ করে যেন নিশানা দিতে পারে। একপর্যায়ে সে ঐ গুহা থেকে বের হয়ে যায়। সামনে কালাহারি মরুভূমি। একবার তার মধ্যে ঢুকে গেলে আর রক্ষে নেই। না আছে পানি না আছে কোন দিক নিশানা। একদিন একটা গুহার মধ্যে আশ্রয় নেয় শংকর। সেখানে সে একজন ইতালীয় যুবকের কংকাল দেখতে পাই এবং একটা চিঠি পাই। যুবকের নাম আওিলিও গাওি। এরপরই ঘটে যায় এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। আপনাদের কী মনে হয় শংকর কী শেষ পযর্ন্ত হীরের সন্ধ‍্যান পাবে?? এবং এই ভয়ংকর জনমানবহীন পানিশূণ‍্য আফ্রিকা থেকে শংকর বেঁচে ফিরতে পারবে। সেটা জানতে হলে বইটা সংগ্রহ করে আপনাদের পড়তে হবে।



ব‍্যক্তিগত মতামত



বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায় এর জনপ্রিয় উপ‍ন‍্যাস চাঁদের পাহাড়। যেখানে বাংলার সন্তান শংকর আফ্রিকায় হীরের সন্ধান করতে থাকে। একটা অসাধারণ অ‍্যাডভেঞ্চার পাশাপাশি আফ্রিকা যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে এবং কতটা সুন্দর সেটার অসাধারণ একটা বর্ণনা তিনি দিয়েছেন এই উপন‍্যাসে। উনার লেখা বরাবরই আমার ভালো লাগে। শংকর যখন আফ্রিকা যায় তখন তার বয়স এই ২২-২৩ অর্থাৎ আমার বয়সেরসের। উপন‍্যাসের প্রতিটা পর্যায়ে একটা রোমাঞ্চ একটা উওেজনা কাজ করছিল। সবমিলিয়ে এককথায় অসাধারণ বলতেই হয়।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

আপনি চাঁদের পাহাড় বইটির চমৎকার রিভিউ শেয়ার করেছেন। বইটি আমার পড়া হয়নি।তবে কলকাতাতে এই চাঁদের পাহাড় বইটিকে ভিত্তি করে দেব অভিনীত এই মুভিটি করেছিল।কিছু অংশ দেখা হয়েছিল আমার।বইটির রিভিউ পড়ে বুঝলাম খুব অ্যাডভেঞ্চার আর ভয়াবহতা ও সৌন্দর্য তুলে ধরা হয়েছে।আশাকরি সময় পেলে পড়ব।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54478.01
ETH 2290.54
USDT 1.00
SBD 2.35