মানুষের জীবন!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
পৃথিবীর সবচাইতে আনন্দের মূহূর্ত মনে হয় বাড়ি ফিরে যাওয়া। যারা নিজের কাজের জন্য বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকেন তারা এই অনূভুতি টা বুঝবেন। ঠিক একইভাবে পৃথিবীর সবচাইতে কষ্টের মূহূর্ত হচ্ছে ছুটি শেষে বাড়ি ছেড়ে আবার চলে আসা। সত্যি বলতে এই অনূভুতি টা খুবই বাজে। যা আমি গতকাল অনূভব করেছি। আমি সেদিন বাড়ি যাচ্ছিলাম ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য। ঐদিন আমার মনে হচ্ছিল শুধু যে এই কিছুদিন তারপর তো আবার ফিরে যেতে হবে। আবার গতকাল মনে হচ্ছিল আবার কবে বাড়িতে ফিরব আবার কবে সেই চিরচেনা পরিবেশে থাকব তার কোন ঠিক নেই। প্রথমে আমার আসার কথা ছিল শুক্রবার। সেরকম ভাবেই দশদিন আগে ট্রেনের টিকিট কেটে রাখি।
কিন্তু পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয় না শনিবার ভোরে যাব। এবং গিয়ে সরাসরি অফিসে যাব। যদিও একটু দেরি হবে কিন্তু কোন ব্যাপার না মানিয়ে নেব। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমি আমার ট্রেনের টিকিট টা বিক্রি করে দেয়। শুক্রবার রাতে মোটেই ঘুম হয়নি। কাল সকালে চলে যেতে হবে এইজন্য মনটা কিছুতেই ভালো ছিল না। মোটামুটি ভোর রাত পযর্ন্ত জেগে। আমার বাস ছিল ভোর সাড়ে পাঁচটায়। সাড়ে চারটায় উঠে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। আমার ব্যাগপএ আগে থেকেই গোছানো ছিল। কিন্তু ঐ মূহূর্তে হঠাৎ শুরু হলো বৃষ্টি। এই বছর এইরকম বৃষ্টি আমি আর দেখিনি। একেবারে মূষলধারে প্রচণ্ড জোরে বৃষ্টি।
একদিকে যেমন বৃষ্টি পড়ছে। অন্যদিকে আমি ছাতা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। যদিও আমার মা আমাকে এগিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। ততক্ষণে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে চারিদিক অন্ধকার হয়ে গিয়েছে মূহূর্তের মধ্যে। তখন হঠাৎ মনে পড়ে গেল হিমাদ্রী কিশোর দাশগুপ্তের চন্দ্রভাগার চাঁদ উপন্যাসের এর শিবেই সান্তারার কথা। শিবেই ঐদিন চিরকালের জন্য তার রাজ্য, ঘর সব ছাড়বেন। তার লক্ষ্য ঐ স্থান ঐ বটগাছের পাদমূল। যেখানে শিবেই এর আরাধ্য রাজকুমার সিদ্ধার্থ অর্থাৎ গৌতম বুদ্ধ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু ভোর থেকেই প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টি। ঠিক আজকের মতো। কিন্তু শেষবারের মতো সমুদ্র স্নানের সুযোগ ছাড়তে চাননি শিবেই।
আজকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় শিবেই এর ঐ মূহূর্তের অনূভুতি টা খুব ভালোভাবে অনূভব করতে পারছিলাম। তবে শিবেই সেদিন সেই বটগাছের পাদমূলে আর যেতে পারেননি দেবদওের একটা কথার জন্য। দেব'দওের সেই কথাটা "সবকিছু ছেড়ে আপনি যে তথাগত এর স্মরণে যাচ্ছেন। এতোগুলো মানুষের প্রাণ চলে গেলে সেই তথাগত আপনার প্রার্থনা গ্রহণ করবেন তো??"" চন্দ্রভাগা তটের সূর্যমন্দির নির্মাণকারী ১২০০ শ্রমিককে বাঁচানোর জন্য শিবেই সেদিন ছোট্ট কিশোর ধর্মপদ কে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন। এরপর তার ছোট্ট নিথর দেহটা নিয়ে চলে যায় সমুদ্রের বুকে কোন না জানা ঠিকানায়।
সময় এক অদ্ভুত জাদুকর। মৃত্যু বা শোক বলতে এখনও কিছু চিনতে শেখেনি সে। কালের যাএাপথে কত সম্ভাবনাময় প্রাণ হারিয়ে যায় । তার খবর কে বা রাখে।
আমাদের জীবনের কিছু কিছু মূহুর্ত কিছু কিছু সময় অনূভুতি একেবারে গল্প উপন্যাসের সাথে কিন্তু পুরোপুরি মিলে যায়। ব্যাপার টা অদ্ভুত বললে হয়তো ভুলই হবে। কারণ মানুষের জীবনই তো একটা উপন্যাস।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া সব চেয়ে আনন্দের বিষয় হলো বাড়ি ফিরা। সত্যি বলতে সেখানে আমাদের শৈশব কেটেছে সেখান জানা সেখান থেকে দূরে থাকলেও সেখানে যেতে পারলে মনের ভিতরে প্রশান্ত নেমে আসে। আর জীবন জীবনের মতই চলমান। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর লিখেছেন।
মানুষের জীবনটা এমনই হঠাৎ আসবেন হঠাৎ যাবেন এই অবস্থা। আমরা যেমন দুই দিনের জন্য বাড়িতে বেড়াতে আসি আবার গন্তব্যস্থলে ফিরে যাই। ঠিক তেমনি একদিন আমাদেরকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই হচ্ছে ক্ষণস্থায়ী জীবন যা আমরা একটুও চিন্তা করি না। ঠিক বলছেন বাড়ি ফেরা খুবই ভালো লাগে। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে যখন আবার চলে যেতে হয় খুবই খারাপ লাগে। আপনি সেই অনুভূতি শেয়ার করলেন অনেক খারাপ লাগলো।
মানুষের জীবনটা এরকমই ভাই, আজকে এখানে তো আগামীকাল অন্যখানে। আমি শুনেছি আপনি নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে চাকরি নিয়েছেন। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে যেতে খুবই কষ্ট লাগে। তারপরও আমাদের যেতে হয়। কারণ এটাই আমাদের জীবন। ধন্যবাদ।