"হৃদায়াম " মুভির সুন্দর একটা দিক।।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শনিবার, ৭ ই অক্টোবর, ২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


Screenshot_20231007_135334.jpg


ইদানিং তেমন মুভি দেখি না। সময় খুব কম পাই। আর সবচাইতে বড় কথা খুব একটা ইচ্ছা করে না মুভি দেখতে। তবে যখন সময় হয় ওয়েব সিরিজ দেখি। এখন ওয়েব সিরিজ এর সময়ই চলছে। যাইহোক গত রবিবার রাতের কথা। আমি আমার চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে টেক্সট করছিলাম। আমার চাচাতো ভাই রোহান আমার থেকে প্রায় পাঁচ বছরের বড়। তবে আমাদের সম্পর্ক বন্ধুর মতো। একপর্যায়ে আমার চাচাতো ভাই আমাকে বলে "Hridayam" মুভিটা দেখিস সময় পাইলে। পরে আমাকে ধন্যবাদ দিবি। তখনই বুঝেছিলাম রোহান ভাইয়া যখন মুভিটার কথা বলেছে এটার মধ্যে বিশেষত্ব কিছু আছে। পরের দিন বসে যায় মুভি টা দেখতে। সত্যি বলতে অসাধারণ একটা মুভি ছিল এটা। মুভিটা আমার জীবন সম্পর্কে বেশ কিছু ধারণা পাল্টে দিয়েছে। আমি মুভিটার রিভিউ করব না। তবে মুভির আসল থিম টা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।


Screenshot_20231007_135444.jpg

Screenshot_20231007_135440.jpg

Screenshot_20231007_135358.jpg

Screenshot_20231007_135349.jpg


২০০৬ সাল। অরুন একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়। সেখানে গিয়েই দর্শনা নামের একটা মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। কিন্তু তখন তার তরুন বয়স। সুতরাং ভুল করতে সময় লাগেনি। ঘটনাচক্রে খুব দ্রুতই দুজনের ব্রেকাপ হয়ে যায়। কিন্তু বরুন দর্শনাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়না। শেষমেশ ওরা দুজন একেবারেই আলাদা হয়ে যায়। পরবর্তীতে বরুন একেবারে ডিপ্রেশনে চলে যায়। নিজের দাঁড়ি বড় হয়ে যায় সবমিলিয়ে এলোমেলো একটা জীবন অতিবাহিত করতে থাকে। ফলাফল প্রতি সেমিষ্টারে তার একটা দুইটা সাবজেক্টে রেফার্ট থাকে। এর কিছুদিন পরেই গিয়ে বরুন এর তার এক ক্লাসমেটের সঙ্গে পরিচয় হয়।ছেলেটার নাম সেলভা। সেলভা অসাধারণ ছাএ ছিল। সেলভা একটা স্টাডি গ্রুপ চালাত যেখানে অনেক শিক্ষার্থী একসঙ্গে লেখাপড়া করতো এবং ভালো ফলাফল করতো। নিজের পূর্বের সবকিছু ভুল গিয়ে বরুন সেলভার সঙ্গে স্টাডি শুরু করে। এবং তার পরের পরীক্ষায় অসাধারণ ফলাফল করে।


Screenshot_20231007_135532.jpg

Screenshot_20231007_135515.jpg

Screenshot_20231007_135507.jpg

Screenshot_20231007_135459.jpg


কিন্তু তার পরেই সেলভা বাস এক্সিডেন্টে মারা যায়। যেটা বরুন সহ সেলভার কোনো বন্ধুই মেনে নিতে পারেনি। কিন্তু সেলভার স্টাডি গ্রুপ থেমে থাকেনি। সেই টা চলতে থাকে। সেখান থেকে আবার কথা এবং যোগাযোগ শুরু হয় বরুন ও দর্শনার। এরই মধ্যে দিয়ে তাদের কলেজ জীবন শেষ হয়ে যায়। সবাই অনেক ভালো ভালো কোম্পানি তে জব পেয়ে যায়। যাওয়ার আগে বরুনকে জড়িয়ে ধরে দর্শনা বলে আমি যদি ঐদিন তোমাকে ফিরিয়ে না দিতাম তাহলে আজ আমরা একসঙ্গে থাকতাম। তারপর ট্রেনে করে বরুন তার গন্তব্যে চলে যায়। এরপর বেশ কিছু বছর পরের কথা। বরুন দর্শনার বোনের বিয়েতে যায়। সেখানে গিয়ে বরুন দর্শনার থেকে একটা আইডিয়া পাই যে সে যে চাকরি করছে এটাই যে তার করতে হবে ব‍্যাপার টা সেটা না। সে যেটা ভালো পারে সে সেটাই করতে পারে। ঘটনাচক্রে তার ফটোগ্রাফি ভালো লাগত। এবং একজন ফটোগ্রাফারের সঙ্গে পরিচয় হয়ে যায় যে কীনা বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফি করত। বরুন তার সঙ্গে সেই ফটোগ্রাফি শুরু করে।


Screenshot_20231007_135830.jpg

Screenshot_20231007_135824.jpg

Screenshot_20231007_135810.jpg

Screenshot_20231007_135620.jpg

Screenshot_20231007_135603.jpg


এইরকমই একটা বিয়ে বাড়িতে ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে বরুন এর পরিচয় হয় মিত্তিয়া নামের একটা মেয়ের সঙ্গে। দর্শনার পর একমাএ মিত্তিয়া কে দেখেই তার অন‍্যরকম একটা অনূভুতি হয়। ফলাফল তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এবং একপর্যায়ে দুজন বিয়ে করে নেয়। বরুন এবং মিত্তিয়া এর বিয়েতে দর্শনা এসেছিল। কিন্তু সে বরুনকে অন‍্যের হতে দেখতে না পেরে চলে যায়। কয়েক বছর পর বরুনের একটা মেয়ে হয়। এবং বরুন মেয়েটার নাম রাখে তার ঐ বন্ধু সেলভার নামে। পরবর্তীতে বরুন রিয়েলাইজ করে তার বউ এবং বাচ্চাকে দেখে যে আমরা কেন বেঁচে থাকি। এবং একসময় দর্শনার বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। সেখানে দর্শনা বরুনের সঙ্গে আলাদা দেখা করে। ঐ সময় বরুন দর্শনা কে অসাধারণ একটা কথা বলে।

বরুন দর্শনা কে বলে আমার সঙ্গে এখন এমন কিছু ঘটেছে যেটার জন্য জীবন আমার কাছে সুন্দর। কিন্তু একটা সময় আমি বা আমরা ভাবতাম এগুলো যদি এইরকম হতো আমাদের ইচ্ছা মতো হতো তাহলে কত ভালো হতো কিন্তু এটা ভুল। আসলে আমাদের সঙ্গে সেটাই হবে যেটা আমাদের জন্য ভালো। কথাটা দর্শনা খুবই পজেটিভ ভাবে নেয়। এবং দর্শনা অন্য একজনকে বিয়ে করে নেয়। মুভির শেষ মূহুর্তে দেখা যায় বরুন আবার তার কলেজে গিয়েছে। সেখানে গিয়ে সেই সময়ের স্মৃতিগুলো তার সামনে ভেসে উঠে। এখানেই শেষ হয় মুভিটা।



ব‍্যক্তিগত মতামত



আপনি যদি আপনার জীবন নিয়ে আফসোস করে থাকেন তাহলে এই মুভিটা দেখতে পারেন। না আপনার সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে না। তবে আপনি জীবন সম্পর্কে দারুণ একটা ধারণা পাবেন। জীবন সম্পর্কে আপনার ধারণা পাল্টে যাবে। আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করতে ইচ্ছা করবে। সবমিলিয়ে অসাধারণ ছিল মুভিটা। প্রচলিত ধারার বাইরের একটা মুভি।





সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_20230518_131529.JPG

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

আমিও ইদানিং আপনার মতই খুব একটা মুভি দেখি না ভাই। আর দেখতেও ইচ্ছে করে না ।তবে আপনি আপনার চাচাতো ভাইয়ের থেকে শুনে অনেক সুন্দর একটি মুভি দেখেছেন আর তার গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আসলেই যখন যেটা হয় পরবর্তীতে গিয়ে বোঝা যায় ভালোর জন্যই হয়েছে, যদি ওই খারাপটা না ঘটতো তাহলে হয়তো আমরা ভালো জায়গা টাই পৌঁছাতে পারতাম না। ঠিক যেমন বরুণ দর্শনাকে শেষে এসে বলল।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59934.86
ETH 2666.82
USDT 1.00
SBD 2.45