আমাদের একটা ডিসেম্বর ছিল!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ডিসেম্বর মাস চলছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় একটা বছর। এজন্যই ডিসেম্বর মাস টা একটু স্পেশাল। তবে আমাদের বাংলাদেশের ছেলে মেয়েদের কাছে ডিসেম্বর মাস টা অনেক স্পেশাল। কেন স্পেশাল সেটা নিয়েই আমি আজকে কথা বলব। কলকাতা ওএসটি নামক একটা মিউজিক ব্রান্ডের ডিসেম্বরের শহরে শিরোনামে একটা গান আছে। গানটা দুই বাংলায় অনেক জনপ্রিয় এবং আমার অনেক পছন্দের। গানের শেষে একটা কথা আছে সব শীতের শেষে হয়তো বসন্ত আসে না। কিন্তু আমাদের জীবনে তো শীতের শেষে বসন্তই আসে তাই না। তবে এখানে প্রকৃতির বসন্ত না কথা বলা হয়েছে মনের বসন্ত নিয়ে। বতর্মান সময়ের ছেলে মেয়েদের কাছে এবং আমাদের কাছে ডিসেম্বরের মানে কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ডিসেম্বর মানেই আমাদের মনে যেমন একটা ভয় কাজ করত। পাশাপাশি একটা আনন্দও কাজ করত কিন্তু। আমাদের দেশে সাধারণত আমরা যখন বড় হয়েছি এই সময়ে ক্লাস ওয়ান থেকে নাইন পযর্ন্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই শেষ হয়ে যেত। পরীক্ষা নিয়ে সবার মাঝেই একটা ভয় কাজ করতো আমাদের মাঝে। কিন্তু পরীক্ষা শেষ আর পড়তে বসা লাগবে না সেটা ভেবেই বেশি আনন্দ হতো। ব্যাস দাঁতে দাঁত কামড়ে কিছুদিন পরীক্ষা দিতাম। পরীক্ষা টা একবার শেষ হলেই পেয়ে যেতাম লম্বা একটা ছুটি। মানে রেজাল্ট দেওয়ার আগ পযর্ন্ত একেবারে নিশ্চিন্ত। ছুটির ঐ সময় টা সকালে ঘুম থেকে দেরিতে উঠতাম। তবে তখন আমাদের দেরি করে ঘুম থেকে উঠা মানে ঐ সর্বোচ্চ ৯ টা ছিল। এখনকার মতো এগারো টাই কখনোই উঠিনি। সকালে বিকেলে খেলতাম ক্রিকেট। আমার মনে আছে আমাদের এলাকার মধ্যে আমরা বন্ধুরা দুইটা দলে ভাগ হয়ে টুর্নামেন্ট খেলতাম। সারাদিন পড়ে থাকতাম ক্রিকেট নিয়ে।
এরপর সন্ধ্যা টা গড়িয়ে রাত এলেই আমরা ব্যাডমিন্টন খেলতাম। ততদিনে আমাদের এলাকায় বড়দের ব্যাডমিন্টন গ্রাউন্ডে প্রবেশের অনুমতি পেয়ে গেছিলাম। রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার মধ্যে আলাদা একটা মজা ছিল। যদিও এখন এটা আগের মতো বিশেষ কোন আনন্দ দেয় না। শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার মধ্যে অসাধারণ একটা আনন্দ রয়েছে। তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই সকালের ঘুম ত্যাগ করতে হবে। আগে আমাদের এলাকায় প্রচুর খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হলেও এখন আর হয় না। কারণ ঐ লোকগুলো আর এটা করাই খুব একটা আগ্রহী না এখন। অনেক সময় তো আমরা রস চুরি করেও খেয়েছি হা হা। এটার মধ্যে অন্য একটা মজা ছিল। রস চুরি করে খাওয়ার অনূভুতি টা ছিল অন্যরকম যেমনটা ভয় কাজ করত ঠিক একইভাবে আনন্দও হতো। একটা অ্যাডভেঞ্চার মনে হতো কিন্তু।
শীতের তীব্র সকালে খড়কুটো জড়ো করে আগুন ধরিয়ে সেই আগুনের পাশে বসে থাকা এবং বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করা। এটার মধ্যে অসাধারণ একটা আনন্দ ছিল। এখন আর এগুলো কিছুই নেই। এখনকার ছেলেমেয়েদের কাছে ডিসেম্বর টা এইরকম না। এখন ডিসেম্বরে সেইরকম শীত অনূভুত হয় না। স্কুলের ছেলেমেয়েদের তো এখন পরীক্ষাও দেওয়া লাগে না। একটা অ্যাসাইনমেন্ট লিখলেই শেষ। আর এগুলোর পরে ওরা যে সময় পাই সেটাও স্যোসাল মিডিয়া, গেমস, এবং অনলাইনেই হারিয়ে ফেলে। ওরা আমাদের মতো ডিসেম্বর টা আর উপভোগ করে না। সেজন্য হয়তো ডিসেম্বর নিজেও তার সেই চেনা রুপ হারাতে বসেছে। এগুলো এখন একেবারে বাস্তব। সেজন্যই আমার আজকের এই পোস্ট টা লেখা। এভাবেই হয়তো ক্রমেই বিলীন হয়ে যাবে ডিসেম্বর। আমরা আর আমাদের সেই ডিসেম্বর ফিরে পাব না।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.