বোকা সঙ্গী!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
অনেক জ্ঞানী গুণী বলে গিয়েছেন বোকা সঙ্গীর চেয়ে চালাক শএু ভালো। একটা সময় এই কথাটা নিয়ে আমার মনে সংশয় কাজ করত। কিন্তু আমার জীবনে ঘটে একটা ঘটনার পর আমার সেই সংশয় কেটে যায়। তখন আমি বুঝতে পারি হ্যা জ্ঞানীরা কোন কথা শুধু বলার জন্য বলেন নাই। তার পেছনে যথেষ্ট কারণ আছে। ঘটনাটা আজ থেকে বছর পাঁচ আগের। অর্থাৎ ২০১৯ সালের কথা। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে ছুটি কাটাচ্ছি। তখনই ফলাফল দেয়নি। এবং তখন আমার কোন স্মার্টফোন ছিল না। সারাদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা পুকুরে সাঁতার দিয়ে গোসল করা বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়া। এবং সন্ধ্যার পর সবাই বসে আবার আড্ডা দেওয়া এভাবেই চলছিল সবকিছু। ঘটনা টা এপ্রিল মাসে। এই সময় সাধারণত বাংলাদেশে প্রচণ্ড গরম পড়ে থাকে।
দুপুর বেলা পুকুরে গোসল করতে গেছি আমি আমার তিন বন্ধু তোহা, মেহেদী এবং শিমুল এবং আমাদের এক বড় ভাই ছিল নাজমুল ভাইয়া। তবে আরেকজন ছিল। তার নাম ছিল কামরুল। আমাদের থেকে বয়সে একটু বড় হলেও সমবয়সীদের মতোই মিশতাম। তো গোসল করতে করতে হঠাৎ পরিকল্পনা করা হয় ডাব খেতে হবে। তবে সেটা নিজের গাছ থেকে না। যেহেতু একেবারে কৈশোর চলছে আর এগুলোর প্রতি একটু ঝোঁক বেশিই থাকে। আর কী দ্রুত পরিকল্পনা করা হলো আজ সন্ধ্যায়ই অপারেশন করা হবে। সবাই সন্ধ্যায় আমাদের আড্ডা দেওয়ার জায়গাই মিলিত হবো। এখন দেখতে হবে কাদের গাছে ভালো কচি ডাব আছে। দিনে দেখে না রাখলে সমস্যা। আমরা আবার ছোটখাট কিছু ভাবতে পারতাম না। অনেকের গাছ রেখে শেষমেশ আমাদের এলাকার মসজিদ কমিটির সভাপতির গাছটাই নির্বাচন করি।
সন্ধ্যার পরে সাধারণত ঐ বাগানের দিকে কেউ যায় না। তো মোটামুটি আমরা পাঁচজন ছিলাম। কামরুল ছেলেটা আমাদের পরিকল্পনার সময় থাকলেও অপারশেনের সময় কোন কারণে আসেনি। আর ঐ ছেলেটা বেশ বোকা হওয়ার জন্য আমরা ওকে ডেকেও নিয়ে আসিনি। প্রতিবারের মতো শিমুল গাছে উঠে গেল। শিমুল আবার গাছে উঠতে ভালো পারত। দিনের বেলা দেখে রাখলেও রাতের অন্ধকারে সবমিলিয়ে প্রায় ১৫-১৬ ডাব গাছ থেকে নামানো হলো। আমাদের একটা বিশেষ কৌশল ছিল দড়ির মাধ্যমে কোন শব্দ ছাড়া নিচে ফেলানোর। ডাব নামানো শেষ হলে চুপি সারে আমরা ওখান থেকে চলে যায়। পরবর্তীতে মোটামুটি সবাই তিনটা করে ডাব ভাগে ভাই। যেহেতু চুরির জিনিস বাড়িতে নিয়ে যাওয়া যাবে না। ওখানেই সবাই সাবার করে দিলাম ডাবগুলো। বেশ মিষ্টি ছিল ডাবের পানি।
কিন্তু ঝামেলা হলো পরের দিন। সভাপতি সাহেব যখন সকালে উঠে দেখে তার গাছভর্তি ডাব হাওয়া। সে তো বেশ রেগে গেল। তবে সে ছিল খুবই বুদ্ধিমান মানুষ । কোন উচ্চবাচ্য না কর গোপনে অনুসন্ধান চালাতে শুরু করে। একদিন পরের কথা। কামরুল রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। কোন একটা কারণে সভাপতি সাহেব তাকে দেখে ডাক দিয়েছে। তবে সেটা ডাবের বিষয়ে না। ডাক দেওয়া মাএই ঐ গাধা ভয় পেয়ে সুন্দর করে সভাপতির কাছ এসেই বলে দাদা আমি কিছু জানি না। আমি ডাব খাইনি আমি ওদের সাথে ছিলাম না। উনার বুঝতে আর কিছু বাকি থাকে না। উনি কামরুল কে চেপে ধরে। বল কে কে ছিল। আর কী ঐ গাধা সবকিছু বলে দেয়। সেদিনই আমাদের বাড়িতে নালিশ চলে যায়। কিন্তু এলাকার মধ্যে আমাদের ভালো ছেলে হিসেবে একটা রেপুটেশন ছিল। এবং উপযুক্ত কোন প্রমাণ না থাকাই শুধুমাত্র ঐ গাধার কথায় আমাদের সেরকম কোন অসুবিধা হয়নি। তবে সেদিন যদি ওর মতো আমরাও ভয় পেতাম আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। সেজন্য আপনাদের বলি বোকা সঙ্গী নিয়ে কখনো এসব পরিকল্পনা করবেন না। তারা আপনার বিপদের কারণ হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা বাস্তব সত্য কথা বোকা সঙ্গীর চেয়ে চালাক শত্রু অনেক ভালো। আসলে কথায় আছে না চোরের মন পুলিশ পুলিশ। আপনার বন্ধু কামরুল ও তাদের মতো একজন।এটা সত্যি ছোট বেলা এমন একটু চুরির নেশা অনেকের থাকে। যাইহোক অবশেষে তেমন কিছু বিচার হয়নি জেনে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনারা ভাই ডাব চুরি করার আর জায়গা খুঁজে পেলেন না, সভাপতির গাছের ডাব চুরি করতে হলো আপনাদের শেষ পর্যন্ত! হা হা হা...😂😂
আপনার বন্ধু কিন্তু এই কাজটা সম্পূর্ণ ভুল করেছে । যাই হোক, আপনাদের রেপুটেশন কিছুটা খারাপ হলো এই আর কি।