হাওয়া। সম্পূর্ণ মুভি রিভিউ।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
মুভির গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
------ | ------ |
---|---|
পরিচালক | মেজবাউর রহমান সুমন |
প্রযোজক | অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু |
কাহিনীকার | মেজবাউর রহমান সুমন |
মুক্তি | ২৯ জুলাই,২০২২ |
দৈর্ঘ্য | ২ ঘন্টা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
অভিনয়ে | চঞ্চল চৌধুরী, নাজিবা তুষি, শরিফুল রাজ, সোহেল মন্ডল, নাসির উদ্দিন খান আরও অনেকে। |
মুভির কাহিনী সংক্ষেপ
মুভির শুরুতেই সমুদ্রের পাড়ে এক হকার কথা বলছে তার দ্রব্য নিয়ে এবং চারিদিকে লোক সমাগম। চান মাঝি নাপিতের কাছে চুল দাঁড়ি কাটাচ্ছে। আজকেই তার নৌকা সমুদ্রে যাবে মাছ ধরতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই নৌকার অন্যান্য সদস্য নাগু, মরা, উরকেস, পারকেস, ইব্রাহিম আরও কয়েকজন চলে আসে। এরপর সবাই মহাজন এর থেকে বিদায় নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে চলে যায়। নৌকার একজন চান মাঝিকে বলে এবারেই ওকে শেষ করে দিয়ে যাব। চান মাঝি বলে ঠিক আছে তবে আমি অনুমতি দেব তারপর। এরপর দেখা যায় চান মাঝি সমুদের একটা জায়গাই নৌকা থামাতে বলে। এবং বলে এখানে নৌঙর ফেল মাছ আছে। সেখান থেকে বেশ অনেক মাছ উঠে। মাছগুলো বরফ দিয়ে রেখে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায় রাতে গোপনে ট্রলার থেকে মাছ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মহাজন এর আড়ালে মাছ নৌকা থেকে বিক্রি করা হয়। কিন্তু টাকার ভাগ না দেওয়াই ইব্রাহিম এটার প্রতিবাদ করে। পরে ইব্রাহিমের সঙ্গে অন্যদের বেশ ঝামেলা হয়।
পরের দৃশ্যে দেখা যায় নাগু ইব্রাহিম কে বোঝাতে গিয়েছে। যেন চান মাঝির সামনে ঐরকম না বলে। কিন্তু ইব্রাহিম শোনে না। ইব্রাহিম নৌকার ইঞ্জিন রুমে থাকে। এরপর দেখা যায় প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে বৃষ্টির মধ্যে জাল তুলছে সবাই মিলে। কিন্তু জালে মাছের বদলে একটা মেয়ের লাশ। সবাই মনে করে মেয়েটা মারা গেছে সেজন্য ঐভাবে রেখে দেয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে নাগু এসে বলে এতো বড় সুরমা মাছ অনেকদিন দেখি না। নাগু মেয়ের পরিবর্তে সুরমা মাছ দেখতে পাই। পরবর্তীতে দেখা যায় নাগু বলে এই মেয়ে তো বেঁচে আছে। তখন সবাই এসে দেখে হ্যা সত্যি মেয়েটা বেঁচে আছে। কিন্তু মেয়েটারে কিছু জিজ্ঞেস করলে বলতে পারে না। সবাই ভাবে মেয়েটা হয়তো কথা বলতে পারে না। তারপরের দিন চান মাঝি জিজ্ঞেস করে মেয়েটাকে কী করব? নৌকায় মেয়ে মানুষ রাখা নিষিদ্ধ। পরে ঠিক হয় মেয়েটা আপাতত এখানেই থাকবে পরে পরিচিত কোনো নৌকা পেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
পরের দৃশ্যে দেখা যায় ঐ লোক চান মাঝিকে বলছে ইব্রাহিম কে আজ রাতেই কি মেরে ফেলব। চান মাঝি বলে না। নৌকায় ঐ মেয়েটা আছে খেয়াল আছে। এখানে মাছ নেই কয়েকদিন পর আমরা আরও উওরে যাব তখন দেখব বিষয় টা। এরপর দেখা একটা নৌকা আসে এবং বলে এবারে প্রথম নৌকা অনেক মাছ পেয়েছে। ওরা ঘাটে ফিরেছে আজ সন্ধ্যায় সেখানে অনেক বড় খাওয়া দাওয়া আছে। চান মাঝি বলে ঠিক আছে আমরা যাব। পরে সবাই চলে যায়। এবং সেখানে আরও অন্য অনেক নৌকা এসেছিল। তখন সাদা সাদা কালা কালা গানটা হয়। সবাই আনন্দ করছে অন্যদিকে চান মাঝি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঐ মেয়েটার সঙ্গে অকাজ করতে যায়। কিন্তু ঐ মেয়ে ধাক্কা দিয়ে চান মাঝিকে পানিতে ফেলে দেয়। এরপর চান মাঝি মেয়েটার উপর অনেক রেগে যায় তবে কাউকে বলে না।
এরপর সবাই আবার সমুদ্রে ফিরে যায়।সবাই গিয়ে জাল ফেললেও কোনো লাভ হয় না। কারণ কোনো মাছ উঠে না। পরের দৃশ্যে দেখা যায় চান মাঝি বলছে ঐ মেয়েটারে বসিয়ে নাই খাইয়ে কাজ করা। এরপর দেখা ঐ মেয়েটা নিচে মাছ আনতে গিয়েছে রান্নার জন্য ঐসময় নাগু যায় এবং অকাজ করার চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়েটা নাগুকে মেরে ওখান থেকে চলে আসে। পরবর্তীতে নাগুও অনেক রেগে যায় মেয়েটার উপর। এরপর দেখা যায় একজন বলছে ঐ মেয়ে যেদিন থেকে নৌকায় এসেছে মাছ পাচ্ছি না। সবাই এটা নিয়ে অনেক টেনশনে।
এরপর দেখা যায় নৌকার ইঞ্জিন খারাপ হয়ে যায়। ইব্রাহিম অনেক চেষ্টা করেও ইঞ্জিন ঠিক করতে পারে না। পরে সবাই মিলে অন্য একটা নৌকারে কাছ আনে এবং ঐ নৌকার ইঞ্জিন মিস্ত্রি ইঞ্জিন ঠিক করে দেয়। রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েছে তখন ইব্রাহিম এবং ঐ মেয়ে পানিতে নামে। এবং তখন ঐ মেয়ে কথা বলে। ঐ মেয়ে বলে আমি এই নৌকা ডোবাতে এসেছি। এই নৌকায় কেউ বেঁচে ফিরবে না। ইব্রাহিম জিজ্ঞেস করে এই নৌকায় কীভাবে এসেছ তুমি। ঐ মেয়ে বলে দেবী আমাকে পাঠিয়েছে। এরপর দেখা জাল ফেলে সবাই ঘুমিয়ে আছে হঠাৎ রেজা এসে দেখতে পাই জাল নেই। সবাইকে ডাক দেয়। অনেক খোজাখুজি করেও জাল খুজে পাই না। সমুদ্রের জোয়ারে ভেসে গেছে। তখন চান মাঝি বলে যেভাবেই হোক আমাদের জাল খুজতে হবে। অন্যদিক থেকে দেখা যায় ইঞ্জিন রুম থেকে ইব্রাহিম ডাকছে। সবাই গিয়ে দেখে তেলের ড্রাম ফেটে গেছে সব তেল পড়ে যাচ্ছে। এই তেল শেষ হলে নৌকা আর চলবে না। তখন রেজা বলে ঐ মেয়ে নৌকায় আসার পর থেকে এসব শুরু হয়েছে। ঐ মেয়েকে নৌকা থেকে সরাতে হবে। রেজা এবং চান মাঝি মেয়েটাকে ধরে ফেলে দিতে চাই। খিদে তখন ইব্রাহিম দা নিয়ে গিয়ে বলে এই মেয়েকে ফেলে দিলে কেউ বাঁচবে না। পরে কেউ মেয়েটারে ফেলে না।
এরপর দেখা যায় রাতে আবার ঐ মেয়ে এবং ইব্রাহিম পানিতে নেমে কথা বলছে। তখন ঐ মেয়ে বলে অনেক আগে চান মাঝি আমার বাবাকে মেরে ফেলেছিল। আমি সেই প্রতিশোধ নিতে এসেছি। কিন্তু এবার সবাই ওদের কথা বলতে দেখে ফেলে। ঐ মেয়েকে বেঁধে রাখে রেজা ইব্রাহিম কে দা দিয়ে একটা আঘাত করে এবং রেজা রড রেজার পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। পরে চান মাঝি রড পেটে ঢুকিয়ে ইব্রাহিম কে মেরে ফেলে। কিন্তু পরের মূহূর্তেই ঐ মেয়ে নৌকা থেকে উধাও হয়ে যায়। এরপর ঘটনাচক্রে একে একে সবাই মারা যায়। নৌকায় খাবার নেই পানি নেই তেল নেই বেঁচে আছে শুধু মাএ চান মাঝি এবং নাগু। এবং লাশের গন্ধে নৌকায় থাকা যাচ্ছে না। চান মাঝি নৌকা থেকে লাশ সমুদ্রে ফেলে দিতে শুরু করে। কিন্তু ইব্রাহিম এর লাশে হাত দিতেই তাকে সাপে কামড়ায়। তখন চান মাঝি বলে এই নাগু নৌকায় সাপ আসলো কীভাবে। গিয়ে দেখে নাগুও মরে পরে আছে। এরপর ঐ সাপ এসে ইব্রাহিম কে জড়িয়ে ধরে এবং দেখা যায় ওটা ঐ মেয়ে। এখানেই শেষ হয় মুভিটা।।
ব্যক্তিগত মতামত
আমার দেখা বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সিনামা পাড়ায় সবচেয়ে আলোচিত মুভি ছিল হাওয়া। হাওয়া মুভিটা এমন একটা কাহিনী নিয়ে নির্মিত সাধারণত এইরকম কাহিনী ঘটনা নিয়ে কোনো বাংলা সিনেমা নেই। তার উপর হাওয়া মুভির সাদা কালা গানটা প্রচুর সাড়া ফেলেছিল। মুভিটা বাংলাদেশের সমুদ্রে মাছ ধরা একদল জেলেদের নিয়ে নির্মিত। মুভিতে প্রচুর বাংলা গালাগালি আছে কারণ এটা একেবারে তাদের বাস্তবিক জীবনের মতো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। মুভিটা একটু অন্য ধরনের। বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে না এটা কাল্পনিক কাহিনী নিয়ে নির্মিত। সর্বশেষ মুভিটা আমার কাছে মোটামুটি বেশ ভালো লেগেছে। এবং মুভির গান, চিএনাট্য, অভিনয় অসাধারন ছিল।
ব্যক্তিগত রেটিং: ৮.৫/১০
অফিশিয়াল ট্রেইলার
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
টুইটার শেয়ার: https://twitter.com/Emon423/status/1656683898926161921?s=19
হাওয়া মুভি রিভিউ শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। এই মুভি দর্শকের মনে ব্যাপক ভাবে সাড়া ফেলেছিল। এই মুভিটি সত্যি দারুন ছিল। আমার কাছেও দারুন লেগেছিল। অনেক সুন্দর ভাবে মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও এই মুভিটা এখন পর্যন্ত আমার দেখা হয়নি। যখন মুক্তি পেয়েছিল সে সময় সুযোগ থাকার পরেও আলসেমি করে হলে যাই নি। সেই আক্ষেপ টা এখনো রয়েই গেছে। তবে আজকে পুরো রিভিউ টা দেখে মনে হচ্ছে মুভির ৩০ শতাংশ বোধ হয় দেখেই ফেলেছি। চমৎকার লিখেছেন সত্যি।