আবার সে( পর্ব-2)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমার শহরে যখন রুনা কে নিয়ে ঘুরতাম তখন কিছু জায়গাই নিয়মিত যেতাম আমরা। ঐ জায়গা গুলো একঘেয়ে হয়ে গিয়েছিল আমাদের কাছে। মাঝে মাঝে রুনা বিরক্ত হয়ে বলেই ফেলত এক জায়গা আর ভালো লাগে না। তোমার শহর টা মোটেই ভালো না। রাস্তা ভাঙা রাস্তায় ধুলা আরও অনেক কিছু। আরও বলতো কখনো আমার শহরে যেও দেখে এসো। পুরানো কথা বলে কোনো লাভ নেই। আজ আমি রুনার শহরে এসেছি। রুনা আমাকে একটা নিরিবিলি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল। রেস্টুরেন্ট টার নাম রেড চিলি। জায়গাটা বেশ নিরিবিলি বেশি লোকজন নেই। কথা বলার জন্য একেবারে পারফেক্ট একটা জায়গা। হঠাৎ রুনা বলল
কী করছ এখন তুমি?
এই কিছুদিন হলো একটা চাকরিতে জয়েন করেছি। তোমার কী অবস্থা বলো?
আমার চলছে থেমে নেই কিছু। বলে চুপ হয়ে গেল রুনা।
ততক্ষণে কফি অর্ডার করেছি আমরা। আচ্ছা এতদিন পর আমাকে এভাবে ডাকলে কেন? কী কাজ এখন কী বলা যায়।
হ্যা বলব তো অবশ্যই। তোমার জীবনে কী নতুন কেউ এসেছে না আগের মতোই ঐরকম খিটখিটে আছো।
হঠাৎ এই প্রশ্ন করছ। কেউ আসলেই কী আর না আসলেই বা তোমার কী? তুমি তো ঠিকই চলে গিয়েছ। এখন এগুলো বলে কী লাভ।
তোমাকে কখনোই আমি ইচ্ছা করে ছেড়ে দেয়নি। আমি ঐসময় তোমাকে কিছু বলিনি। আমার অবস্থা তুমি কিছুটা হলেও জানতে। আমি পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম। তোমার সাথে আমি যেটা করেছি সেটা ঠিক করিনি।
কী হয়েছে বলা যায় আমাকে।
হ্যা বলব সবই বলব।
তোমাকে এখন থেকে ওয়্যাটসঅ্যাপস বা ম্যাসেনজারে নক দিলে কথা বলবে। যোগাযোগ রাখবে আমার সঙ্গে।
হ্যা কেন রাখব না অবশ্যই রাখব। আমি তো কখনোই তোমাকে ছেড়ে যায়নি ভুলেও যায়নি। তুমি আগের মতোই এখনো আমার হৃদয়ে আছো।
সত্যি বলছ।
হ্যা।
চলো একটা জায়গা ঘুরতে যায়? অনেক সুন্দর একটা জায়গা। তোমার ভালো লাগবে।
ঠিক আছে চলো। পরে দুজন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে এসে আবার একটা রিক্সায় উঠলাম। রিক্সাওয়ালা আমাদের একটা পার্কে নিয়ে গেল।
পার্কে গিয়ে একটা গাছের নিচে দুজন বসলাম। রুনা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। রুনার ঐ হালকা বাদামি চোখের চাহনি যেন আমাকে ভেতর থেকে নিঃশেষ করে দিচ্ছিল। হঠাৎ রুনা বলল
আচ্ছা তুমি তো আগে আমার হাত ধরতে চাইতে। এখন ইচ্ছা করে না।
রুনার মনের ভাব বুঝতে বাকি থাকল না। আমারও ইচ্ছা করছিল। সব চিন্তা বাদ দিয়ে রুনার হাত ধরলাম। দুই বছর আগে প্রথম যেদিন রুনার হাত ধরেছিলাম সেদিন বলেছিলাম কখনো এই হাত ছাড়ব না। কিন্তু রুনা ছেড়ে দিয়েছিল। আজ আবার ধরলাম। রুনা চুপ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর আমার কাঁধে মাথা রাখল। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কোনো মেয়ে আমার কাঁধে মাথা রেখেছে। আমার কাঁধে প্রথম মাথা রাখা মেয়েটাও ছিল রুনা। কিন্তু সেটা দুই বছর আগে। হঠাৎ রুনা বলল
ইমন আমি তোমার সঙ্গে ঠিক করিনি। আমি জানি ঐ ঘটনার পর তোমার ঠিক হতে অনেক সময় লেগেছে। তারপরও আমার একবার বলাতেই তুমি ছুটে এসেছ। আমার ধারণা তুমি এখনো আগের মতোই আমাকে ভালোবাসো। বিয়ে করবে আমাকে??
কথাটা শোনা মাএই আমার ভেতরে কেমন একটা হয়ে গেল। আমি বললাম তুমি কী আমার সঙ্গে ইয়ার্কি করছ??
না আমি সত্যি বলছি। বিয়ে করবে আমাকে। তুমি তো বলতে পৃথিবীর সবার বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও আমাকে নিজের অর্ধাঙ্গী করবে। এখন তো একটা চাকরি করো আমাদের দুজনের হবে না। কষ্ট হলেও সমস্যা নেই আমি মানিয়ে নিব। বলতে বলতে রুনার চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল।
ওর কথাগুলো শুনে আমি আর কিছু ভাবিনি। বললাম তো বাসায় জানিয়ে করবে, নাকি না জানিয়েই করবে বলো??
সেটাই আমি ভাবছি বলব নাকী? যদিও বাড়ি থেকেও এখন আর কোনো আপওি করবে না। আমি যাকে পছন্দ করি তার সঙ্গেই বিয়ে দিয়েে দেবে।
তাহলে আর কী বাড়িতে বলো তুমি। আমিও বলি বাড়িতে।
যদি তোমার বাড়িতে রাজি না হয়। তখন কী করবে।
রাজি হয়ে যাবে। আর রাজি না হলে তখন দেখা যাবে।
কখন যে ঘড়িতে চারটা বেজে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি দুজন। আচ্ছা ঠিক আছে আজ তাহলে যাও তুমি। চলো তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি। রুনা আমাকে বাসস্ট্যান্ড পযর্ন্ত এগিয়ে দিয়ে গেল। বাস না ছাড়া পযর্ন্ত দুজন একসঙ্গে বসে ছিলাম। বাস ছাড়ার পরেও রুনা দাঁড়িয়ে ছিল। ও যেন আমাকে চোখে হারাচ্ছে ঠিক দুই বছর আগে আমি যেমন টা ওকে চোখে হারাতাম।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | জুন,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ আমরা এমন একটা যুগে এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে হাজারো রকম প্রেম কাহিনী। তবে এ প্রেম কাহিনী টিকিয়ে রাখার মাঝখানে যেন টাকায় সবকিছু। ভালোবেসে এমন একটা মুহূর্তে এসে মানুষের টেনশন পেতে যায় কি করে প্রেমিকাকে নিজের করে নেব এবং নিজের করে নিয়ে তারপর তাকে কিভাবে ভরণ পোষণ করব। ঠিক তেমনি এই রুনার কাহিনী। ভালো লাগলো বিস্তারিত প্রেম কাহিনী পড়ে