বিশেষ একটা দিন।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
একটা বিশেষ দিন একজন মানুষ কখনোই ভুলতে পারে না। আর এই সময়ে এসে স্মরণে রাখা তো আরও সহজ বিষয়। ফোনের গ্যালারিতে থাকা ছবিগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মূহুর্ত গুলো। হঠাৎ একদিন দেখবেন আপনি বড় হয়ে গিয়েছেন। আপনার আশপাশের বন্ধুগুলো আর নেই। আছে কিন্তু আপনার কাছে নেই। তবে তাদের কথা আপনার আমার ঠিকই মনে পড়ে। তখন এইরকম একটা ঘটনা আমাদের মনে পড়ে যায়। একটা ঘটনার মনে পড়লে তার সাথে থাকা অন্য সকল ঘটনা যেন জোড়া লাগতে থাকতে থাকে এবং আমাদের স্মরণে চলে আসে। গতকাল রাতে ভালো লাগছিল না। শরীর টাও খুব একটা ভালো না। সেজন্য ফোনের গ্যালারির পুরাতন ছবিগুলো দেখছিলাম একে একে। হঠাৎ একটা সেলফি আমার চোখে পড়লো। সেটা চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঐটার সাথে জড়িয়ে থাকা অন্য ঘটনাগুলো একে একে মনে পড়তে থাকল।
তখন অক্টোবর মাস চলছিল ২০২১ সালের। আজ থেকে পুরো দুই বছর আগের কথা। ঐ সময়ে আমার ডিপার্টমেন্টের একটা সাবজেক্ট নিয়ে খুব ঝামেলায় ছিলাম। সেই জন্য আমি এবং আমার আরও তিন বন্ধু এক বড় ভাইয়ের কাছে ঐ বিষয়ে পড়া শুরু করি। আমরা সবাই নাভিদের বাড়িতে পড়তাম। কারণ নাভিদের বাবা শিক্ষক হওয়াই ওদের বাড়িতে আগে থেকেই পড়ানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট রুম ছিল। যাইহোক সবেমাএ দূর্গাপূজা শেষ হয়েছে। তার পরের দিন। তো আমরা যেখানে পড়তাম তার কাছেই একটা মেলা হতো দূর্গাপূজা উপলক্ষে। যেটাকে পঞ্চানন বিশ্বাসের মেলা বলা হতো। ছোটবেলা এই মেলাটার অপেক্ষা করতাম সারা বছর ধরে। মেলার সময় হলে বায়না জুড়ে দিতাম। তো সেদিন ছিল ঐ মেলা। পড়তে গিয়ে পড়ার সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও ভাইয়া দেরি করছিল।
তো একপর্যায়ে গিয়ে আমি এবং আমার বন্ধু ইকরা ও তুহিন মেলার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিলাম। তখন কিন্তু মাএ বিকেল। সন্ধ্যা টা হলেই মেলা টা আরও জমে উঠে। মেলায় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ এই সেলফি টা নিয়েছিলাম আমি। এখানে সবার আগে মাস্ক পড়ে ঐটা আমি। আমার পরে রয়েছে আমার বন্ধু ইকরা এবং শেষের জন্য হলো তুহিন। আজ আমরা তিনজন তিন জায়গাই। চাইলেও আর দেখা করা সম্ভব হয়ে উঠে না আমাদের। কিন্তু একটা ছবিতে ঠিকই রয়ে গিয়েছে বিশেষ সময় টা। বিশেষ সময় টা হারিয়ে গিয়েছে কিন্তু ছবিটা এখনো রয়েছে হা হা। তখন কিন্তু আমরা মেলায় বেশিক্ষণ থাকিনি। তবে আমরা প্ল্যান করি পড়া শেষ করে মেলায় ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করব। যথারীতি পড়া যখন শেষ করলাম তখন সন্ধ্যা অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। আমরা মেলার মধ্যে ঢুকলাম। আমার স্পষ্ট মনে আছে প্রথমেই শুরু করেছিলাম পাপড় ভাজা দিয়ে। তারপর একে একে চপ পিয়াজি চিংড়ির চপ সবকিছুই খাই। বেশ মজা হচ্ছিল। সুন্দর আলোকসজ্জা ছিল মেলায়।
অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি শেষ করে আমরা ফিরে আসি।মেলাটা বছরে একদিনই হয়ে থাকে। সেজন্য দ্বিতীয় দিন যাওয়ার আর সুযোগ ছিল না। আবার অপেক্ষা এক বছরের। গত বছরেও দূর্গা পূজার পরের দিন মেলাটা বসেছিল। কিন্তু কোন একটা কারণে আমার যাওয়া হয়নি। সম্ভবত আমার সঙ্গে যাওয়ার মতো আমি কাউকে পাইনি এইজন্যই যায়নি। আর এই বছরে মেলার সময় টা আমি ঢাকাতে ছিলাম। সেজন্য এই বছরেও মেলা টা দেখতে পারিনি। একেবারে মিস করে গেছি। এই বছর স্যোসাল মিডিয়ার জন্য বেশ কিছু ছবি চোখে পড়েছিল মেলা টার। আমার সঙ্গে এড থাকা কয়েকজন সেগুলো আপলোড করেছিল। তখন বেশ আফসোস হচ্ছিল। কী জানি পরের বছর আমার কোথায় থাকব। মেলাটা আর কখনো দেখতে পারব কীনা। কিন্তু এই ছবিটা বিশেষ সময়টার কথা সবসময়ই ধরে রাখবে। যখনই দেখব মনে পড়ে যাবে সবকিছু।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া অনেক বিশেষ দিন আছে যেগুলো আমরা ভুলে যাই। তখন ফোনের গ্যালারি কিংবা ফোনের নটিফিকেশন আমাদেরকে সেই দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।যাইহোক পুরাতন কিছু ফটোগ্রাফি এবং বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হ্যাঁ সময়ের সাথে সাথে সবকিছু পাল্টে যায় রয়ে যায় শুধুই স্মৃতি। একসময় এই বন্ধুত্বের বন্ধন হারিয়ে যাবে নিজেকে ও ব্যস্ত জীবন পার করতে হবে। এটাই পৃথিবীর অগ্রযাত্রা। যাই হোক দূর্গা পূজোর মেলায় দারুন সময় কাটিয়েছিলেন এই জায়গাটি আমার চেনা এই বছরেও দুর্গাপূজাতে কুমারখালী তরুন মোর পার হয়ে গিয়ে এরকম মেলার দৃশ্যটি দেখেছিলাম ভালো লাগলো।
ভাইয়া আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আপনার নিজের মনের অনুভূতি গুলো শেয়ার করেছেন। আমাদের সবার কেউ না কেউ বিশেষ লোক থাকে।তবে তখন তো সেই বিশেষ লোকের কাছে যাওয়া সম্ভব না।আপনার গ্যালারিতে থাকা সেই বিশেষ লোকের পিক দেখে সেই দিনের কথা গুলো মনে পরে গেলো। এইরকম আমাদেরও অনেক বিশেষ লোক আছে।চাইলেও তাদের সাথে দেখা হয় না। কিন্তু গ্যালারিতে একটা ছবি সব কিছু মনে পরিয়ে দেয়। যাইহোক আপনাদের যেনো আবার দেখা হয় এই দোয়া রইলো।আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।