র্যাগ'ডে।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
চার বছরের ডিপ্লোমা প্রায় শেষের দিকে। ইনস্টিটিউট এ এটাই ছিল আমাদের শেষ সেমিষ্টার। শেষ সেমিষ্টার এরপর বন্ধুদের মধ্যে কেউ চলে যাবে এডমিশনে কেউ চলে যাবে জব পেপারেশনে কেউ বা আবার অন্য কোনো জায়গাই। আর কখনোই এভাবে সবার একএিত হওয়া হবে না। বতর্মানে স্কুল কলেজ সব জায়গাই র্যাগ ডে টা পালন করা হয়। যদিও ঐ গতানুগতিক র্যাগ ডে পালনের বিরুদ্ধে আমি। আমাদের বন্ধুরাও ঠিক করে ২০ তারিখ র্যাগ ডে পালন করবে। অধিকাংশই উৎসাহের সঙ্গে যোগদান করলেও আমার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে আমার কয়েকজন বন্ধু আমাকে অনুরোধ করায় আমি রাজি হয়ে যায়। পরে ভেবে দেখলাম ওদের কার সঙ্গে হয়তো জীবনে আর কখনোই দেখা হবে না। সবাই মিলে এই সময় টা কাটাই। মোটামুটি সবকিছু ঠিকঠাক। তবে অনেক আগে থেকেই আমাদের ইনস্টিটিউটের মধ্যে র্যাগ ডে পালন করে নিষেধ। সেজন্য আমরা র্যাগ ডে এর স্পট ঠিক করি কুষ্টিয়া রেনউইক বাঁধ। জায়গাটা বেশ দারুণ। নদীর ধারে এবং গাছপালা বিশিষ্ট।
আজ সকালে উঠেই ফ্রেশ হয়ে নেয়। র্যাগ ডে স্পটে আমাদের ১০:৩০ টার দিকে পৌছাতে হবে। যাইহোক আমি বাড়ি থেকে বের হয় ৯:৩০ টার সময়। এরপর কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে আমি আমার বন্ধু রাসেল এবং তুহিন একএিত হয়। এরপর চলে যায় রেনউইক বাঁধ এর উদ্দেশ্যে। অনেকবার নাম শুনলেও এর আগে আমি কখনো রেনউইক বাঁধে যায়নি সেজন্য চিনতাম না। কুষ্টিয়া মোল্লাতাড়িয়া থেকে তিনজন একটা রিক্সায় উঠলাম। তারপর সরাসরি চলে গেলাম আমাদের র্যাগ ডে স্পটে। গিয়ে দেখি প্রায় সবাই চলে এসেছে। র্যাগ ডে এর জন্য আমাদের স্পেশাল সাদা গেঞ্জি ছিল। সাদা গেঞ্জি দেওয়ার সবচাইতে বড় কারণ যেন সবাই সবার সাইন নিজের গেঞ্জিতে নিতে পারে স্মৃতি হিসেবে। যাইহোক সেখানে গিয়েই আমরা আমাদের সাইজ অনুযায়ী গেঞ্জি নিয়ে নেয়। এরপর শুরু হয় সাইন করা। আমার গেঞ্জিতে সবংপ্রথম সাইন করে আমার বন্ধু সৈকত এবং সৈকতের গেঞ্জিতে আমি। এরপর একে একে চলতে থাকে সবাই সাইন করা।
এরপর আমরা সবাই সবার সাথে ফটোশ্যুট করতে থাকি। ইচ্ছামতো স্মৃতি রেখে দিচ্ছে সবাই। চারবছর সবাই একসঙ্গে আছি সবাই কতটা যেন আপন। এরপর দুপুরে খাওয়ার সময় হয়ে যায়। দেড়টার দিকে আমরা দুপুরের খাবার খাই। আমাদের খাবারের তালিকায় ছিল খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি এবং সফট ড্রিংকস। খাওয়া শেষ করে মোটামুটি সবাই কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে। এরপর সময় হয় কেক কাটার। সবাই মিলে কেক কাটি আমরা। তারপর শুরু হয় একটা অনাকাঙ্খিত অনিবার্য কাজ। কেক খাওয়ার পরিবর্তে সবাই একে অন্যের মুখে মেখে দিচ্ছিল। এটা আমার কাছে খুবই বিব্রত লাগে। সেজন্য আমি দূরে চলে যায়। তবে আমার শেষ রক্ষা হয়নি। শেষমেশ আমার বন্ধু রুহুল আমার মুখে কেক মাখিয়ে দেয়। যাইহোক এরপর টিস্যু দিয়ে মুখটা মুছে নেয়। এরপর শুরু হয় আরেকটা কাজ যেটা আমার আরও বেশি অপছন্দ।
সবাই রঙ মাখামাখি করতে থাকে। এটা আমার খুব একটা পছন্দ না। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি এটা করব না। কিন্তু আমার কিছু বন্ধুর অনুরোধে শেষমেষ রাজি হয়ে যায়। তবে অন্যদের তুলনায় আমার মুখে রঙ কম ছিল। রঙ মাখার পর সবাই গানের তালে তালে নাচ শুরু করে। যদিও আমি দূরে দাঁড়িয়ে শুধু দেখিছি। ওদের সঙ্গে আমি নাচতে যায়নি। সব কিছুই শেষ। কিন্তু শেষ বিকেলে আমরা ঠিক করি নৌকা নিয়ে গড়াই নদীতে ঘুরব। যেই কথা সেই কাজ পাশেই ঘোরাঘুরির জন্য নৌকা পাওয়া যায়। সবাই মিলে নৌকা ভাড়া করে নদীতে ঘোরাঘুরি শুরু করলাম। মোটামুটি ১ ঘন্টা মতো আমরা নৌকা ভ্রমণ করি। অনেক উপভোগ করেছিলাম। সবশেষ আর কোনো কিছু বাকি নেই। অনেক আনন্দ করেছি আজ। সত্যি বলতে যদি না আসতাম তাহলে অনেক কিছু মিস করতাম। সত্যি বলতে বন্ধুদের ছেড়ে যাচ্ছি এটা নিয়ে আমার খারাপ লাগছে না। আমি অতোটা আবেগী না। তবে সবার সঙ্গে আর একসাথে ক্লাস করা হবে না। হবে না একসঙ্গে আড্ডা দেওয়া এটা ভেবেই অনেক খারাপ লাগছিল। যে যেখানেই থাকুক যেন সবাই ভালো থাকে শুধু এটাই কামনা
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | জুন,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার র্যাগ ডে এর পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আজকের আগে পর্যন্ত র্যাগ ডে সম্পর্কে আমার স্পষ্ট ধারণা ছিলো না। কারণ আমাদের সময় র্যাগ ডে বলে কোন কিছু ছিলো না। আপনাদের সাদা গেঞ্জি পরার বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। আপনার বন্ধু সৈকত আপনার গেঞ্জিতে প্রথম সাইন করেছে এবং আপনি তার গেঞ্জিতে এটা কিন্তু দারুণ একটা স্মৃতি হয়ে থাকলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।