হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো ( পর্ব: ৪ )।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
সময় টা তখন ২০২২ সালের জুলাই মাসের কথা। তখন আমি পঞ্চম সেমিষ্টারের ছাএ। আমার লাইফে তখন সবেমাএ একজন নতুন মানুষ এসেছে। তবে এখনও সে আমার ঐ বন্ধু হিসেবেই রয়েছে। আশাকরি বেশদিন আর থাকবে না হা হা। তখন আমাদের বাড়ির পাশের পশ্চিম দিকের মাঠে মাঝারি সাইজের পাট ছিল। এবং মাঠের বেশ কিছুটা অংশ ছিল ফাঁকা। বিকেল বেলায় ঐ মাঠে অনেক বাতাস হতো। গরমের সময় বিকেলে গিয়ে বসলে প্রাণ জুড়িয়ে যেত। অসাধারণ একটা অনূভুতি পাওয়া যেত। বিকেলে গিয়ে থাকতাম বসে। বিকেল থেকে সন্ধ্যাটা বেশ চমৎকার কাটল। সেদিন ছিল রবিবার। কলেজ থেকে ফিরে এসে আমি ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠলাম আমার বন্ধু মেহেদীর ফোন পেয়ে। মেহেদী আমি তোহা এবং শিমুল চারজন গিয়ে মাঠে একসঙ্গে বসে গল্প করতাম।
মেহেদী আমার কাছে ফোন দিয়ে বলল মাঠে যাবি না। আমি বললাম ঠিক আছে ফ্রেশ হয়ে আসছি। কিছুক্ষণ পর দেখি ওরা তিনজন আমাদের বাড়ি চলে এসেছে। মেহেদী বলল আজকে মাঠে মুড়ি পার্টি করব চল। এটা করার পরিকল্পনা যদিও আগে থেকেই ছিল। কিন্তু সেদিন হঠাৎ করেই হয়ে গেছিল। যথারীতি টাকা তুললাম এরপর ছোলা চপ পিয়াজু এবং মুড়ি কিনে নিয়ে বাড়ি থেকে পানি এবং মুড়ি মাখানোর পাএ নিয়ে চলে গেলাম মাঠে। আমাদের সঙ্গে ছিল আমাদের এক ছোট ভাই সান। আমি শিমুল মেহেদী এবং তোহা প্রায় একই বয়সের হলেও সান ছিল আমাদের থেকে প্রায় ৫ বছরের ছোট। ছোট হলেও ছেলেটা বেশ ভালো আমাদের সঙ্গে মিশতে পারে। তবে ওর বয়স অনুসারে ও একটু বেশিই বুঝে গেছে। তবে আমাদের সঙ্গে কখনো ও বেয়াদবি করে না। যাইহোক মাঠে গিয়ে বসলাম। ঐদিনও বেশ অসাধারণ বাতাস হচ্ছিল বিকেলে। যথারীতি আমরা গিয়ে মাঠের ঐ ফাঁকা জায়গাটাই বসে পড়ি।
আমি বসে বসে ম্যাসেনজারে ম্যাসেজ করছিলাম আমার ঐ ফ্রেন্ড এর সঙ্গে। বুঝেনই তো তখন প্রথম অবস্থায় ছিল কেমন টা হতে পারে। দিনের অধিকাংশ সময়ই ওর সঙ্গে ম্যসেজ করে কাটত। এবং শিমুল ও মেহেদী মুড়ি মাখানোর কাজ টা ওরা করছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হলো মুড়ি মাখানো। তারপর আর কী শুরু করলাম খাওয়া। খুব দ্রুতই শেষ হয়ে গেল মুড়ি। ওদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে গেল। কিন্তু সেদিন আমরা তখনও বাড়ি যায়নি। বসেছিলাম মাঠে। সন্ধ্যার সময় পাখিরা ঘরে ফিরছিল বাতাসের সঙ্গে দুলে উঠছিল পাট গুলো। অসাধারণ একটা অনূভুতি হচ্ছিল সেদিন। বাড়ি ফিরলাম তখন যখন চারিদিক একেবারে অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। বেশ অসাধারণ একটা সময় অতিবাহিত করেছিলাম ঐ সময়ে। তারপর কিছুদিন পরেই মাঠে বর্ষার পানি চলে এসেছিল। আমাদেরও আর মাঠে যাওয়া হতো না।
এইবছর আমি এই সময়টা আমি বাড়িতে থাকলেও মাঠে আর যাওয়া হয়নি। এর মূল কারণ ছিল আমরা মাঠের যে অংশটাই বসতাম সেটা এইবার আর ফাঁকা ছিল না। তবে এপ্রিল মাসে রোজার মধ্যে প্রতিদিন রাতে গিয়ে বসতাম আমরা কয়েকজন মিলে। সেদিন মন ভালো না থাকায় গ্যালারিতে গিয়ে এই পুরাতন ছবি গুলো দেখছিলাম। তখন এই ছবিগুলো সামনে পড়ল। ভেসে উঠল ঐদিনের পুরো ঘটনা টা। কী অসাধারণ একটা সময় কাটিয়েছিলাম তখন। সারাদিন যতই ব্যস্ত থাকি না কেন যতই ক্লান্ত থাকি না কেন। বিকেলে গিয়ে ঐ একঘন্টা মাঠে গিয়ে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিলে সব চিন্তা পেইন দূর হয়ে যেত। কিন্তু এখন আর ইচ্ছা করলেও পারি না। সময় গুলো অনেক মিস করি এখন। ছবিগুলো যেন এখন শুধুই ঐ স্মৃতি এবং কথাগুলো এখনো ধরে রেখেছে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.