শৈশবের স্মৃতিচারণ : লজ্জাজনক সেই ক্রিকেট ম্যাচ।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
.jpg)
আমার ছোটবেলার স্মৃতিচারণ এর এই পোস্টে আজ আপনাদের সঙ্গে আরেকটা পোস্ট শেয়ার করে নেব ঘটনা টা বেশ মজার এবং হাস্যকর। এবং এটা ক্রিকেট খেলা নিয়ে। তখন আমার বয়স ঐ ১১ বছর হবে। আমি তখন ক্লাস ফাইভ এ পড়ি। আমাদের এলাকার আমি আমার বন্ধু তোহা, শিমুল এরা ছিলাম এবং আরও কিছু ছোট ভাই ছিল। তখন সবাই মিলে একটা ক্রিকেট টিম ছিল। প্রতিদিন বিকেলে আমাদের এলাকার মধ্যে খেলতাম। এবং শুক্রবারে সকালে নিজেদের মধ্যে চলত টুর্নামেন্ট। বেশ আনন্দ লাগত। বিশেষ করে ছুটির দিনটা পুরোটা সময় কাটিয়ে দিতাম ক্রিকেট খেলে। আমরা তখন খেলতাম রাবারেব লাল বল দিয়ে। তখনও টেপ টেনিস এর প্রচলন হয়নি। সাধারণত তখন চলত ফাইভ স্টার নামক টেনিস বল। কিন্তু ওগুলোর দাম বেশি হওয়াই আমরা রাবারের বলটা দিয়েই খেলতাম। তো এক শুক্রবার আমাদের পাশের এলাকার সঙ্গে একটা ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। এবং ম্যাচটা ছিল ঐ রাবারের বল বাজিতে।
যথারীতি শুক্রবার বিকেলে ম্যাচ ছিল। সকালে প্রাক্টিস করলাম পাশাপাশি সব আলোচনা শেষ করলাম কীভাবে খেলব কে আগে বল করবে এবং কে আগে ব্যাটিং করবে। সাধারণত দলের কঠিন মূহূর্তে আমি বোলিং এ যেতাম। আবার আমি ওপেনিং ব্যাট করতাম। তবে আমি ফিল্ডিং এ তখন একেবারেই কাঁচা ছিলাম। একেবারে সহজ ক্যাচও মিস করতাম। বিকেলে মাঠে গিয়ে আমাদের ক্যাপ্টেন শিমুল টস করল। টসে হেরে গেলাম। এবং আমাদের প্রতিপক্ষ রা ব্যাটিং নেয়। সেদিন আমাদের সবাই বেশ ভালো বল করছিল। ফলাফল আমাদের প্রতিপক্ষ বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারে নি। এক পর্যায়ে শিমুল বল করলো অনেক বড় উচুতে বল উঠল। তার নিচে আমি দাঁড়িয়ে। অর্থাৎ ক্যাচটা আমার কাছেই আসছে টা নিশ্চিত। আমি বেশ ভয়ে আছি না জানি কী হয়। আমার মনের মধ্যে শুধু হচ্ছে আল্লাহ্ ক্যাচটা যেন ধরতে পারি আল্লাহ্ ক্যাচটা যেন ধরতে পারি হা হা।।
শেষমেশ ক্যাচটা আমি ধরতে পারি। আমাকে আর সেদিন বোলিং এ যাওয়া লাগেনি। আমাদের প্রতিপক্ষ মাএ ১২ রানে অলআউট হয়ে যায়। হ্যা ঠিকই দেখছেন মাএ ১২ রানে অলআউট হয়ে যায় হা হা। তারপর আমরা ব্যাটিং এ নামলাম। আমার সঙ্গে ওপেনিং নামল আমাদের এক ছোট ভাই সাকিব। আমি এক প্রান্তে টিকে আছি কিন্তু আমার অপরপ্রান্ত হতে বিনা রানে নেই তিন উইকেট। ওদিকে প্রায় দুই ওভার চলে গেছে এবং রান মাএ দুই। সেই দুই রান আবার এসেছিল ওয়াইড থেকে। তারপর নামল শিমুল। এবং আমি শিমুল কিছুক্ষণ টিকে ছিলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আমি নিজেও ক্যাচআউট হয়ে যায়। তখন আমাদের রান মাএ ৬। শিমুল যতক্ষণ ছিল আমার বিশ্বাস ছিল আমরা ম্যাচ জিতব। কিন্তু আমার আশা পূরণ হয়নি। কিছুক্ষণ পর শিমুলও আউট হয়ে যায়। ফলাফল আমরা মাএ ৮ রানে অলআউট।
আমাদের প্রতিপক্ষ ১২ রানে অলআউট এবং আমরা ৮ রানে অলআউট। ফলাফল আমরা ম্যাচটা হেরে গিয়েছি সঙ্গে বাজি ধরে বলটাও। যদিও পরের শুক্রবারে আবার ওদের সঙ্গে আমরা ম্যাচ নেয়। তবে এবারে আর সেই ভুল করিনি। একেবারে দাপুটে জয় তুলে নিয়ে আসি। কিন্তু ঐ ১২ রানের টার্গেটে ৮ রানে অলআউট হয়ে আসায় বহুদিন লজ্জিত ছিলাম। কিন্তু এখন মনে পড়লে সত্যি বেশ হাসি পাই আমার। এবং অনেক মিস করি দিনগুলো। প্রতিদিন স্কুল থেকে দ্রুত ফেরা। বাড়িতে এসেই মাঠে যাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি করা। এবং আবার পরের দিন বিকেলের জন্য অপেক্ষা করা এককথায় সবমিলিয়ে অসাধারণ একটা। কিন্তু দিনগুলো শুধু মিস করি। এখন ও আমাদের সেই খেলার জায়গাগুলো আছে। কিন্তু কেউ আর খেলে না। জায়গা গুলো যেন এখন প্রাণহীন।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
.png)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ভাইয়া জায়গার কোন পরিবর্তন হবে না তবে মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সত্যি ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়লে শুধু হাসি পায়। আর ১২ রানের টার্গেটে ৮ রানে অলআউট হয়ে আসায় বহুদিন লজ্জিত ছিলেন। এখন এই কথা গুলো মনে পড়লে মনে হয় আবার যদি শৈশবে ফিরে যেতে পারতেম। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
সত্যি কথা বলতে কি জীবনে অনেক খেলা করেছি কিন্তু সে সমস্ত খেলার ঘটনাগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হয় না আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে আপনাদের সেই খেলার কথাগুলো তুলে ধরেছেন তাই আমিও যেন হারিয়ে গেলাম আমার অতীতের সেই দিনগুলোর মাঝে। আমি অবশ্য ক্রিকেট খেলেছি বেশিরভাগ কিপার দাঁড়াতাম যেহেতু ভালো বল ধরতে পারি। ধন্যবাদ সুন্দর স্মৃতিচারণ করার জন্য।
একদল ১২ রানে অলআউট হলো, আর আপনারা ৮ রানে অলআউট হলেন। একদিক দিয়ে যেমন মজাদার গল্পটি, তেমন একটু দুঃখজনকও। কিন্তু সেটা যে রকমই হোক না কেন পুরনো দিনের স্মৃতিগুলো সত্যিই আমরা বড্ড বেশি মিস করি এখন। সব মিলিয়ে দারুন একটি উপস্থাপনা ছিল আপনার। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।