একটি গ্লাসের বিনিময়ে নিজের জীবন ফিরে পাওয়া। 😥
হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি,সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
আমার কাছে মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম কাজ যদি থেকে থাকে তা হলো বাসা পরিবর্তন করার কাজ।এই কষ্ট টা শুধুমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন যারা আমার মতো মাঝে মধ্যেই কারণ বশত বাসাবাড়ি পরিবর্তন করে থাকেন। চার বছরের মধ্যে আমাকে তিনবার বাসা পরিবর্তন করতে হয়েছে।এবারের বিষয় টা আমার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিলো,কারণ এবার আমার হাসবেন্ড ছুটি না পাওয়ার কারণে আসতে পারেননি।তাই সমস্ত কাজ আমাকেই একা করতে হয়েছে।আর একজন মহিলা মানুষের জন্য এটা কতোটা কষ্টদায়ক কাজ তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।
বাসা পরিবর্তনের দিন আবহাওয়া প্রচন্ড খারাপ হওয়ায় সবকিছুই উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে, কোনোকিছুরই যেনো ঠিক ছিলো না। সবাই অস্থিরতা নিয়ে কাজ করেছিলো আর তারজন্য আমার একটা বড় বিপদ ঘটতে লাগছিলো।বৃষ্টির মধ্যে জিনিসপত্র অনেক টা সময় বাহিরে ছিলো আবার উঠানামাতেও জিনিসপত্রের বেশ ধকল যায় সেক্ষেত্রেও কিছুটা হলেও নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে ঠিক সেরকমই ভাবে আমার বাসার ফ্রিজ টার একটু ত্রুটি দেখা দিয়েছিলো।আমি সাধারণত যেদিন বাসা পরিবর্তন করি সেদিন ফ্রিজ টা কয়েক ঘন্টার জন্য বন্ধ রাখি যাতে করে টানাহেঁচড়ার পর একটু রেস্ট পায়।
এবার এখানে আসার পরপরই লেবাররা ফ্রিজ তোলার সাথে সাথে লাইন চালু করে দেয় সেই বিষয় টি আমি লক্ষ্য করিনি।কিছুক্ষণ পর দেখি ফ্রিজের লাইন দেওয়া।মালামাল তোলা তখনও বাকি আমি দাঁড়িয়ে থেকে ভাবলাম ফ্রিজটা দেখি ঠিকঠাক আছে কি-না! তারপর লাইন টা বন্ধ করে দেই এই ভেবে ফ্রিজের কাছে গেছি আর ঠিক সেই মুহূর্তেই নিচ থেকে প্রচন্ড একটা আওয়াজ আসলো।আমি তখনই বুঝি গেছি আমার শখের ডাইনিং টেবিলের গ্লাস ভেঙ্গে গেলো! এই ভেবে ফ্রিজ না ধরে শুধু তাড়াতাড়ি করে লাইন টা বন্ধ করতে নিয়েছি আর তখন হালকা করে আমার হাতটা ফ্রিজের সাথে একটু ঘষা লেগেছে,সাথে সাথে আমি ঝটকা লেগে পড়ে যাওয়ার মতো হলাম।অনেক কষ্টে নিজেকে কন্ট্রোল করে দাঁড়ালাম সাথে সাথে আমার হাতে ফোসকা পড়ে গেলো আমি তো ঐ অবস্থায় নিচে দৌড়ে গেলাম গিয়ে দেখি আমার ধারণাই ঠিক।টেবিলের গ্লাস টা ভেঙ্গে গুঁড়ো হয়ে গেছে দেখে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো।
আমার হাসবেন্ড শুনেও খুব রাগারাগি করলো আমার সাথে তুমি একটু দেখেশুনে নামিয়ে নিবা না!কথাটা শোনার সাথে সাথে আমার খুব রাগ হলো আর তাকে শুধু একটা কথায় বললাম দূর থেকে মুখ দিয়ে অনেক কিছুই বলা যায় কিন্তু কাছে থাকলে না বোঝা যায় কষ্ট কেমন?মন খারাপ হচ্ছিলো খুব কিন্তু পরে এটা ভেবে নিজেকে শান্তনা দিলাম ঐ মুহূর্তে যদি গ্লাম ভাঙ্গার আওয়ার আমার কানে না আসতো তাহলে তো আমি ফ্রিজ খুলে দেখতাম সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি-না!আর তখনই তো আমার মৃত্যু নিশ্চিত।
সাথে সাথে ইলেক্ট্রিশিয়ান ডেকে আনলাম সে দেখে তো বললো আপনি যে এখনো বেঁচে আছেন এটাই অনেক বেশি।কারণ গোটা ফ্রিজ কারেন্ট হয়ে আছে হাত দিলেই বিপদ এই কথা শোনার পর থেকেই ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছিলো নতুন জায়গা নতুন স্বপ্ন নিয়ে এসে যদি আমার মৃত্যু হতো তাহলে আমার বাচ্চা দুটোর কি হতো!এগুলো ভেবেই আমি অস্থির হয়ে যাচ্ছিলাম।তখন শুধু বার বার মনে হয়েছে ঈশ্বর আমার প্রানের ঝুঁকি টা গ্লাসের উপর দিয়ে পার করেছেন আর তাই আমি আজও ভালোভাবে বেঁচে আছি এখনো সুস্থ আছি।
সকলের খারাপের পিছনে ভালো কিছু অপেক্ষা করে এটাই তার প্রমাণ।তাই যা যাবে তা নিয়ে কখনোই আফসোস করার মতো কিছু নেই।সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে আছি এটাই ঈশ্বরের আর্শীবাদ মনে করতে হবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু ঘটনাটি পড়ে খুবই খারাপ লাগছে।কি ঘটনা ই ঘটে যেতো। আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্য ই করেন।অনেক বড় বিপদ কেটে গেলো।আমার ই পড়ে বুক কাঁপছে।কিছু দান-খয়রাত করে দিয়েন।আর অবশ্যই চোখ-কান খুলে সাবধানে থাকবেন।কষ্টের অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ কষ্ট পেলাম।
ঠিক বলেছেন আপু সত্যিই দানখয়রাত করা দরকার মনে করিয়ে দিয়ে ভালো করেছেন আপু।দোয়া করবেন আপু মেয়েদের জন্য হলেও আরও অনেক দিন বাঁচতে হবে।ধন্যবাদ আপু।
আমি তো মনে করছি আপু আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া যে আপনার টেবিলের গ্লাসটা ভেঙেছে তা না হলে কি যে হতো । ওই মুহূর্তে আওয়াজটা না আসলে তো আপনি ফ্রিজটা ঠিকই ধরতেন শুনেই তো আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে । আর আপনি মহিলা মানুষ হয়ে একা একা বাসা চেঞ্জ করেছেন এটা শুনেও অবাক লাগলো কিভাবে পারলেন আপনে এত কাজ । আর এটা ঠিকই বলেছেন দূর থেকে অনেক কিছু সহজ মনে হয় । তখন রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক এসব কথা শুনলে ।
হ্যাঁ আপু আমি মাঝে মাঝে এখনো ভাবি সেদিন কি না হতে পারতো তা ভাবলেই বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠে।একা বাসা পাল্টানো টা খুবই কষ্টকর ছিলো তারপরও করতে পেরেছি আপু।দোয়া করবেন আপু।ধন্যবাদ।
কখন কে কিভাবে দুর্ঘটনার স্বীকার হয় সে কথা কে বলতে পারেনা। আর এভাবেই কিন্তু মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমারও জীবনে এমন একটা ঘটনা আছে ফ্রিজ সরাতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া। তবে জয় হোক বাসা বদলের মুহূর্তটা এমনিতেই কঠিন আর যদি সেই মুহূর্তে আবহাওয়াটা পরিবর্তন থাকে বা খারাপ থাকে তাহলে আরো ঝামেলা। মোটামুটি এ সমস্ত বিষয়ে আমার একটু জানা রয়েছে এবং সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া কখন কে কোন দূর্ঘটনার স্বীকার হয় তা বলা যায় না।বাসা পাল্টানো অনেক ঝামেলার।ধন্যবাদ ভাইয়া।
এ জন্যই বলা হয় সৃষ্টি কর্তা যা করেন ভালোর জন্যই করেন।গ্লাসটা ভাঙ্গার আওয়াজ না পেলে আপনি ফ্রিজ খুলতেন আর শেখানেই সব সপ্ন শেষ হয়ে যেতো।সৃষ্টিকর্তা সখের গ্লাসটির বিনিময়ে জীবনদান করেছেন। ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
সত্যিই তাই গ্লাসটির বিনিময়ে ঈশ্বর আমার জীবন ফিরে দিয়েছেন।ধন্যবাদ।
এজন্যই তো বলে আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। আপনার ওই গ্লাস ভাঙ্গার কারণে আপনার জীবনে বেঁচে গিয়েছে। গ্লাস ভাঙার শব্দ না পেলে তো আপনি ফ্রিজ খুলেই বসতেন। ছোট্ট একটা দুর্ঘটনায় আপনার অনেক বড় ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন। তাছাড়া ঠিকই বলেছেন দূর থেকে অনেক কিছুই সহজ মনে হয়। নিজের হাতে করতে গেলে বোঝা যায় কতটা কঠিন। অল্প ক্ষতির মধ্যে দিয়ে বেঁচে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন আপু,ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন।মুখে বলা আর কাজ করার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।ধন্যবাদ আপু।