সুস্বাদু মাটন রেজালা রেসিপি।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
আহ,ছবিটা যতবারই দেখি ততবারই মনে পড়ে যায় এই মাটন রেজালার কথা।এত্ত বেশি মজা ছিল যে মন ভরে খেতে পারলাম না সেটাই আফসোস রয়ে গেল। ভাবছেন এত মাটন কই গেল?তাহলে শুনুন, ঈদের ২দিন পরই আমার মামারা এসেছিল। আর তখনই মূলত এই রেসিপিটা তৈরি করেছিলাম। এখানে প্রায় ৩৫ পিস মাটন ছিল।আর সাইজও ছিল বড়।সবমিলিয়ে প্রায় ৩ কেজি।হয়তো বেশিই হবে,কম হবে না।যাইহোক সেদিন তো মেহমানদের জন্যই করেছিলাম।আর মেহমান সহ বাসার লোকজন মিলে প্রায় ৩০ জনের বেশিই হয়েছে।আর এক্ষেত্রে বড় বড় পিস একজনের জন্য হয়ে যায়।
তবে আমার ভাগ্যে পড়েনি, তাই সেদিনই ভেবেছিলাম পরে আরেকদিন তৈরি করব। যাইহোক পরে অবশ্য আমাদের বাড়িতে এসে করেছিলাম, খেতে মজা লেগেছিল।আর এই রেসিপি খেয়ে অনেকের মুখে সরাসরিই রেসিপির সুনাম পেয়েছি।আমার হাজব্যন্ড নিজেই বারবার বলছিল খুব মজা হয়েছে।আর আমার ছোট ভাই বলছিল সে কি যেন খেয়েছে, ঝোল একটু মিষ্টি ছিল। তখন তো আর বুঝতে বাকি রইলো না।সে তখন বুঝে নি সেটা মাটন ছিল।আসলে সেদিনকার এই রেসিপিটা অনেক অনেক বেশি মজার ছিল।
অনেক তো কথা বললাম।এবার একটু লোভ লাগিয়ে দেয়, বলেন কি!চলুন তাহলে ধাপে ধাপে রান্না শুরু করি।
আজকের রেসিপির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ |
---|
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
খাসির মাংস | ৩ কেজি |
পেঁয়াজকুচি | ১ কাপ |
পেঁয়াজবাটা | ১/২ কাপ |
পেঁয়াজ বেরেস্তা | ১ কাপ |
টকদই | ১/২ কাপ |
রসুনবাটা | ৩টেবিল চামচ |
আদাবাটা | ২টেবিল চামচ |
এলাচ,গোলমরিচ, লবঙ্গ বাটা | ১ টেবিল চামচ |
দারচিনি | ১টুকরো |
তেজপাতা | ২টি |
আলুবোখারা | ৭/৮টি |
কাঁচামরিচ | ৪/৫টি |
জয়িত্রী | ২পিস |
জায়ফল | ১/৪ টুকরো |
লবণ | ৪ চা চামচ |
চিনি | ২ চা চামচ |
হলুদগুড়ো | ৪ চা চামচ |
মরিচগুড়ো | ৪চা চামচ |
চিনাবাদামবাটা | ১টেবিল চামচ |
কাজুবাদাম বাটা | ১ টেবিল চামচ |
জিরা বাটা | ৩টেবিল চামচ |
তরল দুধ | ১/২ কাপ |
তেল | ১/২ কাপ |
প্রথম ধাপ |
---|
প্রথমেই ব্লেন্ডারের মধ্যে পরিমান অনুযায়ী টকদই দিলাম।তার সাথে জায়ফল,জয়িত্রী, চিনি এবং বেরেস্তা দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে মিহি পেস্ট করে নিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ |
---|
একটি বড় পাতিলে পরিমাণ মত তেল দিয়ে দিলাম। তারপর গরম হলে তেজপাতা, দারচিনি দিয়ে ভেজে নিলাম।এরপরে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে আবারও ৩/৪ মিনিট ভাজলাম।
তৃতীয় ধাপ |
---|
এইধাপে পরিমাণ মত আদাবাটা দিলাম।তারপর কিছুক্ষণ ভাজলাম।আবার রসুনবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভেজে নিলাম।
চতুর্থ ধাপ |
---|
এখন পেঁয়াজবাটা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভেজে নিলাম।পেঁয়াজের পানি শুকিয়ে এলে অল্প পরিমাণ পানি আবার যোগ করলাম যাতে পুড়ে না যায়।
পঞ্চম ধাপ |
---|
এই ধাপে দিলাম লবণ,হলুদ গুড়ো আর মরিচগুড়ো। সবকিছু ভালোভাবে মিশিয়ে ভেজে নিলাম।
ষষ্ঠ ধাপ |
---|
এখন দিয়ে দিলাম জিরা বাটা,এলাচ বাটা আর লবঙ্গ আর গোলমরিচ বাটা। সবকিছু একসাথে দিয়ে আরও কিছুক্ষণ মসলাগুলো কষিয়ে নিলাম।
সপ্তম ধাপ |
---|
এইধাপে সামান্য একটু পানি দিলাম যাতে মসলা পুড়ে না যায়। আর পানি দেয়ার পর ৫মিনিট একদম লো ফ্লেমে নেড়েচেড়ে কষিয়ে নিলাম।তারপর মাটন দিয়ে দিলাম।
অষ্টম ধাপ |
---|
মাটন দেয়ার ২মিনিট পর আমি মসলার সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছি।ধীরে ধীরে সবকিছু মিশিয়ে হাই ফ্লেমে ৩-৪ মিনিট কষিয়ে নিলাম।
নবম ধাপ |
---|
এখন ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ১৫-২০ মিনিট মিডিয়াম ফ্লেমে রান্না করলাম।এরমধ্যেই মাটন থেকে পানি বেরিয়ে আসবে। আর এভাবেই মাটন সিদ্ধ হতে থাকবে।
দশম ধাপ |
---|
এখন দিলাম পূর্বে ব্লেন্ড করা টকদইসহ মসলার পেস্ট,তারপর দিলাম কাজুবাদাম বাটা,চিনাবাদাম বাটা আর কিসমিস বাটা।সবকিছু দিয়ে আবারও নেড়েচেড়ে বেশ অনেক্ষণ কষিয়ে রান্না করলাম।তারপর ঢাকনা দিয়ে সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করলাম।
একাদশ ধাপ |
---|
মাটন যখন একেবারে সিদ্ধ হয়ে আসবে তখন এরমধ্যে পরিমাণ মত তরল দুধ দিয়ে দিলাম।তারপর কিছু আলুবোখারা আর গোটা কাঁচামরিচ দিয়ে দিলাম।সাথে দিলাম পেঁয়াজ বেরেস্তা।এরপর একদম লো ফ্লেমে আরও ১৫ মিনিট রান্না করে নিলাম।ঝোল অনেকটা ঘন হয়ে এলো,আর রান্না হয়ে গেল মজাদার রেজালা।
পরিবেশন |
---|
জাস্ট অসাধারণ হয়েছিল খেতে।আর এটা কিন্তু প্রথমবার তৈরি করেছিলাম। এত মজা লেগেছিল কিন্তু আমি নিজেই খেতে পারিনি,হাহাহা।যদিও লাস্ট পর্যায়ে এসে একটু ঝোল পেয়েছিলাম।
আজকের রেসিপিটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।সবার মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
যে কোন জায়গার মধ্যে সুস্বাদু মাটন রেজালা দেখলেই আমার জিহ্বার মধ্যে জল চলে আসে। আপনি দেখছি বাসায় বসে খুবই সুন্দর করে সুস্বাদু মাটন রেজালা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা মাটন রেজালা রেসিপি টি দেখে আমার জিহ্বায় জল চলে এসেছে আপু। আপনি বেশ দারুন ভাবে সুস্বাদু মাটন রেজালা রেসিপি টি তৈরি করেছেন।
আসলে এটা অনেক লোভনীয় একটা রেসিপি। আমি নিজেই যতবার ছবিটা দেখি ততবার ইচ্ছে করে যেন আবার রান্না করে খাই। তবে অনেক প্রসেসিং সেজন্য তৈরি করা হয় না সব সময়।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আহারে আপু, নিজে রান্না করে নিজেই খেতে পারলেন না। তবে মেহমানরা খেয়ে মজা পেয়েছে এতেই তৃপ্তি। যাই হোক আসলেই খাবারটা বেশ লোভনীয় লাগছে। ধন্যবাদ
কি আর করার আপু, তারপর তো ইচ্ছে মতোই খেয়েছি পরেরবার রান্না করে। ধন্যবাদ আপু।
সুস্বাদু মাটন রেজালার রেসিপি দেখে খুবই লোভ লাগলো।আপনার পরিবেশনা যে কাউকে লোভ লাগিয়ে দিবে।খুবই চমৎকার হয়েছে। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
দেখতে যেমন লোভনীয়, খেতেও তেমনি খুব মজার ছিল। আর যে এটা একবার খাবে সে বারবার খেতে চাইবেই।
সুস্বাদু মাটন রেজালা রেসিপি দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আপনার রেসিপি পরিবেশনে আমার অনেক ভালো লেগেছে। এত মজার রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা দেখে। আসলেই কিন্তু এটা অনেক বেশি সুস্বাদু ছিল।
আপনি আজ আমাদের মাঝে অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখেই তো আমার লোভ সামলানো মুশকিল খুব খেতে ইচ্ছে করছে।সুস্বাদু মাটন রেজালা রেসিপি, প্রতিটি ধাপ বেশ চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে পর্দায়ক্রমে শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
প্রথমবার তৈরি করেছি হিসেবে বেশ মজাই হয়েছিল। আর ঐ যে বললাম না আমার জন্য ছিলই না।
সুস্বাদু মাটন রেজালা রেসিপি অসাধারণ একটা রেসিপি তৈরি করেছেন। রেসিপি কালারটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। দেখে সুস্বাদু মনে হচ্ছে। তাই খেতে ইচ্ছা করছে। আপনার রেসিপির পরিবেশে আমার ভালো লেগেছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, আসলে মাটন রেজালা এত সুস্বাদু হয় যে বারবার খেতে ইচ্ছে করবে।
আসলে মজাদার এবং সুন্দর রেসিপি বানিয়ে আত্মীয়-স্বজনদেরকে খাওয়াতে পারলে তৃপ্তি অনুভব হয়। এত বেশি মজা হয়েছিল যে আপনার ভাগেই পড়েনি তা বুঝতে পারছি। মাটন রেজালা চমৎকার একটি লোভনীয় রেসিপি আপু। ভীষণ চমৎকার সুন্দর হয়েছে আপনার রেসিপিটি। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রণালী চমৎকার সুন্দরভাবে আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার কাছে যেমন রান্না করতে ভালো লাগে তেমনি মেহমান আপ্যায়ন করতেও ভালো লাগে। তবে এটা খেয়ে যে তৃপ্তি পেয়েছে সবাই সেটা বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছি আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
https://x.com/bristy110/status/1808710689244291090
আপনি আজকে খুবই মজাদার মাটন রেজালা রেসিপি তৈরি করেছেন। রেসিপি দেখে ভীষণ লোভ লেগে গেলো। তবে কখনো মাটন রেজালা রেসিপি খাওয়া হয়নি। কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে কতটা সুস্বাদু হয়েছিলো। ধন্যবাদ রেসিপি তৈরির প্রতিটি ধাপ সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য।
যদি কখনো সুযোগ পান একবার এভাবে তৈরি করে খেয়ে দেখবেন। আশা করি স্বাদ ভুলবেন না, তার পাশাপাশি আবারও খেতে মন চাইবে।