ছেলের ১ম জন্মদিনে একটুখানি আনন্দ ভাগ করে নেয়ার মুহূর্ত।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।
২১ জুন ২০২২ তারিখে আমার ছেলে জন্মগ্রহণ করেছিল। আর এই ২১শে জুন ২০২৩ তার প্রথম জন্মবার্ষিকী গেল। এইতো যেন সেদিন তার পৃথিবীতে আগমন হয়েছিল কিভাবে যে একটা বছর তিলে তিলে পার করে ফেলেছে তা যেন টের পাইনি। একটি মেয়ের জীবনে হয়তোবা মা হওয়াটা অনেক বড় স্বার্থকতা। কারণ "মা", এটা শুধুমাত্র একটা শব্দ নয় কিন্তু এর মাঝে রয়েছে মমতা, আদর, ভালোবাসা। প্রথম দিন থেকে যেভাবে একজন মা তার সন্তানকে লালন পালন করে সেভাবে অন্য কেউ হাজার চেষ্টা করলেও করতে পারবে না।
সেই প্রথম দিন থেকে এই পর্যন্ত প্রতিটা দিনই আনন্দ দুঃখ সব কিছু মিলিয়েই পার করা হয়েছে। যদিও প্রথম তিন মাস অনেক বেশি কষ্ট করতে হয়েছে। কারণ সুস্থতা খুব তাড়াতাড়ি হয়নি,অনেক অনেক কষ্টে দিনগুলো পার করেছিলাম,সেটা হয়তো অনেকেরই উপলব্ধির বাইরে। তাছাড়া বাবু অনেক বেশি কান্না করতো, ঘুমাতে দিত না,সারারাত তার কান্নাকাটি, ঘুম নেই।অনেকে বলতো সে যখন ঘুমায় তখন মা ও একটু ঘুমিয়ে নিতে। কিন্তু এটা সবাই বলতে পারে,একজন মায়ের যে বাকি কাজগুলো আছে সেগুলো যে বাবু ঘুমানোর সাথে সাথেই করতে হয় তা হয়তো কেউ দেখে না।প্রত্যেক মা কে এই সময় গুলো পার করতে হয়।হয়তো কারো ভালোভাবে কেটে যায়, আর নয়তো কষ্টেই কাটে। তবে আমার দিনগুলো সীমাহীন কষ্টে কেটেছিল,দিনগুলো মনের মাঝে গাঁথা রয়ে গেল।
যাইহোক,ছেলেটা এখনো তাই। ঘুমায় না ঠিকমত, ঘুমাতে চায়ও না। কোনো কিছুর হালকা আওয়াজেই তার ঘুম ভেঙে যায়।এভাবেই কাটছে দিন। আসলে তার জন্মদিন আমার কাছে অনেক বেশি স্পেশাল। কিন্তু বর্তমানে আমার এত ব্যস্তময় সময়ের মধ্যে থেকে সময় খুঁজে বের করে কিছু করাটাও অনেক বেশি মুশকিল। কারণ যেদিন আমার ছেলের জন্মদিন ছিল সেদিন সকাল বিকেল দুই বেলাই ক্লাস ছিল। সেজন্য ইচ্ছে থাকলেও অনেক কিছুই করা হয়ে ওঠেনি। ওর বাবা প্রথমে ভেবেছিলো যে আমাদের কাছের কিছু লোকদের বাসায় ডাকবে ছোটোখাটো আয়োজন করবে।আমারও সেরকম ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আমার যে অবস্থা, নিজের খাওয়ার জন্য ঠিকমত সময় পাইনা, আগের মত ছেলেটার কেয়ার নিতে পারি না,সে জায়গায় ২বার ক্লাস করে এসে কিভাবে কি করব।
ভেবেছিলাম যদি সুযোগ পেতাম হয়তো ছেলের জন্য নিজ হাতে একটা কেক তৈরি করার চেষ্টা করতাম। তবে এই এক বছরের মধ্যে তাকে আমি কখনোই দুধ অথবা মিষ্টি জাতীয় কোন কিছু খাওয়াই নি। কারণ একটা এক বছরের বাচ্চার জন্য এগুলো অনেক বেশি ক্ষতিকর। এতটাই ক্ষতিকর যেটা আমরা কেউই বুঝি না। তাও যেহেতু একটা খুশির দিন এই দিনটা একদম মনের মত করে করতে চাইলেও হয়তো সম্ভব হবে না। ছেলেও অনেক ছোট, তার জন্য অনেক কিছুই হয়তো বা করতে ইচ্ছে হলেও সে বুঝবে না। যখন সন্ধ্যা বেলায় ক্লাসে গিয়েছিলাম আসার সময় ভাবলাম ছোট্ট একটা কেক নিয়ে যাই। কারণ আমরা বাসায় মাত্র তিনজন ছিলাম। আর সেই হিসেবে বড় কেক নিয়েও কোন লাভ হবে না, অযথাই নষ্ট হবে। ছেলেকেও কিন্তু খাওয়াবো না, শুধুমাত্র একটু আনন্দ ভাগ করে নেয়া সবাই মিলে।যাই হোক পরবর্তীতে স্টারলাইন সুইটস থেকে ছোট্ট একটা কেক নিলাম। পেস্ট্রি কেক বলা হয় এগুলাকে যা হোক কেক নিয়ে বাসায় এলাম, যখন আমার ছেলেকে কেকটা দেখালাম তখন তো সে এমনিতেই ভীষণ খুশি।সে ভেবেছে কোনো খেলনা।
ওর হাতে দেয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিল।তারপর ওকে নিয়ে আমি কেকটা কাটলাম এবং সবাইকে দিলাম। আমরা খাচ্ছি দেখে ও এগিয়ে এসেছিল খাওয়ার জন্য কিন্তু আমি দিতে নিষেধ করেছিলাম। যেহেতু তার জন্মদিন আর সেই হিসেবে বাধা অতিক্রম করলাম। ছোট্ট একটু ওর মুখে দিলাম তখন সে আবার খাওয়ার জন্য চলে এলো। মানে এটা নিয়ে অনেক মজা হল। এরপর আমি যখন কেকটা লুকিয়ে ফেললাম তখন সে শুরু করে দিল কান্নাকাটি। কোনো মতে মানিয়ে নিয়ে বাকিটা পরে আমরা খেয়ে নিলাম। কিন্তু তার মন আমাদের খাওয়ার দিকেই রয়ে গেল। যখন দেখছে যে আমরা এটা বের করেছি তখন আবার শুরু করেছে। এভাবেই আমাদের সেইদিনের মুহূর্তটা কেটেছিল, খুব ভালো লেগেছিল।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | একগুচ্ছ অনুকবিতা |
ক্যামেরা.মডেল | জে৫ প্রাইম |
ফটোগ্রাফার | @bristy1 |
লোকেশন | ফেনী |
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমে আপনার সন্তানের প্রথম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে চাই শুভ জন্মদিন। আশা করি ওর জীবনের বাকি দিনগুলো যেন আনন্দের সাথে কাটে। বড় হয়ে যেন আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে সেই কামনাই করি।
আপু আপনার ছেলের জন্য রইল শুভ জন্মদিন। আপনার ছেলের জন্মদিনের আনন্দটা যে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন খুব ভালো লাগলো আপু। আপনার ছেলের জন্য রইল অবিরাম ভালোবাসা এবং দোয়া। বড় হয়ে সে যেন মানুষের মত মানুষ হতে পারে এই কামনাই করি।