আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।

আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার আইলটস এক্সাম এর প্রথম দিনের অনুভূতিগুলো। আসলে আইলটস এক্সাম শেষ হয়েছে সেই আগষ্টের ১০ তারিখ কিন্তু আপনাদের মাঝে সুযোগ করে মুহূর্তগুলো শেয়ার করা হয়নি। কারণ আইলস এক্সাম এর পর বাসায় এসে এবং বাকি সব কাজকর্ম গোছাতে হয় এক্ষেত্রে অন্যান্য কাজ ছিল তাই আর শেয়ার করে ওঠা হয়নি। তবে সময় সুযোগ করেই আপনাদের মাঝে শেয়ার করব ভেবেছিলাম। তাই আজ চলে এলাম আপনাদের মাঝে আমার আইলটস এক্সাম দেয়ার প্রথম অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে।

প্রথমেই বলে রাখি এই এক্সাম দেয়াটা আমার জীবনের বেস্ট একটা এক্সাম ছিল। কারণ আমি পূর্বে কখনোই এই এক্সাম দেইনি। দেড় মাস সময়ের মধ্যে মাত্র ১৮ দিন আইলটসের ক্লাস করেছিলাম, মাঝে স্পোকেন ক্লাসও করেছিলাম। কিন্তু বাসায় খুব একটা টাইম দিতে পারতাম না। যদিও ফেনিতে বাসা নিয়েছিলাম বাড়ি থেকে আসা-যাওয়ার ঝামেলা এড়াতে। কিন্তু বাসায় তো সেই একই রকম কাজকর্ম থাকে। আর বাবুর জন্য ডেইলি ১ থেকে দেড় ঘন্টার বেশিও পড়া যেত না। কোন রকমে কাজগুলো শেষ করতাম। তবে আমার প্রায় দুটো মাস কেটে গেল এভাবেই।

রেজিট্রেশন করার পর এক্সাম ডেট পেয়ে গেলাম আগস্ট মাসের ৭ তারিখ এবং ১০ তারিখ। ৭ তারিখে ছিল স্পিকিং টেস্ট আর ১০ তারিখে ছিল রাইটিং, রিডিং আর লিসেনিং টেস্ট। যাইহোক আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ৭ অগস্ট অর্থাৎ আমার স্পিকিং টেস্টের দিনের মুহূর্তটি। ৬ তারিখ সকালবেলায় তো আমরা চিটাগাং এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আর ৭ তারিখ সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর মোটামুটি কিছুটা প্রিপারেশন কাভার করলাম। তারপর ১১ টা ২০ এর দিকে বাসা থেকে বের হলাম। কারণ সেখানে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে প্রথমে, তাই আগেই যেতে হবে। প্রথমে বের হওয়ার পর আমরা লোকেশন নিয়ে নিলাম। কারণ পূর্বে যেহেতু আমরা কখনো সেখানে যাইনি সে ক্ষেত্রে আমাদের চিনতে অসুবিধা হবে তাই ম্যাপ থেকে লোকেশন নিয়ে চলে গেলাম আগ্রাবাদ এর উদ্দেশ্যে।

আগ্রাবাদের রফিক টাওয়ারের আট তলায় ছিল ব্রিটিশ কাউন্সিলের অফিস,আর সেখানেই স্পিকিং টেস্ট নেয়া হয়। যাইহোক প্রথমে নিচে গিয়ে আমরা লোকেশন অনুযায়ী রফিক টাওয়ারে গেলাম। সেখান থেকে আট তলায় চলে গেলাম। কিন্তু ব্রিটিশ কাউন্সিলের সামনে একজন মহিলা ছিলেন এবং তিনি বললেন শুধুমাত্র আমি যেতে পারব, আমার হাজব্যন্ড যেতে পারবে না। তাই সে সেখান থেকে আবার নিচে চলে গেল। যাই হোক যেহেতু এটা একটা রেস্ট্রিকটেড এরিয়া তাই সেখানে চেক আউট করে নিতে হয়। চেক আউট করার পর আমি ভিতরে চলে গেলাম । সেখানে গিয়ে প্রথমে আমার ব্যাগ লকারে রেখে চাবি নিয়ে নিলাম।তারপর আমার পাসপোর্ট এর ফটোকপি একজন স্যারকে দেয়ার পর তিনি ডাটা এন্ট্রি করে। তারপর আমাকে রেজিট্রেশন রুমে ডাকা হয়।

রেজিস্ট্রেশন এর জন্য পাসপোর্ট নিলো,তারপর ছবি তুললো,ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিলো। এক্ষেত্রে এক্সামের আগে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে যেতে হয় আবার এক্সাম শেষে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হয়।রেজিস্ট্রেশন প্রসেসিং শেষ করার পর সেখানেই বসে ওয়েট করলাম।আমার এক্সাম টাইম ছিল ১টা থেকে। কিন্তু আমার আগে থেকেই আরো কয়েকজন ছিল,সবার এক্সাম নিতে নিতে টাইম লেগে যায়।তাই আমার এক্সাম শুরুজয় ২টা থেকে।ভিতরে কি যে ভয় লাগছিল,ভিডিও কলে স্পিকিং টেস্ট হবে।এটা ভাবতে ভাবতেই আমার হার্টবিট বাড়তে শুরু করল।কেমন হয়, কিভাবে আন্সার করি সবকিছু নিয়ে খুব প্যারাদায়ক মুহূর্ত পার করেছি সেদিন।আর একা ছিলাম বলে ভয় লেগেছে,কারণ স্পিকিং টেস্ট নেয়ার ক্ষেত্রে একজন একজন করেই নিয়েছে।

আমার সময় ঘনিয়ে এলো।একজন টিচার প্রথমে টেস্ট রুমে গেলেন,তারপর আমার নাম এন্ট্রি করে ক্যান্ডিডেট নাম্বার বলে ডাকলেন।আমিও গেলাম,কি যে ভয়ে ছিলাম আমি,মনে পড়লে এখনো ভয় লাগে হাহাহা।যাইহোক, স্যার প্রথমে কম্পিউটারে টেস্টটেকার এর সাথে নিজে করভার্সেশন করলেন। তারপর আমাকে হেডফোন দিয়ে চেক করতে বললেন সব ঠিক আছে কিনা। এক্সামিনারকে দেখে মনে হয়েছিল ইন্ডিয়ান,পাকিস্তানি বা বাঙ্গালি কেউ হবে।তখন তিনি নিজের পরিচয় বললেন।তারপর আমার এক্সাম শুরু হলো।আমার কাছে তখন মনে হলো উনি যা যা বলছেন আমি তা বলেই শেষ করে ফেলি।যত তাড়াতাড়ি পারি তত তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারলেই আমার বিপদ কাটবে,কি যে অবস্থা হলো।যাইহোক পার্ট-১ তো গেল পরিচয় নিয়ে।এবার পার্ট-২। যদিও সেটা আমার কমন ছিল কিছুটা।আর পার্ট-৩ তে উনি তো প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করতেই আছেন।আমি তো মনে মনে ভাবছি এত কিছু জেনে কি করবেন একটু তাড়াতাড়ি শেষ করে দেন না,হাহাহা।যাইহোক বেশ অনেক্ষণ সময় গেল, এক্সাম শেষ হলো। আমি তো মনে মনে খুশি, যা যা বলেছি তার উপরে আমার যা দরকার সেই ব্যান্ড দিলেই হলো।

এরপর আবার স্যারকে ডেকে আমি সব প্রসেসিং শেষ করলাম আর আবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিলাম।এখানে একটা কথা না বললেই নয়,ব্রিটিশ কাউন্সিলে প্রত্যেকটা মানুষ অনেক বেশি আন্তরিক।তাদের কোনো কথায় বিরক্তি দেখি নি।অনেক বেশি হেল্পফুল তারা।আমার জীবনে বেস্ট এক্সাম ছিল আইলটস এক্সাম,এটা মানতেই হবে।এরপর তো আবার লকার থেকে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।যেহেতু মামার বাসায় গিয়েছি সেক্ষেত্রে কিছু কেনাকাটা করে বাসায় চলে গেলাম।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ

ক্যামেরা	স্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণ	লাইফস্টাইল
ক্যামেরা.মডেল	জে৫ প্রাইম
ফটোগ্রাফার	@bristy1
লোকেশন	ফেনী

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

💦

💦 BRISTY 💦

💦

_{Posted using SteemPro Mobile}