অসুস্থতা যেন পিছু ছাড়ছে না||নিভৃতকে নিয়ে আবারও হসপিটালে ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমার বাংলা ব্লগ এর প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,তবে মনটা ভালো নেই।প্রিয় মানুষ যদি অসুস্থ থাকে তখন কিভাবে মন ভালো থাকবে বলেন তো।তবে সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।


বর্তমানে বাংলাদেশের এই বৈরী আবহাওয়ায় সেইফ থাকাটা খুবই কষ্টকর। কারণ এখন বাংলাদেশে এমন একটা আবহাওয়া তৈরি হয়ে গিয়েছে যেখানে খুব তাড়াতাড়ি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে অসুস্থ মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হলো শিশু এবং বৃদ্ধ। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম আর রোগ তাদের বেশি আক্রমণ করে। এই কথা কেন বলছি? এইতো ক'দিন আগেই ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গেলাম। মাত্র ১৫ দিন হয় নাই সে আবার অসুস্থ হয়ে গেল।

IMG_20221016_153311.jpg

অসুস্থতার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।যেদিন সারা বাংলাদেশেই কারেন্ট ছিল না সেই দিন থেকেই আমার ছেলের অসুস্থতা শুরু হয়ে যায়। এর কারণ হলো আমাদের বাড়িতে তো প্রচুর গরম। সেদিন রোদ উঠেছিল তীব্রভাবে। সবগুলো চার্জার ফ্যানের চার্জ শেষ।এমতাবস্থায় বাবু কোন মতেই ঘুমায় না। এমনিতেও সে কারেন্ট গেলে ঘুমায় না। চার্জার ফ্যান থাকলেও সে তেমন একটা ঘুমায় না। ঠান্ডা পড়লে কিছুটা ঘুমায়। সেদিন পুরো শরীর ঘেমে এমন এক অবস্থা। এমনিতেই কান্নাকাটি করে তারপরে ঘর্মাক্ত গায়ে ঠান্ডা লেগেই গেল।

তারপর দিন থেকেই তার সর্দি কাশি শুরু হলো। সর্দি-কাশি চরম পর্যায়ে। সর্দির কারণে তার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। তার পাশাপাশি যখন কাশি দেয় তখন যেন তার দমটা বন্ধ হয়ে আসে। এমন অবস্থা দেখে আমি একদমই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। এমনিতেই সে জন্মানোর পর থেকে তার ঠান্ডা লেগে গেছে। এখনো পর্যন্ত ওষুধ বন্ধ ছিল এমন একদিনও যায়নি। প্রত্যেকটা দিন তার ওষুধ ধরা আছেই।

20221009_134530.jpg

সিএনজিতে, যখন যাচ্ছিলাম

প্রতি মাসে আমরা চেকআপ করাই। কারণ কখনো যদি ঠান্ডা লেগে যায়। আর এমনিতেই আমাদের দেশের আবহাওয়া এখন যে অবস্থা, তার সাথে কারেন্টের যে অবস্থা,সে কারণে বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে যায়। এমনকি ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়ার দিকে চলে যায়।আমার এক ননদের ছেলের নিউমোনিয়া হয়ে সে এনআইসিইউ তে ছিল ৭দিন।তাই আমরা কোন মতেই দেরি করি না। অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে চলে যাই।
20221009_141328.jpg

হসপিটালে যাওয়ার পর

এখানে যেহেতু প্রচুর গরম আর কারেন্টও থাকে না, সেই হিসেবে আমাদের বাড়িতে গেলাম। আমাদের বাড়িতে যাওয়ার কারণ হলো সেখানে কিছুটা ঠান্ডা আবহাওয়া আর খোলামেলা পরিবেশ। যার কারণে সেখানে কারেন্ট গেলেও সে ভালোই ঘুমাতে পারে। ঐদিন ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য রওনা হলাম আমাদের বাড়ি থেকে। আমি এবং আমার আব্বু সহ রওনা হলাম। আর আমার হাজব্যান্ড ফেনী থেকে দাগনভূঞাতে এসেছিল।

20221009_141416.jpg

নিভৃত যখন তার নানার কোলে থেকে সবকিছু দেখছে

IMG-20221016-WA0001.jpg

কি যেন বলতে চাচ্ছে

হসপিটালে গিয়ে আমরা ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করলাম কিছুক্ষণ। ডাক্তার তখন নামাজ পড়তে গিয়েছিল। যাই হোক যখন আমাদের নাম্বার আসলো তখন আমরা ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়ার পর ডাক্তার প্রতিবারের মতোই বাবুকে চেক করে নিল। সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু ওই যে বললাম সর্দি কাশি এগুলো একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। আর তখন বলল বুকে হয়তো কফ জমেছে। এর জন্য একটা এক্সরে করাতে হবে।

IMG-20221016-WA0016.jpg

ডাক্তার তাকে দেখছে

20221009_145615.jpg

এক্সরে করানোর অপেক্ষায় বসে থাকা

পরলাম তো আরেক ঝামেলায়, যেহেতু কারেন্ট খুব বেশি ডিস্টার্ব করতেছিল সেদিনও কারেন্ট ছিল না। আড়াই ঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো এক্সরে করানোর জন্য।পরদিন আবার আসা সম্ভব হবে না, এজন্যই অপেক্ষা করতে থাকলাম। ডাক্তার দুপুর আড়াইটা থেকে চারটা পর্যন্ত থাকে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে কারেন্ট আসলো না। আমরা এক্সরেটা করাতে পারলাম না ডাক্তার থাকাকালীন। কিন্তু আমরা অপেক্ষা করলাম। কারণ বাবুকে নিয়ে তো বারবার আসা যাবেনা। সেজন্য যতক্ষণ পর্যন্ত কারেন্ট না আসে তখন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম এবং এর মধ্যে ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দিয়েছিল।

20221009_163454.jpg

যখন এক্সরে রুমে গিয়ে বেডে শোয়ানো হলো,কি কান্না😥

কারেন্ট আসার পরে তখন বাবুকে এক্সরে রুমে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিল। সেখানে সে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। এরপরে আমরা এক্সরে রিপোর্ট নেব, কিন্তু সেখান থেকে তারা বলল যে এক্সরে রিপোর্ট আজকে আর হবেনা। আগামী কালকে আসবেন,ডাক্তার দেখিয়ে নিবেন। এখন আর কি করার আমরা বাড়িতে চলে গেলাম ওষুধ নিয়ে।

20221009_135307.jpg

বাড়ি ফেরার সময় তোলা

পরদিন ডাক্তারের সাথে কথা বলার পর তিনি বললেন বুকে কফ আছে তবে খুবই অল্প।কিন্তু যেহেতু সর্দি কাশি আছে নেবুলাইজার দিলেই ঠিক হয়ে যাবে। এই জন্য টানা সাত দিন তিন বেলা করেই তাকে নেবুলাইজার দিতে হবে। ডাক্তারের কথা মতে প্রতিদিন নেবুলাইজার দেয়া লাগে।

20221009_163707.jpg

এক্সরে করার পর

আর এমনিতে বাচ্চারা অসুস্থ থাকলে কান্নাকাটি প্রচুর করে, প্রচুর জ্বালাতন করে। আর আমাদের নিভৃত এমনিতেই জ্বালাতন বেশি করে। আর অসুস্থতা থাকলে বুঝে নেন সে কি করে। যার কারণে আমার প্রতিনিয়ত কাজ করা একদম কষ্টকর হয়ে যায়। যতটুকু সম্ভব হয় ততক্ষণই আমি কাজ করি। সন্ধ্যাবেলায় যখন তাকে নিয়ে নেবুলাইজার দিচ্ছিলাম তখন তার বাবা কিছু ছবি তুলে নিল। মোবাইলে ছবি তোলার সময় তার তাকানো দেখে ভয় পেয়ে গেলাম।

IMG-20221016-WA0026.jpg

নেবুলাইজার দেয়ার ফাকে সে রাগ দেখাচ্ছে

এইভাবেই চলছে,, জানিনা কবে আমার ছেলেটা সম্পূর্ণ সুস্থ হবে।ওর অসুস্থতা আমার মোটেও সহ্য হয় না,খুব কষ্ট লাগে ও যখন কান্না করে।আপনাদের কাছে আমার বাবুর জন্য দোয়া চাচ্ছি,যেন ও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

images (4).png

20211121_200134.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Sort:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ সবসময় সাপোর্ট করার জন্য

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু গরমে বাচ্চাদের আসলেই অনেক কষ্ট হয়। আর এখনকার আবহাওয়াটাও এই ঠান্ডা এই গরম এতে বাচ্চাদের আরও অসুবিধা হয়। কারেন্ট না থাকলে তো সমস্যা হওয়ারই কথা ছোট বাচ্চা। তারপর ইদানিং দেখছি বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে গেলে নেবুলাইজার দিতে হয়। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর শেষ পর্যন্ত আপনারা এক্সরে করিয়ে নিতে পেরেছেন রিপোর্ট পরের দিন দিলেও কোনো অসুবিধা নেই। আপনার বাচ্চাটা এখন সুস্থ আছে তো আপু? খেয়াল রাখবেন ছোট বাচ্চাদের কে নিয়ে সবসময় টেনশনে থাকতে হয়। কফটা বুকে বসে গেলে তো একটু সমস্যা হয়ই।

 2 years ago 

আগে থেকে অনেকটা ভালো আছে আপু।দোয়া করবেন আপনারা।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

সবসময় সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে এমন আবহাওয়ায় বাচ্চাদের অসুস্থতা বেশি হচ্ছে। কয়েকদিন আগে দেখলাম নিবৃত কে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলেন। এখন আবার ও ডাক্তারের কাছে গেলেন। এক্সরে করানোর সময় অনেক বেশি কান্নাকাটি করছিল। নাশিয়াকে ও একবার এক্সরে করানোর সময় অনেক বেশি কান্নাকাটি করেছিল। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নেবুলাইজার ব্যবহার করবেন। আসলেই বাচ্চারা অসুস্থ হলে একেবারেই ভালো লাগেনা। আশা করি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। ওর জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

জি আপু,ও খুব তারাতারি অসুস্থ হয়।আবহাওয়া এখন খুবই খারাপ।

 2 years ago 

সন্তানরা হচ্ছে পিতা মাতার কলিজার টুকরা। সেই কলিজার টুকরোর যদি কিছু হয়, তাহলে তো মন ভালো না থাকারই কথা। আর বর্তমানে ওয়েদার চেঞ্জ হওয়ার কারণে শিশুদের এরকম হচ্ছে। আপনার সোনামনির জন্য শুভকামনা রইল। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যেন দ্রুত আর গোলাপ করে।

 2 years ago 

ছেলের কষ্ট তো সহ্য করা যায় না।সকল বাবা মা ই চায় তাদের সন্তানেরা সুস্থ থাকুক।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65