নিভৃতের খুনসুটি।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।
জীবনের প্রত্যেকটা সময়কে উপভোগ করতে জানলে জীবন অনেক বেশি সুন্দর।আমরা আমাদের জীবনকে শৈশব থেকেই উপভোগ করি। হয়তো জেনেবুঝে আনন্দ করি নয়তো স্বভাবের ছলে প্রতিনিয়ত সময়গুলোকে আনন্দের মাধ্যমে কাটাই। ঠিক তেমনি কিছু কথা এবং অনুভূতি নিয়ে আজকে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
বিষয়টা মূলত আমার ছেলেকে কেন্দ্র করে লেখা।আপনারা হয়তো ভাববেন তার বিষয়ে কোনো গুরুতর কথা বলবো,তাই না।ধরুন তাই, কারণ যার সন্তান আছে সেই একমাত্র বোঝে সন্তানের মায়া কেমন। মা বাবার কাছে সন্তান অনেক বেশি আদরের।যেমনটা আমরা আমাদের বাবা মায়ের কাছে আদরের আর অনেক যত্নের ছিলাম এখনো আছি।ঠিক তেমনি আমাদের সন্তানেরাও আমাদের নিকট অতি আদরের।তাদের কোনো কিছু হলে আমাদের মন যেন ঠিক থাকে না।তারা খুশি থাকলে,খাবার খেলে,মন খুলে হাসলে বা খেললেই যেন আমাদের শান্তি লাগে।
এক্ষেত্রে আমার ছেলের কথাই বলি।সকালে ঘুম ভাঙবে আমার একটু পরেই।যখন বুঝতে পারে আমি পাশে নেই তখনই উঠে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। অন্য কেউ এসে যদি ওকে কোলে নিতে চায় তখন সে আরও বেশি কান্না করে আর বিরক্ত হয়।মায়ের নেওটা একটা শব্দ আছে না,আমার ছেলেটা ঠিক সেরকমই।যেখানেই যাবে তার মা লাগবে।মা যেখানে যাচ্ছে তারও সেখানে যাওয়া লাগবে।না যেতে দিলেই কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়।সকালে ওকে ফ্রেশ করিয়ে খাবার দেই হালকা কিসমিস,খেজুর আর কাজু বাদাম। কখনো মন ভরে নিজ হাতে খাবে,কখনো সব ছিটাবে আবার সামনে যাকে পাবে তাকেই খাওয়াবে।আসলে এ সময়টা আমার কাছে খুব আনন্দের লাগে।
আবার এমন হয়েছে সে যখন অনেক ছোট সবেমাত্র হাত পা ছোড়াছুড়ি করা শিখছে তখন ওকে গোসল করাতে নিলেই সে খুব খুশি।পানি দেখলে সে লাফিয়ে পড়তো।আর পানিতে বসাইলেই হাত দিয়ে সেই রকম খেলা যেটা একসময় আমরা পুকুরে নামলে করতাম।ওর এই খুনসুটি গুলো দেখতেই ভালো লাগে।মাঝে মাঝে যেন ফিরে যাই ছোট বেলায়।ও তো সেই ছোট থেকেই মা ছাড়া হতে চায় না। আমার খাওয়া, ঘুম,রেস্ট কোনো কিছুরই ঠিক ছিলনা এমনকি এখনো নেই।১দিন বয়সে যেমন জ্বালাতন করতো এখন তার থেকে একটু বেশিই জ্বালাতন করে।অবশ্য এগুলো ক্ষণিকের খারাপ লাগা তবে সবসময়ই ভালো লাগার বিষয়।
এইতো সেদিন যেন আমার কোল জুড়ে সে এসেছিল। প্রথম দিন আর রাত হসপিটালেই ছিল।সারারাত আমার পাশে শুয়ে কান্না করেছে।আমি আর তার নানু ছিলাম হসপিটালে,আর সবাই ছিল বাড়িতে। এদিকে আমাদের মা মেয়ের ঘুম হারাম করে দিয়েছে সেদিন।প্রথম ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর প্রায় ১ঘন্টা তার কোনো কান্নাকাটি ছিল না। কিন্তু ১ঘন্টা পর যেই শুরু করেছে আর থামেনি।প্রথম রাতের ১টা ভিডিও করেছিলাম, সে কিছুক্ষন পরপরই কান্না করতো।কিন্তু সেই ভিডিও এখন দেখলে কি যে মায়া লাগে তা বোঝানোর মত না। সবসময়ই ও থাকে মায়ের কাছে।এখন পর্যন্ত তাকে কারো কাছে রেখে আমি ৩ ঘন্টা পার করতে পারিনি।
আজ হঠাৎ বসে বসে কমিউনিটির পোস্ট পরছিলাম। তখন ওর হাতে রান্নার একটা বই দিয়েছিলাম।সে কিছু পৃষ্ঠা ছিড়ে পেলেছিল আবার দেখা যাচ্ছে বইয়ে হাত রেখে পড়ার ভান করছে।মূলত আমি যখন মাঝেমধ্যে বইটি নিয়ে পড়ার চেষ্টা করতাম তখন সে আমার কোলে বসে বসে দেখতো। তাছাড়া ওর খালামণি যখন পড়তে বসতো তখনও সে সেখানেই থাকতো। পড়ালেখায় ডিস্টার্ব করত আর এভাবেই সেই মুহূর্তগুলো নিজের আনন্দের করে নিত।
বাচ্চাদের খেলার জিনিস শুধুমাত্র যে বিভিন্ন রকম খেলনা তা কিন্তু নয়। তাদের খেলা জিনিস হতে পারে বড়দের বই খাতা-কলম অথবা এমন কোন রান্নাবাটির জিনিস যেগুলো তার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তার খেলনা হিসেবে লাগেই। মাঝে মাঝে আমরা রান্না করার সময় ও গিয়ে পাতিল আর চামচ নিয়ে পাতিল এর মধ্যেই নেড়ে নেড়ে রান্না করে। আবার সবাইকে খাইয়ে দেয়। আসলে তারা তো অনুকরণ প্রিয়। তারা যা দেখে তাই করে।সেজন্য আমি চেষ্টা করি তার সামনে মোবাইল কম দেখাতে। কারণ মোবাইল যদি সারাক্ষণ দেখতে থাকে তাহলে তার মোবাইলের প্রতি আসক্তিই হয়ে যাবে।
যাইহোক নিজের ভালোলাগা এবং প্রতিদিনকার কিছু অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। যারা এখনো সিঙ্গেল আছেন তারা হয়তো বা নিজের সন্তানের এই ভালো লাগা অনুভূতিগুলোর মর্ম বুঝবেন না। কিন্তু যাদের সন্তান আছে তারা সেই ছোটবেলা থেকে তাদের মায়া মমতা আদর করে বড় করে আসছেন এবং তারাই শুধুমাত্র এই অনুভূতিগুলো বুঝতে পারবেন। আশা করি আমার আজকের পোস্টটা আপনারা উপভোগ করবেন।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
মোবাইল ও পোস্টের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | লাইফস্টাইল |
ক্যামেরা.মডেল | জে৫ প্রাইম |
ফটোগ্রাফার | @bristy1 |
লোকেশন | ফেনী |
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুব ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্টটি পড়ে। সব বাবা-মায়ের কাছে সন্তান খুবই আদরের জিনিস। আর বাচ্চারা অনুকরণপ্রিয়। বাচ্চারা বড়দেরকে যেটা করতে দেখবে তারা সেটাই শিখবে। অনুভূতি মাখা আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই মন ছুঁয়ে গেলো। আপনার ছেলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা এবং ভালোবাসা ❤️❤️।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনার পোস্ট টি পড়তে গিয়ে আমি মনে মনে ভাবছিলাম আমার মেয়েকে নিয়ে কাটানো সময় ও সেম একই।আমার মেয়েও মা ছারা কিচ্ছু বুঝতো না।এখনও একটু পরে পরেই মা মা বলে চিৎকার করে।আসলে বাচ্চারা দুষ্টমী করলে যেমন রাগ ওঠে তেমনি দুষ্টমী না করলেও খারাপ লাগে।ধন্যবাদ আপু আপনার ছেলেকে নিয়ে কাটানো প্রতিটা সুন্দর মুহুর্তের কথা গুলো শেয়ার করার জন্য।
বেশ সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করলেন আপু অনেক ভালো লাগলো। আসলে সন্তানেরাই এরকম খুনসুটি এই বয়সে অনেক করে। খুনসুটি করলে বেশ ভালোই লাগে। প্রথম দিন সন্তানের সেই অনুভূতিগুলো কখনো ভুলার মত নয়। নিভৃত দেখছি দিন দিন মাশাল্লাহ বড় হয়ে যাচ্ছে। বাবুর জন্য দোয়া করি সে যেন বাবা মায়ের মত অনেক ভালো মানুষ হয়। অনেক ভালো লাগলো আপনার আজকে শেয়ার করা অনুভূতি গুলো পড়ে।