ফেনীতে এমন বিপর্যয় আর কখনো দেখিনি।
♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
গত দুই দিন চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেল।গত পরশু সকালে কারেন্ট গিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারেন্ট নেই। গত হ্যাংআউটের সময় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কারেন্ট ছিল না, পাশাপাশি আমার মোবাইলের চার্জও কম ছিলো।ঘরের বাকিদের কারো কারো মোবাইলে চার্জ একদম কমে গিয়েছিলো।তাই আমার হাজব্যন্ড আর ছোট ভাই হ্যাংআউটে থাকতে পারে নি।
সত্যি বলতে আমার জীবনে এই পর্যন্ত এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হইনি। আর শেষ পর্যন্ত কি হবে তা জানা নেই। এখন পর্যন্ত কত মানুষ যে পানিতে ডুবে গেছে তার কোনো হিসেব নেই। চিন্তা হচ্ছে শিশু,বৃদ্ধ আর অসুস্থ মানুষদের জন্য। ফেনীতে তো অনেকের কথাই শুনছি,ভিডিওতে দেখেছি। কিন্তু আমাদের বাড়ির এক কাকার শ্বশুর বাড়ির অবস্থা শুনে খুব খারাপ লাগলো।তার শ্বাশুড়ি এতটাই অসুস্থ যে অল্প পানিতেও তার হাটতে কষ্ট হয়। আর সেদিন রাতে একদম হুট করেই ঘরের ভিতরে পানি গিয়ে কোমর সমান হয়ে গিয়েছে। ঘরে একটা বাচ্চা আছে।
কোনোমতে গিয়ে অন্য ঘরের দোতলায় উঠেছে। দুইদিন কোনোমতে খেয়ে বেঁচে ছিল। পরে গতকাল তাদের এক আত্মীয় গিয়ে স্পিডবোটে করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে। আর আরও একজনের পরিবার সবার অবস্থা খারাপ। ৩টে বাচ্চা, কিভাবে সামলাবে। শুনলাম তাদের বাবা দেশের বাইরে থেকে চলে এসেছে সবার জন্য।আদৌ তাদের কাছে পোছাতে পেরেছে কিনা জানা হয় নি। এভাবে কত মানুষের জীবন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেল।
ফেনীতে এই প্রথম আর এত জঘন্য প্লাবন হলো। দাগনভূঞা এখন রেড এলার্ট।গত কালই কত শত বা হাজার মানুষকে দাগনভুঞাতে আনা হয়েছে তার হিসেব নেই। কোথাও কোনো বাসা খালি নেই। আমরা প্রথম থেকেই বিভিন্ন জায়গায় বাসার খোঁজ করেছিলাম। পাইনি কোথাও,আর কিছু রিলেটিভ আছে,যাদের বাসা অলরেডি ফিল আপ হয়ে গেছে। কারণ তাদের বোনেদের সবার বাসায় পানি। আমার শ্বশুর বাড়িতে আর আমাদের বাড়িতে এখনো পর্যন্ত পানি বেশি উঠে নাই।
আমার শ্বশুরবাড়িতেও অনেকে আশ্রয় নিয়েছে। কিছু করার নেই। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে পানিতে বসবাস করা সম্ভব না।তাই আমরাও এখন সেখানে যাচ্ছি না,কারণ যাদের বাসায় পানি তারাই সেখানে,আমরা এখনো ভালো আর নিরাপদ আছি। তবুও যেভাবে শোনা যাচ্ছে পানির লেভেল আরও বাড়বে, কতদূর এর উচ্চতা হয় তা জানা নেই। এখন কোনো কিছুই ভালো লাগছে না।
এই পোস্টটা লিখেছি গতকাল রাতে।মোবাইল চার্জ দিয়ে এনেছে বাজারে গিয়ে।কিন্তু আমাদের এখানে ৩ দিন যাবৎ কারেন্ট নেই।মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না, সাথে শুকনো খাবারের ঘাটতি হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আপনাদের সকলের কাছে দোয়া চাই৷ আমাদের আশেপাশে যারা এই দূরাবস্থার মধ্যে আছে তারা সকলে যেন এই মরণফাঁদ থেকে দ্রুত উদ্ধার হতে পারে সেই কামনা করি। আমরাও এখন নিরাপদ নেই,কখন কোন দূর্ঘটনা ঘটে জানিনা।ভালো থাকবেন সবাই।
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খরা বন্যা ভূমিকম্প সুনামি এই সবই প্রকৃতির প্রতিদান৷ কেমন যেন মনে হয় স্যাঁকরার ঠুক ঠুক কামারের এক ঘা৷
সব এসে হু হু করে ভাসিয়ে নিয়ে যায়৷ অত্যন্ত বিপদসংকুল পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ অনেকরকম সাবধানতা অবলম্বন করে থাকতে হয়৷ আশা করব আপনারা সবই লক্ষ্য রাখছেন৷
যাদের ঘর ভেসে যাচ্ছে বা অনেক মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে সেগুলোর ভিডিও দেখা যাচ্ছে না চোখে৷ খুবই বেদনাদায়ক৷ সবার জন্য কামনা করি যেন তাড়াতাড়ি এই বিপদ থেকে মুক্তি পান৷
এই অবস্থায় আপনাদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কি বা করার আছে আপু। খাবার দাবারের নিশ্চয়ই অনেক সমস্যা হচ্ছে। খাবার কি রান্না করার মত অবস্থা রয়েছে? শুকনো খাবারের ঘাটতি হলে তো আরো বেশি বিপদ হয়ে যাবে। যেহেতু এখনো আপনাদের বাসায় থাকা যাচ্ছে তাই বাসায় থাকাই ভালো। সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন পানি কিন্তু হুট করেই বেড়ে যায়। দোয়া রইল আপনাদের জন্য।
স্বরনকালে আমার জন্মের পরে আমি এমন বন্যা দেখিনি।যেটা খুবই ভয়াবহতা বহন করছে।হয়তো দ্রুত আমরা এই কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পাবো।সবাই নিজের অবস্থান থেকে সাহায্য করুন অন্যাকে।
কখন যে কোন দুর্যোগ মানুষকে সমস্যার সম্মুখীন নিয়ে যায় তাকেও জানেনা। আজকের দেশে ১৩ টি জেলায় একই অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এই নিয়ে কত ভিডিও আপলোড হচ্ছে youtube ফেসবুকে। দোয়া করি এই সমস্ত বন্যার কবলে পড়া মানুষদের মহান সৃষ্টিকর্তা যেন দ্রুত রক্ষা করেন এবং আগের মত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনেন।