গল্প :- সম্মান // পর্ব:-০৯

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ মঙ্গলবার।১২ ই মার্চ, ২০২৪ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

religion-2689453_1280.jpg

Source



সকল জনসাধারণ ধার্মিক লোককে কথা দিল যে, তিনি যা চাইবেন তারা সকলেই তাকে সেটা দিতে প্রস্তুত। তখন ধার্মিক লোক সকল জনগণের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা তোমাদের বসতবাড়ি রেখে খুব দ্রুত এই জনপদ ছেড়ে অন্য জনপদে আশ্রয় নিয়ে গ্রহণ করবে। কারণ খুব তাড়াতাড়ি আমাদের এই জনপদের উপর একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানবে। তারপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে মহামারী দেখা দিবে। আর সেই মহামারীতে আমাদের জনপদের প্রায় সকল মানুষই মারা যেতে পারে। তাই আগামী ২৭ মাস আমাদের এই বসবাসের স্থানটি আমাদের কারো জন্য কল্যাণকর নয়। ধার্মিক লোকের মুখে এরকম কথা শুনে জনসাধারণ তো একেবারেই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল। জনসাধারণের চোখে মুখে দুশ্চিন্তা দেখে ধার্মিক লোকটি বললেন, তোমরা সৃষ্টিকর্তার নাম নিয়ে আমাদের জনপদের ঠিক উত্তর দিকে তোমরা পাড়ি দিতে শুরু করো।



তারপরে ধার্মিক লোকের কথামতো সকল জনসাধারণ নিজ নিজ ঘরবাড়ি ফেলে নিজ জনপদের উত্তর দিকে যেতে লাগলো। ধার্মিক লোকের কথা মতো তারা সাথে রাখলো শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। একই সাথে তারা সঙ্গে নিলো তাদের বাড়ির গৃহপালিত পশুপাখি গুলো। জনপদের সকল মানুষ যখন চলে গেল তখন একজন মানুষ নিজ জনপদ ছেড়ে কোথাও গেল না। বরং সে ধার্মিক লোকের সেবা করার জন্য ধর্মীক লোকের কাছেই থাকতে চাইলো। যদিও ধার্মিক লোক তাকেও সেখান থেকে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু সে তো নাছোড়বান্দা। সে কোন মতেই ধার্মিক লোককে ছেড়ে যেতে চাইলো না। তাই শেষ পর্যন্ত তাকে ধার্মিক লোকটি নিজের কাছেই রেখে দিল। আর সে হলো সেই কালু চোর।



তারপর হঠাৎ করে একদিন সেই জনপদের উপর নেমে আসলো বিশাল এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। শুরু হল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়। এমন ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ের সময় কালু ছিল সেই ধার্মিক লোকের পাশে বসে। কালু লক্ষ্য করল যে, ধার্মিক লোকের বাগানে এবং তার চারপাশে ভয়ংকর ঝড়ের কোন প্রভাবই নেই। ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের এরকম আচরণ দেখে কালু বিস্মিত না হয়ে থাকতে পারলো না। কালু মনে মনে ভাবতে লাগলো মহান সৃষ্টিকর্তা এরকম ধার্মিক লোককে নিঃসন্দেহে অনেক সম্মান করে। কালু আরো ভাবতে লাগলো, সৃষ্টিকর্তা তার যোগ্য মানুষকেই উপযুক্ত সম্মান প্রদান করেন। যাহোক এভাবে প্রাকৃতিক মারাত্মক দুর্যোগ হয়ে গেল উক্ত জনপদের উপর দিয়ে, তারপরে মহামারী পর্যন্ত হয়ে গেল। তারপরে দিনের পর দিন ও মাসের পর মাস পেরিয়ে ২৭ মাস পূর্ণ হয়ে গেল। ২৭ মাস পরে সেই জনপদের লোকজন সবাই নিজ জনপদে ফিরে আসলো এবং নিজ নিজ বসত বাড়ি মেরামত করতে লাগলো।



তারপরে জনপদের সকলেই সেই ধার্মিক লোকের সাথে দেখা করতে ধার্মিক লোকের বাগান বাড়িতে চলে গেল। ধার্মিক লোকের সাথে দীর্ঘদিন পরে দেখা করতে যাওয়ার সময় সকলেই অত্যন্ত আনন্দ অনুভব করছিল। ধার্মিক লোকের বাগানবাড়িতে সকলেই যখন পৌঁছালো তখন সকলেই দেখলো যে ধার্মিক লোক যেখানে বসে থাকতেন ঠিক তার পাশের জায়গায় একজন অদ্ভুত লোক বসে আছে। যার মাথার চুল গুলো অত্যন্ত বড় বড় হয়ে গেছে একই সাথে মুখের গোঁফ-দাড়িগুলো আরো বেশি বড় হয়ে গেছে। খুবই ময়লা ও জীর্ণশীর্ণ পোশাক পরিহিত মানুষকে দেখে সকলেই হতবাক হয়ে গেল। আর সে মানুষটি হলো কালু যাকে পরবর্তীতে সকলেই চিনলো। নিজ জনপদের সকল মানুষকে দেখে কালু বাচ্চা মানুষের মতো কান্না শুরু করলো। তারপরে ধার্মিক লোকের কথা জিজ্ঞেস করতে কালু বলে উঠলো, তিনি আর আমাদের মাঝে নেই, তিনি ২১ মাস পূর্বে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেছেন। ধার্মিক লোকের মৃত্যুর খবর শুনে সকলেই "ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন" বলতে লাগলো।



তারপর কালুর নিকট থেকে সকলে জানতে পারলো যে, ধার্মিক লোকটি মহামারীর সময় মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্তু তিনি স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। আর তিনি যেখানে বসে সৃষ্টিকর্তার ধ্যানে মগ্ন থাকতেন সেখানেই তাকে কবর দেয়া হয়েছে। জনসাধারণ কালুকে জিজ্ঞেস করলো, আমাদের ধার্মিক লোককে জানাজা করালেন কে এবং কবর দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করলেন কে? উত্তরে কালু সকলকে জানালো, ধার্মিক লোকের মৃত্যুর সাথে সাথে আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। যখন আমার জ্ঞান ফিরে এলো তখন আমি দেখলাম যে,,



গল্পটির অষ্টম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক





গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির দশম পর্বটি আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।




আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 months ago 

ধার্মিক লোকটা সবাইকে আগে থেকেই সচেতন করে দেওয়ার কারণে, সবাই বেঁচে গিয়েছিল। এমন কি 27 মাস পরে তারা ফিরে এসেছিল আবারও নিজেদের স্থানে। কিন্তু ধার্মিক লোকটা 21 মাসের সময় মৃত্যুবরণ করেছিল শুনে সত্যি অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। উনার মৃত্যুতে প্রত্যেকটা গ্রামবাসী অনেক বেশি শোকাহত হয়েছে তা বুঝতেই পারতেছি। ধার্মিক লোকটা মারা যাওয়ার পর কালু যদি অজ্ঞান হয়ে পড়ে, তাহলে সবকিছু কে করেছিল এটাই তো বুঝতে পারছি না। আশা করছি পরবর্তী পর্বটা আপনি সবার মাঝে তাড়াতাড়ি শেয়ার করে নিবেন।

 3 months ago (edited)

সম্মান গল্পটার প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। আর আজকে এই গল্পের নবম পর্ব পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো। কিন্তু শেষের দিকটা পড়ে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। ধার্মিক লোকটার মৃত্যুর কথা শুনে সত্যি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না বিষয়টা। এটা অনেক বেশি দুঃখজনক এবং কষ্টকর ছিল। আর গ্রামবাসীদের জন্যও মেনে নেওয়া কষ্টকর ছিল বুঝতেই পারতেছি। আর কালু ওনার সাথে ছিল। কিন্তু উনার মৃত্যুর পর জায়নামাজ থেকে শুরু করে সবকিছু কে করেছে এটা সে জানে না। কারণ ওনার মৃত্যুর পরপরই সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। এরপর কি হয়েছিল এটা জানারই অপেক্ষায় আছি।

 3 months ago 

সম্মান গল্পের সবগুলো পর্ব আমি পড়ে যাচ্ছি৷ একের পর এক পর্ব পড়ে অনেকটাই ভালো লাগছে৷ এই ধার্মিক লোকটি গ্রামের সকলের জন্যই অনেক কিছু করেছেন। তাকে সকলে অনেক সম্মান করতো৷ এরকম ভালো একজন মানুষ যখন মারা গেলেন তখন পুরো গ্রামের মধ্যেই যেন শোকের ছায়া নেমে এলো৷ ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কথা শুনে অনেকটাই খারাপ লাগলো৷ সকলেই যেন তাদের গ্রাম থেকে সবচেয়ে ভালো মানুষটিকে হারিয়ে ফেললেন৷ লোকটির সাথে যে ব্যক্তি ছিল সে ব্যক্তি তাকে এতটাই ভালোবাসতো এবং তার ফলে মৃত্যুর কারণে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন৷ ধার্মিক ব্যাক্তির সকল কাজ কে সম্পাদন করল তা কেউই জানে না৷ আশা করি পরবর্তীতে জানতে পারবো৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 67653.09
ETH 3789.60
USDT 1.00
SBD 3.50