গল্প :- সম্মান // পর্ব:-০৮
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ মঙ্গলবার। ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
কালুর কান্নায় কর্ণপাত না করে ধার্মিক লোকটি তার কক্ষে পুনরায় প্রবেশ করলেন। তারপর ধার্মিক লোকটি মেসওয়াক করলেন। একটু পরে বাগানের পাশে থাকা সুন্দর একটি পুকুর থেকে নিজে নিজেই পানি তুলে ধার্মিক লোকটি গোসল সম্পন্ন করলেন। তারপর ধার্মিক লোকটি তার কক্ষের একপাশে চমৎকার একটি চাদর বিছিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার ধ্যানে মগ্ন হয়ে গেলেন। ইতিমধ্যেই কালু চোর অতিরিক্ত কান্না করে পেট ফুলিয়ে ফেলেছে। সে এখন আর জোরে কান্না করতেও পারছে না, শুধুমাত্র ফুপড়াচ্ছে আর ধার্মিক লোকটিকে মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করছে। কালু মনে মনে ভাবতে লাগলো, সুজন চোর এবং রাসু চোর সহ সকলেই মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেইক্ষেত্রে আমি প্রধান চোর হওয়া সত্বেও এখনো স্বাভাবিক আছি, নিশ্চয়ই এর মধ্যে এখনো অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। কালু এরকম কথা ভাবার সাথে সাথে কালুর সমস্ত শরীর ভয়ে শিহরিত হয়ে উঠলো।
কালু তার মনকে শক্ত করলো এবং নিজের কৃতকর্মের জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট অনুতপ্ত হলো এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে বারবার আকুতি মিনতি করতে লাগলো। একই সাথে ধার্মিক লোকটি কি করছেন সেটা দেখতে লাগলো। এভাবে আস্তে আস্তে সময় গড়াতে লাগলো। দুপুর বেলা হয়ে গেল এবং চারিদিক থেকে যোহরের আযানের মধুর ধ্বনি সকলে শুনতে লাগলো। যোহরের আযানের কিছুক্ষণ পর ধার্মিক লোকটি জোহরের নামাজ আদায় শুরু করলেন। তারপর নামাজ শেষ করে যখন মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে দুটি হাত তুলে মোনাজাত শুরু করলেন, ঠিক তখনই দক্ষিণ দিক থেকে শীতল বাতাস বইতে লাগলো। আর যখন ধার্মিক লোকটি মোনাজাত শেষ করলেন ঠিক তখনই দক্ষিণা বাতাস বন্ধ হয়ে গেল এবং সঙ্গে সঙ্গে সুজন চোর, রাসু চোর ও তাদের দলের সকলেই মূর্তি থেকে স্বাভাবিক মানুষে পরিণত হয়ে গেল।
হঠাৎ করে সকল চোরের স্বাভাবিক হওয়া দেখে কালুর দুটি চোখ তো কপালে উঠে গেল। পাশাপাশি সুজন চোর, রাসু চোর ও তাদের দলের সকলেই স্বাভাবিক মানুষরূপে নিজেদেরকে ফিরে পেয়ে প্রথমে তারা মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করলো এবং নিজেদের কৃতকর্মের জন্য খুবই অনুতপ্ত হলো। তারপর কালু চোর সহ সকলেই ধার্মিক লোকের দুটি পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাইতে লাগলো এবং কান্নাকাটি শুরু করলো। যখন সকল চোরেরা ধার্মিক লোকের পা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছিল ঠিক তখনই ধার্মিক লোকটি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট মধুর কন্ঠে শুকরিয়া আদায় করলেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। তারপর ধার্মিক লোকটি সকল চোরকে তার পা ছেড়ে দিতে বললেন এবং তার সামনে সকলকে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে বসতে বললেন। তারপর সকল চোরেরা ধার্মিক লোকের কথা মতো বসে পড়লো।
ধার্মিক লোকটি বললেন, "সৃষ্টিকর্তার নিকট তোমাদের আকুতি মিনতি দেখে এবং তোমাদের অনুতপ্ত আচরণ আমাকে মুগ্ধ করেছে। স্বাভাবিক মানুষরূপ ফিরে পেয়ে যখনই তোমরা সৃষ্টিকর্তা নিকট শুকরিয়া আদায় করেছো তখনই তোমাদের মাঝে আমি সুন্দর মনুষ্যত্ব দেখতে পেয়েছি। তাই তোমরা ক্ষমা চাওয়ার আগেই আমি আমার সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে তোমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি"। ধার্মিক লোকের এরকম সুন্দর কথাগুলো শুনে সকল চোরেরা কান্নায় ভেঙে পড়লো। চোরদের কান্না দেখে ধার্মিক লোকটি তাদেরকে সান্ত্বনা দিলেন এবং বললেন, মহান সৃষ্টিকর্তা তোমাদের সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্যই হয়তো আমার বাগানে তোমাদের এনেছিল। ধার্মিক লোকটি আরো বললেন, আমার অনুপস্থিতে আমার বাগান সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং নিজেই পাহারা করেন, আমার অনুমতি ছাড়া কারো ক্ষমতা নেই এখান থেকে সামান্য পরিমাণ ধূলীকণা পর্যন্ত দিয়ে যাওয়ার। ধার্মিক লোকের এরকম আশ্চর্যজনক কথা শুনে এবং বাস্তব প্রমাণ দেখে সকলেই চুরির কাজ সম্পূর্ণরূপে ছেড়ে দিল। একই সাথে সকলেই ধার্মিক লোকের মুরিদে পরিণত হয়ে গেল।
তারপর ধার্মিক লোকের কথা গুলো খুব দ্রুত আশেপাশের সকল গ্রামের সকল মানুষের নিকট পৌঁছে গেল। তারপরে সকল মানুষ দলে দলে ধার্মিক লোকের মুরিদ হয়ে গেল। কিন্তু ধার্মিক লোকটি তার ভক্তদের নিকট থেকে কোন প্রকারের খাবার কিংবা টাকা পয়সা কোন কিছুই গ্রহণ করতো না। ধার্মিক লোকটি সকল মানুষকে শান্তির, ন্যায়ের ও সত্যের পথ দেখাতেন। যাতে সকল মানুষ ধর্মভীরু হয় এবং সকল মানুষের জীবন আরো বেশি সুন্দর ও সহজ হয়। এদিকে সুজন, কালু ও রাসু সহ সকলেই রাত দিন ২৪ ঘন্টা ধার্মিক লোকের সেবা করার জন্য এবং ধার্মিক লোকের হুকুম পালন করার জন্য সজাগ থাকতো। কালু ও সুজন তো ধার্মিক লোকের একেবারেই আস্থাভাজন ও স্নেহভাজন হয়ে উঠেছিল। তারপরে এভাবেই বেশ কয়েক বছর কেটে যেতে লাগলো। হঠাৎ করে একদিন ধার্মিক লোকটি এলাকার সকল মানুষকে ডেকে একত্রিত করলো। তারপরে ধার্মিক লোকটি সকল মানুষের নিকটে জানতে চাইল যে, তিনি সকলের নিকট একটি জিনিস চাইবে তারা কি সেই জিনিসটি তাকে দিতে রাজি আছে কি-না?
গল্পটির সপ্তম পর্বটি পড়ার লিঙ্ক
গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির নবম পর্বটি আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনি আজকে সম্মান গল্পটার ৮ তম পর্ব শেয়ার করেছেন সবার মাঝে। ধার্মিক লোকটার অনুমতি ছাড়া তাহলে তার বাগান থেকে কেউই কোন কিছু নিতে পারে না। ধার্মিক লোকটা আগেই ওই চোরদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিল শুনে অনেক ভালো লেগেছে। আর চোরগুলোও ভালো হয়ে গিয়েছিল এবং ধার্মিক হয়ে গিয়েছিল শুনে ভালো লেগেছে। আর দেখতে দেখতে গ্রামের সবাই ও ধার্মিক লোকটার ভক্ত হয়ে গিয়েছিল চোর গুলোর মতই। এখন লোকটা গ্রামের সবার কাছে কি চাইতেছে এটাই দেখতে হবে। এখন দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।
চমৎকার মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রতিনিয়তই আপনি আপনার এই সুন্দর গল্প এর পর্বগুলো শেয়ার করে আসছেন৷ আজকেও এই গল্পের অষ্টম পর্ব শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে সম্মান এমন একটা জিনিস যা সকলে পায় না এবং সম্মান অর্জন করার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়৷ এই সম্মান যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সেই সম্মান ফিরিয়ে আনা অনেক কষ্টসাধ্য৷ আপনার এই গল্পের মধ্যে এই ধার্মিক লোকটি এতটাই ভাল ছিল যে আগেও ওই চোরদেরকে তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন৷ এখনো তিনি বিভিন্ন ধরনের ভালো কাজ করে যাচ্ছেন এবং তার বাগান থেকে কোন কিছু কেউ এখন চুরি করে নিয়ে নেয় না৷ এর ফলে তার প্রতি সকলের সম্মান অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে এবং তাকে সকলে এখন বিশ্বাস করতে শুরু করেছে৷ অনেক ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য৷
গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
দেখতে দেখতে কিন্তু সম্মান গল্পটার ৮ টি পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন এটা বুঝতে পারলাম যে ধার্মিক লোকটার অনুমতি ছাড়া কখনো কেউ পারবেনা তার বাগান থেকে কোন কিছু নিয়ে যেতে। ধার্মিক লোকটা আগেই চোরদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিল। আর লোকটার মোনাজাত শেষ হওয়ার পর পরই তারা মুক্তি পেয়ে গিয়েছিল শুনে ভালো লাগলো। চুরি করা ছেড়ে দিয়ে ধার্মিক লোকটার মুরিদে পরিণত হয়েছিল দেখছি। আর সব কিছু গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়ার পর গ্রামের সবাই উনার মুরিদ হয়ে গেল। তিনি সবসময় মানুষদেরকে ভালো পথেই চলতে বলতেন। এখন গ্রামবাসীদের কাছে কোন জিনিসটি তিনি চাইবেন এটাই তো আমি বুঝলাম না। এটা দেখার অপেক্ষায় আছি এখন।
আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, রকি ভাই।