স্বরচিত কবিতা "লাশের গন্ধ" ||
আশা করি সবাই ভালো আছেন, আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। গত কয়েকদিন যাবত ইন্টারনেট না থাকায় পোস্ট করতে পারিনি। আজকেও নেট অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে তবুও পোস্ট করার চেষ্টা করলাম। আজ আমি আমার স্বরচিত কবিতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে যাচ্ছি। আমি মাঝে মাঝেই লেখালেখি করি। কবিতা লিখতে বেশ ভালোই লাগে। অবসর সময়ে প্রায়ই আমি কবিতা লেখি। তাই আজ আমি নিজের লেখা একটি কবিতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশা করি সবাইকে ভালো লাগবে। বেশ কয়েকদিন থেকে তেমন কবিতা লেখা হচ্ছেনা তাই আজকে ভাবলাম একটি কবিতা লেখা যাক। তাই আজকে আমি একটি কবিতা লিখলাম কবিতার শিরোনাম দিলাম "লাশের গন্ধ".
বন্ধুরা আসুন এখন কবিতাটি সম্পর্কে দুই একটি কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। "লাশের গন্ধ" গদ্য কবিতার মূলভাব হলো শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর বেদনাদায়ক চিত্র এবং এর প্রভাব সমাজে। কবিতায় বর্ণিত হয়েছে কিভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনা শিক্ষার আলোকে আঁধারে পরিণত করেছে এবং প্রতিটি মৃত্যুর পেছনে থাকা স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটিয়েছে। কবিতাটি সমাজকে জেগে উঠার আহ্বান জানাচ্ছে এবং এই নির্মম ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষার্থীকে এই ধরনের মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হতে না হয়।
লাশের গন্ধ,
জমে থাকা এই গন্ধ যেন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিটি শহরের প্রতিটি মোড়ে, প্রতিটি গলিতে, যেখানে যেখানে শিক্ষার্থীদের পদচারণা ছিল, সেখানে এখন শুধুই শূন্যতা।
একটি মা তার সন্তানকে বিদায় দিয়েছিল স্কুলে, ভার্সিটিতে অন্যটি পাঠিয়েছিল কোচিং-এ।
কিন্তু সেই মায়েরা জানতেন না, এই বিদায়ই শেষ বিদায়। তারা জানতেন না, তাদের সন্তানের ফিরে আসা হবে লাশ হয়ে। সেই লাশের গন্ধ, যা শ্বাসে ভরে নিচ্ছে প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি ক্লাসরুম, প্রতিটি কলেজ প্রাঙ্গণ।
ক্লাসের ফাঁকা বেঞ্চগুলো যেন কান্নায় ভেঙে পড়েছে। স্কুলের গেটে দাঁড়ানো সেই ছোট্ট ছেলেটি, যার চোখে ছিল স্বপ্ন, এখন সেই চোখেই স্থির হয়েছে অজানা আতঙ্ক।
প্রতিটি লাশের পেছনে এক একটি গল্প, এক একটি স্বপ্নের সমাপ্তি। কেউ হয়তো বড় হয়ে ডাক্তার হতে চেয়েছিল, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউবা শিক্ষক। সেই স্বপ্নগুলো এখন আর ফিরে আসবে না, সেই স্বপ্নগুলোর লাশও যেন বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।
যেখানে ছিল শিক্ষার আলোর ঝলকানি, সেখানে এখন আঁধারের ছায়া। প্রতিটি শিক্ষার্থীর মৃত্যু যেন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মৃত্যু, আমাদের ভবিষ্যতের মৃত্যু।
লাশের গন্ধ আর কতদিন সহ্য করবো? আর কতবার আমাদের সন্তানদের প্রাণ দিতে হবে? আমরা কি কেবল এই লাশের গন্ধেই অভ্যস্ত হয়ে যাবো?
নাকি এখনই সময় জেগে ওঠার? সময় এই লাশের গন্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর, সময় আমাদের সন্তানদের বাঁচানোর। কারণ, প্রতিটি লাশের গন্ধেই লুকিয়ে আছে আমাদের মানবতার হারিয়ে যাওয়া গল্প।
এই গল্প যেন আর না বাড়ে, এই লাশের গন্ধ যেন আর না ছড়ায়। এখনই সময় পরিবর্তনের, এখনই সময় জেগে ওঠার।
আমার মায়ের অনুপ্রেরণায় আমার লেখালেখির জগতে আসা। যদিও মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে পারিনা তবে মাঝে মাঝে সময় পেলে কবিতা লেখার ট্রাই করি। আম্মুর পদ্য কবিতাগুলো আমার কাছে দারুণ লাগে। কি চমৎকার করে স্বরবৃও ছন্দে লিখেন। ৮ ৬ মাত্রার এই কবিতাগুলো আমি নিয়মিত ফলো করি এবং সেভাবে লেখার চেষ্টা করি,তবে দু একটি মাত্রা এদিক সেদিক হলে আম্মুর কাছে ঠিক করে নিই। আমার মায়ের লেখা কবিতার অনেক ভক্ত পাঠক আমি দেখেছি দেশ এবং দেশের বাইরেও, যা আমাকে ভীষণভাবে উৎসাহিত করে। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারেও অনেকেই আম্মুর লেখা কবিতাগুলো ভীষণ পছন্দ করে, এটি আমার কাছে অনেক গর্বের। আপনাদের অনুপ্রেরণা পেলে আগামীতে আরো মজার মজার কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো।
এতক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে অন্য একটি ব্লগে ততক্ষণে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি আল হিদায়াতুল শিপু। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর একজন ছাত্র। আমি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি। আমি মাঝে মাঝে কবিতা ও লিখি। আমার লেখা কবিতা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা পত্র পত্রিকা এবং মেগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যকলি বইতেও আমার লেখা কবিতা রয়েছে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অবসর সময়ে কবিতা লেখা মানে বেশ সুন্দর একটি কাজ করেন আপনি অনেক ভালো লাগলো। অনেকেই চেষ্টা করেছেন অবসর সময়ে অনেক কিছু করে রাখার। আপনি খুব সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন লাশের গন্ধ নিয়ে। সত্যিই আমাদের বাংলার চিত্র যেন সে একাত্তরের পাশের গন্ধে পরিণত হয়ে গেল আবার। আপনার লেখা “গদ্য” কবিতাটি পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর কবিতাটি আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার কবিতাটি পড়ে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
সময় উপযোগী একটি কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। আসলে এই বিষয় নিয়ে কয়জন ভাবে। ইতোমধ্যে আমাদের মাঝে দেশে যে অবস্থা হয়ে গেল সত্যি খুবই বেদনাদায়ক। এভাবে যেন আর হত্যাকান্ড না হয় দুনিয়ার বুকে সে দোয়া করি।
আমিও সেই দোয়াই করি।
সত্যি আপনার কবিতা পড়ে যেন মনে হল আমি স্বচক্ষে কিছু একটা দেখতে পেলাম। কারণ এই কয়টা দিন ধরে দেশের পরিস্থিতির ভিডিও দেখতে। কি থেকে কি হয়ে গেল দেশের অবস্থা। দূর হয়ে যাক এই সমস্ত রক্ত ঝরা কান্ড কলা। আর যেন কারোর মায়ের বুক খালি না হয় সে দোয়া করি।
আমিও চাই আর যেনো কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।
লাশের গন্ধ শিরোনামে দারুণ একটি কবিতা লিখে উপহার দিয়েছো। অসাধারণ এই কবিতাটি সমসাময়িক সময়ের দারুন উপলব্ধি।
কোন একদিন আবৃত্তি করার চেষ্টা করব। আগামীতে আরও সুন্দর সুন্দর কবিতা তোমার কাছে প্রত্যাশা করছি।
দোয়া রেখো সবসময়।