লাইফ স্টাইলঃ বড় ভাইয়ের সাথে আখের রস খাওয়া।
🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি।
প্রতিদিনের ন্যায় সকালটা শুরু হয় আমার। যেহেতু নিয়মের ভেতর থাকা হয় তাই ব্যাতিক্রম না হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও প্রকৃতির নিয়মে একটু পরিবর্তন হতে পারে। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের ব্যাক্তিগত কাজ শেষ করার পর থেকেই অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে যেতে হয়। দিনটা ছিলো বুধবার। সকাল শুরু হতেই গরমের তীব্রতা অনুভব করা যাচ্ছে। সকালটা দেখে বুঝা যাচ্ছে আজকের দিনটা খুবই গরম পড়বে। দিন যত যাচ্ছে গরম তত বেড়েই চলেছে। এই প্রচন্ড গরমে জীবন যাত্রা খুবই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। মানুষের ভেতর অশান্তি কাজ করছে। মানুষ বৃষ্টির অপেক্ষায় বসে আছে আকাশের দিকে তাকিয়ে। কখন জানি একটু স্বস্তির বৃষ্টি হবে। ধুয়ে মুছে দিবে সকল ক্লান্তি রুক্ষ ঠোঁটে ফুটবে শিশির জমা হাসি ।
আমাদের প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী কাজ করানো হয়। কাজ শেষ করে যখন ফ্রি হলাম তখন আমার এক বড় ভাই বললো আমাকে যে আমি বাজারে যাবো কিনা। আমি তাকে বললাম কোন কাজ আছে নাকি আপনার। সে আমাকে বললো একটু কাজ ছিলো যদি তুমি যেতে তাহলে তোমার সাথে আমি যেতাম। তার কথা শুনে ভাবলাম আমার ও একটু কাজ আছে যেহেতু সে বাজারে যাবে সেহেতু তাকে সাথে করে নিয়ে যায়।
এরপর ভাইকে বললাম আপনি প্রস্তুত হল আমি আমার গাড়ির চাবিটা ও বাজারের ব্যাগ নিয়ে আসছি। এরপর আমারা দুই জন বাজারে চলে গেলাম।
বুধবারে বাজার বসে তাই লোকজন অনেক বেশি হওয়ায় গরমের অনুভবটা বেশি হচ্ছিলো। বাজারে যাওয়ার পর নিজেদের ব্যাক্তিগত কাজ খুব দ্রুত শেষ করলাম। চলে আসার পথে দেখলাম একজন ব্যাক্তি আখের রস বিক্রি করছে৷ ভাইকে বললাম প্রচন্ড গরম পড়ছে। এই গরমে এক গ্লাস আখের রস না খেলে মনটা আমার কেমন কেমন করবে। ভাই বললো আমি রস খাবো না চাইলে তুমি খেলে খেতে পারো৷ এখন তো সব জিনিসে ভেজাল আখের রস খাওয়া এখন বিপদজনক। তার এই কথা বলার কারনটা জানতে চাইলাম। ভাই বলল আমি নিজের চোখে দেখেছি তখন আমি ঢাকাতে ছিলাম আমাদের অফিস থেকে একটু দূরে একজন ব্যক্তি আখের রস বিক্রি করতো। আমাদের অফিসের ছাদ থেকে খুব সুন্দর ভাবেই সব কিছু দেখা যেতো। একদিন আমি ছাদে বসে আছি হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম ওই ব্যক্তিটি আখের গায়ে কাটারি দিয়ে কেটে তার ভেতর স্যাকারিন টুকরো ঢুকাচ্ছে।
এই কথা শুনার পর বললাম ঠিক আছে কোন ব্যাপার না চলেন দেখি কি করা যায়। ভাইকে আশ্বাস দিয়ে বললাম সব জায়গাতে এমন দুই নম্বরি চলে না। সেখানে গিয়ে আখের রস বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসা করলাম ভাই আখের রস কত টাকা গ্লাস? সে ভাই আমার কথা শুনে বলল মাত্র ২০ টাকা গ্লাস।
আমি একটু হেসে বললাম ভাই এর ভিতর কি স্যাকারিন দিয়ে রেখেছেন নাকি? আমার কথা শুনে ভাই একটু অবাক হল তারপর সে এসে বলল আপনি মনে হয় আমাকে চিনতে পারেননি আমি এই ধরনের কাজ কোন দিন করিনি। আর আপনাদের অফিসের প্রায় মানুষ আনাকে চেনে আপনি নতুন তাই হয়তো আমাকে চিনতে পারেনি। অন্যরা আখের রস ঠান্ডা করার জন্য বরফ ব্যবহার করে আমি সেটা ব্যবহার করিনা। যদি আমি বরফ ব্যবহার করি তাহলে আমার লাভ হবে কিন্তু আমার কাছে এই জিনিসটা ভালো লাগে না। আমি মানুষের কাছে ভালো জিনিস পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করি। তার কথা শুনে আমার খুবই ভালো লাগলো। আমিও চিন্তা করে দেখলাম বরফে তো নানা রকম সমস্যা আছে।
আখের রস বিক্রেতা ভাই বলল আমার হাতের এক গ্লাস রস খেয়ে যান যদি খারাপ লাগে তাহলে আর কোনদিন খেতে আসবেন না। এ কথা বলার পর ভাই সুন্দর দেখে দুইটা আখ আমাদের জন্য বের করলো। আখ দেখে আমার খুবই পছন্দ হয়েছিল। কারন আখ দুইটা খুবই মোটা, তরতাজা ও সতেজ ছিলো।
এরপর সে মেশিনের সাহায্যে আখ থেকে রস বের করতে শুরু করলো। আখের রস দেখে আমার খুবই ভালো লাগছিলো। আমি আখের রস খতে খুবই পছন্দ করি। প্রচন্ড গরমে এক গ্লাস আখের রস আমার মনকে প্রশান্ত করে। তাছাড়া আখের রস আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকার।
যাইহোক একটি আখের অর্ধেক রস বের করতে না করতেই ভাইয়ের মেশিনটি অতিরিক্ত লোডের কারণে আটকে গিয়েছিলো। অতিরিক্ত প্রেসারের কারণে চাকা জাম হয়ে গেছিল যার কারণে মটর বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।
ভাইটি তখন হাত দিয়ে আখের ছোবলা বের করা চেষ্টা করছিলো। কিন্তু আখের ছোবলা এতটাই শক্ত করে বেধে গিয়েছিল যে হাত দিয়ে টেনে বের করা তার জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছিলো। এটা দেখার পর আমি তার কাজে একটু সাহায্য করলাম দুইজন অনেক চেষ্টা করার পর আমরা সফল হলাম ছোবলা মেশিন থেকে বের করতে। ভাইকে একটু উপকার করতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগলো। সেও আমার প্রতি দেখলাম অনেক খুশি হয়েছিলো। ভাইটি বলল আমি জানি ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা মানুষের সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু সব জায়গায় সকল কাজে তারা সাহায্য করে এটা আমার জানা ছিল না।ভাইটির কথা শুনে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগলো। আমাদের সম্পর্কে তার যে এই নেতিবাচক ধারণা সেটা আমার কাছে খুবই ভালো একটা দিক।
এরপর ভাইটি বলল এই দুইটা থেকে যা রস হবে সব রস আপনার দুজনে মিলে খাবেন এর বিনিময়ে আপনাদের একটি টাকাও দেওয়া লাগবে না। এই কথা শোনার পর আমি বললাম আমি আপনাকে সাহায্য করেছে বলে আপনি কেন লস করবেন। আপনি এই কথা বলেছেন এতেই আমরা সন্তুষ্ট। কোন সমস্যা নেই আমরা ন্যায্য মূল্য দিয়ে আপনার রস কিনে খাবো। এই কথা শোনার পর ভাইটি আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে রইল আমি বললাম আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কোন লাভ নেই আপনি আপনার কাজ করেন।
আমার কথা শোনার পর ভাইটি বাকি আখ থেকে রস বের করে আমাদেরকে দিলেন। আমরা দুই জনে তৃপ্তি সহকারে আখের রস খেলাম। আখের রস খাওয়ার পর প্রাণটা জড়িয়ে গেল খুবই মজাদার ছিলো আখের রস। অত্যাধিক মিষ্টি লাগলো খেতে। যদিও আমি এমনটা আশা করি নাই। আমার সাথে থাকা সেই ভাইটি বলল ওই দিনের দৃশ্য দেখার পর আমি আখের রস খেতে ভয় পেতাম। কিন্তু আজকে আখের রসটা খেয়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। এরপর আমারা আমাদের লেনদেন শেষ করে আমাদের গন্তব্যের দিকে রওনা হলাম।
পোস্টের বিবরণী | লাইফস্টাইল |
---|---|
ডিভাইস | রেডমি নোট ১১ |
ক্যামেরা | ৫০ মেগাপিক্সেল |
লোকেশন | পাবনা |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আখের রস আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকার। তাই মাঝেমধ্যে এ রস আমাদের খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। খুবই ভালো লাগলো সুন্দর এক মুহূর্ত দেখে। আর আখের রস খাওয়ার মুহূর্তটা অসাধারণভাবে শেয়ার করতে দেখে। সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
যথাযথ মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আপনার কাছ থেকে সুন্দর পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ আসলে এই গরমের মধ্যে ঠান্ডা কিছু খাওয়ার মধ্যেই আমাদের ভালো লাগা কাজ করতে থাকে৷ আর আজকে আপনি আপনার বড় ভাইয়ের সাথে আখের রস খাওয়ার খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান অভিমত ব্যাক্ত করার জন্য।
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷
সু স্বাগতম ভাই।