বন্যা মোকাবেলায় সকলের এগিয়ে আসা।।।
হ্যালো ,আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্যগণ সকলে কেমন আছেন।আশা করি সকলে ভালো এবং সুস্থ আছেন।আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।তবে শারীরিক ভাবে ভালো থাকলেও মানসিক ভাবে মোটেও ভালো নেই। দেশের বন্যা পরিস্থিতির জন্য নিজের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা ভালো নেই। হাজার হাজার মানুষের বাড়ি ঘর পানির নিচে ডুবে আছে ।কিছু আছে অর্ধ ডুবন্ত, আর যেইগুলো একটু নিচু এলাকায় সেইগুলো প্রায় পুরো পানির নিচে চলে গেছে। কত জন যে মারা গেছে তার সঠিক পরিমাণ কেবল সৃষ্টিকর্তাই জানেন। হাজারো পশু পাখি, মানুষের ডেইরি, পোল্ট্রি ফার্ম শেষ হয়ে গেছে। হাজার হাজার টাকার ব্যবসা নিমিষেই শেষ । খবরে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে পানির স্রোতের সাথে গবাদি পশু, পাখি সব হারিয়ে যাচ্ছে। সবচাইতে বেশি ক্ষতি হয়েছে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ঘরের সব আসবাবপত্র হয়ত পানির কারণে নষ্টও হয়ে যাবে।বলা যায় বন্যায় আক্রান্ত মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।
তবে বর্তমান সমাজের সকলে যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে তাতে হয়ত এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়, অনেক অনেক বিদ্যালয়, স্বেচ্ছাসেবক দল সকলে মিলে ত্রাণ তুলতেছে।এই যে গতকাল এক প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। প্রোগ্রামটি ছিল বন্যার্ত মানুষের সাহায্যের জন্য কনসার্ট অনুষ্ঠান। অনেক অনেক শিল্পী বিনা পারিশ্রমিকে পারফর্ম করছে। অনুষ্ঠানটি হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবরে। সেখানে টিকিটের মূল্য ছিল ৫০ টাকা , যার পুরোটাই বন্যার্ত মানুষের সাহায্যের জন্য ব্যবহার হবে। অনেক মানুষ হয়েছিল প্রোগ্রামটিতে। সবাই টিকিট নিজ নিজ উদ্যোগে টিকিট কেটে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিল। যেহেতু জায়গাটি উন্মুক্ত, তাই যেকেউ চাইলেই বিনা টিকিটে প্রোগ্রাম দেখতে পারতো।তবে সকলেই এই দুর্যোগে মানুষের সাহায্যের জন্য নিজের টিকিট কেটে প্রোগ্রাম উপভোগ করতেছিলো। সঙ্গীত শিল্পীরাও সবাইকে উৎসাহিত করছিল আরও বিভিন্ন উপায়ে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে। বিকাল তিনটায় প্রোগ্রাম শুরু হয় এবং শেষ হয় রাত দশটার দিকে।
এইরকম প্রোগ্রাম ছাড়াও ব্যক্তি উদ্যেগে বিভিন্ন সংগঠনে টাকা প্রদান করে সাহায্য করতেছে। আবার অনেকই কয়েকজন মিলে ৫০০০ হাজার ১০০০০ হাজার টাকা কালেক্ট করে বড় বড় সংগঠনে প্রদান করতেছে। কারণ তারা জানে এই অল্প টাকায় তেমন কিছু করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই টাকা যদি বড় কোন বিশ্বাসযোগ্য সংগঠনে দান করে কবে এইটাকা ভালো কাজে আসবে।আমিও নিজে আমার সামর্থ্য অনুযায়ী একটি সংগঠনে কিছু টাকা দেই বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য। আজকে ঢাকা ভার্সিটির টিএসসি তে গিয়েছিলাম শুকানা কাপড় দিতে। কিছু মেয়েদের এবং বাচ্চাদের জন্য কাপড় নিয়ে যাই। গিয়ে দেখি মানুষের কি ভিড়।মনে হতে পারে যে মানুষ হয়ত দেখতে আসছে। কিন্তু না , তারা সবাই আসছে তাদের সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য করতে। কেউ এসেছে শুকান খাবার নিয়ে , কেউবা শুকনা কাপড়, আবার কেউবা প্রয়োজনীয় ঔষধ। গাড়ির এত চাপ ওই জায়গায় যে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলে অনেক বড় জ্যাম বেজে যাবে। কারণ অনেকেই গাড়ি নিয়ে এসেছে ত্রাণ দিতে, সেই গাড়িগুলোর অনেক বিশাল লাইন লেগে গেছে।
এইভাবে সবাই সবার জায়গা থেকে সাহায্য করলে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব। হয়ত তারা যা হারিয়েছে তা আমরা ফিরিয়ে দিতে পারবো না। কিন্তু সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় তাদের কষ্টকে কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারব। দেশের প্রতি, দেশের মানুষের এত ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ। এইটাই হয়ত আসল মনুষ্যত্বের পরিচয়। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে দুর্যোগ মোকােলায় সফল হয়ে হবে। আপনার অনেকেই হয়ত নিজ নিজ উদ্যোগে নিজ নিজ জায়গা থেকে সাহায্য করতেছেন তাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। সকলেই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন, যেনো এই দুর্যোগ খুব দ্রুত মোকাবেলা করা সম্ভব হয় এবং পরিস্থিতি যেন আর খারাপের দিকে না যায় , সৃষ্টিকর্তা যেনো তাদের সহায় হোন এবং তাদেরকে এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার শক্তি দেয়।
সবাই ভালো থাকবেন।যে যেভাবেই পারেন বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন।নিজে সুস্থ থাকুন এবং সকলে মিলে চলুন এই দূর্যোগকে মোকাবেলা করি ।সবাই বেশি বেশি গাছ লাগানোর চেষ্টা করবেন। সকলের জন্য শুভকামনা রইলো।
আমি আরাফাত হাসান সৌনক। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টেরএকজন ছাত্র । আমি ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি।আমি আমার পরিবারকে খুব ভালোবাসি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলেই ভাই আমরা কেউই মানসিক ভাবে ভালো নাই। দেশের এমন পরিস্থিতি দেখে সত্যি খুব খারাপ লাগে। আসলে আমাদের সকলের এক সাথে হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ। সবার সবার জায়গা থেকে এগিয়ে আসলেই কিছু একটা করা সম্ভব হবে।
জি ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন। এখন উচিত সবার এক হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া যাতে এই দুর্যোগ আমরা কাটিয়ে উঠতে পারি। সবার উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসা।