ছোটগল্প || মাল্টিভার্স ( তৃতীয় পর্ব )

মাল্টিভার্স গল্পের আজ তৃতীয় পর্ব লিখতে বসেছি। এর আগের দুটি পোস্ট যারা পড়েননি তারা আগে সেই দুটি পোস্ট পড়ে আসুন, চলুন এই নতুন পর্ব শুরু করি।

ছোটগল্প || মাল্টিভার্স (পর্ব ১)
ছোটগল্প || মাল্টিভার্স ( ২য় পর্ব )

জন মাইকেলকে জিজ্ঞাসা করল তোমার কাছে কি থিওরি আছে আমাদেরকে বলো। তখন রবার্ট এবং জন মনোযোগ সহকারে মাইকেলের কথা শুনতে থাকল। এদিকে মাইকেল বলতে শুরু করল, এমন ওয়ার্মহোল একটি জায়গা যেখানে দুটি জায়গার মিলনস্থল কে বলা হয় অর্থাৎ খুব সহজেই একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া যায়। এখানে আমরা শুধুমাত্র একটা ওয়ার্ম হোল তৈরি করছি। এর অপর সাইটে ও ওয়ার্মহোল তৈরি করা খুব বেশি জরুরি তা না হলে এটা কোনোভাবেই কাজ করবেনা।

জন এই বিষয়টি জানতো তবে তারা এই তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে এই বিষয়টাই স্কিপ করে গিয়েছে। এখন তারা বুঝতে পারল যে যখন আমরা গবেষণা করি তখন কিছু বেসিক জিনিস গুলো মনে রাখা খুবই জরুরি তা না হলে সে গবেষনাটা কখনোই সফল হবে না। এমন এমন সময়, যারা অনেক কঠিন কঠিন সমস্যার সমাধান করতে পারে কিন্তু মাঝে মাঝে সহজ সমাধান গুলো তারা সলভ করতে পারেনা। ঠিক এমনটাই হয়েছিল জন এবং রবাটের ক্ষেত্রে।

মাইকেল জনকে বলে বসলো, আজ থেকে আমি এই প্রজেক্টের সাথে কাজ করতে চাই। জন এবং রবার্ট তারা সহমত পোষণ করলে এবং তারা নতুন ভাবে আবার গবেষণা শুরু করল। এইদিকে জন ভাবতে থাকলেও যেহেতু এই ইউনিভার্সে আমি এই তৈরি করার চেষ্টা করছি তাহলে অন্য কোন ইউনিভার্সে আমার মতই জন এটি তৈরি করার চেষ্টা করছে। তখন জন বললো, এবার যখন আমরা ওয়ার্মহোল টি তৈরি করব সেখানে আমার করা কিছু প্ল্যানিংয়ের কথা কাগজে লিখে ওয়ার্ম হোল এর মধ্যে ছেড়ে দেবো। যদি অন্য ইউনিভার্সে আমার কোন অন্য ভার্সন এটি তৈরি করে থাকে তাহলে আমার প্লানিং সম্পর্কে সে বুঝতে পারবে।

তাদের মেশিনের মধ্যে যেসব সমস্যা ছিল তারা খুব সহজে সেসব সমস্যার সমাধান বের করে দুই সপ্তাহের মধ্যে মেশিন আবার তৈরি করল এবং এখন ইলেকট্রিসিটির জন্য এক্সট্রা একটা জেনারেটর বসানো হয়েছে, যা তাদের ভার্সিটি থেকেই তারা কিছুদিনের জন্য ধার করে নিয়ে এসেছে। জন ইতিমধ্যে যেসব প্ল্যানিং করেছিল সেই মোতাবেক এ কাজ চলছিল এবং একটি সাদা কাগজে তার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে রেখেছিল যত সময় তারা ওয়ার্মহোল চালু করল। কিন্তু আস্তে আস্তে সেটি বড় হতে থাকলো তবে এবার বড় হওয়ার প্রবণতা বেশি ছিল না। তাই তারা কিছু সময় পেয়ে যায়।। পরবর্তীতে সেই কাগজটা ওয়ার্মহোলের মধ্যে ছুঁড়ে দেয় এবং এরপরেই বন্ধ করে দেয়।

মাইকেল ছিল একজন বুদ্ধিমান ছাত্র। সে আবারও জনকে বলতে থাকলো আপনি যেই প্লানিং এর কথা এই ওয়ার্ম হোল এর মধ্যে দিয়েছেন সেই প্লানিং এর রিপ্লাই এর জন্য আপনাকে অবশ্যই ওয়ার্মহোলটি চালু করে রাখতে হবে। কিন্তু তারা এখনো সাইজ বড় হওয়া কোনোভাবেই রুখতে পারেনি। তারপরও এটার জন্য আলাদা তারা একটি মেশিন তৈরি করবে চিন্তাভাবনা করছিল। সেই মেশিনটি তৈরি করার দায়িত্ব রবার্ট এবং মাইকেলকে দেওয়া হয় এবং সেদিনের মত জন বাসায় চলে যায়।

বাসায় গিয়ে জন জেনিফারকে তার গবেষণা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে। এদিকে এটা শুনে জেনিফার অনেকটা রাগ করে বসে। কারণ তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এর পরে তারা যে গবেষণা করছে এই গবেষণায় গবেষণায় প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এইদিকে জন বলে ওঠে তুমি আমার উপর ভরসা রাখ, আমি সবকিছুই ঠিক করে দেবো। আসলে জনের প্ল্যানিং কি ছিল এখনও এখানে রিভিল করা হয়নি এবং জনের প্লানিং ছিল অনেকটাই ভয়াবহ।

যাইহোক জন এবং জেনিফার সেই রাতেই অনেক ঝগড়া করে পরবর্তীতে তারা ঘুমাতে গেল। ঘুমানোর কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ করে জনের ফোন বেজে উঠল এবং অপর প্রান্ত থেকে রবার্ট বলে উঠলো আপনি দ্রুত ল্যাবে চলে আসুন। জন তাড়াহুড়ো করে তৈরি হয়ে ল্যাবের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। যেহেতু তাদের ল্যাব বাসার পাশেই ছিল তাই যেতে কোন সমস্যা হয়নি। জন জিজ্ঞাসা করল, কি হয়েছে? রবার্ট বলল আমরা যখন মেশিনের পর্যোবেক্ষনের জন্য মেশিনটি চালু করেছিলাম তখন মেশিনের মধ্যে থেকে একটি কাগজ বেরিয়ে এসেছে।

রবার্ট জনের হাতে কাগজটি তুলে দেয় এবং তিনজন সেই বিষয়ে বিস্তারিত পড়তে থাকে। যেখানে তাদের মেশিন এর সমস্যার কথা ও তার কাগজে লিখে ছিল তাই সেই সমস্যা কিভাবে সলভ করা যায় সেই কাগজটিতে সেই সমাধানও লেখা ছিল অর্থাৎ এখানে অন্য কোন ইউনিভার্সের জন সেই একই এক্সপেরিমেন্ট করছিল এবং সেই মূলত এই বর্তমান সময়ের জনকে কাগজে লিখে পাঠিয়েছিলো। এই দেখে তাদের আনন্দের কোনো শেষ ছিল না, কারণ তারা ওয়ার্মহোলের বিষয়টি আবিষ্কার করে ফেলেছে, মাল্টিভার্স বলে কোন কিছু রয়েছে।

এদিকে মাইকেল জোরে চিৎকার করে বলে উঠলো আমি আগামীকাল এই সবাইকে এই তথ্যটা দেবো। এই দিকে জন এবং রবার্ট অনেকটাই রাগ করলো বললো এখনো এটা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এখনো কাউকে জানানো যাবে না। যাই হোক না কেন পরবর্তীতে তারা সেই কাগজে লেখা সমাধান নিয়ে তারা নতুন একটি মেশিন তৈরি করতে বসে গেল। এখানে মাইকেল জনকে প্রশ্ন করল আপনি এই মাল্টিভার্সের দরজা দিয়ে কি করতে চাচ্ছেন? তখন জনের প্লানিং সম্পর্কে কিছু একটা তথ্য বললো জন। জন বলে উঠলো আমি মাল্টিভার্সের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে চাই কিন্তু আসলে তার এটা মূল উদ্দেশ্য ছিল না মুল উদ্দেশ্য ছিল আরো ভয়াবহ।

গল্পের এতদূর যদি আপনি চলে আসেন তাহলে আমি বলবো আপনারাও গল্পের অনেক ইন্টারেস্টিং একটি সময়ে গল্পটি পড়ছেন কারণ আমরা সবাই বাটারফ্লাই ইফেক্ট সম্পর্কে জানেন। অর্থাৎ কোন ছোট একটি পরিবর্তনের কারণে অনেক বড় কোনো ধরনের পরিবর্তন হতে পারে। এই বিষয়টি জন এবং মাইকেল তিনজনেই জানত তাই মাইকেল অনেক ভয় পেয়েছিল কারণ সে যদি অন্য কোন ইউনিভার্সের ছোট পরিবর্তনের ফলে অনেক বড় একটি সমস্যার কারণ হতে পারে।

মাইকেল আবার জনকে বোঝাতে থাকল এক পর্যায়ে জন রাগ করে বলে উঠল, তুমি আমার ছাত্র তোমার মেধা দেখেই তোমাকে এখানে আমি আমার এসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করতে দিয়েছি। এখন তুমি আমাকে জ্ঞান দিচ্ছ!! বেরিয়ে যাও এই বলে মাইকেলকে ল্যাব থেকে বের করে দিল। মাইকেল বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে কারণ মাইকেল নিজেও একজন পদার্থ বিজ্ঞানের অনেক মেধাবী ছাত্র। মাইকেল বের হয়ে অনেক কিছু চিন্তা করছিল।

চলবে........

বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রত্যেকটি ছবি Canva Pro দিয়ে তৈরি করা হয়েছে.

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: ছোটগল্প || মাল্টিভার্স ( তৃতীয় পর্ব )

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......