স্মৃতির পাতা থেকে // আমার সাথে ঘটে যাওয়া ভৌতিক ঘটনা (শেষপর্ব )steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

png_20220824_120126_0000.png

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্বের পর থেকে.....

যাই হোক মনে মনে ভাবছিলাম যে এবারের মত মনে হয় বেঁচেই গেলাম। কিন্তু না এখানে আমার সবচেয়ে বেশি ভয়ের যে জায়গাটি ছিল সেটি আরো সামনে রয়েছে। আরো কিছু দূরে বলতে পারেন বাড়ি ঠিক কাছাকাছি একটি জায়গা রয়েছে সে জায়গাটি যদিও পুরোপুরি খালি একটা জায়গা কিন্তু জায়গাটি নাম শুনলেই শরীরের লোম দাঁড়িয়ে ওঠে। কারণ হলো একটি দেহতত্ত্ব ছিল যে দৈত্যটা নাকি গুজো হয়ে হাঁটতো। যদিও এই ঘটনাটি অনেক অনেক পুরনো দিনের ঘটনা কিন্তু সেই থেকে এই জায়গাটির নাম 'দেগুজা' হয়ে গেল। এটা নিয়েও অনেক কাহিনী রয়েছে যা আমরা আগে নানুর কাছে শুনতাম। এই বিষয়টা নিয়ে পরে আরেকদিন আলোচনা করব।

তবে এখন আমার চিন্তা হচ্ছে এই জায়গাটি পার হওয়ার আসলে এই জায়গাটি দিনের বা রাতের বেলাও তেমন কিছু দেখিনি। কিন্তু জায়গাটির নাম শুনলে অনেক ভয় ও আতঙ্ক কাজ করে কারণ এটা নিয়ে অনেক অনেক বাস্তব কাহিনী শুনেছিলাম। যতই সামনের দিকে যাচ্ছি ভয়ে আমার হাত পা আবারো ঠান্ডা হয়ে আসছে, একে তো ভয়ের উপরেই আছি তার উপরে জায়গাটার নাম মনে করে কিভাবে যাব কিভাবে, কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। হঠাৎ কেমন যেন একটা জড়ো হওয়া বইতে শুরু করল। সেটা আমার কাছে কিছুটা অদ্ভুত লাগলো। কারণ এতটুক রাস্তায় এসেছি কোনরকম জোরে বাতাস বা আকাশের অবস্থা তেমন খারাপ ছিল না।

তখন আমার এই জাতীয় ঝোড়ো হওয়ার ব্যাপারে তেমন একটা ধারণা ছিল না তাই এটা নিয়ে আমি খুব একটা চিন্তা করিনি, বলতে পারেন মাথা ঘামাইনি। তো আমি ধীরে ধীরে হাঁটছিলাম আর যতই সামনের দিকে যাচ্ছি ততই শুধুমাত্র এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম যে কেউ আছে কিনা বা কাউকে দেখা যাচ্ছে কিনা। মনে ভাবছিলাম ইস এই মুহূর্তে যদি পরিচিত কাউকে পেয়ে যেতাম তাহলে খুব ভালোই হতো। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে যেহেতু ঐদিন সাপ্তাহিক বাজারের দিন ছিল তাই বেশিরভাগ পুরুষ লোক বাড়িতে না থেকে বাজারে রয়েছে এখনো পর্যন্ত। তারা মোটামুটি অনেক রাতেই বাজার থেকে বাড়ি ফিরে আসে।

সামনে রাস্তার পাশে দু-দুটো বাড়ি রয়েছে এরপরে গিয়ে সেই ভয়ংকর জায়গাটা। যেহেতু আমি ওই দুই বাড়ীর লোকজন সবাইকেই মোটামুটি চিনতাম এবং তারাও আমাকে চিনতো তাই আমি প্রথম যে বাড়িটা সামনে পেয়েছি সেই বাড়িতে ঢুকে তাদেরকে ডাক দিলাম। এখন বাড়ির ভিতর থেকে একজন মহিলা বেরিয়ে এসে আমারে বলল কিরে পাবেল তুই এই সময় এখানে কি করিস, কোথায় গেছস কোথা থেকে আসতেছিস কি ব্যাপার? তখন আমি ওনাকে পেছনের ঘটনাগুলো সংক্ষিপ্তভাবে খুলে বললাম। তুমি আমাকে আশ্বস্ত করলেন যে সামনের এই জায়গাটি তিনি সাথে করে আমাকে পৌঁছে দিবেন। এই কথাটি শুনে আমি এত খুশি হয়েছি আপনাদেরকে ভাষায় বোঝাতে পারবো না এবং আমার মনে হচ্ছে যেন আমার অনেকটা ভয় কেটে গিয়েছে।

তারপর তিনি আমাকে পানি খেতে দিলেন এবং বললেন কলপাড় থেকে হাত মুখ ধুয়ে নিতে। আমিও তাই করলাম পরে পানি খেলাম। তারপর তিনি আমাকে নিয়ে রওনা দিলেন। আমি তাকে তখন সেই জড়ো হওয়ার কথা বললাম। তিনি আমাকে বললেন যেহেতু আমরা এখানে থাকি এই হওয়াটা সবসময় আমরা দেখতে পাই মাঝেমধ্যে এই হওয়াটা বইতে থাকে। আসলে এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের আর আলোচনা না করাই ভালো চলো আমরা এই সামনে এগিয়ে যাই তোমাকে বাড়ি অব্দি ছেড়ে আসি। কিছু দূর এগিয়ে যেতেই দেখলাম হারিকেন হাতে আমার মা এবং নানু দুজনেই আমার জন্য চিন্তা করতে করতে রাস্তা দিয়ে কিছুটা পথ এগিয়ে এসেছিল। আমি তাদেরকে দেখে আরো বেশি খুশি হলাম। এরপর আমি দৌড়ে গিয়ে তাদেরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় করে দিয়েছিলাম। তারপর ওই মহিলাটিকে আমরা সবাই ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় দিলাম এবং মহিলাটিও বাড়ি না যাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছুটা অপেক্ষা করলাম।

তারপর আমরা সবাই বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়ি এসে হাতমুখ ধুয়ে রাতের খাবার খেয়ে আর কোনদিক না তাকিয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম। কিন্তু অনেক রাতে আমার সেই কি জ্বর আমি তখন বুঝতে পারলাম এখন বাড়ির সবাই বুঝতে পারল যে আমি অনেক ভয় পেয়েছিলাম। রাত আসলে এখানে বিষয় হচ্ছে ভয়ের কারণেই এত কিছু আর সবচেয়ে বড় কথা ছিল আমি বয়সে অনেক ছোট ছিলাম ভয় পাওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। গ্রামে থাকতে এরকম অনেকগুলো ঘটনারই সম্মুখীন হয়েছিলাম পরবর্তীতে অন্য আরেকটি ঘটনা নিয়ে হাজির হব সে পর্যন্ত সবাই সাথে থাকবেন আর আমার জন্য দোয়া করবেন।

সমাপ্ত

আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel

আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ২৪-০৮-২০২২ ইং

Sort:  
 2 years ago 

'দেগুজা' নামটা আসলেই অনেক অদ্ভুত। এই নামটা শুনেই গা কেমন ছমছম করছে। মহিলাটি অনেক ভালো মনের মানুষ ছিলেন। উনার সাহায্যে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে বাসায় ফিরতে পেরেছেন এটাই অনেক প্রশান্তির। সেই রাতে ভয় পেয়ে আপনার জ্বর হয়েছিল। আমি এরকম কয়েকটি ঘটনা দেখেছি ভয় পাওয়ার পর অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। যাক আপনার সেরকম কিছু হয় নি।
ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার গল্পের তৃতীয় বা শেষ ভাগটি পড়ে খুবই গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59325.16
ETH 2609.11
USDT 1.00
SBD 2.41