স্মৃতির পাতা থেকে // আমার সাথে ঘটে যাওয়া ভৌতিক ঘটনা (পর্ব ১)
১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য
স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানীতে ভালই আছেন আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি। ছোটবেলা থেকে প্রায় চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত আমি গ্রামেই ছিলাম। এরপর থেকেই শহরে পাড়ি জমা বাবার চাকরির সুবাদে এবং দিনে দিনে শহরে বেড়ে ওঠা এখনো শহরে রয়েছি, আশা করছি সারা জীবন এভাবেই থাকবো সম্ভবত, বাকিটা আল্লাহ পাকের ইচ্ছা, আর গ্রামে ফেরা হবে না হয়তো। গ্রামের ধর্ষীপনা গ্রামের দুষ্টামি সেইসাথে মজার মজার বেশ কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত রয়েছে এবং তার পাশাপাশি কিছু ভৌতিক ঘটনাও রয়েছে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে সেখান থেকেই কিছু ভৌতিক ঘটনা পর্ব আকারে শেয়ার করব আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
বাস্তব ঘটনার প্রেক্ষিতে ছোটবেলা থেকে সেই চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত আমি কিন্তু নানার বাড়িতেই থাকতাম। কারণ আমি নানার বাড়িতে থাকতে বেশি পছন্দ করতাম আমাদের বাড়ির চাইতে, তাই একা একা হলেও নানার বাড়িতেই থাকতাম। ছোটবেলায় আমি খুব ভীতু ছিলাম একেবারে যখন ছোট সবেমাত্র কিছু বুঝতে শিখেছি তখন থেকে রাত হলে গ্রামে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে উঠানের উপর দিয়ে যেতে আমি খুব ভয় পেতাম। এ যেমন এক ঘর থেকে আরেক ঘরে যখন যাব তখন দরজা খুলে চোখ বন্ধ করে দৌড় দিতাম কোন দিকে তাকাতাম না ভয়ে। যদিও যতদিন যাচ্ছিল আস্তে আস্তে কিছুটা ভয় কেটে গিয়েছিল।
আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকে প্রায় বাজারে যেতাম। তবে নানার বাড়ি থেকে বাজারের দূরত্বটা বেশ দূরেই ছিল। তো একদিন স্কুল থেকে আসার পর নানু আমাকে বলল নানুর পান শেষ হয়ে গিয়েছে। তো তখনকার সময় কিন্তু মানুষের হাতে তেমন টাকা পয়সা থাকতো না। বেশিরভাগই গাছের ফল যেমন নারিকেল সুপারি এগুলো বিক্রি করে বাজার করা হতো। সেদিন নানু আমাকে দুই জোড়া নারিকেল দিয়ে বলল এগুলো বাজারে নিয়ে বিক্রি করে নানুর জন্য পান, সাদা পাতা ও চুন নিয়ে আসতে। আমিও প্রায় সময় এভাবে বাজারে গিয়ে বিভিন্ন সময় নারিকেল এবং সুপারি বিক্রি করে নানুর জন্য পান, সাদা পাতা ও তরি তরকারি নিয়ে আসতাম।
সেদিন স্কুল থেকে আসার পর আমি সবার সাথে খেলায় মগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম। সাধারণত গ্রামে বাজারে গেলে যেহেতু আমি ছোট ছিলাম একটু আগে যেতাম আর সন্ধ্যার আগে ফিরে আসতাম। কিন্তু সেদিন খেলায় মগ্ন থাকার কারণে আমার বাজারে যেতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও নানু বকা দিবে দেখে নারকেলগুলো নিয়ে আস্তে আস্তে বাজারের দিকে চলে গেলাম। সেদিন বাজারে দেরি করে যাওয়াতে আমার নারিকেল বিক্রি করতে করতেই প্রায় সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়েছিল।
যাইহোক অনেক কষ্ট করে আমি নারিকেল গুলো বিক্রি করতে পেরেছিলাম। আমার মনে আছে দুই জোড়া নারিকেল ২০ টাকা করে ৪০ টাকায় বিক্রি করেছিলাম। অনেক কষ্ট করে বিক্রি করতে হয়েছিল এই কারণেই যে আমি একটা নাছো বান্দা ছিলাম। নানু আমাকে বলেছিল জোড়া 20 টাকার নিচে না বিক্রি করতে তাই আমি অনেক কাস্টমারকে ফেরত দিয়ে দিচ্ছি ২০ টাকার নিচে দাম বলাতে এই জন্যই আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল বিক্রি করতে। এরপর মনের আনন্দে নানুর জন্য পান, সাদা পাতা এবং চুন কিনে যখন রওনা দিব তখন দেখি অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। এই সময় তখন আনুমানিক সাতটা কি সাড়ে সাতটা হবে।
আসলে কখনো এভাবে একা একা রাতে এত দূরে বাজার থেকে যাতায়াত করা হয়নি তাই মনের ভিতর কেমন যেন একটা ভয় ভয় কাজ করছিল। কিন্তু হ্যাঁ বাড়ির বড়দের সাথে আরো অনেক রাত ও একসাথে বাজার থেকে ফিরেছি সে কারণে কিছুটা সাহস পাচ্ছিলাম। তারপরেও বেশ কিছুক্ষণ রাস্তার মাথায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম যে আমাদের বাড়ির দিকে যাওয়ার মত কেউ আছে কিনা বা কারো সাথে যাওয়া যায় কিনা। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখলাম যে কাউকে পেলাম না এবং মনে মনে ভাবতে লাগলাম যত দেরি করবো তত আরো রাত হয়ে যাবে তাই সাহস করে রওনা দিয়ে দিলাম। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা গ্রামের রাস্তাগুলো সন্ধ্যার পরে এত নির্জন নীরব হয়ে যায় সত্যি যে কেউ এই রাস্তা দিয়ে যেতে ভয় আতকে উঠবে। তারপরও আমি সাহস করে আল্লাহর নাম নিয়ে দোয়া দরুদ পড়ে রওনা দিলাম।
চলবে..........
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ২০-০৮-২০২২ ইং
আপনার ভৌতিক গল্পের বাস্তব কিছু রূপ দেখতে পাচ্ছি। এমনকি গল্পটি পড়ে বুঝতে পারছি খুব আকর্ষণীয় এবং কি ভয়ঙ্কর হবে। তবে আপনি যে বয়সের কথা বলছেন তখনকার সে বয়সে ভয় পাওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক। আর যেহেতু আপনার নানার বাড়ি থেকে বাজার অনেক দূরে বিষয়টা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার ছিল আপনার জন্য। তবে হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন গ্রামের বাড়িতে বেশিরভাগ মানুষ বিভিন্ন ধরনের ফল পাকড়া বিক্রি করে সাপ্তাহিক বাজার গুলো করত। অপেক্ষায় রইলাম আপনার ভূতিক গল্পের আগামী পর্বগুলোর জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার অপেক্ষার প্রহর শেষ দ্বিতীয় পর্ব অলরেডি সাবমিট করা হয়েছে। আশা করি পড়ে নেবেন। প্রথম পর্বের অসাধারণ ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।