নজরুল জয়ন্তীতে সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি।
প্রিয়, আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের, নজরুল জয়ন্তী সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
জন্মবার্ষিকীতে প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি রইলো সশ্রদ্ধ সালাম, বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আপনারা সবাই অবগত আছেন, আজ ১০ জ্যৈষ্ঠ। বাংলা সংস্কৃতি এবং সাহিত্য অন্যতম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মদিন। আজকের এই দিনে প্রিয় কবি নজরুল ইসলাম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিলো দুখু মিয়া। প্রিয় কবি অত্যন্ত দারিদ্র পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। ছোট কালে দারিদ্র্যের কারণে তিনি অনেক পেশায় নিয়োজিত ছিলেন ।
পরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বাংলা সাহিত্যে আর্বিভূত হয়েছেন উজ্জ্বল নক্ষত্র মতোন। আসলে বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামকে নিয়ে লেখার মতন সে জ্ঞান আমার নেই। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ। প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হচ্ছে চেতনার নাম একটি বিদ্রোহের নাম একটি মানবতার এবং সাম্যের নাম। বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তিনি সমানভাবে বিচরণ করেছেন। প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ।
প্রিয় কবি নজরুল ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক বিশাল ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। বাংলা সাহিত্যের যতোগুলো কবি, প্রাবন্ধিক এবং ঔপন্যাসিক রয়েছে কবি নজরুল সবার চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা ছিলেন। তিনি ছিলেন বিপ্লবী, বিদ্রোহী, সাম্যবাদী কবি এবং ঔপন্যাসিক। তার বিদ্রোহী কবিতা এবং বিভিন্ন প্রাবন্ধিক যখন পড়ি তখন মাথায় আসে না তিনি কিভাবে কবিতা লিখেছেন এবং প্রাবন্ধিক রচনা করেছেন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা ছাড়া কুঁড়েঘরে বসে।
যিনি সারা জীবন দারিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করে গিয়েছেন। এত চমৎকার শব্দচয়ন করেছেন। তার বিদ্রোহী কবিতা গুলো যখন পড়ি তখন রক্ত টগবগ করে উঠে। তিনি ছিলেন সত্যিকারে মানবতাবাদী কবি। তার প্রতিটি কবিতায় মানুষের সম অধিকারের কথা বলা হয়েছে। সাম্য মানবতার গান গেয়েছেন সারা জীবন।
সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই!
বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ-বেদনা-অশ্রুবারি,
তিনি নারী পুরুষের সম অধিকারের কথা বলেছেন। তিনি সবসময় ন্যায়বিচার ও সাম্যের প্রতি ছিলো অটল। তিনি পরাধীনতার শিকড় ভেঙ্গে স্বাধীন ভাবে বাঁচাতে চেয়েছেন। তাই তিনি বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন বারবার ব্রিটিশদের হাতে কারাবরণ করেছেন। ঔপনিবেশিক পরাধীনতার অবসানের আহ্বান করেছেন । ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ডাক দিয়েছেন। তিনি নিপীড়িত নির্যাতিত মজলুম মানুষের পক্ষে ছিলেন। তিনি ছিলেন সাম্য, সম্প্রীতি, গণমানুষের কবি হয়ে উঠেন। বাঙালি সংস্কৃতি এবং সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে দুই হাতে। তিনি শুধু বিদ্রোহী কবি ছিলেন না তিনি ধর্মের প্রতি ছিলো ভীষণ অনুরাগী।
বল বীর
বল উন্নত মম শির!
শির নিহারি’ আমারি নত শির
ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর—
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
আমি চির বিদ্রোহী,
আমি মাথা তুলেছি এই পৃথিবীর ওপারে,
উচ্চ, সর্বদা খাড়া এবং একা
তিনি অনেক ইসলামী সংগীত রচনা করেছেন। যে গুলো ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমানদের অন্তরে গেঁথে গিয়েছিলো। তিনি ছিলেন নবী প্রেমিক। নবীকে ভালোবেসে দিনে অনেক গজল রচনা করেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন বিশ্ব দরবারে। তার লেখনীর মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে নিয়ে গেছে উচ্চ মর্যাদায়। আজ প্রিয় কবির জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতি রইলো শ্রদ্ধাঞ্জলি।
মোহাম্মদের নাম জপেছিলি
বুলবুলি তুই আগে
তাই কিরে তোর কণ্ঠের ও গান
এত মধুর লাগে।
ওরে গোলাপ নিরিবিলি
নবীর কদম ছুঁয়েছিলি
তাই তার কদমের খুশবু আজও
তোর আতরে জাগে।
ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ
এলোরে দুনিয়ায়,
আয়রে সাগর আকাশ-বাতাস
দেখবি যদি আয়।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি অন্য কোন বিষয় উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ।
অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন । এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলায় প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন, মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করে থাকি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্মদিন কে কেন্দ্র করে তার কিছু জীবনী আপনি আজ আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। তিনি অনেক গুনের অধিকারী ছিলেন।কবির লেখা শত শত কবিতা,গান আজ ও আমাদের কে মুগ্ধ করে।তার অবদানের কথা আমরা কোনদিনও ভুলবো না।তিনি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আমাদের স্মৃতিতে।
সত্যিই আপু বিদ্রোহী কবি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আমাদের স্মৃতিতে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
https://x.com/MdAgim17/status/1794441026125672874?t=1ZuIHkcMUdV-vtRbq3PCOw&s=19
সবদিকে যেন নজরুল ইসলামের অসাধারণ ছিল নৈপুণ্য ছিল। যেমন কবিতা তেমন গান তেমন গল্প সেরকম ইসলামি সংগীত আবার শ্যামা সংগীতেও ছিল অসাধারণ দক্ষতা। কী অসাধারণ তার লেখাগুলো। পাশাপাশি উনি নারী পুরুষের ধনী গরীবের সাম্যের কথা বলে এসেছে সারাজীবন। উনাকে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
জি ভাই, বিদ্রোহী কবি বাংলা সাহিত্যের সকল শাখায় বিচরণ করেছেন সমানভাবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তিনি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে ২৫ শে মে বর্ধমান মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেছিলেন । এই কবি যখন আট বছর বয়স তখন তার পিতা মারা যায়। তারপর এই কবি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হন। এমনকি তিনি লটরে ও যোগদান করেছেন। কলেজে অধ্যায়নকালে তার একটি কবিতা প্রথম প্রকাশিত হলে তার চারিদিকে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এই কবিকে 1972 সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে বাংলাদেশের নিয়ে এসে জাতীয় কবি উপাধি দেয়। আর তির জন্মশতবার্ষিকে তাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
আপনার মন্তব্য পড়ে বেশ ভালো লাগলো। পোস্টটি পড়ে চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কাজী নজরুল সম্পর্কে অনেক কিছুই আসলে জানা ছিল, তবে আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজকে আরো অনেকগুলো তথ্য জানতে পারলাম। সত্যি তিনি ছিলেন অনেক গুণের অধিকারী একজন মানুষ। তাই জন্য তো আপনার লেখাগুলো পড়তে পড়তে শেষ হচ্ছে না। তার জীবনের অনেকগুলো দিক আপনি তুলে ধরেছেন। আপনার লেখাটা পড়ে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগলো।
প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে আপনি দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা গুলো সত্যিই অনেক ভালো লাগে। আর উনার মত একজন মানুষ হয়তো এই পৃথিবীতে দ্বিতীয় কেউ আসবে না। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পোস্টটি পড়ে সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে আপু অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।