ঢাকা যাওয়ার অনুভূতি/ দ্বিতীয় পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম

আসসালামু আলাইকুম

শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।

প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের, ঢাকা যাওয়ার অনুভূতি দ্বিতীয় পর্ব সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।

1694857044753.jpg

আসুন শুরু করি

IMG20230908124057.jpg

IMG20230908124045.jpg

আমি আপনাদের মাঝে গত পর্বে ঢাকা যাওয়ার অনুভূতির প্রথম পর্ব শেয়ার করেছি। আজ দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। কুমিল্লা দাউদকান্দি ব্রিজ পার হওয়ার পরে গাড়ি সুন্দর ভাবে চলছিল। নারায়ণগঞ্জ শহরে ঢুকার পরে কাঁচপুর ব্রিজের কাছাকাছি এসে প্রচন্ড যানজট মধ্যে পড়লাম। গাড়ি একেবারে ধীর গতিতে চলছে মনে হয় যেন কচ্ছপের পিঠে উঠেছি। দুপুর বেলায় গরমের মধ্যে কষ্ট হলেও গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে হবে। আসলে বাংলাদেশের জন্য যানজট খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। রাস্তায় বের হলেই যানজটের শিকার হতে হয়। যানজটের কারণে মানুষের মূল্যবান সময় ব্যয় হয় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যস্থলে পৌঁছা সম্ভব হয় না। আর শারীরিক মানসিকভাবে চাপতে রয়েছে।

IMG20230908124141.jpg

IMG20230908124102.jpg

গাড়ি যখন ধীর গতিতে চলছে তখনি কিছুক্ষণ পরপর আমড়া, শসা, পেয়ারা, বাদাম, বুট বিক্রেতা গাড়ির মধ্যে আসে। গাড়ির মধ্যে সব বয়সের লোকজন কম বেশি যার যার পছন্দ মতো আমড়া, শসা, পেয়ারা, বাদাম, বুট ক্রয় করে খাচ্ছে। আসলে গাড়ির মধ্যে বিক্রেতারা যখন বারবার আমড়া শসা, মাদাম নিয়ে এসে ভাইয়া লাগবে ভাইয়া লাগবে বলে তখন না কিনে উপায় থাকে না। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে সবাই বিরক্ত হয়ে পড়েছে। আর যখন খাবার জিনিস বারবার সামনে আনা হয় তখন তো খেতে বেশ ইচ্ছে করে। সাধারণত আমি বাইরে এই ধরনের খাবার খাই না। কিন্তু গাড়ির মধ্যে বসে থাকতে থাকতে নিজের কাছে এক ধরনের বিরক্ত বোধ হলো ।

IMG20230908130026.jpg

IMG20230908130022.jpg

তাই চিন্তা করলাম এক প্যাকেট আমড়া কিনে খাওয়া যায়। নিজের ভাবনা অনুযায়ী এক প্যাকেট আমড়া দশ টাকা দিয়ে কিনেছি। আমড়া খাচ্ছি আর বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতেছি। আমড়ার মধ্যে লবণ মরিচ দেওয়াতে খেতে বেশ ভালো লাগলো। আসলে যাদের বাড়িতে আমড়া, পেয়ারা, শসা রয়েছে তারা বাসায় এগুলো খেতে ভালো লাগে না কিন্তু গাড়ির মধ্যে খেতে এক ধরনের অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। প্রায় দুই ঘন্টা পর যানজট মুক্ত হলাম। গাড়ি আবার স্বাভাবিক নিয়ম চলছে। জানালার পাশে বসে কাঁচপুর ব্রিজের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চমৎকার ভাবে উপভোগ করছি।

IMG20230908132903.jpg

IMG20230908132900.jpg

অবশেষে ইট পাথরের শহরে প্রবেশ করলাম। যে দিকে তাকায় শুধু ইট পাথরের ভবন দেখা যায়। কোথায় তেমন গাছপালা দেখা যায় না। চিটাগাং রোড অতিক্রম করার পরে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার উঠলাম। হানিফ ফ্লাইওভারে উঠে ফ্লাইওভারে সৌন্দর্য উপভোগ করছি। ফ্লাইওভারে উপর থেকে নিচের দিকে তাকালে শুধু ছোট বড় বিল্ডিং দেখা যায়। কোথাও খালি জায়গা নাই। আমি ভাবছি ঢাকা শহরে যদি বড় ধরনের কোন ভূমিকম্প হয় তাহলে শহরের কি যে অবস্থা হবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানে। অলিতে গলিতে পর্যন্ত চায়ের দোকান। কোথায় মানুষ দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক ভাবে সতেজ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে এরকম পরিস্থিতি নেই ঢাকা শহরে।

IMG20230908181218.jpg

IMG20230908133209.jpg

অবশেষে ফার্মগেট এসে পৌঁছালাম । গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে মামার বাসায় হাজির হলাম। মামা মামি আমাকে দেখে বেশ খুশি হলো। তাদের সাথে কুশল বিনিময় করলাম। আমাকে দেখে বাসার সবাই খুবই আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়লো। গ্রামের সবার কথা জিজ্ঞেস করতেছে। সবাই কেমন আছে? নারিকেল দিয়ে পিঠা বানিয়ে নিয়েছি দেখে মামা আমি খুবই খুশি হলো। কিছুক্ষণ কথা বলার পরেই মামি আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি ভাত খাবো নাকি নাস্তা করবো?

IMG20230908141006.jpg

যেহেতু আমি গ্রামের ছেলে ভাত খেতে অভ্যস্ত তাই সহজে উত্তর দিয়ে দিলাম মামি এখন ভাত খাবো। তারপর ডাইনিং টেবিলে গিয়ে ভাত খেয়ে নিলাম‌ অনেক ধরনের আইটেম দিয়ে ভাত খাওয়া হলো। আজ আর নয়। আগামী পর্বে আপনাদের সাথে আবার কথা হবে।

পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি অন্য বিষয় আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ।

  • অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।

সবাইকে শুভ বিকাল
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।

আমার পরিচিতি

G0mIPwfurEJVlbirXIKFAUZVIuK.jpg

আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলায় প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন, মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করে থাকি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

♥️ আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ 🖤

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

ঢাকায় আসার প্রথম পর্বটি আমি আপনার পোস্টের মাধ্যমে পড়েছিলাম আপনি দারুণভাবে সেই পোস্টে উপস্থাপন করেছিলেন দ্বিতীয় পোস্টেও খুবই চমৎকারভাবে আপনি আমাদের মাঝে পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরেছেন। ঢাকা শহরটা আসলেই অনেক বেশি যানজটে পরিপূর্ণ ঢাকায় প্রবেশ করার পথেই আপনি সেটা বুঝতে পেরেছেন আর প্রচন্ড গরমে বসে থাকতে মোটেও মন চায় না। অবশেষে বসে থাকা অবস্থায় কিছু খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো এবং বাসায় গিয়ে গ্রামের ছেলেরা বরাবরই ভাত অনেক বেশি পছন্দ করে তাই কোন রকম কথা ছাড়াই ভাত খাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেনে খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ সুন্দর এই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

পুরো পোস্টটি পড়ে, এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাই।

 last year 

ঢাকায় যাওয়ার মুহূর্তে বেশ সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছিলেন বিভিন্ন স্থানের, আর সেই সমস্ত ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে আজকের এই পোস্টটি উপস্থাপন করেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে। খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন বর্ণনার সাথে অনেক সুন্দর ছিল আপনার আজকের এই ঢাকায় যাওয়ার দ্বিতীয় অনুভূতি পোস্ট।

 last year 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনার মত আমারও একটা অভ্যাস আছে বাসের মধ্যে খাবারগুলো আসলে সেগুলো টেস্ট করি। আর ঢাকা শহরের সবচেয়ে বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা হচ্ছে জ্যামে আটকে থাকা। ফার্মগেট এলাকায় মামার বাসায় এসেছেন তাহলে অনেক আইটেমের খাবার খেতে পারবেন হা হা, খাবেন আর বলবেন মামা বাড়ির আবদার 😆

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

জি ভাই মামার বাড়ির আবদার রয়েছে অবশ্যই। সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

যেকোনো স্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রে যানজট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আর যানজটের সমস্যা অনেক কষ্টের।অবশেষে আপনি আপনার গন্তব্যে পৌঁছে গেছেন জেনে ভালো লাগলো।আসলেই বাড়িতে যেসব জিনিস খেতে মন চায় না সেসব জিনিস পথ চলতে চলতে গাড়ির মধ্যে খেতে মন চায়।এটা মনে হয় সকলের ক্ষেত্রেই হয়, ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

আপনি ঠিকই বলছেন আপু, যানজটের সমস্যা অনেক কষ্টের। সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

গাড়িতে যাত্রা পথে আপনি অসাধারণ কিছু ফটোগ্রাফি করলেন। যানজটের কথা কি বলবেন আর এটা তো আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরে। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে এক সময় বোরিং হয়ে যায়। তাছাড়া গাড়িতে বসে এই ধরনের খাবার গুলো খেতে খুবই ভালো লাগে। আপনি তো খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করলেন। মাঝে মধ্যেই কোথাও দূরে ঘুরতে যাওয়া কিংবা কাজের মাধ্যমে যাওয়া এক সাথে দুইটা কাজ হয়ে যায়। আপনার ফটোগ্রাফি গুলোর মাধ্যমে দারুন সৌন্দর্য উপভোগ করলাম।

 last year 

বাস্তব কথা বলেছেন আপু, যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য।

 last year 

ঢাকা যাওয়ার অনুভূতির প্রথম পর্বটি আমার পড়া হয়নি, তবে দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।ঢাকা শহরে পৌঁছতে গিয়ে, আপনাকে দেখছি প্রচুর জ্যামের মধ্যে পড়তে হয়েছিল ভাই। টানা দুই ঘন্টা পর যানজট মুক্ত হল, এটা তো সত্যিই খুব বিরক্তিকর ব্যাপার। ঠিক বলেছেন আপনি, বাড়িতে বসে আমড়া , পেয়ারা,শসা এগুলো মাখা খেতে ভালো না লাগলেও ,গাড়িতে বসে কিন্তু বেশ ভালই লাগে।

 last year 

পুরো পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 last year 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার ঢাকায় যাওয়ার অনুভূতি। সত্যি আপনার শেয়ার করা পোস্টটি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। আপনি ঢাকা শহরকে ইট পাথরের বলে আখ্যায়িত করেছেন। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই যে দিকে তাকাই শুধু বড় বড় ঘরবাড়ি ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65556.02
ETH 2660.30
USDT 1.00
SBD 2.91