গল্প:- অবুঝ পাখির ভালোবাসা | প্রথম পর্ব।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম

আসসালামু আলাইকুম

শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।

প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে অবুঝ পাখির ভালোবাসা গল্পটির
সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।

heart-1776746_1280.jpg

আসুন শুরু করি

১৮১০ সাল নেই কোনো প্রযুক্তির ছোয়া । গ্রামের শান্ত পরিবেশ নদীর পাড়ে একটি কুঁড়ের ঘরে বসবাস করছে নীলকান্ত এবং তার মা। ঘুমের মাঝে নীলকান্ত আর তার মা পানির ঢেউয়ের শব্দ শুনতে পায়। নীলকান্তের বাবা গত দুই বছর আগে বন্যার সময় পানি বাহিত রোগ হয়ে মারা গেলো। নীলকান্তের ফুটফুটে সুন্দর একজন বোন ছিলো। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বোনটিও মারা গেলো। নীলকান্ত বোনকে বাঁচাবার জন্য অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে কিন্তু নিয়তির কাছে হেরে গিয়েছিলো। নীলকান্ত তার বোনকে বাঁচানোর জন্য নদীর পাড়ের অজয় গ্রাম পাড়ি দিয়ে অচেনা শহরে গিয়েছে ডাক্তার ডেকে আনার জন্য। দূর ঐ শহর থেকে ডাক্তার আসতে আসতে তার বোনটি মারা গিয়েছে।

তার আদরের বোনটি এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে নীলকান্ত কোনো ভাবে মেনে নিতে পারলো না। বোন মারা যাওয়াতে শোকে ভেঙে পড়লো। পৃথিবীতে আর তার মা ছাড়া কেউ নেই ‌। তার একমাত্র খেলার সাথী আদরের বোনটি মরে গেছে। প্রতিটি মুহূর্তে বোনটি কে মনে করে নীলকান্ত চোখে জল মাটিতে ফেলছে। প্রিয়জন হারিয়ে নীলকান্ত এখন নিঃস্ব। চোখে মুখে হতাশার ছাপ চারদিকে অন্ধকার দেখছে নীলকান্ত ‌। নীলকান্তকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতন কেউ নেই নদীর পাড়ে তারা মা ছেলে বসবাস করে। একমাত্র মেয়েটিকে হারিয়ে মাও হতাশায় ভুগতেছে। কেউ কাউকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতন পরিস্থিতি নেই।

নীলকান্ত কয়দিন ধরে না খেয়ে আছে। আর কিছুক্ষণ পরপর বোনের নাম ধরে ডাকে। যে মানুষ পৃথিবী থেকে একবার চলে যায় তা কখনো ফিরে আসে না। নীলকান্তের অবুঝ মনটা মানতে চায় না। সন্তান হারানোর শোক কাটিয়ে উঠে নীলকান্তের মা নীলকান্তকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। নীলকান্তকে নানা ভাবে চেষ্টা করছে খাবার খাওয়ানোর জন্য। নীলকান্ত খেতে বসলেই তার বোনের জন্য কান্না করে। নীলকান্ত খাবার খাওয়ার সময় তার বোনের সাথে প্রচুর দুষ্টামি করতো। বোনের কথা মনে পড়লে নীলকান্তের মুখের খাবার কোন ভাবেই যেন গলা দিয়ে নিচে নামতে চায় না।

নীলকান্তের বোনের নাম ছিল নীলাঞ্জনা ‌। নীলাঞ্জনা একদিন পড়ন্ত বিকেলে নদীর পাড়ে ঘুরতে বের হয়েছে। তখন নদীর পাড়ে ছোট ছোট গাছের ঝোপের মধ্যে দুটি ময়না পাখির দুইটি ছানা পেলো। ময়না পাখির ছানা পেয়ে নীলাঞ্জনা খুবই খুশি হলো। খুব যত্ন করে ঘরে নিয়ে আসলো ময়না পাখি দুটিকে। নীলাঞ্জনা তার ভাইকে ডেকে আনলো পাখি দুটি দেখার জন্য ‌। নীলকান্ত পাখি দুটি দেখে খুবই খুশি হলো ‌‌। দুই ভাই-বোন মিলে পাখি গুলোকে পরিযত্ন করছে। সব সময় তারা দুজন মিলে পাখি দুইটির প্রতি খেয়াল রাখছে। খেয়ে না খেয়ে সারাদিন বাইরে থেকে পাখির জন্য ঘাস ফড়িং বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড ধরে আনতেছে। এভাবে ভাই বোন দুজনের ময়না পাখির সাথে খুব সুন্দর দিন অতিবাহিত হচ্ছে‌। হঠাৎ করে নীলকান্তের বোন অসুস্থ হয়ে পড়ল ‌‌। ডাক্তার কি নীলকান্ত তার তেমন বুঝি না। তারপরও মায়ের মুখে ডাক্তারের কথা শুনে ডাক্তার আনার জন্য শহরের দিকে পাড়ি দিলো। ডাক্তার নিয়ে আসতে আসতে তার বোনটি মারা গেল - - -- - চলবে ‌।

পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি অন্য কোন বিষয় উপস্থাপন করবো , ইনশাআল্লাহ।

  • অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।

সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।

আমার পরিচিতি

G0mIPwfurEJVlbirXIKFAUZVIuK.jpg

আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

♥️ আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ 🖤

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

অবুঝ পাখির ভালোবাসা গল্পটির প্রথম পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। তবে নীলকান্তর বোনের মৃত্যুর কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো। আসলে তার বোনের সাথে তার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তাই তো সে বোনের মৃত্যু টা একেবারেই মেনে নিতে পারছে না। ডাক্তার আনতে আনতেই তার বোনটা তাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমার তো পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ হচ্ছে। যাইহোক পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

আপনার লেখা গল্প গুলো পড়তে খুব ভালো লাগে আমার কাছে। অনেক সুন্দর একটা গল্প লিখেছেন কিন্তু আজকে। আজকে এই গল্পটির প্রথম পর্ব শেয়ার করেছেন দেখে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আসলে ভাই বোনের সম্পর্ক একেবারে অন্যরকম হয়। নীলকান্ত এবং নীলাঞ্জনা সম্পর্কটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। বোনের মৃত্যুটা এভাবে মেনে নেওয়া নীলকান্তের পক্ষে একেবারেই সম্ভব না। এখন তো অপেক্ষায় আছি পরবর্তীতে কি হবে তা জানার জন্য।

 last year 

নীলকান্তর জন্য খারাপ লাগছে। সে বাবাকে হারানোর পর আদরের বোন কেও হারালো। এটা তার জন্য খুবই কষ্টদায়ক। আশা করি সামনের পর্বে পাখি সম্পর্কে আরো ভালো কিছু জানা যাবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56697.29
ETH 2390.51
USDT 1.00
SBD 2.29