মনের কালবৈশাখী (Storm in mind)
অন্তরে বয়ে চলে সুপ্ত কালবৈশাখী!
ধুলোর সাথে উড়িয়ে শুকনো পাতা;
বৃক্ষচ্যুত হয় আম্র মুকুল,
সাথে উন্মুক্ত করে স্মৃতির খাতা!
আমরা আছি, তাই অস্তিত্ব তোদের।
রাত শেষ হতে আর বেশি দেরি নেই, ভোর রাতে প্রথম ট্রেন এর সাইরেন শুনতে পেলাম। মানুষ বেরিয়ে পড়েছে তাদের নিত্য দিনের জীবনের সংঘর্ষে।
আমি কি করছি এত রাত জেগে, সেটা জানতে চাইছেন?
কি আর করবো! জীবনের কিছু পুরনো স্মৃতির পাতা উল্টাচ্ছি আর রোমন্থন করছি বেশ কিছু হারিয়ে যাওয়া সময়!
এই ভোর রাতে কেনো, সেটাই হয়তো কেউ কেউ ভাবছেন!
আসলে ভোর হবার আগের রাতটাই তো বেশি কালো, তাই না?
ঠিক ছোটবেলার সেই কালবৈশাখী ঝড়ের আগে আকাশ যেমন কালো করে আসতো!
বাংলা ক্যালেন্ডার বলছে এখন চৈত্র মাস। আর কিছুদিন বাদেই বাংলার নববর্ষ নিয়ে হাজির হবে বৈশাখ মাস।
শুধু নতুন বছর নয়, এই বৈশাখ মাসের সাথে জড়িয়ে আছে আরো অনেক কিছুই। কবি গুরুর জন্মদিন হোক, আর কাল বৈশাখী ঝড়ের স্মৃতি হোক।
স্মৃতি লিখলাম কারণ সেইভাবে এখন কালবৈশাখী চোখে পড়ে না। তার চাপ এবং অন্ধকার এখন বয়ে বেড়াচ্ছে অনেক মানুষ নিজেদের অন্তরে।
রাতের অবসানের সাথে একাকী অন্ধকার ঘরে নিজের মনেই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে মনে হলো আচ্ছা!
এই কালবৈশাখী ঝড় কি সেটা বুঝতে পেরেই আর আগের মত করে হাজির হয় না?
সময়ের হাত ধরে সেগুলো আমরাই তো উগড়ে দিয়ে থাকি মাঝেমধ্যে;
আর যারা সেটা পারে না? তারা নিঃশব্দে ছেড়ে চলে যায় পরলোকে, তাদের ভাগের কালবৈশাখীর চাপ অন্যের কাঁধে দিয়ে।
বেঁচে থাকার লড়াইটা কিন্তু নেহাত সহজ কথা নয়, সেটা অন্যের কাঁধে ভর করে হোক;
অথবা একা বইতে হোক না কেনো!
বাইরে থেকে সুন্দর পোশাক আর এক গাল হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা কাল বৈশাখীর ঘন আঁধার লুকিয়ে রাখা মানুষগুলোর ক্ষমতা আর পাঁচটা মানুষের চাইতে অনেক বেশি।
মোকাবিলা করে প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলা সহজ কথা নয়!
তার উপরে যদি আশেপাশের বিরুপধর্মী মানসিকতার ধুলোবালি চোখে প্রবেশ করে তাহলে কিছুক্ষনের জন্য দিকভ্রান্ত হওয়াটা স্বাভাবিক।
ধরে রাখার প্রয়াস প্রতিনিয়ত সকলেই করে চলেছে নিজ নিজ ক্ষমতায়;
তবে আজকাল প্রয়াস এর পদ্ধতি বদলে ফেলেছে অধিকাংশ মানুষ, সহজ পথ অবলম্বন করতে তাদের স্পৃহা অধিক।
নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি না এদের মাঝে তাই হয়তো অনেকখানি পিছিয়ে আর সকলের থেকে!
একেবারেই কষ্ট হয়না বলবো না, তবে ওই ঝড়ের পরের মানসিক প্রশান্তি, আমার সকল অবসাদকে শান্ত করে দিয়ে যায়।
আমার মত মানুষ এই সমাজে অচল, যারা আজও মানবিকতার কথা বলে, আর বিনা তাঁবেদারী করে চলে!
সেই হীরক রাজার শাসন ফিরে এসেছে, যেখানে রাজা যা বলবে পারিষদ উত্তরে শুধুই ঠিক ঠিক বলে যাবে!
হয়ে বধির আর হয়ে মুক!
সকল উত্তর করে আছে দখল;
আজও তাই বয়ে চলেছি,
সুপ্ত কালবৈশাখীর ধকল!
গতকালের অসমাপ্ত লেখা আজ সম্পূর্ণ করলাম, কিছু এলোমেলো ভাবনা যা হয়তো আমার মত অনেক মানুষ কে তাড়িয়ে বেড়ায় রাতের আধারে। আপনাদের মধ্যে কারা সেই মানুষদের দলে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন অবশ্যই, যারা নিজেদের মধ্যে সুপ্ত কালবৈশাখী বয়ে বেড়াচ্ছেন নিঃশব্দে।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
We support quality posts and good comments posted anywhere and with any tag.
Curated by : @ripon0630
এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে, যারা কিনা সুন্দর পোশাকের আড়ালে তাদের মনের কালিমা লুকিয়ে রাখে। এই লুকিয়ে রাখার ক্ষমতা সবার মধ্যে থাকে না। তবে যার মধ্যে থাকে সে সবার সামনে সেটা লুকিয়ে রেখে, নিজেকে সবার সামনে ভালো রাখার চেষ্টা করে। তাদের ক্ষমতা দেখে মাঝে মাঝে অবাক হতে হয় এবং একবার জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, কিভাবে পারেন এতটা নিতে।
আপনার এই কথাটা সত্য, তবে আমি মেনে নিতে পারলাম না। আসলে আপনার মত একজন মানুষ, এই সমাজের যদি সঠিকভাবে বসবাস করতে পারে এবং নিজের কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারে, অন্য কারো তাঁবেদারী না করে। তাহলে কিন্তু সমাজ আরো অনেক বেশি সুন্দর হবে, কিন্তু আপনাদের মত মানুষদেরকে এই সমাজে তেমন একটা মূল্যায়ন করা হয় না। এটা একেবারেই বাস্তব। কারণ যে মানুষ অন্যের মাথায় তেল দিয়ে চলতে পারে, তার দাম অনেক বেশি বর্তমান সমাজে। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।
জানিনা কতটুকু আপনার পোষ্টের মূল্যায়ন করে, মন্তব্য করতে পেরেছি। যদি ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভাগ্যিস মানিয়ে নিতে পারেন না, তাই ভীড়ের মাঝে আপনি হারিয়ে যান নি। আপনার এই না পারাটুকুই আপনার অস্তিত্ব, আপনার অহংকার, আর আমার মতো ক্ষুদ্র কিছু মানুষের অনুপ্রেরণা।
কিছু ক্ষেত্রে পিছিয়ে পরলেও, এক জায়গায় অনেকের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে আপনি। আর এখানেই আপনার পিছিয়ে পরার স্বার্থকতা। সম্পুর্ণ লেখার কোনটুকু নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করবো, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।
তবে একটা কথা অবশ্যই বলবো, কখনো কখনো কালবৈশাখী ভালো, তাতে অন্তত অনেক দিনের জমা ধুলো উড়ে যায়, সেটা মনের হোক কিংবা প্রকৃতির।
আপনার সম্পূর্ণ লেখা পড়ে একটা বাংলা গানের লাইন মনে পড়লো, - "তুমি ঠিক মায়ের মতোই ভালো।"ভালো থেকো। আমি আছি।