সফলতার পরিভাষা - আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে!
ব্যাক্তি জীবন হোক অথবা কর্ম জীবন সফল হতে চায় না এমন কোনো ব্যাক্তি বোধহয় এই পৃথিবীতে নেই।
ব্যাক্তি জীবনে যেখানে আমরা কাছের সম্পর্ক গুলোকে সর্বোচ্চ প্রয়াস দিয়ে ভালো রাখার প্রয়াস করি।
যেমন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের অনেক শখ শৌখিনতা তাদের জন্য বিসর্জন দিয়ে তাদের ভালো রাখার চেষ্টা করে যাই।
আবার আমার দেখা বাড়িতে আসা মাছের সবচাইতে বড় মাছের টুকরো পড়বে বাড়িতে সবচাইতে প্রাধান্য পাওয়া ব্যাক্তির পাতে।
রান্না হবে তাদের ইচ্ছে অনুসারে, তাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে এবং ভালোলাগা পদগুলো।
এগুলোই হয়তো ভালোবাসার একটা রূপ যেগুলো ব্যাক্তি জীবনে সম্পর্কগুলোকে সতেজ রাখে, সঙ্গে এগুলো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় শব্দ ছাড়াও।
অপরপক্ষে রান্নার প্রশংসা সেই ব্যাক্তির উদ্দেশ্যে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় যিনি সকলের কথা ভেবে নিজের পরিশ্রম দিয়ে সযত্নে গোটা দিন ধরে পছন্দের খাবার গুলো রান্না করেন।
এখন এই কাজগুলোর বিনিময়ে আমরা কিন্তু কোনো অর্থ উপার্জনের আশা রাখি না, বরঞ্চ পুরোটাই আমরা করি সম্পর্কের প্রতি নিজেদের ভালোবাসা তথা আন্তরিকতা থেকে।
তবে কর্মক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সম পরিমাণ একাগ্রতা তথা আন্তরিকতা দেখা যায় না! সেখানে কত কম পরিশ্রমে কত তাড়াতাড়ি অর্থ উপার্জন করা যায় সেদিকেই নজর থাকে বেশিরভাগ মানুষের। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে, তবে সেটা নগন্য।
কিন্তু আজকে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বলতে পারি পরিশ্রম, ভালোবাসা, আন্তরিকতা এবং সততা, সম্পর্কের মত কর্ম ও বোঝে;
এবং উপলব্ধি করতে পারে।
সময়ের সাথে ব্যাক্তির গুণাবলী অনুসারে তাদের ফল প্রদান করে, যাকে আমরা সফলতা বলে থাকি।
অনেকেই হয়তো নিজেদের ভ্রু কুঁচকে উপরিউক্ত কথাগুলো পড়তে পারেন, কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখি সম্পর্কের পরিমাপ আমাদের হাতে যেরকম আছে তেমনি কর্ম স্থানের পরিমাপ করা হয় আপনার পরিশ্রমের দ্বারা এবং ধৈর্য্য সহ উপরিউক্ত উল্লেখিত বিষয়গুলো।
ব্যাক্তি জীবনে সম্পর্কগুলোকে আগলে রাখতে আমাদের কাউকে বলতে হয়না কিন্তু কাজকে আপন করে নিতে আমাদের ঠেলতে হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই।
যারা ভালোবাসার পরিবর্তে তুলা যন্ত্র দিয়ে প্রতিদিন হিসেব কষেন এবং বিভিন্ন পথ অবলম্বন করেন সহজে, সল্প সময়ের মধ্যে বড়লোক হতে, তাদের একটা ছোট্ট উদাহরণ দিতে চাই লেখার এই জায়গায় এসে।
দীর্ঘ্য সময় ধরে নিজের জীবনের স্বাদ আস্বাদন করে যখন গাছ থেকে ঝরে পড়ে তখনও বাতাসের সাথে একটা ছন্দের সাথে ধীরে সুস্থে মাটি স্পর্শ করে।
সকলের জীবনেই একদিন ইতি নেমে আসবে, কিন্তু সেটা যেনো দ্রুত পাথরের মত না হয়;
সেই গাছের পাতার মতো সময়ানুসারে, সেটা ব্যাক্তি বিশেষের পছন্দের।
তেমনি কাজের জায়গায় নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে যারা নিজেদের কর্ম করে যান, সফলতা বিফলতার আগে নিজেদের উন্নত করার কথা ভাবেন তারাই অবশেষে সফলতার স্বাদ পেতে সক্ষম হন।
আমি এই প্ল্যাটফর্মে কাজ করছি বিগত তিন বছর সাত মাস ধরে! শুরু থেকেই আমার কখনোই স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল না, বরঞ্চ উল্টোটাই আমার মাথায় আজও কাজ করে।
অনেক অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে সম্মান হারিয়ে ফেললে এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে সৎ থাকতে না পারলে সেই অর্থ থাকে না বলে আমি বিশ্বাস করি।
কাজেই এক কথায় আমার কাছে সফলতা মানে সম্মান। যেখানে অর্থের পরিমাণ সল্প হলেও ধৈর্য্যের পরীক্ষায় পাশ করতে পারলে সঠিক সময় বাকিটুকু পথ সর্বশক্তিমান দেখিয়েই দেন বলে আমি মনে করি।
আপনাদের কে কিভাবে সফলতাকে দেখেন জানাতে ভুলবেন না মন্তব্যের মাধ্যমে।
আমার মতে ধৈর্য, সততা, পরিশ্রম এবং সঠিক পরিকল্পনা এই চারটি বিষয় কর্মক্ষেত্রে সফলতা লাভের চাবিকাঠি। এর কোন একটার ঘাটতি থাকলে সফলতা পূর্নাঙ্গতা পাবে না বলেই আমার বিশ্বাস। আর অনেক সময় বড় কিছু পাবার আশা করলে ছোট ছোট অনেক কিছুই ছাড় দিতে হয়।
অল্প সময়ে সফল হবার চিন্তা না করে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করা উচিত। আমার মা সবসময় একটা কথা বলতো যে, কিন্তু মানুষ আছে যারা সামনে দিয়ে একটা পিপড়া গেলেও সেটা দেখে কিন্তু পেছন দিয়ে হাতি গেলেও চোখে দেখে না।
আমিও এই জিনিসটা মানি। তাই সামনে হয়তো কোন একটা বিষয়ে সাময়িক লাভবান হতে পারবো কিন্তু সেই চিন্তা বাদ দিয়ে কিংবা সেই লাভটা বাদ দিয়ে কিছুদিন পরে যদি বেশি পরিমান লাভবান হওয়া যায় সেটাই করা উচিত।
আর এমন কোন কাজও করা উচিত না যাতে আমার সন্মান এর ওপর বিন্দুমাত্র প্রভাব পরে।কেউ যেন পেছনে কিছু না বলতে পারে সেভাবেই চলা উচিত।
ভালো থাকবেন সবসময়।
ধৈর্য পরিশ্রম সততা ভালোবাসা নিষ্ঠা অবশ্যই একটা কাজের মধ্যে থাকতে হবে। আমি যতটুকু দেখেছি, আমরা যে কাজে যত বেশি ভালোবেসে করি, সেই কাজ আমরা তত বেশি নিখুঁতভাবে করতে পারি।
আসলে আমাদের চাওয়া পাওয়ার কোন শেষ নেই। তাই কোন কাজ করার পরে চিন্তা করি। সেই কাছ থেকে আমি কি পরিমাণে পাব, বা কতটুকু পেলে আমি নিজে সন্তুষ্ট থাকব। কিন্তু আমরা এটা চিন্তা করে যদি কাজ করতাম যে, আমি কাজটাকে ভালোবাসি এখান থেকে আমার কোন কিছু পাওয়ার নেই। তাহলে হয়তোবা সেই আনন্দটা থাকতো অন্যরকম।
শুধুমাত্র এই প্ল্যাটফর্মেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও আমরা যদি ধৈর্য পরিশ্রম এবং নিজের সততা দিয়ে কাজ করে যাই। একটা সময় না একটা সময় সৃষ্টিকর্তা আমাদের দিকে মুখ তুলে তাকাবেই, কারণ সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাজ দেখে, আমরা কতটা নিখুঁতভাবে কাজ করি সেটা আগে পর্যবেক্ষণ করে, এবং তারপরে আমাদেরকে সেই কাজের বিনিময়ে ফল ভোগ করার জন্য সময় দেয়।
সময়টা পার হয়ে যাচ্ছে, অবশ্যই সেই সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। ধৈর্যের সাথে এগিয়ে যেতে হবে। ইনশাআল্লাহ অবশ্যই চেষ্টা করব ধৈর্য সততা দিয়ে আপনার সাথে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।