যন্ত্রের সাথে যখন আবেগ জড়িয়ে থাকে, তখন তার বিকলতাও কষ্টের কারণ হয়।
![]() |
---|
প্রিয় বন্ধুরা,
আজকে নিজের লেখা ফোনেই লিখছি, কারণ আমার ২৯ শে অক্টোবর ২০২০ তে পাওয়া উপহার স্বরূপ ল্যাপটপ আজ বিকল হয়ে পড়েছে।
আসলে আমি আমার প্রতিটি জিনিসের প্রতি যতটা সম্ভব যত্নশীল, আর এই প্ল্যাটফর্মে যার হাত ধরে আমার আগমন সেই আমাকে এই ল্যাপটপটি উপহার স্বরূপ দিয়েছিল।
আশাকরি নাম না উল্লেখ করলেও আপনারা বুঝবেন কার কথা বলছি। সে আসলে প্রথমদিন থেকেই বুঝেছিল এখানে কাজের জন্য এই যন্ত্রটির প্রয়োজনীয়তা, কাজেই আমাকে না বলেই একদিন বহুমূল্য উপহারটি তার হাত ধরেই আমার কাছে এসে পৌঁছেয়।
তারপর থেকে সেটা সঠিকভাবে গুছিয়ে দেওয়া এবং তার কাজ সম্পর্কে আমাকে ওয়াকিবহাল করা সবটাই সেই মানুষটির তত্তাবধানে সমাধা হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে আমি এক ইঞ্চি পরিবর্তন করিনি যন্ত্রটিতে, শুরু থেকে একইরকমভাবে কাজ করে চলে ছিলাম।
কাজেই আমার ল্যাপটপ আমার কাছে কেবলমাত্র যন্ত্র নয়, তার সাথে জড়িত আছে আমার আবেগ।
![]() |
---|
কাছের মানুষের থেকে পাওয়া যেকোনো কিছুই অমূল্য, কারণ সেখানে সম্পর্কের বন্ধন এবং ভালোবাসার ছোঁয়া থাকে।
তবে, এত যত্নে রেখেও সেই সঙ্গীটি আজ বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে, নিজেকে এতোটাই অসহায় মনে হচ্ছে যে, রাতের খাবারের ইচ্ছেটাও অবশিষ্ট নেই।
এটা বলতে আমার একেবারেই দ্বিধা নেই এই যন্ত্রের উপরেই এখানকার রোজকার সমস্ত কাজ নির্ভরশীল; এবং উপহারটি শুধুমাত্র আমার ভালোবাসা নয় আবেগ, অনুভূতির পাশাপশি আমার রুজির সহায়কও বটে।
কাজেই বুঝতে পারছেন আজকের দিনে দাড়িয়ে আমার মানসিক পরিস্থিতি কতখানি খারাপ।
প্রতিটি জিনিসের প্রতি আমার যত্ন সম্পর্কে অনেকেই জানেন, বিশেষ করে যারা কাছের মানুষ।
আজকে এককথায় নিজেকে পঙ্গু বলে মনে হচ্ছে, আমি সত্যি জানিনা এরপর আমি এখানের কাজগুলো সঠিকভাবে সমাধা করবো কিভাবে!
![]() |
---|
যেটুকু অসুবিধা ছিল এখন ল্যাপটপ বন্ধ করতে গিয়ে সেটা আরো বেড়ে গেছে, এবং দোকানে নেওয়ার পরিস্থিতিতে নেই বলে, এত রাত্রে কালকের জন্য অনলাইনে একটি অ্যাপের মাধম্যে টেকনিশিয়ান বুক করলাম।
আগামীকাল তার আসার কথা, এখন জানিনা আমার প্রিয় যন্ত্রটিকে পূর্ববর্তী জায়গায় ফেরাতে সক্ষম হবো কিনা!
কাজের জায়গায় কাজের জিনিস বিকল হয়ে গেলে তার চাইতে দুর্ভোগের কিছুই হয় না, কারণ এখানে একজন অ্যাডমিনের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি; আরও বেশ কিছু কাজের চাপ এখানে থাকে যেগুলো করতে এই যন্ত্রটির প্রয়োজনীয়তা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়।
আজ সত্যি বলতে লেখার মানসিকতা একেবারেই নেই, কারণ আগামী কালের কাজের কথা ভেবে এবং সেগুলো সম্পন্ন করবার দুশ্চিন্তায় আমি দিশেহারা।
কখনো কখনো মনে হয়, এত পরিশ্রমের পরেও হেরে যাচ্ছি, একা পথ চলা ভীষণ কঠিন কাজ, আরো বিশেষ করে তখন যখন বিপদে পাশে কাউকে পাওয়া যায় না।
![]() |
---|
বর্তমানে দাড়িয়ে আমার ঠিক সেরকম অনুভূতি হচ্ছে, দায়িত্ব পালনের জন্য সাধনের প্রয়োজন হয়, আর সেই সাধন যখন বিকল হয়ে যায় তখন বড়ো অসহায় লাগে।
আমি কোনো কালেই হিসেবী হতে পারিনি, যদি হিসেবী হতে পারতাম, তাহলে রাতারাতি একটা ব্যবস্থা করে নিতে পারতাম।
তিন বছর এখানে কাজ করে বুঝেছি, বিকল্প যন্ত্রের ব্যবস্থা এখানে সর্বাগ্রে করে রাখা উচিত, কারণ বিপদ কখনো বলে আসে না।
স্বজনহারা হলে যেরকম অনুভূতি হয়, আজকে আমার মনের অবস্থা একদম সেইরকম।
খুব কম সময় নিজের মানসিক অবস্থার কথা আমি এখানে বলতে আসি, সবসময় আমার চেষ্টা থাকে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করা, তবে এরই নাম জীবন যেখানে প্রতিদিন শেষ নয় বিভিন্ন অভিজ্ঞতা দিয়ে, যেটা আগেও বলেছি, আজকের দিনটি আমার সেরকম একটি অভিজ্ঞতায় শেষ হলো।
![]() |
---|
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
জেনে অনেক কষ্ট লাগলো আপনার এত সুন্দর একটি উপহারের জিনিস নষ্ট হয়ে গিয়েছে, যার জন্য আজকে আপনার অনেক খারাপ লাগছে বিপদ কোনদিন বলে আসে না হঠাৎ করে হয়ে যায় তখন হাতের কাছে কিছু থাকে না ঠিক করার মত। এরকম পরিস্থিতিতে আমি বেশ কয়েকবার পড়েছি, এবং নিজেকে সেরে উঠতে সক্ষম হয়েছি,
যাইহোক দিদি প্রার্থনা করি যাতে আপনার ল্যাপটপে যত দ্রুত সম্ভব ঠিক হয়ে যায় এবং পুরনো স্মৃতিতে আবার চলে যায়। ভালো থাকবেন।
একদমই ঠিক বলেছেন,, কাছের মানুষের কাছ থেকে পাওয়া উপহারটা! আমাদের কাছে সবচাইতে মূল্যবান! কারণ কাছের মানুষগুলো,,, আমাদেরকে ভালোবেসেই উপহারটা দেয়! সেটা হোক এক টাকার,, কিংবা ১ লক্ষ টাকার।
মাঝে মাঝে,, এই শব্দগুলো আমারও মনে হয়! মনে হয় এত পরিশ্রম করার পরেও কেন? আমরা হেরে যাচ্ছি! বিপদের সময় চারপাশে তাকিয়ে যখন দেখতে পাই! আমাদের প্রিয় মানুষগুলো আমাদের কাছে নেই! তখন মনে হয়,, আমাদের এত পরিশ্রম অনেকটাই বৃথা।
আসলে আপনার এই কথা পড়ার পরে! আমার একটা কথা মনে পড়ে গেল! গত বছর আমিও এমনি একটা সমস্যার মধ্যে পড়েছিলাম! হাতের ফোনটা হঠাৎ করেই অফ হয়ে গেল! কিন্তু হাতের কাছে অনেক কাজ! কি করবো বুঝতে পারছিলাম না! নিজেকে একদমই এই পৃথিবীতে,,, অসহায় মনে হচ্ছিল।
আজকে আপনার পোস্ট পড়ে,, আমার ওই দিনের কথা মনে হল! ঐদিন আমার মন মানসিকতা এতটাই খারাপ ছিল! যে মনে হচ্ছিল,, আরেকটা ফোন থাকলে হয়তো বা ভালো হতো! আজকে আপনার কাছেও ঠিক তেমনটাই মনে হচ্ছে! বিকল্প আরেকটা যন্ত্র থাকলে! আপনি সেটা দিয়ে কাজ করতে পারতেন।
যাইহোক সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি! সৃষ্টিকর্তা আপনার প্রিয় জিনিসটিকে,, খুব সুন্দরভাবে আবার পূর্বের অবস্থায়! আপনার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আসুক! ভাল থাকবেন।