পোড়া আমের শরবত (Roasted Raw Mango Chilled Drink)
"Edited by Canva"
Hello,
Everyone,
আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কাটুক এই প্রার্থনা রইলো। এতক্ষণে সকলে জেনে গেছেন যে, গতকাল ১৫ ই মে আমাদের কমিউনিটির দুই বছর পূর্ণ হলো।
তাই শুরুতেই অ্যাডমিন, তথা কমিউনিটিতে যুক্ত সকল সদস্যদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা রইলো। কারন আপনাদের ছাড়া এই কমিউনিটি অস্বিত্বহীন। আশাকরি আপনারা সকলে এই ভাবেই আমাদের কমিউনিটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবেন।
এই শুভদিনে আমি একটু অন্যরকম পোস্ট শেয়ার করবো ভেবেছিলাম, তবে একটু লেট হয়ে গেলো। তবুও আশাকরি আপনাদের আজকের পোস্ট পড়তে ভালো লাগবে।
বাংলাদেশের কথা জানিনা, তবে যারা ইন্ডিয়াতে এসেছেন বা থাকেন, লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করার সময় এই গরমকালে খুব পরিচিত একটি জিনিস বিক্রি হতে দেখে থাকবেন, সেটি হল "আম পোড়া আমের শরবত।"
আমি সবসময় লোকাল ট্রেনেই যাতায়াত করি। প্রতি বছর আমি ভাবি একবার টেস্ট করবো, কিন্তু সত্যি বলতে মন থেকে খুব একটা সায় পাই না। আদেও আম দিয়ে তৈরি করে, নাকি অন্যকিছু কে জানে। যাইহোক অনেক দিন ধরেই ভাবি বাড়িতে একবার তৈরি করবো। কিন্তু রান্নার প্রতি এতো বেশি অনিচ্ছা যে, এই সামান্য কাজ করতে একটুও ইচ্ছা করে না।
যাইহোক, অনেক দিন অপেক্ষা করার পর গতকাল আমি বাড়িতে তৈরি করলাম "পোড়া আমের শরবত।" সামান্য উপকরণ,ও সামান্য কষ্টের বিনিময়ে বেশ ভালো একটি শরবত খেলাম আমরা। ভাবলাম আপনাদের সাথেও শেয়ার করি, এই শরবত বানানোর পদ্ধতি।
"পোড়া আমের শরবত বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ"
উপকরণ | পরিমান |
---|---|
১. কাঁচা আম (পোড়া) | ১ টি |
২. চিনি(গুঁড়ো) | ১ কাপ |
৩. বিট লবন | ৩-৪ চা চামচ |
৪. গন্ধরাজ লেবু | অর্ধেক |
৫. চাট মশলা | ১ প্যাকেট (ছোটো |
৬. জল জিরা | ১ প্যাকেট |
৭. ঠান্ডা জল | প্রয়োজন অনুসারে |
৮. লঙ্কার গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
"শরবত বানানোর পদ্ধতি"
এবার আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব এই শরবত তৈরি করার পদ্ধতি। প্রথমেই জানিয়ে রাখি আমটা আপনারা উনুনে বা গ্যাসে যেকোনো ভাবেই পোড়াতে পারেন।
আমাদের বাড়িতে জল গরম করার জন্য শাশুড়ি মায়ের ছোট্ট একটি উনুন আছে, যেখানে শ্বশুর মশাইয়ের জন্য শাশুড়ি মা প্রতিদিন স্নানের জল গরম করেন।
আমি বলে রাখায় তিনি আগের দিন আমটা উনুনের মধ্যে দিয়ে পুড়িয়ে রেখেছিলেন। পরে আমি খোসা ছাড়িয়ে আমের পাল্প গুলো বের করে, ফ্রিজে রেখেছিলাম। যেটা আমি শরবত বানানোর কাজে ব্যবহার করেছি। আপনারা চাইলে সদ্য পুড়িয়ে নেওয়া আমও ব্যবহার করতে পারেন।
এরপর আমি পরিমাণমতো চিনি নিয়ে মিক্সার গ্রাইন্ডারে সেটার গুঁড়ো তৈরি করে নিলাম। আসলে গুঁড়ো তৈরী করে নিলে সেটা সহজেই গুলে যায়,এই কারণে গুঁড়ো তৈরি করে নেওয়াই ভালো।
চিনির গুঁড়ো নামিয়ে রেখে ওই গ্রাইন্ডারের মধ্যেই আমি বের করে রাখা আমের পাল্প গুলো দিয়ে একদম মিহি একটি পেস্ট তৈরি করলাম। পেস্ট তৈরি করার সময় সামান্য পরিমাণে জল ব্যবহার করবেন, তাহলে পেস্টটি সুন্দর তৈরি হবে।
এইবার সমস্ত উপকরণ সাজিয়ে নিয়ে, আমি শরবত তৈরি করতে শুরু করলাম। প্রথমে একটি গ্লাস নিয়ে নিলাম এবং সেটি সাজানোর জন্য আমি সামান্য লঙ্কা গুঁড়ো, বিট লবণ ও সামান্য লেবুর রস ব্যবহার করেছি। এই আইডিয়াটা অবশ্য আমি ইউটিউব দেখেই পেয়েছি। দেখতে বেশ আকর্ষণীয় লাগছিল বলে আমিও সেটা ট্রাই করলাম।
অন্য একটি পাত্রে আমি পোড়া আমের পেস্ট নিলাম। তার মধ্যে পরিমাণ মতো চিনি গুঁড়ো, বিট লবণ দিয়ে একটু নেড়ে নিলাম।
এরপর পরিমাণ মতো ঠান্ডা জল দিয়ে দিলাম। জল দেওয়ার শেষে উপর থেকে আমি চাট মশলা, জল জিরা এবং লেবুর রস দিয়ে দিলাম।
এরপর সবকিছু ভালো করে মিশিয়ে। আগের থেকে সাজিয়ে রাখা গ্লাসে ঢেলে দিলাম। আর এক টুকরো লেবু গোল করে কেটে, আমি গ্লাসের উপর রেখে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে নিলাম।
ব্যাস এইটুকুই কাজ, এরপর গ্লাসটা হাতে নিয়ে প্রশান্তির চুমুক দিন। শুভ আর শাশুড়ি মা বেশ ভালোই বলেছে। আমার নিজেরও এটি বেশ রিফ্রেশিং লেগেছে।
খুব সহজে তৈরি এই শরবত খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো দুপুরবেলা। এরপর একদিন দুপুরে বানানোর ইচ্ছা রয়েছে। যাইহোক আপনাদের কার কার এই শরবত পছন্দ জানাবেন। আর এই পদ্ধতিটি কেমন লাগলো, এবং যদি অন্য কোনো ভাবে এটা তৈরী করার পদ্ধতি জানা থাকে, সেটাও মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।
ভালো থাকবেন সকলে। আরও একবার সকলকে ধন্যবাদ কমিউনিটির পাশে থাকার জন্য। আশাকরি এমন ভাবেই আমরা একসাথে কমিউনিটির আরও অনেক জন্মদিন পালন করতে পারবো।
দিদি সত্যি বলতে পোড়া আমের শরবত আমি কখনো খাই নি। আর এই প্রথম আপনার লিখা পড়ে শরবতের বিষয়টি জানতে পারলাম।তবে খেতে বোধয় বেশ ভালোই ছিলো। যেহেতু আমাদের দেশে এখন আমের মৌসুম চলছে সেহেতু রেসিপিটি ট্রাই করাই যায়।
অবশ্যই আমি আপনাকে জানাবো এবং রিভিউ দেবো এই পোড়া আমের শরবতের বিষয়ে। ভালো লাগলো আপনার লিখা পড়ে। ভালো থাকবেন দিদি।
কখনো খান নি বুঝলাম, তবে আশাকরি এই বছর আপনি নিশ্চয়ই খাবেন। রেসিপিটি দেখে আপনার যতটা লোভনীয় লাগছে, খেতে ততটাই সুস্বাদু ও রিফ্রেশিং হবে। শুধু একটু সময় নিয়ে তৈরি করলে আশাকরি আপনার ও আপনার পরিবারের সকলের খেতে ভালো লাগবে। বিশেষ করে এই গরমে যদি দুপুরবেলা এই শরবতটি তৈরি করেন,তখন এটি আরও বেশি লাগবে। আপনার রিভিউ জানার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন।
আমপোড়া শরবত আগে একবার বানিয়েছি। আপনি যেভাবে তৈরি করেছেন ঠিক সেভাবেই তৈরি করেছিলাম। এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা পোড়া আমের জুস সত্যি হৃদয় জুড়ানো প্রশান্তি এনে
দেয়।
তবে এবার গরমে এখনো তৈরি করা হয়ে ওঠেনি। আপনার পোস্ট পড়ার পরে একটু তাড়া বোধ করছি। খুব জলদি করতেই হবে। কারণ আপনি লোভ লাগিয়ে দিলেন 😋
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য।
হা হা হা....... তাহলে আর দেরি কেন, এরমধ্যেই করে ফেলুন। কারন যে পরিমানে গরম আজকাল পরছে, তাতে এই শরবত খাওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আম পোড়া শরবত অনেক বারই খেয়েছি তবে রাস্তায় কিংবা ট্রেনে খাওয়া হয় নাই। বাসায় বানিয়েই কিংবা অন্য মানুষ এর বাসায় খেয়েছি।
বাসায় বানাতে আমি অবশ্য জল জিরা কখনো ব্যবহার করি নাই। এই বছর আলসেমি করে এখনও বানাই নাই। কিন্তু আপনার পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে এখনই খাই। সত্যি কথা বলতে ছবিতে যেকোনো খাবারের ছবি দেখলেই আমার খেতে ইচ্ছে করে কেন জানি।
তবে এর পরে যখনই বানাবো তখন আপনার পদ্ধতি অনুসরণ করে বানিয়ে দেখবো কেমন লাগে খেতে।
চমৎকার এই শরবতের রেসিপিটা আমাদের সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো এবং সুস্থ থাকবেন সবসময়।
আমাদের এখানে ট্রেনে গরমকালে এই আম পোড়া শরবত খুব বেশি পরিমাণে বিক্রি হয়। তবে ট্রেনের থেকে কিনে কখনো খাওয়া হয়নি। এদিন বাড়ি ফেরার সময় ট্রেনে দেখে ভীষন ইচ্ছা করছিলো খেতে, তাই এইদিন বাড়িতে বানিয়েই ফেললাম। আলসেমি করে লাভ নেই, বানিয়ে ফেলুন খুব তাড়াতাড়ি, কারন গরম চলে গেলে এই শরবত খাওয়ার মজা থাকবে না। জল জিরা ব্যবহার করে দেখবেন, আশাকরি আপনার ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Thank you so much @steemcurator06 & @goodybest for supporting my post. 🙏
সত্যিই আপনার পোষ্টের পর আমি শরবতের ছবিগুলো দেখে খেতে খুব ইচ্ছে করলো।
কিন্তু হ্যাঁ ট্রেনে বর্তমানে অনেক রকমেরই জিনিস দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সচরাচর আমি ট্রেনের কোন জিনিস কিনে খাই না।
যদিও আপনি ট্রেনে পোড়া আমের শরবত দেখেছেন। কিন্তু সেখানে না খেয়ে বাসায় বানিয়ে খেয়েছেন খুব ভালো করেছেন।
এখন পর্যন্ত কখনো পড়া আমি শরবত খাওয়া হয়নি। তবে আপনার শরবতের ছবি দেখে মনে হলো খেতে খুব সুস্বাদু।
আমাদের এখানেও ট্রেনে অনেক জিনিস বিক্রি হয়, খাবার থেকে শুরু করে সংসারের যাবতীয় জিনিস সবই মোটামুটি পাওয়া যায়। তবে ট্রেনের বেশিরভাগ জিনিসই না খাওয়াই শ্রেয়। আমিও এই প্রথমবার বানালাম পোড়া আমের শরবত। খুব বেশি সময় বা উপকরণ এরজন্য প্রয়োজন হয় না। তাই চেষ্টা করে বানিয়ে নিতেই পারেন। আশাকরি খেতে আপনার ভালোই লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে নিজস্ব মন্তব্য শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
এখন ট্রেনে বা স্টেশনে গরমকালে পোড়া আমের শরবত থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের শরবত পাওয়া যায়। তবে আম পোড়া শরবত আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি ও বাড়িতে কয়েকদিন আগে বানিয়ে ছিলাম।এই গরমে আমি পোড়া শরবত খেতে বেশি ভালো লাগে। আপনার পোস্টটা খুব ভালো লাগলো।