"অর্থের কাছে মানবিকতা বিক্রিত না হোক, এইটুকুই চাওয়া"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক সুন্দর ভাবে শুরু হয়েছে।
যদিও আজকাল আবহাওয়ার এমন অবস্থা যে কারোর দিন খুব ভালোভাবে কাটা সম্ভব নয়। ঘুম থেকে ওঠার পরে রোদ্রের তীব্রতা দেখে মনে হয় না যে, সকাল সাতটা বাজে। কারণ সকালে রোদ্রের তাপও দুপুরের মতনই তীব্র থাকে।
কিন্তু প্রকৃতির বিপরীতে যাওয়ার মতন সাধ্য আমাদের কারোর নেই। এই কারণে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা এবং কিছু সাবধানতা অবলম্বন করাই বর্তমানে ভালো থাকার একমাত্র উপায়।
![]()
|
---|
গত কয়েকদিন হসপিটালে যাওয়ার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলতে পারি, প্রত্যেকেই এই গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোবেন না। কারণ এইরকম আবহাওয়ায় অনেক মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। হয়তো বাড়িতে বসে ততটা আন্দাজ করা সম্ভব নয়, যতটা হসপিটালে সামনে অপেক্ষারত অবস্থায় দেখা যায়।
গত কালকের ছোট্ট একটি অভিজ্ঞতা আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। গতকাল কমিউনিটির আর্ট ক্লাস ছিলো। এই কারণে একটু তাড়াতাড়ি শ্বশুর মশাইয়ের সাথে দেখা করে আমি হসপিটালের বিপরীতে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
![]()
|
---|
কারণ হসপিটাল চত্বরে কোনো নেটওয়ার্ক থাকে না। কারন সেখানে জ্যামার লাগানো রয়েছে। সুতরাং আমিও জানতাম হসপিটালের ভেতরে বসে ক্লাসে যুক্ত থাকা সম্ভব হবে না। তাই আমি রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
ক্লাস তখনও শুরু হয়নি। দেখলাম একটি টোটো এসে দাঁড়ালো এবং সেখান থেকে ছোট্ট একটি বাচ্চাকে কোলে নিয়ে তার বাবা,মা এবং সাথে আরও দুজন হসপিটালের সামনে নামলো। বাচ্চাটাকে একটা ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে নিয়ে এসেছিল।
খুব তাড়াহুড়ো করে তারা হসপিটালে ভিতরে ঢুকলো এবং রিসেপশনে কথা বলতে শুরু করলো। বাইরে থেকে দেখে যতটা বুঝতে পারলাম বাচ্চাটাকে ততক্ষণে ইমার্জেন্সি রুমে নিয়ে গেছে এবং বাচ্চাটার বাবা রিসিপশনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো।
একটু বাদেই তিনি রিসেপশন থেকে বেরিয়ে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা সুবিধা নেওয়ার যে অন্য আরেকটি বিভাগ রয়েছে সেখানে গেলেন। এরপরে কি হয়েছিল সেটা আর দেখার সুযোগ হয়নি। ক্লাস শেষ করে আমি, ননদ এবং ওনার হাজবেন্ডের জন্য রিসেপশনে অপেক্ষা করছিলাম।
কিছুক্ষণ বাদে ওনাদের সঙ্গে থাকা বয়স্ক মানুষটি রিসেপশনে এলেন এবং কিছু ক্যাশ টাকা তিনি রিসেপশনে জমা করলেন। এরপর তিনি চেয়ারে এসে বসলেন। কিছুক্ষণ বাদে বাচ্চাটির বাবা এলো, হাতে একটা কাগজ নিয়ে।
তাদের দুজনের কথোপকথনে মনে হলো, হসপিটাল থেকে চিকিৎসা বাবদ অনেকগুলো টেস্ট দিয়েছে এবং যে ওষুধগুলোর নাম বলেছে সেগুলো যথেষ্ট দামি। অর্থাৎ তাদের জন্য এই হসপিটালের চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যয়বহুল হবে।
তাই তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। যদি তারা সেই পেপারটিতে সাইন করে, তারপরেই বাচ্চাটা ট্রিটমেন্ট শুরু হবে। আর যদি সেটা না হয়, তাহলে বাচ্চাটাকে ফেরত নিয়ে যেতে হবে এবং অন্য কোথাও চিকিৎসা করাতে হবে।
এই বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথোপকথন চলছিলো। এমতাবস্থায় ননদের ইশারায় রিসেপশন থেকে বেরিয়ে এলাম এবং জানতে পারলাম শ্বশুর মশাইয়ের বিষয় ডক্টর বাবুর সাথে যে কথা হয়েছ, তাতে যে দুটো রিপোর্ট আমরা করিয়েছি সেখানেও টিউমারের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়নি। তাই এখন বায়োপসি করাতেই হবে এবং সেটাও যথেষ্ট ব্যয়বহুল।
যদিও সিদ্ধান্তটা আমি ননদ এবং ননদের হাজবেন্ডের ওপরেই ছেড়েছি। কারণ তারা আমার থেকে বয়সে এবং অভিজ্ঞতায় বড়, তাই সেখানে আমার মতামতের থেকে তাদের মতামতটাই সঠিক হবে। ননদের সাথে কথা বলার প্রসঙ্গে জানতে পারলাম এমারজেন্সি রুমে একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তারপর বিষয়টি আমিও তাকে খুলে বললাম।
যাইহোক এরপরে আমরা উপরে শ্বশুর মশাইয়ের সাথে আরও একবার দেখা করে ফিরে আসছি। তখন দেখলাম বাইরে টোটো দাড়ানো এবং বাচ্চাটিকে সাথে নিয়ে বাচ্চার পরিবারের সকলে হসপিটালের সামনে থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
![]()
|
---|
হয়তো হসপিটালের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী বাচ্চাটির চিকিৎসা এখানে করানো ওর পরিবারের পক্ষে নয়। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ভদ্র মহিলা জানালেন, তারা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে এসেছিলেন এবং সেই বিষয় যখন হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললেন, তখন তারা জানায় এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রক্রিয়া সকালের আগে করা সম্ভব নয়, তাই চিকিৎসাও সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে শুরু করা হবে।
শুনে বেশ রাগ হলো। বুঝলাম চিকিৎসাটা আসলে ওদের কাছে একটা ব্যবসা। ওরা সেই মানুষদেরকে চিকিৎসা করাবে যারা ওদের প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে। যদি সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, কোনো রোগী মারাও যায় তাতেও তাদের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই।
সত্যিই মানবিকতা আজ শুধুমাত্র গল্প, সিনেমা ও কল্পনায় সত্যি হয়। বাস্তবে তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শুধুমাত্র টাকার জন্য, না জানি এমন কতো অসহায় মানুষ প্রতিদিন লড়াই করছে। সরকার সুযোগ দিয়েছে ঠিকই, তবে সেটাকেও সঠিক ভাবে কাজে লাগানো হয় না। কারন তাতে কিছু মানুষের আত্ম অভিসন্ধি পূরণ হবে না।
![]()
|
---|
অনেক মানুষ নিজেদের বুদ্ধিমান ভেবে, কিছু মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে চলেছে অবিরাম। অথচ তারা ভুলে যায়, সবার সব হিসাবে কিন্তু একজনের কাছে জমা থাকে। যেকোনো পেশার মূল লক্ষ্য অবশ্যই অর্থ উপার্জন। তবে সেখানে মানবিকতার কোনো জায়গা থাকবে না, এটা কখনোই কাম্য নয়। বিশেষত যারা চিকিৎসার মতো একটি পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
যাইহোক,বাচ্চাটি কেমন থাকবে জানি না। আর কখনো দেখা হবে না হয়তো, কিন্তু ওর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা অবশ্যই করবো। আমি আগে বিশ্বাস করতাম জীবনে বাঁচার জন্য খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন নেই। তবে এই রকম কিছু পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে মনে হয়, আমার চিন্তা ভাবনা ভুল। জীবনে সবথেকে বেশি প্রয়োজন হয়তো অর্থেরই। তবেই প্রিয়জন যেমন পাশে থাকবে, তেমনি প্রয়োজনও মিটবে।
সকলের সুস্থতার প্রার্থনা করে আজ লেখা শেষ করলাম।শুভরাত্রি।
আপনাদের পোস্ট পড়ে এতটুকু বুঝতে পারলাম বর্তমানে ভারত এবং বাংলাদেশে প্রচন্ড রোদের তাপমাত্রা এবং এই গরমে বাহিরে যাওয়া আসলে অনেক কঠিন এক ব্যাপার এবং দিয়ে কোন একটি কাজ সম্পন্ন করে আসা আরো বেশি কষ্টকর হয়ে যাবে।
আপনার পোস্ট পড়ে অনেকটা খারাপ লাগলো আসলে অধিকাংশ জায়গায় আমি আমার বাংলাদেশেও দেখেছি এমন ঘটনা হতে। টাকার কাছে দিন দিন আমরা কেমন জানি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি আমাদের ভেতরে মানবতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি কে বেঁচে থাকলো বা কে মারা গেল এটা আমাদের দেখার প্রয়োজন আমরা মনে করি না।
হয়তোবা কিছু সময়ের জন্য কাছে টাকা না থাকলেও সমস্যার কথা জেনে টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয় কিন্তু জীবন চলে গেলে জীবন ফিরিয়ে আনা আর কখনো সম্ভব হবে না এই জিনিসগুলো যদি তারা বুঝতো তাহলে এমন ধরনের কাজ করতো না।
আজকাল মানবিক মানুষের সত্যিই অভাব। তার উপরে যদি আসে টাকা ইনকাম করার প্রসঙ্গ, তাহলে মানুষ আরও অমানবিক হয়ে যায়। টাকার থেকে জীবনের মূল্য কিছু মানুষের কাছে কম সেদিনের ঘটনায় বুঝতে পারলাম। আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো, ভালো থাকবেন।
প্রথমেই বলব আমিও এই মেডিকেল সেক্টরে কর্মরত আছি। সে ক্ষেত্রে আমি খুব ভাল করেই জানি বর্তমানে চিকিৎসা সেবাটা কোন পর্যায়ে চলে গেছে। গ্রামের মানুষেরা একটা কথা বলতো সব সময়। ধনীরা সবসময় ধনী হয়। আর গরিবরা সব সময় গরিবই থাকে। সেরকম বর্তমানে যার টাকা পয়সা আছে তাদের জন্য ভালো চিকিৎসা আছে। কিন্তু যার টাকা পয়সা এবং অর্থ তেমন নাই তারা চাইলেও ভালো চিকিৎসা করাতে পারছে না। এই চিকিৎসা সেবায় নিজের মানবতাকে সবাই বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে এই চিকিৎসা সেবাটা একদম ব্যবসায় পরিণত হয়ে গেছে। আপনার পোষ্টের বাচ্চাটির পরিবারের গল্পটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো।
সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
সত্যিই তাই, আজকাল চিকিৎসা সেবার বদলে ব্যবসায় পরিনত হয়েছে। চিকিৎসা জগতে যুক্ত থাকার কারণে, আপনি এই বিষয়গুলো আরও ভালো বুঝবেন। তবে আমরা যারা এই সম্পর্কে অবগত নই, তাদের জন্য বিষয়গুলো অনেক বেশি হতাশাজনক। ধন্যবাদ এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
দিন দিন মানুষের ভেতর থেকে মানবতা উঠে যাচ্ছে। সবকিছুই কমার্শিয়ালভাবে দেখছে মানুষ। হাতে গোনা কয়েকটি জায়গা বাদ দিয়ে সবাই চিন্তা করে কীভাবে টাকা কামাবে। এমনও অনেক ডাক্তার আছে শুধুমাত্র কমিশন পাওয়ার লোভে টেস্ট করতে দেয় কিন্তু রোগীর রোগের সাথে সেই টেস্টের কোন সম্পর্কই নেই। পোস্টের ঘটনাটা পড়ে বাচ্চাটার জন্য খুব খারাপই লাগলো। যতটুকু বোঝা গেল হাসপাতালের কর্মীরা চাইলে বাচ্চাটার চিকিৎসা করতেই পারতো। শুধুমাত্র টাকার জন্যই ফিরিয়ে দিলো। সাধারণ মানুষ এখন সব জায়গায় জিম্মি হয়ে গেছে। অর্থের কাছে বিবেক বিক্রি করে অসৎ মানুষগুলো হয়তো কিছু বেশী উপার্জন করতে পারবে কিন্তু এক সময় ঠিকই প্রকৃতি এর বদলা নিবে। তাই আমাদের এসব থেকে বেরিয়ে এসে মানবিক দিকগুলোও বিবেচনা করা উচিত।
একদমই, চাইলেই ওনরা বাচ্চাটির চিকিৎসা করাতে পারতেন। এমনকি ওনরা ট্রিটমেন্ট শুরু করার পর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু টাকা ইনকাম করা যাদের মুল লক্ষ্য, মানবিকতার মূল্যায়ন তারা জানে না। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ার জন্য ও এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনার সম্পূর্ণ লেখাটা পড়ে সত্যি খুব খারাপ লাগলো। তবে এটাই বাস্তবতা। হসপিটালগুলো এখন ব্যবসা সমতুল্য। কোনো রোগীর প্রতি ওদের কোনো মায়া কাজ করে না। ওদের কাছে অর্থের সম্পর্ক আগে।
এটা আপনি একদম ঠিক বলেছেন। আমি শুধু একটা কথা ভাবি, হসপিটালে উপস্থিত সকলেরই পরিবার রয়েছে, তাদের পরিবারের কারোর অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে তাদের কেমন লাগবে। বর্তমানে স্বার্থ ছাড়া কেউ কাউকে সামান্য সাহায্য টুকুও করে না। ভালো থাকবেন।
সত্যি কথা বলতে আমাদের দেশের হসপিটালগুলিতেও একই চিত্র দেখা যায়। একই দেশ ভেঙে যেহেতু দুটো দেশ হয়েছে তাই মনমানসিকতাও একই রকম। কিছু কিছু জায়গায় ডাক্তাররা প্রয়োজন না থাকলেও টেস্ট দিয়ে বসে থাকেন কারণ এতে ভালো কমিশন পাওয়া যায়। আবার কিছু হাসপাতালে ঢুকতে গেলে দুইবার চিন্তা করতে হয় খরচের কথা ভেবে।
আপনার শশুর মশায়ের বায়োপসি যদি করাতেই হয় তাহলে দ্রুত করে ফেলাটাই ভালো। এতে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যাবে। পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে টাকা থাকা যে কতটা প্রয়োজন সেটা বুঝা যায়।
আপনার শশুর মশাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রাথনা করি। আপনিও ভালো থাকবেন।