🚊🚊জীবনে প্রথম ট্রেনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা 🚉🚉 প্রথম পাঠ

🚅ভ্রমন পিপাসু মানুষের কাছে যেকোনো ধরনের ভ্রমণ খুবই মজাদার হয়ে থাকে ঠিক তেমনি আপনাদের মাঝে আমার জীবনে প্রথম ট্রেন ভ্রমণের কিছু গল্প শেয়ার করতে চলেছি।🚉

Src

অবশ্যই আপনারা মনোযোগ সহকারে আমার পুরো গল্পটি পড়বেন আর এই গল্পটি সম্পূর্ণ আমার নিজের এবং আমি নিজের ট্রেন ভ্রমণ করে যে অনুভূতি যে আনন্দ পেয়েছি সেটাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করছি।

আসলে আমাদের গ্রাম অঞ্চলের মানুষের কাছে ট্রেন ভ্রমণ বা ট্রেনে চড়া একটা স্বপ্ন ট্রেন বলুন প্লেন বলুন এগুলো এমন একটা স্বপ্ন গ্রামের মানুষের জন্য যেটা যদি কখনো পূরণ হয় তার চেয়ে আনন্দ মনে হয় তারা জীবনে আর কখনোই পাইনি।

আমাদের গ্রামটাও এমন একটা জায়গায় যে না আছে ট্রেন না আসে প্লেন আমাদেরকে প্লেনে চড়তে হলে আসতে হয় যশোর কিংবা ঢাকাতে আবার ট্রেনে চড়তে হলেও যশোর কিংবা ঢাকাতেই আসতে হয়।

জীবনে প্রথম ট্রেন ভ্রমণ আমি করেছিলাম ২০০৭ সালে, যখন আমি জীবিকার তাগিদে আমার নিজের দেশ ছেড়ে আমার পাশের দেশ ভারতে আসি, আমার উদ্দেশ্য ছিল মূলত মুম্বাইতে আসার তো মুম্বাইতে আসতে হলে তিনটা উপায়ই আছে আপনার কলকাতা থেকে,

Src

এক আপনি প্লেনে আসতে পারেন দ্বিতীয়তঃ আপনি ট্রেনে আসতে পারেন এবং তৃতীয় যে অপশনটি সেটা অনেক সময় নাই সেটা হল আপনি চাইলে বাসে আসতে পারেন।

যেহেতু আমি ইন্ডিয়াতে একেবারেই নতুন কোন জায়গা সম্পর্কে আমার তেমন কোন ধারণা নেই আর যেহেতু আমি অবৈধভাবে ইন্ডিয়াতে প্রবেশ করেছি তাই নিজের ইচ্ছা খুশি মতো আমি যেকোনো কিছু করতে পারবো না আমার সামনে একটি মাত্র অপশন খোলা আছে সেটা হলো আপনাকে ট্রেনে জার্নি করতে হবে।

তো বন্ধুরা তার জন্য আমি হাওড়ায় স্টেশন থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে জেনারেল বগিতে আমি একটি টিকিট কিনলাম যার দাম সেই সময় আনুমানিক ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা নিয়েছিল।

জীবনের প্রথম ট্রেনে উঠবো আসলে মনের ভেতর একটা আনন্দ বিরাজ করছে আবার এদিকে ভয়ও লাগছে কারণ এর আগে কখনো আমি ইন্ডিয়াতে আসেনি কেমন মানুষ কেমন মানুষের আচরণ বা আমি যেহেতু অবৈধভাবে এসেছি নিজের মনে তো পুলিশ পুলিশ ভয় আছে।

Src

তারপরও যেহেতু আমার জীবনে প্রথম প্রেম জার্নি তাই আমি সব ভয় ছেড়ে দিয়ে একেবারে রিলাক্স হয়ে আমি আমার ট্রেন জার্নিটি উপভোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম।

যে সময়টা টিকিটের দেওয়া ছিল ঠিক সময় মতোই ট্রেন স্টেশনে চলে আসলো এবং আমরা ট্রেনে উঠে বসলাম ট্রেনে যখন জেনারেল বগিতে গিয়ে উঠলাম তখন অবশ্য অতটা ভিড় ছিল না আর জানতাম না যে জেনারেল বগিতে এত বেশি পরিমাণে ভিড় হয়।

যখন হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন মুম্বাই এর উদ্দেশ্যে রওনা দিল আমার বগিতে মোটামুটি প্রত্যেকটি সিট বুক হয়ে গিয়েছে আমি ভেবেছি হয়তো যে কয়জন মানুষ সিটে বসে আছে এই কয়জনই থাকবে কিন্তু পরবর্তীতে যেটা হল সেটা একেবারে অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার।

খুব মজা করে জানালার ধারে সিট পেয়ে গেলাম এবং আনন্দের সহিত আমি বাহিরে দেখছি যে ইন্ডিয়ার গ্রামাঞ্চলের মনোরম দৃশ্য চারিদিকে সবুজ ধান ক্ষেত আর বিভিন্ন তরিতরকারের চাষাবাদ।

কখনো কখনো এমন জায়গা দিয়ে আমাদের ট্রেনটি চলছে দুই সাইডে শুধু বাড়ি আর বাড়ি ফাঁকা জায়গার কোনো অস্তিত্বই নেই।

আবার মধ্যখানে এমন কিছু জায়গা আসছে যেখানে না আছে কোন ফসলের জমি বা না আছে কোন বাড়ি ভদ্র সুদূর মরুভূমির মতো যেখানে শুধু কিছু গাছপালা রয়েছে।

খুব মজা করেই আমার ট্রেন ভ্রমণটি আমি উপভোগ করছি এমতাবস্থায় ট্রেনের বগিতে উঠে বসলো এক চাওয়াল া ছাওয়ালার কাছ থেকে একটা চা কিনলাম এবং সেটা গরম গরম খাচ্ছি খুব ভালো লাগছে।

আমাদের ট্রেন ছুটে চলেছে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে চলতে চলতে চলতে চলতে আমাদের ট্রেন গিয়ে একটা বড় স্টেশনে থামল খুব সম্ভবত স্টেশনটির নাম টাটা।

Src

যারা আশপাশে শুধুই দেখছি গাড়ি আর গাড়ি যেখানে নতুন গাড়ি তৈরি হয় আসলে তখন তো অত কিছু জানতাম না যে এটা সেই বিশ্ব বিখ্যাত টাটা কোম্পানির গাড়ির কারখানা।

যখন স্টেশনে গিয়ে ট্রেনটি থামল, তখন দেখলাম আমাদের বগি থেকে অল্প কিছু মানুষ নেমে গেল ভাবলাম যাক এবার একটু ফাঁকা নাকা যাওয়া যাবে কিন্তু ভাই ওখান থেকে এত পরিমানে মানুষ আমাদের বগিতে উঠলো যে আপনি একটা পা রাখবেন সেই পা রাখার জায়গা পর্যন্ত নেই এত ভিড় এত গাদাগাদি।

আমি তো মানুষের এত ভেবে দেখে একপর্যায়ে আমার চোখ কপালে উঠলো, আরে ভাই এত ভিড়ের মধ্য দিয়ে কিভাবে যাব পকেটে গরম লাগছে তাতে মানুষের গরম আরও বেশি অসহ্যকর।

কিছুই করার নেই কারণ আমি চিনি না কিছু বা নিজের কাছেও এমন বেশি পরিমাণে টাকা নেই যে আমি স্টেশন থেকে নেমে অন্য কোন উপায়ে মুম্বাইয়ে যাব আমাকে বাধ্য হয়ে যেতেই হবে।

এভাবে চলতে চলতে আমাদের একটা দিন পার হয়ে গেল, এখন শুধু ভাবছি কখন যে গিয়ে পৌঁছাব এটা ভাবছি ভাবতে ভাবতে ঘুম এসে গেল এবং অল্প খানিক সময় ঘুমিয়ে উঠে দেখি ট্রেনটি ঠিক তার আগের গতিতেই চলছে।

কিন্তু আমাদের বগিটি এখনো সেই পরিমাণে ভিড় রয়েছে মানুষ মনে হয় কোন জায়গায় নামই না আসলে ব্যাপারটা তেমন নয় যেমন মানুষ নামছে তার দ্বিগুণ মানুষ আবার উঠছে এর জন্য আমি বুঝতে পারছি না ভিড় কমছে কিনা বাড়ছে।

এভাবে চলতে চলতে এক পর্যায়ে আমরা আরও একটি বড় স্টেশনে গিয়ে পৌঁছালাম এবং সেখানে ট্রেন ২০ মিনিটের জন্য রাখবে এটার জন্য মাইকে অ্যানাউন্সমেন্ট করে দিল যে যাদের যা খাওয়ার কেনার দরকার বা পানি কেনার দরকার তারা এখান থেকে কিনে নিয়ে উঠুক সামনে একটানা ২ ঘন্টা কোন স্টেশনে ট্রেন থামবে না।

Src

আমি আসলে ব্যাপারটা বুঝলাম না যে একটা না দুই ঘন্টা কোন স্টেশনে থামবে না কারণটা কি আসলে কারণটা অনেক বড় যেটা আমার অতটা বোঝার দরকার ছিল না সেই সময় তাই ভাবলাম নিচে গিয়ে হালকা পাতলা কিছু শুকনো খাবার কিনে নিয়ে আসি এবং সাথে পানীয় কিনে নিয়ে আসি।

অবশেষে আমি কিছু খেয়ে আসলাম এবং পরবর্তীতে খাওয়ার জন্য কিছু শুকনো খাবার কিনে নিয়ে আমি আবার আমার সিটে এসে বসলাম।

যাই হোক বন্ধুরা আমি আমার এই ট্রেন জার্নির বাকি অংশটি আমার পরবর্তী আরো একটি পোস্ট শেয়ার করবে এবং অনেক মজাদার একটা গল্প জীবনের প্রথম ঘটে যাওয়া আপনাদের সাথে শেয়ার করব অবশ্যই আপনারা আমার পরবর্তী পার্ট দেখবেন এবং পড়বেন আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।

যাইহোক আপনাদের মাঝে কলকাতা থেকে আসার পর যে গল্পগুলো শেয়ার করলাম সেটা কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন এবং আপনারা বাকি গল্পটি শুনতে চাইলে অবশ্যই কমেন্টস করবেন।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আজ এই পর্যন্তই দেখা হচ্ছে আমার আরও একটি নতুন পোস্টে পরবর্তীতে।

Best regards
@mamun123456
Join incredible India discord community