গল্পঃ আকাশের আনিকা- পর্ব ৩

in Incredible India3 years ago

হ্যালো স্টিমিয়ানস,
কেমন আছেন আপনারা সবাই, আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আপনারা সকলেই অনেক অনেক ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় অনেক ভালো আছি।

আজ আপনাদের মাঝে আবারও আমার নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আপনার হয়তো অনেকেই আমার এই গল্পের আগের দুটি পর্ব পড়েছেন, আজ আমি আমার গল্পের তৃতীয় পর্বটি পোস্ট করব।

আর আপনারা যারা আমার গল্পের আগের পর্বগুলো পড়তে পারেননি তাদের জন্য আমি আমার এই পোস্টে আগের পর্বগুলোর লিংক অ্যাড করে দিয়েছি আপনারা চাইলে সেখানে ক্লিক করে আগের পর্বগুলো থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

আশা করি আমার এই গল্পের আগের দুটো পর্ব আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। যদিও এটা কাল্পনিক কোন গল্প নয় তবুও আমি চেষ্টা করব গল্পটি আপনাদের মাঝে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করার। আশা করছি আপনারা আমার গল্পটি উপভোগ করতে পারবেন। তাহলে চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।

আকাশের আনিকা- পর্ব ১

আকাশের আনিকা- পর্ব ২

Picsart_23-02-25_04-14-18-949.jpg

সেদিন আনিকাকে দেখার পর আকাশ সারাটা দিন শুধু তাকে নিয়েই ভেবেছে। আকাশ প্রথম দেখাতেই আনিকার প্রেমে পড়ে গিয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। আনিকা দেখতেও ছিল অপরূপ সুন্দরী , তাই আকাশের আনিকাকে এতটা ভালো লেগেছে।

বাসায় ফিরে আসার পর আকাশ হাসানকে আনিকার ব্যাপারে অনেক প্রশ্ন করে। এক পর্যায়ে হাসান কিছুটা বিরক্ত হয়ে গেলেও সেটা আকাশের সামনে প্রকাশ করেনি। আকাশ জীবনে এই প্রথম কারোর প্রেমে পড়ল, প্রথম প্রেম বলে কথা বুঝতেই পারছেন আকাশ এটা নিয়ে কতটা এক্সাইটেড।

কিন্তু এগুলোর মধ্যেই আকাশের মাথায় দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে যায়, কারণ আনিকা ছিল ইন্ডিয়ান এবং আকাশ বাংলাদেশী। কিভাবে আকাশ আমি তার সাথে কথা বলবে এটা ভেবেই আকাশ চিন্তিত হয়ে পড়ে।

এভাবেই দুদিন পার হয়ে যায়, আকাশ প্রতিদিন কাঁটা
পড়ে গিয়ে বসে তাকে আনিকা কে একটিবার দেখার আকাঙ্খায়। তার ভাগ্য ভাল ছিল তাই প্রতিদিনই সে আনিকার দেখা পেয়েছিল, এ ভাগ্যের পাশাপাশি তার ভাগ্য এতটাই খারাপ ছিল যে সে চাইলেও আনিকার সাথে কথা বলতে পারছিল না।

এভাবেই আরো দুদিন কেটে যায়, এদিকে আকাশের বাড়ি ফেরার সময় চলে আসে। যেদিন সে শহরে ফিরে যাবে সেদিন সকাল বেলা তাড়াহুড়ো করে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়েই সে আর হাসান কাঁটা পারে যায় আনিকার সাথে দেখা করতে। সৌভাগ্যবশত যাওয়ার আগেও আকাশ তার দেখা পায়।

তারপর চলে যাওয়ার আগে আকাশ হাসানকে জিজ্ঞাসা করে আনিকার সাথে কথা বলার কি কোন উপায় আছে। তখন হাসান বলে হ্যাঁ ফেসবুকে তো কথা বলতে পারো আমার কাছে ফেসবুক আইডি আছে। এটা শোনার পর আকাশের আনন্দ আরকে দেখে।

সে তাড়াতাড়ি হাসানের কাছে আনিকার ফেসবুক আইডি নিয়ে তাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেয়। তারপর আকাশ সবার কাছে বিদায় নিয়ে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ফেসবুক আইডি পেয়ে সে অনেক খুশি ছিল কিন্তু চলে গেলে আর কাটা পড়ে গিয়ে তাকে দেখতে পারবে না এটা ভেবে তার কিছুটা মন খারাপও হয়েছিল।

তারপর হাসান আকাশকে মোটরসাইকেল দিয়ে শহরে নিয়ে গিয়ে বাসে তুলে দেয়। বাসে করে আসার সময় আকাশ শুধু আনিকার ফেসবুক আইডিই ঘাটছিল। আনিকা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবে কিনা তার মাথায় শুধু এই চিন্তাটি ঘোরাঘুরি করছিল। তারপর বাস চলতে চলতেই আকাশের কখন যেন চোখ লেগে এসেছে সে সেটা বুঝতেই পারেনি।

তারপর আকাশ শহরে পৌঁছে যায়। বাস থেকে নেমে আকাশ সোজা বাসায় ফিরে কারণ সে প্রচুর ক্লান্ত ছিল। বাসায় ফিরে আজমুখ ধুয়ে কাউকে কিছু খাবার খেয়ে সে সোজা তার রুমে চলে যায়। রুমে গিয়েই আকাশ হাতে তার ফোনটি তুলে নেয়। ফোনটি তুলে নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ যেন খুশিতে নাচতে শুরু করলো।

আনিকা তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেছে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করা দেখেই সে আর এক মুহূর্ত দেরি না করে আনি কাকে নক করে বসে। কিন্তু আনিকা অনলাইনে থাকা সত্ত্বেও আকাশের মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছিল না, এই কারণে ছেলেটার মন আবারো খারাপ হয়ে গেল।

এক দিক দিয়ে সে চিন্তা করল অচেনা মানুষ রিপ্লাই না দেওয়াটাই স্বাভাবিক রিকুয়েস্ট যে একসেপ্ট করেছে এটাই অনেক বড় ব্যাপার। আকাশ তবুও হাল ছাড়লো না , রাতের বেলা বিশাল বড় একটু মেসেজ লিখেছে আনিকাকে পাঠিয়ে দেয়। আকাশ এবং হাসান কাঁটা পারে গিয়ে বসে আড্ডা দিত সেখানেই আকাশ আনিকাকে প্রথম দেখেছিল এগুলোই তার সেই মেসেজে লিখেছিল।

বড় মেসেজ দেখে আনিকা রিপ্লাই করে, কিন্তু তার মেসেজের ধরন একটু অন্যরকম ছিল। মানে আনিকা একটু ভাব নিয়ে কথা বলছিল আকাশের সাথে। আকাশ রিপ্লাই পেয়ে এতটা খুশি ছিল যে এই বিষয়টি সে লক্ষ্যই করেনি।

আনিকা ভাব নিয়ে কথা বললেও আকাশ তাকে প্রায় সবসময়ই মেসেজ করত। তারা দীর্ঘদিন এভাবে কথা বলে আস্তে আস্তে আনিকাও আকাশের সাথে অনেক ফ্রিলি কথা বলা শুরু করে। অনেকদিন এভাবে কথা বলার পর তাদের মধ্যে একটা ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়।

আকাশ যে আনিকা কে পছন্দ করত সেটা আনিকা বুঝতে পারত। বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার ভয় এ আকাশ কখনোই আনিকাকে এই ধরনের কোন কথাই বলত না। ধীরে ধীরে আনিকাও আকাশের প্রেমে পড়ে যায়।

চলবে...



-1675190969286.gif

Join our Discord server

Sort:  
 3 years ago 

আকাশের প্রথম প্রেম আকাশ অনেক চিন্তা করার মাঝেও আনিকার সাথে কথা বলতে পেরেছে এবং অনেক ভালো একটি বন্ধু হয়ে গিয়েছে

আপনার গল্পটি এবার জমে যাবে বন্ধু থেকে ভালোবাসা শুরু হয় আপনার পরবর্তী পর্ব থেকে ভালবাসার গল্প অবশ্যই শুনতে পাবো পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 3 years ago 

এরকম ভালোবাসায় খুব বেশি এক্সাইটেড হয়ে থাকে তরুণরা। শুধু তরুণ বললে হবেন, এটা বলা যায় এক প্রকারের প্রথম ভালোবাসা প্রথম ভালোলাগা। আর প্রথম জিনিসের প্রতি এক্সাইটেড থাকে খুব বেশি। থাকে এক প্রকারের অগাধ মায়া।

আকাশ আনিকার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। কে জানে যে আনিকা শুধু সিঙ্গেল নাকি রিলেশনশিপে আছে? ন, এসব ভাবার সময় এখন আকাশের নেই। আকাশের প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসা, প্রথম মায়া। আবার বলা যায় আনিকা হয়তো লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখেছিল এবং ভালোবেসেছে৷ ওইযে কথায় আছেন? মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না। যাইহোক জানিনা আনিকার মনে কি হচ্ছে নাকি হচ্ছেনা, বাট এইসব আমার অভিমত প্রকাশ করলাম। দেখা যাক পরবর্তীতে আপনি এই গল্পের শেষে কি নিয়ে আসেন। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলাম ভালো থাকবেন।

 3 years ago 

প্রথম প্রেমের কথা মানুষ কখনোই ভুলতে পারে না। মানুষ যখন প্রথম প্রেমে পড়ে তখন তার মধ্যে এবং আচরণ পরিবর্তন দেখা যায়।

যাইহোক ফেসবুকে তাদের কথাবার্তা শুরু হয়, এবং তারা ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে।এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। আপনার গল্পটা এবার রোমাঞ্চকর হয়ে উঠবে। আশা করছি পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.12
TRX 0.34
JST 0.032
BTC 114317.08
ETH 4226.22
USDT 1.00
SBD 0.78