গল্পঃ আকাশের আনিকা- পর্ব ২

হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন? আশা করছি মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে আপনারা সকলেই অনেক ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহতালার রহমতে অনেক অনেক ভালো আছি।

আজ আবার নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম। এর আগে আমি আমার গল্পের প্রথম পর্ব প্রকাশ করেছিলাম, আজ আমি আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্বটি পোস্ট করব।

আমার এই গল্পটি একদমই কাল্পনিক নয়, এটা একজন মানুষের জীবনের বাস্তব কাহিনী। শুধু গল্পের চরিত্র গুলোর নাম পরিবর্তন করেছি। এই পোস্টের কভারের উপর আমি প্রথম পর্বের লিংক দিয়ে দেবো যারা আমার প্রথম পর্বটি পড়েননি তারা চাইলে সেই লিংকে ক্লিক করে প্রথম পর্ব থেকে ঘুরে আসতে পারেন। যাই হোক আমার গল্পটি পড়ার পর আপনাদের কেমন লাগবে তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

আকাশের আনিকা- পর্ব ১

Picsart_23-02-24_04-55-27-916.jpg

আকাশের ঘুম ভাঙতে ভাঙতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। সে অনেক জার্নি করে এসেছে তাই কেউ তাকে ডাকেনি। একটানা এতক্ষণ ঘুমানোর কারণে জার্নি করার ফলে যে ক্লান্তি তার ছিল তা একদম কমে গিয়েছে।

ঘুম থেকে এসে উঠে দেখে হাসান বাড়িতে নেই, তারপর হাসানের মা অর্থাৎ আকাশের ফুফু আকাশকে বলে হাসান বাজার করতে বাজারে গিয়েছে। তারপর আকাশ বলে ওঠে আমাকে ডাকলেই তো হতো আমিও বাজার থেকে একটু ঘুরে আসতাম, তারপর আকাশের ফুফু উত্তরে বলে হাসান বাজার করে ফিরে এলে তোমরা আবার বাজার থেকে ঘুরে এসো।

আকাশ এদিকে ফ্রেস হয়ে একদম রেডি হয়ে বসেছিল বাজারে যাবে বলে। বসে বসে ফোন টিপতে টিপতেই প্রায় এক ঘন্টার মত কেটে গিয়েছে কিন্তু হাসানের কোন খোঁজ খবর নেই। তারপর কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসানের সাইকেলের বেল বেজে উঠলো। তখনই আকাশ বাহিরে গিয়ে হাসানকে ঝাড়া ঝাড়ি করতে লাগলো কেন সে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বাজারে নিয়ে গেল না এই নিয়ে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশের রাগ কিছুটা কমে গিয়েছে, তারপর আকাশ এবং হাসান বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। হাসানের বাড়ি থেকে হেঁটে বাজার যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মত, সত্যি রাস্তাটা অনেক দীর্ঘ।

হাসান এবং আকাশ বাজারে অনেকক্ষণ আড্ডা দেয়, আকাশ হঠাৎ ঘড়ির দিকে চোখ ফেলতেই দেখে অনেকটা রাত হয়ে গিয়েছে। তারপর সে হাসানকে বলে এখন বাজারে দেরি করা আর ঠিক হবে না রাত অনেক গভীর হয়েছে চল বাসায় ফিরে যাই খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরবো।

তারপর বাসায় ফিরে তারা দুজন ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে সোজা বিছানায় চলে যায়। বিছানায় যেতেই শুরু হয় তাদের দুজনের গল্প, আজ তাদের ঘুম আর হবে না। তারা শুয়ে থেকে গল্প করতে করতেই প্লান করে ভোরবেলা খেজুরের রস খেতে যাবে। এই প্লান হওয়ায় বাকি ভাইদের কেও তারা কল দিয়ে জানিয়ে দেয় একদম ভোরবেলা যেন যেখানে রস পাওয়া যায় সেখানে সবাই চলে আসে।

তারা গল্প করতে করতেই ভোর হয়ে গিয়েছে, দূরের মসজিদ থেকে ফজরের আজান ভেসে আসছিল। ঠান্ডা দিন তারা দুজনেই লেপের নিচে শুয়ে আছে সত্যি বলতে তাদের দুজনের কারোরই উঠতে ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু কি আর করার সব ভাইদের তো প্ল্যান জানিয়ে দেয়া হয়েছে এখন যেতেই হবে।

যেখানে খেজুরের রস পাওয়া যায় সেই জায়গাটাও বাসা থেকে অনেক দূর। হেটে যেতে এই ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মত লাগবে। এদিকে বাকি ভাইয়েরা সেখানে চলে এসেছে। হাসান এবং আকাশকে তারা বারবার কল দিয়ে সেখানে ডাকছিল।

তাই হাসান এবং আকাশ সাইকেল নিয়ে তাড়াহুড়া করে সেই জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সীমান্তবর্তী এলাকা তাই এত ভোরবেলা বের হওয়াটা একটু বিপদজনক। বিজিবি সন্দেহ করে আটকালেই প্রবলেম। বিজিবি কথার উত্তর দিতেই সারাদিন পার হয়ে যেত। ভাগ্য ভালো ছিল তাই কোন বিজিবি তাদের সামনে পড়েনি।

তারপর সব ভাইরা মিলে রস খাওয়া হয় এবং সেখানে একটি ব্রিজে বসে অনেকক্ষণ আড্ডাও দেওয়া হয়। আড্ডা দিতে দিতেই অনেকটা বেলা হয়ে এসেছে। তাই হাসান সবাইকে বলল আজ সবাই আমার বাসায় নাস্তা করবি চল, সবাই এটা শুনে হাসানের বাড়ির উদ্দেশ্যে সকলেই রওনা হল।

নাস্তা করে তারা সকলেই ঠিক করল কাঁটাপার গিয়ে বসে আড্ডা দেবে। এটা এমন একটি জায়গা যে জায়গা দিয়ে আগে ভারত বাংলাদেশ রাস্তা ছিল এখন সেই রাস্তাটি কেটে দেয়া হয়েছে তাই এই জায়গাকে কাঁটাপার বলা হয়।

তারা সকলেই কাটা পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিল, থেকে ভারতের রাস্তা একদম পরিষ্কার দেখা যায়। ঠিক সামন দিয়ে ভারতের সেই রাস্তা শহরের দিকে চলে গিয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে সকলকে শহরে যেতে হয়।

অনেকক্ষণ বসে আড্ডা দিতে দিতে আকাশ লক্ষ্য করলে সেই রাস্তা দিয়ে দুটো মেয়ে হেটে যাচ্ছে। মেয়ে দুটোর পরে উঠেছিল স্কুল ড্রেস। তাদের মধ্যে একটি মেয়েকে আকাশের খুবই ভালো লেগে যায়। সেই মেয়েটি আবার হাসানের পরিচিত। ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত হলেও দুই বাংলার মানুষ এখানে প্রতিবেশীর মতই থাকে। তাই হাসান সেই মেয়েটিকে চেনে।

সেখানে বসেই আকাশ হাসানকে বলে বসলো, একটু আগেই যে মেয়েটি আমাদের সামনে দিয়ে গেল সেই মেয়েটিকে আকাশের ভালো লেগেছে। এটা শুনে হাসান প্রথমে অনেক মজা নেয়। আর হাসানের কাছেই আকাশ জানতে পারে সেই মেয়েটির নাম আনিকা।

চলবে...



-1675190969286.gif

Join our Discord server

Sort:  
 last year 

যাক তাহলে আকাশ গ্রামের বাসায় এসে ভালোই হাসানের সাথে সময় কাটাচ্ছে। শীতের দিনে খেজুরের রস খাবার সত্যিই এক অসাধারণ মুহূর্ত এবং ভালোলাগা। একসাথে ঘুরাঘুরি খাওয়া দাওয়া, রাতের আধারে গল্প গুজব ভালোই ছিলো।

অংশের শেষের দিকে, আকাশ মেয়েটির দিকে তাকানো এবং ভালো লাগা। তবে গল্পের কাহিনীটা হয়তো এখন থেকেই শুরু হলো আমার মনে হচ্ছে। দেখা যাক সামনে কি হয় গল্পের শেষে কি হয়। অপেক্ষায় থাকলাম আপনার পরবর্তী গল্পের এপিসোডে। ভালো থাকবেন।

 last year 

যাক আকাশ গ্রামে আসার পরে গ্রামের বাজারে গিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। হাসানসহ বাকি ভাই গুলোকে নিয়ে খেজুরের রস খাচ্ছে।খুব ভোরবেলায় বেশ মজাই করছে দেখতেছি।

তার সাথে সবাই বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে, দুটো মেয়ে আকাশের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। তার মধ্যে একটি মেয়েকে আকাশে ভালো লেগেছে। যাই হোক গল্পের মধ্যে রোমাঞ্চকর কাহিনী শুরু হয়ে গেল, পরবর্তী জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 60009.56
ETH 3342.57
USDT 1.00
SBD 2.42