আমার প্রতিবেশি, মধুমালা দিদির জীবন কাহিনী
হ্যালো সবাইকে
প্রথমে আমি, 'Incredible India' কমিউনিটির সকলকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি গত তিন, থেকে চার মাস, ধরে steemit কাজ করতেছি, আর 'Incredible India' কমিউনিটিতে কাজ করে আমি খুবই আনন্দিত। আমি চাই আমার বাকি দিনগুলো এই কমিউনিটির সাথে কাজ করে কাটিয়ে দিতে,,,
এবার বলুন তো আপনারা সবাই কেমন আছেন? আমি ও আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা পেয়ে খুবই ভালো আছি।এবং আপনাদের আরো বেশি ভালো রাখতে, আমি নিয়ে এসেছি 'মধুমালার' জীবনী উনি আমার বাড়ির পাশের এক দিদি লাগে, এই গল্পের পিছনে আমাদের সবার জন্য আমার পক্ষ থেকে একটি মেসেজ থাকবে।আমার মনে হয়েছে,মধুমালার জীবন টা সিনেমা থেকেও অনেক বেশি কষ্টের,,,
মধুমালা পরিচয়, ও বিয়ে:
তার নাম মধুমালা তিনি আমার পাশের বাড়িতে থাকেন। তাকে তার বাবা-মা খুব ছোট বয়স বিয়ে দিয়েছেন। তখন বয়স ছিল তার ৮ বছর, তার স্বামীর বয়স ছিল প্রায় ২০ বছর। তখন সে বিয়ে কাকে বলে? বিয়ে কি এই জিনিস টা সে তখন জানত না।তখন ছিলো তার খেলার সময়, স্বাধীন ভাবে চলা ফেরা করার সময় ছিলো, তখন তার শ্বশুর বাড়িতেই যেতে হয়েছিল কারণ, তার বাবার বাড়িও পরিবার টা ও অনেক বেশি ভালো ছিল না, তাই সে দুই বেলা খাবারের আশায় তিনি তার শ্বশুরবাড়িতে পা রাখলেন।
মধুমালার শ্বশুরবাড়ির জীবন:
যেখানে একটা বাচ্চা মেয়ে খাবারের আশায়। তার স্বামী সাথে শশুর বাড়ি এসেছিল, সেখানে যদি সম্পন্ন পরিবারের সকল কাজকর্ম তার ওপর থাকে তা হলে কিভাবে বাঁচবে সে। তা ও সে মেনে নেওয়া চেষ্টা করেছিলো কারন, দিন শেষ এক বেলা খাবার পাবে বলে। একটা আট বছরের বাচ্চা মেয়ে তখন তিনি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক কতটুকু এই বা বুঝতে পারে কিন্তুু, তার স্বামী ছিল অনেক খারাপ মেজাজের একটা মানুষ এবং তাকে সবসময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো,যে টা তার জন্য অনেক কষ্টের এবং বেদনাদায়ক ছিল। তিনি সব কিছু মুখ বুজে মেনে নিয়েছেন একটু সুখের আসায়। কিন্তুু, তার কপালে আর সুখ হলো না।
মধুমালা তার সন্তানদের বড় করার চেষ্টা :
মধুমালা অনেক অত্যাচারী শিকার হয়েছিলেন, এর মাঝে দিয়ে তিনি পাঁচ টা সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সন্তান রা মানুষ হয়ে আমার জীবনের সব কষ্ট, দুঃখ, দূর করে দিবে। আমাকে তারা ভালো রাখবে সেই আশায় তিনি তার নিজের রক্ত বিক্রি করে, তার সন্তানদের মানুষ করার চেষ্টায় লেগে পড়েন, সব সময় মানুষের বাসায় কাজ করতেন নিজে না খেয়ে সন্তানদের কে খাওয়াতেন।এবং মধুমালা তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন সন্তানদের মানুষ করার জন্য। অন্যদিকে তার স্বামী তার খেয়াল নিতো না। সন্তানদের যত্ন নিতো না। তিনি সবসময় নারীদের প্রতি আসক্ত ছিলেন।
মধুমালা শেষ বয়সে সন্তানদের কাছ থেকে যা পেয়েছে :
কষ্ট করতে করতে নিজের জীবন টা কে শেষ করে দিয়েছে মধুমালা। তার সন্তানরা এখন অনেক বড় হয়েছে, বিয়ে করেছে, প্রত্যেকে আলাদা আলাদা বাড়ি করেছে, কিন্তুু সেই বাড়িতে মধুমালার কোন জায়গা নেই। মধুমালার এক টা মেয়ে, ৪ টা ছেলে ১২ মাস কে তারা ভাগ করে নিয়েছে, প্রত্যেক ৪ মাসে বেশি খাবার দিতে পারবে না।একদিন বেশি হলে তাকে বলা হয় তোমার মাস শেষ হয়ে গেছে অন্য জনের কাছে যাও। প্রত্যেক এক মাস পর পর তাকে এই ছেলে, ঐ ছেলে, আবার অন্য ছেলের কাছে যেতে হয়। আশ্রয়ের জন্য। আমাকে বলেছে তার ছোট ছেলে টা না বাঁচার মত হয়ে গেছিল। টাকা না থাকায় তিনি তার গায়ের রক্ত বিক্রি করে তার ছেলেকে ডাক্তার দেখিয়েছেন এবং সেই ছেলে এখন অনেক বড় হয়েছে অনেক টাকা ইনকাম করতেছে, কিন্তুু মায়ের দিকে কোন খেয়াল নেই
আজ সকালে আমি রান্না করতে ছিলাম। মধুমালা দিদি আমার বাসায় প্রায় এসে থাকে। একটু জামা কাপড় নেওয়ার জন্য, আমিও তাকে দিয়ে দেই। তিনি আজকে এসে জামা কাপড় চায় নি। এসে বসেছিলো চুপ চাপ করে, আমি তখন জানতে চাইলাম কি হয়েছে দিদি। তিনি আমাকে কিছু বলেনি পরবর্তীতে যখন জানতে চাই, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে দিল। পরে আমি আর কথা না বাড়িয়ে উনাকে আগে কিছু খেতে দিলাম। উনি খেয়ে দেয়ে তারপরে আমাকে বলল আমার দুই খানা ছবি করে দিবি। আমি যদি মরে গেলে তোর কাছে রেখে দিস,,,তার পরে ছবি তুলতে তুলতে আমি তার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে দিদি।তুমি চাইলে আমার কাছে বলতে পারো, বলে যে এই অসুস্থ শরীরে আজ দুই দিন ধরে না খেয়ে আছি। ছেলেরা ও বলেনি খেতে ছেলের বউরা বলে নি খেতে। তাই তোর কাছে চলে এসেছি। এই সব কষ্টের কথাগুলো শুনে, আমি আর আমার চোখের পানি গুলো ধরে রাখতে পারিনি।আমি কিন্তুু ওনার নাতির সমান কিন্তুু উনার প্রতি আমার অন্যরকম একটা টান আছে। আমি তাকে নানা ভাবে সান্তনা দেওয়া চেষ্টা করেছি। শেষ মধুমালা দিদি বলে,এই সমাজে এই রকম যানো কারো জীবন না হয়। তাই সবার উদ্দেশ্য বলছি।
আমাদের সবার উদ্দেশ্যে একটাই কথা আমার:
প্লিজ আমরা সবাই বাবা মা কে ভালোবাসবো কারণ,বাবা মায়ের ঋন কখনো শোধ করা যাবে না। কিন্তুু তাদের বেঁচে থাকতে কোন কষ্ট দেওয়া কোন সন্তানের কাজ হতে পারে না। আমরাও তো একদিন বাবা-মা হয়েছি বা হবো। এ কথাটা মাথায় রেখে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত। বাবা- মা খেয়াল করা, তাদেরকে ভালোবাসা। দেখুন ভালো রাখতে কিন্তুু অনেক টাকা পয়সা দরকার হয় না। কেউ ভাববেন না আমি উপদেশ মূলক কথা বলছি। আজকে মধুমালার কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছে, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।আজ আমার এই পোস্ট টা তৈরি করতে গিয়ে হাজার বার চোখে পানি চলে আসছে। কারণ, তার এই কান্না মুখের চেহারা টা আমার চোখে বার বার ভাসছিল,,,,,
আজ আর কিছু লিখতে পারছি না। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন পোষ্টের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে প্লিজ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, সবাই জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
10% of this payout for @meraindia
"আমার এই পোস্ট টা পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ"
◦•●◉✿ Thank You ✿◉●•◦
Here are my Verified links:
@karobiamin71,
আপু অনুগ্রহ পূর্বক, title এর বানান সম্পাদনা করে দিন।
আশাকরি, এটা খেয়াল রাখবেন। প্রতিটি লেখার জন্য শীর্ষক খুব খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সরি দিদি,
আমি ঠিক করে দিয়েছি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার ভুল ধরিয়ে দেওয়া জন্য আপনারা জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা
@karobiamin71
ঠিক আছে আপু। ভুল থেকেই মানুষ নিজেকে উন্নত করতে পারে। ভুল স্বীকার করার সৎ সাহস সবার মধ্যে থাকে না। এই বিষয়ে আপনি একদমই সঠিক।
আমি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি, আপনার ইতিবাচক মনোভাবের প্রতি। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
দিদি আপনার পোস্ট পড়তে যেয়ে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তেছিল। একজন মা পাঁচটা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন কিন্তু তার একটা সন্তানরা তার দায়িত্ব নিতে পারছে না। যে ছেলেদের জন্য রক্ত বিক্রি করে চিকিৎসা করেছে আর সেই ছেলেরা তার মায়ের খোঁজ খবর রাখে না।
এরকম সন্তানদের ধিক্কার জানাই যারা তার আপন মায়ের দায়িত্ব নিতে পারে না। দুই বেলা খাবার দেওয়ার ভয় করে। আপনার ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি কতটা কষ্টে আছে। একজন মানুষ এমনি এমনি কখনো তার চোখে পানি আসে না! যখন সে কষ্ট সহ্য করতে করতে আর সইতে পারে না! ঠিক তখনই তার চোখ দিয়ে পানি ঝরে।
আপনি তার সব কষ্ট শুনেছেন, এবং তাকে সান্তনা দিয়েছেন সেটি শুনে অনেক ভালো লাগলো। সমাজ এরকম অনেক ছেলে আছে! তারা তার মাকে সহ্য করতে পারে না দায়িত্ব নেয় না। তারা ভুলে যায় যখন সে ছোট ছিল তার মা তার জন্য কত কষ্ট করেছে।
এতো মর্মান্তিক একটি ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা কমেন্ট করার জন্য।
সত্যি ঘটনা খুব কষ্ট দায়ক,
আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা
আপু আপনি আপনার পোস্টে মধুমালার জীবন কাহিনী খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন ।সত্যিই খুব বেদনাদায়ক ঘটনা। আপনার পোস্টটি পড়ে আমার চোখেও জল চলে এসেছে। প্রতিটা সন্তানের উচিত তার বাবা-মাকে সুখে রাখা ভালো রাখা এবং ম্মান করা। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের স্বর্গ। বাবা মাকে সন্তুষ্ট রাখলে ঈশ্বর ও সন্তুষ্ট থাকেন। প্রতিটা সন্তানের প্রধান এবং মহান কাজ হচ্ছে তার বাবা-মাকে সম্মান এবং সুখে রাখা। আপু আপনার জন্য শুভকামনা রইল। ভাল থাকবেন।
@karobiamin সমাজে মধুমালাদের সংখ্যা
আশংঙ্খা জনক হারে বাড়ছে।এর মূল কারন হিসেবে যে টি দায়ী,তা হলো মূল্যবোধের অভাব।
বিবেকহীনতা।আমরা এমন সমাজ কখনোই চাইনা,যেখানে গর্ভধারিনী মায়ের কদর থাকেনা।আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের সাথে সমাজের একটি কঠিন বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য।আমাদের মায়েরা যেন,থাকে দুধে ভাতে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
আপু আপনি আপনার পোস্টে মধু মালার জীবন কাহিনী খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। এটা আমার পরে খুব খারাপ লেগেছিল এই রকম সন্তানের পৃথিবীতে এখনো আছে।একজন মা পাঁচটা সন্তান জন্ম দিয়েছে। ওই পাঁচটা সন্তান এক জনো তার দায়িত্ব নিতে চায় না ।মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। মাকে কষ্ট দেওয়া মানে আল্লাহকে কষ্ট দেওয়া। প্রতিটি সন্তানের কাজ হচ্ছে মা-বাবাকে সম্মান করা ও সুখে রাখা।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মা সম্পর্কে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা কমেন্ট করার জন্য, আপনারা জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা