একটি অতি সত্য ঘটনার উপরে আজকের পোস্ট।

in Incredible India4 months ago

আজ আপনাদের মাঝে এমন একটি সত্য ঘটনা নিয়ে চলে এসেছি, পুরো ঘটনাটি পড়লে বুঝতে পারবেন সৃষ্টিকর্তার ওপরে বিশ্বাস রাখলে তিনি আমাদের কতোটা খুশি করতে পারে, যে ঘটনাটি শেয়ার করতে চলেছি এটি আমার নিজের গ্রামের একটি ঘটনা, ঘটনাটি ঘটেছিলো এখান থেকে ৬-৭ বছর আগে, তখন আমি বাংলাদেশে ছিলাম যাইহোক ঘটনাটি তাহলে শুরু করা যাক এবং আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

1000025989.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

আমার বাড়ির পাশে একটি বাড়ি আছে সেই বাড়ি থাকে দুজন মানুষ তারা স্বামী স্ত্রীর, সম্পর্কে তাদের কে আমি চাচা বলে ডাকতাম এবং তার স্ত্রীকে চাচি বলে ডাকতাম। তাদের সংসার জীবন ২০-৩০ বছর হয়ে গিয়েছে, তাদের কোনো সন্তান হয় না আত্মিক অবস্থা অনেক ভালো ছিলো। তাদের সংসারে কোন জিনিসের অভাব ছিলো না অভাব ছিলো শুধু একটি সন্তানের।

এখন বর্তমানে যে সময় চলছে হয়তোবা এই সময় হলে তাদের সংসার জীবন টিকে থাকতো না, স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও এমন ভালোবাসা ছিলো তারা একে অপরকে অনেক ভালোবাসে। সন্তান না হওয়ার জন্য তাদের মনের ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছিল তবুও তারা প্রকাশ করতো না কারো সাথে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কোনো এক এতিম সন্তান তারা লালন-পালন করবে কিন্তু সেই সময় তারা কোনো সন্তান খুঁজে পায়নি।

1000026133.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

তবে সৃষ্টিকর্তার ওপরে তাদের বিশ্বাস ছিলো একদিন তারা সন্তান লালন-পালন করবে, এবং অবশ্যই তারা একদিন না একদিন কোন সন্তান খুঁজে পাবে বা তাদের সন্তান হবে। সৃষ্টিকর্তার কি লীলা খেলা আমার সেই চাচির বড় ভাইয়ের চোখের সামনে কোন একটি সন্তান পড়ে যায়। শুনেছিলাম কোন এক জেলায় বন্যা হয়েছিল তারা বন্যায় সবকিছু হারিয়ে ফেলেছে ঘরবাড়ি। তাই তার মা তার বুকের সন্তানকে দিয়ে গিয়েছিল আমার সেই চাচির ভাইয়ের কাছে বলেছিল এই সন্তানের প্রতি আমার কোন অধিকার নেই।

আমি তাকে ঠিক ভাবে লালন পালন করতে পারবো না আমরা এর বেশি কিছু জানি না, আমাদের সেই চাচির ভাই সেই ছেলেটিকে নিয়ে এসেছিল সাথে এবং ছেলেটির বয়স ছিলো মাত্র তিন দিন। বাড়ি নিয়ে এসে তার বোনের কাছে ফোন দিয়ে সব ঘটনা বলল এবং বলল তোমার জন্য একটি ছেলে সন্তান নিয়ে এসেছে আমি। আমার সেই চাচি এবং চাচা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিল।

সে দেরি না করে তার বাবার বাড়ি চলে যায় এবং ছোট থেকে সেই সন্তান আমাদের এখানে বড় হয়েছে, আমাদের বাড়ির পাশে ছোট্ট একটি হাফিজিয় খানা আছে, সেখানে তাকে ভর্তি করে দেয়া হয়েছিল, এবং সেখান থেকে সে লেখাপড়া শিখছে, সেখানে প্রথমে অনেক ছোট ছোট বাচ্চারা ছিলো কিন্তু ধীরে ধীরে অনেক বাচ্চা সেখান থেকে চলে গিয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু ছোট ছোট বাচ্চারা সেখানে লেখাপড়া করে।

1000025996.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

1000025983.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

1000026137.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

1000025993.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

1000025986.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

এখনো অনেক বাচ্চা সেখানে লেখাপড়া করে এবং প্রায় ২০ থেকে ১৫ জন ছেলে সেখানে আছে, খুশির খবর এই ২০ জনের মধ্য প্রথম স্থান করেছেন সেই সন্তানটি, আমার সেই চাচা এবং চাচি অনেক খুশি তার সন্তান আজ ৩০ পারা কুরআনের হাফেজ হতে পেরেছে, এর চেয়ে বড় কোনো আনন্দ তাদের কাছে আর নেই, ছোট থেকে যে সন্তানকে নিজের সন্তানের পরিচয় দিয়ে বড় করেছে ,যে বাবা-মা আশা করি সেই বাবা-মায়ের মুখ এই সন্তান উজ্জ্বল করবে।

1000025980.jpgছবিটি whatsapp এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।

এবং তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বিশ হাজার টাকা, এবং এটাও শুনতে পেরেছি বড় একটি মাহফিলের আয়োজন করে তাদেরকে এই উপহার এবং তার ঢাকায় লেখাপড়া করানোর জন্য দায়িত্ব নিয়েছে, মা আইসা সিদ্দিকে হাফিজিয়া খানার প্রতিষ্ঠাতা, আসলে ওখানে যে প্রতিষ্ঠাতা সেও আমাদের এক চাচা, চাচার নাম মাওলানা আহমদ আলী। তিনি এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাদের গ্রামের সব মানুষ এখন খুশি।

আমি দোয়া রাখি আমার ওই ছোট্ট ভাইয়ের জন্য তিনি যেনো আরো অনেক বড় হাই, এবং আল্লাহ তাআলা তাকে যেনো সৎ পথে চলার তৌফিক দান করেন, এবং তার বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেন যেনো তিনি, যাইহোক বন্ধুরা এই ঘটনার মধ্য আরো অনেক কথাই আছে যে কথা গুলো হয়তোবা আমি এখানে উল্লেখ করতে পারিনি, তবে এতো টুকু বুঝতে হবে যদি আমরা মন থেকে সৃষ্টিকর্তার ওপরে বিশ্বাস রাখি তাহলে অবশ্যই তিনি আমাদের কে ভালো কিছু দিয়ে থাকেন।

ধন্যবাদ সবাইকে ভালো থাকবেন

@baizid123

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...
 4 months ago 

আমাদের এই পৃথিবীতে বাস্তবে আল্লাহতায়ালা কাকে কোন মাধ্যমে পরীক্ষা নেবে বলা খুব মুশকিল ।যেমনটা আপনার চাচা ও চাচির ক্ষেত্রেও হয়েছিল। আপনার চাচা এবং চাচি সেই কুড়িয়ে পাওয়া সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করতে পেরেছে জেনে খুব ভালো লাগলো।

সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 4 months ago 

গল্পটি পড়ে অভিভূত হয়ে গেলাম। সত্যি আল্লাহ কোন না কোন রূপে মানুষের মনের আশা পূর্ণ করেন। তিনি আমাদেরকে পরীক্ষা করেন যা হয়তো আমরা বুঝতে পারি না। কিন্তু একমাত্র তিনিই সেই সত্তা যার হাতে আমাদের প্রাণ। আপনার চাচা চাচি ছেলেটিকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলেছে এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। নিশ্চয়ই এর পুরস্কার স্বরূপ আল্লাহর কাছে তারা অনেক কিছু পাবেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

ভাই ঘটনাটি পড়ে দারুন লাগলো। এমনও হয়। সত্যি অসাধারন। ছেলেটির জন্য মন খুলে দোয়া করছি যাতে একদিন সে দ্বীনি আলেম হিসেবে তার পালিত বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। আপনার জন্য দোয়া রইলো ভাই, এমন একটি ঘটনা আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

আমাদের সমাজে এমন ঘটনা সত্যি বিরল। এখনকার সংসারগুলো সাধারণ ঘটনার জের ধরেই ভেঙ্গে যায়। সেখানে সন্তান ছাড়া সংসার টেকানো ভাবাই যায় না। যাইহোক ভালো থাকবেন ভাই। শুভ কামনা রইলো।

 4 months ago 

এরকম ঘটনা আমিও ঘটতে দেখেছি যে নিজের চোখের সামনে। সন্তান না হওয়ার কারণে তারা একটি সন্তান দত্তক নেয়। আর সেই সন্তান সমাজের মুখ প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
এমনকি আমার নিজের মামার শশুরকেও আমার নানা শশুর পালতে এনেছিলো। নিজের সম্পত্তি সমান ভাগ করে দিয়েছেন দুই ছেলে মেয়ের মাঝে। আমার স্বামী আর তার ভাইদের কাছে এই মামাই আপন মামা।
এরকম ঘটনা আমাদের সমাজে আসলে আরো ঘটা উচিত। এতে করে এতিম বাচ্চা এবং নিঃসন্তান বাবা-মা দুজনের মনের আশা পূর্ণ হবে।
চমৎকার একটা লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সব সময় এই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74