মুভি রিভিউ: 13B
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করে নেবো। এই মুভিটির নাম হলো "13B" . এটা একটা প্যারানরমাল টাইপের মুভি এবং রহস্যময় কাহিনী। রহস্যময় কাহিনীটা তাহলে দেখা যাক কি হয়।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
☫মূল কাহিনী:☫
সাধারণত এই কাহিনীতে মনোহর আর তার বড়ো ভাই দুইজনে ছোটোখাটো কনস্ট্রাকশন এর কাজের সাথে লিপ্ত ছিল। কাজের সূত্রে এরা আশেপাশে একটি নতুন ফ্লাট কিনে নেয় এবং সেটা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে। যদিও ব্যাংক তাদের ২০ বছরে সেটি শোধ করার সময় দিয়ে দেয়। সবাই মোটামুটি ওই ফ্ল্যাটে কিছুদিনের মধ্যে শিফট হয়ে যায়, কিন্তু ফ্ল্যাটে যাওয়ার দিন থেকে ছোটোখাটো সমস্যা শুরু হতে থাকে, কারণ তারা যে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলো সেটি 13B ছিল। তবে এই সমস্যাগুলো তারা তেমন কোনো পাত্তা দেয়নি, সাধারণ বিষয় বলে এড়িয়ে যায়। মনোহর যখন তাদের এই ফ্ল্যাট থেকে লিফট করে গ্রাউন্ড ফ্লোরে যেতে চায় তখন সেই লিফ্ট আর কাজ করতে চায় না, বারবার বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু অন্য কেউ উঠলে আবার সেটি চলতে থাকে। মনোহর বলতে গেলে একটা কনফিশনের মধ্যে পড়ে যায় যে, ও যখনই লিফট করে উঠতে যায় তখনই এই সমস্যা হয়। ওর ধারণা হয় যে লিফট খারাপ হয়ে আছে আর তার জন্য ওয়াচম্যানকে প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে ৫০ টাকা করে দিয়ে যায় যেন সে সবকিছু দেখেশুনে ঠিক করিয়ে নেয়।
যাইহোক, এই সমস্যা আর ঠিকই হয় না। ১৩ তলা সিঁড়ি করে করে যেতে থাকে, তবে তার থেকে আরো কিছু আশ্চর্য ঘটনা ঘরের ভিতরে ঘটতে থাকে। যেমন- ঠাকুর ঘরে ঠাকুরের কিছু ছবি ঝুলাবে, কিন্তু ওই দেওয়ালে একটা পেরেক ঢুকাতে পারে না এতো হাতুড়ি মারার পরেও। শেষে ড্রিল দিয়ে একজনকে ঠিক করতে বলে, কিন্তু সেই লোক হঠাৎ এমন ঝাটকা খায় যে মরে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। এইরকম অনেক ঘটনা ওই ফ্ল্যাটকে কেন্দ্র করে ঘটতে থাকে যেগুলো তারা নজর আন্দাজ করে বেরিয়ে যায়। তবে ওই ফ্ল্যাটে একজন অন্ধ বৃদ্ধ লোক ছিল যে একদিন তাদের ফ্ল্যাটে যায়, কিন্তু তার সাথে একটা ডগ ছিল যে কিছু একটা আছে এর ভিতরে যেটা সে অনুভব করতে পারছে, ফলে ভয়ে এই ডগ ওর ভিতরে যেতে চায় না।
অর্থাৎ এই রুমে কোনো আলাদা শক্তি আছে যেটা মানুষ না বুঝতে পারলেও এই প্রাণীটি বুঝতে পেরেছে। তাদের পরিবারে সবাই আবার খুবই সিরিয়াল ভক্ত, নতুন কোনো সিরিয়াল আসলেই বসে পড়ে, একদিন দুপুর ১ টার দিকে অর্থাৎ ১৩ টার দিকে একটা নতুন সিরিয়াল শুরু হয় আর সেটাতে একটা বাস্তব জীবনের কাহিনী হতে থাকে। কিন্তু সেটা তো এরা আর বুঝতে পারে না। একদিন মনোহর এই সিরিয়ালটি দেখতে থাকে এবং এই সিরিয়ালে প্রথম থেকে মোটামুটি যা যা হচ্ছে তাদের পরিবারে বাস্তবে তাই তাই ঘটছে। এইটা দেখে মনোহর আরো ভয় পেয়ে যায়, কারণ ওই সিরিয়ালে যখন যেটা হচ্ছে তার পরিবারে তার তার সাথে সেই ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে। এই ঘটনাগুলো যখন বাড়তে থাকে তখন তার এক পুলিশ বন্ধুর কাছে গিয়ে বলে, কিন্তু সে এইসব ঘটনা শুনে হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিতে থাকে, কারণ বাস্তবে এইরকম হওয়াটা খুবই দুষ্কর একটা ঘটনা। না শুনলে বাড়িতে গিয়ে সেই সিরিয়ালটা তার বন্ধুকেও দেখায় এবং হুবহু সেই ঘটনাই দেখলো। একপ্রকার মনোহর এর সাথে সাথে তার বন্ধুও এই গোলকধাঁধায় ফেঁসে যায়।
এখন মনোহর একদিন সেই ডগকে দেখতে পায় বাগানের গ্রাউন্ডে মাটি আঁচড়াতে আর মনোহর সেই জায়গাটায় খুঁড়ে দেখে একটা অ্যালবাম রাখা আছে যেটা ১৯৯৭ সালের অর্থাৎ প্রায় তাদের হিসেবে ৩০ বছর আগের অ্যালবাম। আর এই অ্যালবাম-এ যেসব ছবি তাদেরই ওই সিরিয়ালে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে ওই সময়ে ওই চ্যানেলে যে সিরিয়াল হয় সেটা অন্যান্য জায়গায় দেখে অন্য সিরিয়াল হচ্ছে, কিন্তু তাদের বাড়িতেই কেবল এদের দেখাচ্ছে। এরপর তারা তাদের সেইসব নথিপত্র খুঁজে পাওয়ার জন্য খবরের কাগজ দেখতে থাকে এবং তাদের আসলে মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল সেটা জানার জন্য। আসলে সেই সময়ে এডভোকেট রামচরণ নামের একজন লোক এই বিষয় সম্পর্কে জানতো কিন্তু সেই পরিবারের একজন এবনরমাল লোককে খুনি সাজিয়ে সারাজীবনের জেল করে দেয় আর কোর্টে সেও কিছু প্রমান করাতে পারেনি। তবে পরে এই খুনি আসলে কে সেটা ধরতে পারে, কারণ শিন্ডে নামের একজন লোককে যারা ভালো লোক ভাবতো সেই আসলে সবাইকে খুন করেছিল, যদিও এর পিছনে কাহিনী হলো তার ভাইও এদের জন্য সুইসাইট করেছিল।
☫ব্যক্তিগত মতামত:☫
মূলত এই 13B ফ্ল্যাটটি বহু আগে একটা সাধারণ বাড়ি ছিল। আর এটাকে পরবর্তীতে ভেঙে একটা এপার্টমেন্ট তৈরি করে। কিন্তু তাদের এই বাড়িটা যে 13B নামে ছিল, তাই এই এপার্টমেন্টে 13B যে ফ্ল্যাটটি দিয়েছে সেটার সাথে সেই পরিবারের অনেক কিছু জড়িয়ে ছিল অর্থাৎ তাদের আত্মাও সেখানে আটকে ছিল, প্রতিশোধ নেওয়ার আশায় তারা ফিরে আসে এবং এই টিভি সিরিয়ালের মাধ্যমে আসলে তাদের কিছু বোঝাতে চেয়েছিলো এই ঘটনাগুল। শিন্ডে একই পরিবারের ৮ জন কেই হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলো এবং একজন পুলিশ অফিসারকেও মেরে ফেলেছিলো। তবে তার কোনো প্রমান সেখানে আর রাখেনি। এর শাস্তি সেই আত্মাগুলোই পরবর্তীতে দেয় মনোহরদের মাধ্যমে। তাদের যেভাবে মেরেছিলো, তাকেও সেইভাবে মরতে হয়েছে। আসলে তার ভাইয়ের মৃত্যুর পিছনে তাদেরও কারো কোনো হাত ছিল না। তার ভাই সুইসাইট নোটে এমনভাবে বিষয়গুলো উল্লেখ করে গিয়েছিলো আর সেইটা দেখে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সবাইকে মেরে ফেলে আর একটা নির্দোষ লোককে দোষী করে দেয়, যদিও মনোহর পরে তাকে জেল থেকে জামিন নিয়ে নিজের বাড়িতেই পরিবারের মতো দেখাশোনা করতে থাকে।
☫ব্যক্তিগত রেটিং:☫
৮/১০
☫ট্রেইলার লিঙ্ক:☫
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা বরাবরের মতো আজকেও চমৎকার একটি মুভির রিভিউ শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। মাধবনের অভিনয় আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি মাধবনের "রেহেনা হে তেরে দিল মে" মুভিটা দেখেছিলাম এবং আরও কয়েকটি মুভি দেখেছিলাম। যাইহোক শিন্ডে একই পরিবারের এতোজন সদস্যকে মেরে ফেলে এবং তাদের আত্মা গুলো ১৩বি ফ্ল্যাটে ঘুরাঘুরি করে তাহলে। ভাবতেই তো অবাক লাগছে, তাদের জীবনের সাথে যা যা ঘটছে, সবকিছুই সিরিয়ালে দেখাচ্ছে শুধুমাত্র তাদের বাসার টিভিতে। এমন হরর টাইপের মুভি দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। মুভি দেখার সময় অজানা ভয় কাজ করে মনের মধ্যে। এমন ফ্ল্যাটে থাকা আসলেই বেশ ঝুকিপূর্ণ। বাস্তবেও কিন্তু এমনটা অনেক সময় শোনা যেতো আগে। তাইতো কেউ বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট কেনার আগে ভালোভাবে খোঁজ খবর নিতেন। তবে বর্তমান যুগে এইসব বিশ্বাস করতে চায় না বেশিরভাগ মানুষ। যাইহোক এই মুভির রিভিউ পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দাদা আপনি আজকেও একটা নতুন মুভির রিভিউ আমাদের মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এই ধরনের মুভি গুলো আমার অনেক বেশি ভালো লাগে দাদা। "13B" মুভিটা যদিও আমার দেখা হয়নি, তবে এই মুভির রিভিউটা পড়তে আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। শিন্ডে একই পরিবারের আট জনকে মেরে ফেলেছিল এটা দেখে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে আমার কাছে। এখানে তো দেখছি তার ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে তাদের কারো হাত ছিল না। আর ওই আত্মা গুলো প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এখানেই থেকে গিয়েছিল। এই ধরনের মুভি গুলো যদিও একটু ভয়ঙ্কর হয়, তবে দেখতে ভালোই লাগে। বিশেষ করে রহস্যে ঘেরা মুভি গুলো বেশি সুন্দর হয়। খুব সুন্দর করে আপনি পুরো মুভিটার রিভিউ আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে, সম্পূর্ণ কাহিনীটা জানতে পারলাম দাদা। আপনার পরবর্তী মুভির রিভিউ পোস্ট পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম দাদা।
"13B" মুভিটি সত্যি দারুন ছিল। যদিও প্যারানরমাল জাতীয় মুভিগুলো কখনো দেখা হয় না। তবে এই ধরনের প্যারানরমাল মুভিগুলো দেখতে বেশ ভালোই লাগে। এই মুভিগুলো বেশ রহস্যে ঘেরা থাকে। 13B ফ্ল্যাটটি বহু পুরনো একটি বাড়ি ছিল। আর এই পুরনো একটি বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছে। আসলে যখন পুরনো বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট তৈরি করা হয় তখন সেই বাড়ির অনেক স্মৃতি সেখানে রয়ে যায়। আর অনেক তথ্য সেখানে রয়ে যায়। কিন্তু সেখানে আত্মারা আটকে ছিল আর প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আসলে আত্মার ভয়ংকর প্রতিশোধ নেয়া এই মুভিটির আরও বেশি ভিন্নতা এনে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে বেশ ভালো লেগেছে। একই পরিবারের এতগুলো মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে আর তাদের বাসার টিভিতে সেই কাহিনী গুলো সিরিয়ালে দেখাচ্ছে ভাবতেই তো অবাক লাগছে দাদা। একেবারে রহস্যময় আর ভুতুড়ে সব ব্যাপার-স্যাপার। সব মিলিয়ে মুভিটির মাঝে একেবারে ভিন্নতা খুঁজে পাচ্ছি। সময় পেলে অবশ্যই দেখার চেষ্টা করব দাদা। দারুন একটি মুভি রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
দাদা আপনি আজকে একটা প্যারানরমাল টাইপের মুভি রিভিউ, সবার মাঝে ভাগ করে নিলেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। 13B এই মুভিটার মধ্যে দেখছি অনেক রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। রহস্য রয়েছে দেখেই তো বেশি ভালো লেগেছে। ওই আত্মা গুলো প্রতিশোধের জন্য আর কোথাও যায়নি, এখানেই থেকে গিয়েছিল। তাদের পাশাপাশি দেখছি একটা পুলিশকেও মেরে ফেলা হয়েছিল। ফ্ল্যাটটি আগে সাধারণ বাড়ি থাকলেও, পরবর্তীতে কিন্তু ওইটা ভেঙ্গে এপার্টমেন্ট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে তাদের আত্মাগুলো ছিল। তাদেরকে মেরে ফেলার শাস্তি ওই আত্মা গুলোই দিয়েছিল দেখছি মনোহরদের মাধ্যমে। তাকেও সেভাবে মেরে ফেলেছে দেখছি এখানে। তাদেরকে কিন্তু কোন হাত ছিল না তার ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে। দাদা সম্পূর্ণটা আমার কাছে পড়তে সত্যি ভালো লেগেছে। সম্পূর্ণ মুভির রিভিউ পড়ার সময় আমি মনে করেছিলাম আমি মুভি সরাসরি দেখতেছি। আশা করছি পরবর্তীতে আরো সুন্দর একটা মুভি নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন। ধন্যবাদ দাদা।
আজকে যে 13B মুভির রিভিউটা শেয়ার করেছে সেটা একটি হরর মুভির মতই মনে হয়। সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা ভদ্রতার মুখোশ পড়ে সমাজে ঘুরছে। অথচ তাদের পিছনের ইতিহাস খুললে দেখা যায় তারা কত বড় মাপের অপরাধী। আজকর মুভির মধ্যে এমনই একটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। শিন্ডে নামের লোকটি একজন পুলিশ অফিসার সহ একই পরিবারের ৮ জন কেই হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলো । আর তার দায় চাপিয়ে দেয় একজন নির্দোষ লোকের উপর। সেই জন্য মৃত আত্না গুলো মনোহরের মাধ্যমে শিন্ডেকে শাস্তি দেয়। আসলে আমরা হলে হয়তো ভয়ে সেই ফ্লাট ছেড়ে চলে আসতাম। তার পিছনের কারন গুলো খুজে দেখতাম না। আজকের মুভিটি কুকুরটি একটি প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। ধন্যবাদ দাদা।