"গাছের কাঁচা পাকা বড়ই লেবুর পাতা দিয়ে মাখা"
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে মিষ্টি সকালের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। আপনারা জানেন কিছুদিন আগে আমরা বাংলাদেশ ঘুরতে গিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম এবার শীতটা একটু অন্য রকম ভাবে কাটাবো। আসলে সেই উদ্দেশ্যে যাওয়া। শীতকালে গ্রামে থাকার মজাই আলাদা। সকালে খেজুর রস খাওয়া।গাছ থেকে ডাব পেরে খাওয়া। বড়ই গাছ থেকে বড়ই ছিঁড়ে খাওয়া। আবার সবজির ক্ষেত থেকে সবজি তুলে আনা। গ্রামে ঘুরতে গিয়ে বেশ মজা হয়েছিলো। এমনকিছু নেই যা খাওয়া হয়নি। টিনটিন বাবুর প্রথম গ্রামে ঘুরতে গিয়ে বেশ আনন্দ পেয়েছিলো। প্রথম প্রথম তার একটু অসুবিধা হচ্ছিলো।চারিদিকে কাদা মাটি ইটের রাস্তা টিনের ঘর দেখে ওর ভালো লাগছিলো না। কিন্তু পরে সেটা ঠিক হয়ে গিয়েছিলো। ওখানে গিয়ে দেখি প্রতি বাড়ীতে বড়ই গাছ এবং তাতে প্রচুর বড়ই ধরেছে। গাছে বড়ই দেখলে আমার ছিঁড়তে না পারলে ভালো লাগে না। সকালে উঠে আমার প্রিয় মানুষটি কাজে বসে যেত। উনি আবার কোথাও ঘুরতে গেলেও আগে কাজ তার দায়িত্ব। এগুলো আমি আবার পারি না। আমি ঘুরতে গেলে সবকিছু থেকে ছুটি। তখন শুধু ঘুরবো আর আনন্দ করবো। সেটা আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আর সে সকালে উঠে বেলা একটা পর্যন্ত কাজ করবে। আর আমি সকালে উঠেই বাবু আর আমি আরো কয়েকজন মিলে সারাদিন কি খাওয়া যায়,কি করা যায় তাই প্ল্যান করতাম। তো একদিন প্ল্যান করলাম বড়ই মাখা খাবো। কিন্তু আমি মাখতে পারিনা কারন কাঁচা লঙ্কায় হাত দিলে আমার হাত জ্বলে। তাই আমি আর টিনটিন বাবু গেলাম বড়ই পাড়তে।টিনটিন বাবু সব বড়ই পা দিয়ে ফাটিয়ে দিচ্ছিলো। বড়ই ফাটিয়ে ও খুব আনন্দ পাচ্ছিলো। আমি অনেক বড়ই পেরে ছিলাম। আর সেই বড়ই মাখানো হবে। আমি ধনে পাতা খাই না তাই লেবুর পাতা দিয়ে মেখে ছিলো। সেই বড়ই মাখানো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। গ্রামে যাওয়ার পর থেকে কোন
রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারিনি। তাই এই আনন্দ টুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করা যায়। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
নিজের হাতে গাছ থেকে বড়ই পাড়ছি।
লেবু গাছ থেকে পাতা ছিরা।
উপকরণ:
১. বড়ই - পরিমান মতো
২. কাঁচা লঙ্কা বাটা - পরিমান মতো
৩. লবণ - স্বাদ মতো
৪. লেবুর পাতা - ৪ টি
৫. কালো সরিষা বাটা -১ চামচ
৬.সরিষার তেল - হাপ্ চামচ
বড়ই
লেবুর পাতা,লবণ, কাঁচা লঙ্কা বাটা ও কালো সরিষা বাটা
প্রস্তুত প্রণালী:
১.প্রথমে বড়ই গুলো ভালো করে ধুয়ে একটু থেঁতলে নিলাম। মাখানোর সুবিধার জন্য।
২.এবার থেঁতলানো বড়ই সাথে পরিমান মতো লবণ,তেল, বাটা কাঁচা লঙ্কা ও কালো সরিষা দিলাম।এরপর লেবুর পাতা গুলো টুকরো টুকরো করে একসাথে মেখে নিলাম। বেশ এবার তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু বড়ই মাখা।
অনেকেই আমার বড়ই মাখা পছন্দ করেন। আমার তো দেখে জিভে জল চলে আসে। আর গাছ থেকে বড়ই পেরে খাওয়ার মজাই আলাদা।বড়ই মাখাটা এত টেস্টি হয়েছিলো যে শেষ পর্যন্ত কম হয়ে গিয়েছিলো।এমনকি আমার টিনটিন বাবু ও বেশ মজা করে খেয়েছিলো।আজ এই পর্যন্তই কাল আবার কোন নতুন বিষয় নিয়ে আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোটবেলায় বরই মাখা খাওয়ার জন্য সকাল থেকেই বরই গাছে উঠে বসে পড়ে থাকতাম। টক বরই মাখা আমার খুব পছন্দের। বিশেষ করে হালকা তেতুল এবং ধনেপাতা দিয়ে। অনেকদিন পর দেখে বেশ ভালো লাগছে বৌদি।
আর আমাদের টিনটিন বাবু তো গ্রামে থাকতে অভ্যস্ত না তাই হয়তো টিনের বাড়িঘর দেখে একটু আনইজি ফিল করছিল।
আমারও ঘুরতে গেলে বা বেড়াতে গেলে কোন কাজ করতে মন চায় না। আপনারা বাংলাদেশে বেড়াতে এসে গ্রামের বাড়িতে অনেক আনন্দ করেছেন। এর আগের অনেক পোস্ট পড়ে তা জেনেছি। কিন্তু আপনাদের এত সুন্দর বড়ই ভর্তা দেখে তো নিজের জিবের জল আর ধরে রাখতে পারলাম না। সরিষার তেল দিয়ে এত সুন্দর করে ভর্তা। দেখে কিন্তু লোভ হচ্ছে।
কাচা পাকা বড়ই ভর্তা দেখে জিভে জল চলে এলো বৌদি। সাথে লেবু পাতা দেওয়াতে খাওয়ার সময় খুব সুন্দর ঘ্রাণ আসবে। আসলে এমন ভর্তা দুপুর বেলা খেতে ভীষণ ভালো লাগে আমার কাছে। যাইহোক এতো মুখরোচক একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ বৌদি।
গ্রামে গেলে সবাই যে মজাটা করে যেমন খেজুরের রস খাওয়া, ডাব খাওয়া, সবজি ক্ষেত থেকে সবজি আনা সবই তো বৌদি আপনি করেছেন। এগুলো ছোট বেলায় আমরা যখন গ্রামে যেতাম আমরা অনেক করেছি। নিজের হাতে বড়ই গাছ থেকে বড়ই পেরে খাওয়ার মজাই আলাদা। ঠিকই বলেছেন গাছ ভর্তি বড়ই থাকলে না পেরে আনন্দ পাওয়া যায় না । টিনটিন ছোট মানুষ বড়ইগুলো পা দিয়ে ফাটিয়ে আনন্দ পেয়েছে এটা শুনে ভালো লাগছে আসলে বাচ্চাদের যে কাজ। লেবুর পাতা দিয়ে কখনো বড়ই এভাবে মাখিয়ে খাওয়া হয়নি সবসময় ধনিয়া পাতা দিয়েই খেয়েছি। লেবুর পাতা দিয়ে মাখালে মনে হয় অন্যরকম একটি স্বাদ পাওয়া যাবে । আমার তো দেখেই জিভে পানি চলে এসেছে।
বৌদি আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন প্রচুর পরিমান বড়ই খেয়েছি। আমাদের বড় আপাদের কে আমরা ডেকে বলতাম আপু, আমরা বড়ই পেড়ে আনব আপনি সুন্দর করে বেটে আমাদেরকে খেতে দেবেন। আপনার আজকের এই বড়ই মাখানো দেখে সেদিনের সেই কথাগুলো মনে পড়ে গেল। এগুলো খেতে বেশ মজা লাগে। তবে এই খাবারটি কিন্তু খুবই মুখরোচক খাবার। খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে।
কাঁচা পাকা বড়ুই ভালোভাবে মাখাতে পারলে খেতেও বেশ দারুন লাগে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। দেখে মনে হল যেন খুবই সুস্বাদু হয়েছিল এই রেসিপি। অবশ্য আমাদের বাসাতেও এই গাছ রয়েছে কিন্তু সময়ের সাপেক্ষে আজ পর্যন্ত তা তৈরি করে খাওয়া হয়নি। তবে চেষ্টা করব আপনাদের মাঝে বড়ুই রেসিপি করে তুলে ধরার জন্য।
জি বৌদি ঠিক বলেছেন শীতকালে গ্রামের বাড়ি থাকার মজাই আলাদা।শীতের সময় খাওয়া দাওয়া দারুন হয় গ্রামে।বড়ই মাখা দেখে ত জিভে জল চলে আসলো বৌদি। কাচা পাকা বড়ই এভাবে লেবুর পাতা দিয়ে মেখে খেলে খেতে দারুন লাগে।