"শীতের সময় গ্রাম বাংলার কিছু নৈসর্গিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি"

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। শীতের আমেজ গ্রামে না গেলে বোঝাই যায় না। গ্রামে এখন সবাই খুবই ব্যাস্ত নতুন ধান ঘরে তোলার সময়। আবার অনেক কৃষক শাক সবজি চাষ করছে। খেজুর রসের মিষ্টি ঘ্রাণ এসবই গ্রামে ছাড়া সম্ভব নয়। যদিও এখন খেজুরের রস খুব একটা পাওয়া যায় না। তারপরও এবার গিয়ে খেজুরের রস খেয়েছি। আমি ছেলেবেলায় প্রচুর খেঁজুরের রস খেয়েছি। আর খেঁজুরের গুর তো আমার খুবই পছন্দের একটা খাবার। কিন্তু আমি যত বড় হয়েছি ততই সেগুলো আমার জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিলো।সেগুলো আমি আবার ফিরে পেয়েছিলাম আমার প্রিয় মানুষটির জন্য।আসলে ও আমার মতো গ্রাম খুব পছন্দ করে। কিছুদিনের জন্য গ্রামে ঘুরতে গিয়ে গ্রামের মানুষ গুলোর সাথে একদম মিশে গিয়েছিলাম।সত্যি গ্রামের মানুষ গুলো অনেক সহজ সরল। আমি কয়েকদিনের জন্য গিয়েছিলাম কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আমাকে এতটা আপন করে নিয়েছিলো যে আমার মনেই হতো না আমরা বাইরে থেকে এসেছি। বাংলাদেশের এই একটা জিনিষ আমার খুব ভালো লাগে আর তা হলো তারা খুবই অতিথি পরায়ন। এদের আদর আপ্যায়নের কোন তুলনা হয় না।
আমরা সেখানে গিয়ে সারাদিনই গ্রামের ভিতর ঘুরতে যেতাম।আমার বাবুও খুব মজা পেত। সকাল হলে ব্যাট ও বল নিয়ে মাঠে চলে যেত। গ্রামের ভিতর ছোট ছোট দোকান থেকে মুড়ির মোয়া, ১ টাকা দামের চকলেট, ছোট ছোট বিস্কুটের প্যাকেট কিনতো। এরপর চিপসের প্যাকেট,চানাচুর এইসবই ছিলো তার খাবার। যে ছেলে আমার বার্গার, চিকেন ফ্রাই, ফিৎজা, KFC ও চাইনিজ খাবার ছাড়া সে খেত না। তার এত পরিবর্তন দেখে আমি তো অবাক।আর সারাদিন বিড়াল, কুকুর, হাঁস মুরগি নিয়ে মেতে থাকতো।
তবে ওর একটাই সমস্যা হচ্ছিলো আর তা হলো মাটির ঘড় ভালো লাগছিলো না।আর সন্ধ্যা হলেই পথ অন্ধকার হয়ে যেত। কারণ ও আলো ছাড়া অন্ধকারে থাকতে পারে না।আর শহরে বা আমাদের এখানে সব জায়গায় আলো থাকে।এসব দেখে দেখে বড় হয়েছে তাই অন্ধকার সহ্য করতে পারে না। আমি গ্রামে ঘুরতে গিয়ে জমি থেকে মাঝে মধ্যে সবজি তুলতাম। সবজি তুলতে আমার খুব ভালো লাগতো। কি ভাবে যে দিন গুলো চলে গেলো বুঝতেই পারলাম না।

IMG_20221225_140629.jpg

IMG_20221225_141009.jpg

IMG_20221225_141119.jpg

IMG_20221225_140750.jpg

IMG_20221225_140246.jpg
বিশাল ধানের ক্ষেত। রাস্তার পাশে গাছে কলা ধরেছে, আবার আকন্দ্ ফুলের গাছ। কিছু আগাছা রয়েছে। এসব দেখতে দেখতে গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হাঁটতে সত্যি অনেক ভালো লাগে।

IMG_20221225_140924.jpg

IMG_20221225_142040.jpg

IMG_20221225_142629.jpg
আমার হাতে গাব ফল। যদিও আমি জানি না এই ফল খায় কি না। তবে গ্রামের মানুষ বলছে এই ফলের নাম।ফলটি আমার খুব ভালো লাগছে তাই কুড়িয়ে নিলাম।

IMG_20221225_140216.jpg

IMG_20221225_135847.jpg
নারী পুরুষ উভয়ই মিলে ধান কাটছে। আমি দেখে তো অবাক যে মহিলারাও ধান কাটতে পারে।গ্রামের পথ দিয়ে টিনটিন বাবু জামা খাচ্ছে আর আনমনা হয়ে হাঁটছে।

IMG_20221225_142658.jpg

IMG_20221225_142851.jpg

IMG_20221225_142900.jpg

IMG_20221225_143028.jpg

IMG_20221225_143408.jpg

IMG_20221225_143414.jpg
ওলকফি গাছ গুলো বেশ ছোট ছোট রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এগুলো কিছুদিন আগে লাগানো হয়েছে।

IMG_20221225_144456.jpg
বেগুনের ক্ষেত দিয়ে বেগুন তুলেছি, আবার গাছ থেকে লেবু ছিড়লাম। গাছ থেকে বড় লেবু পারলাম বেশ কয়েকটি।

Sort:  
 2 years ago 

আসলেই গ্রামে না গেলে বুঝা যায় না শীতের আমেজ।খেজুর রস তো আগের মত এখন গ্রামে ও তেমন পাওয়া যায় না।আসলেই গ্রামের মানুষ খুব সহজ সরল,সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারে।বাংলাদেশের মানুষ এই একটা জিনিস ভালো পারে অতিথি আপ্যায়নটা।হঠাৎ করে বাচ্চারা গ্রামে গেলে দিনে যাই হোক রাতে থাকতে চায় না।তবে আপনাদের যে ভালো লেগেছে এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো।প্রতিটি ছবিই বেশ সুন্দর। ধন্যবাদ

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

সত্যি বলেছেন বৌদি গ্রামের দিকে না গেলে মনে হয় শীতের আমেজ পাওয়াই যায়না। তবে আমার দুর্ভাগ্য এবার শীতের গ্রামে যেতে পারিনি। দাদার পোস্ট থেকে জেনেছি আপনারা বাংলাদেশে এসেছেন। এটা শুনে খুবই ভালো লেগেছে। আর হ্যা ওইটা গাব ফল ছিলো। এটা খায় তবে পাকলে। কাচা খাওয়া যাবেনা। পাকলে খেতে দারুন লাগে। তবে এর অনেক কষ রয়েছে।

 2 years ago 

হা হা হা বার্গার, চিকেন ফ্রাই, ফিৎজা, KFC ও চাইনিজ খাবার ছাড়া সে খেত না। তার এত পরিবর্তন দেখে তো অবাক হওয়ার কথা। প্রথমেই বলবো এত সুন্দর গ্রামটি কোথায় জানার খুব ইচ্ছে হচ্ছে। আসলে ছেলেবেলা থেকে গ্রাম বাংলার এই রূপ শুধু বইয়ে দেখেছি। কিন্তু বাস্তবে তার ছোঁয়া আর পেয়ে উঠা হয়নি। অনেক ইচ্ছে থাকা শর্তে আজও খাওয়া হয়ে উঠেনি। অনেক ভাল লাগলো আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে।

 2 years ago 

বাংলাদেশের মানুষ অতিথি আপ্যায়নটা খুব ভালো করেই পারে দিদি! এজন্য বাংলাদেশের মানুষকে বাইরে থেকে যারা ঘুরতে আসে সবাই অনেক পছন্দ করে! মজার ব্যাপার হলো, টিনটিন বাবু বার্গার, চিকেন ফ্রাই বাদ দিয়ে এক টাকার চকলেট, মোয়া(যেটাকে আমরা লাড়ু বলি) এগুলো খেয়েছে। গ্রামের পরিবেশের সাথে টিনটিন বাবু ভালোই মানিয়ে নিয়েছিল দেখছি! তবে বৈদ্যুতিক সমস্যা গ্রামে একটু বেশিই।

 2 years ago 

আপনি তো আজকের পোষ্টের মধ্যে অসাধারণ গ্রাম বাংলার দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছেন দেখলাম। যেখানে গ্রামের কৃষকের ধান কাটা, কপি ক্ষেতের দৃশ্য। পাশাপাশি গাব ফল লেবু ফল এর দৃশ্য। গাছ থেকে জাম্বুরা পাড়া ও বেগুন তোলার দৃশ্য। সব মিলিয়ে অসাধারণ গ্রাম-বাংলার দৃশ্য ফুটে উঠেছে।

 2 years ago 

আসলেই বৌদি গ্রামে না আসলে শীতের আমেজটা বোঝাই যায় না। আর আমরা তো গ্রামে শীতের অনুভূতিটা বেশি উপভোগ করে থাকি। আপনারা যে এখন এই অনুভূতিটা কিছুটা হলেও পেয়েছেন এটা দেখে ভালো লাগলো। আসলে আমাদের দেশে গ্রামের দিকে বেশিরভাগ ছেলেমেয়েরা চিপস, চকলেট, বিস্কুট এসব নিয়েই খুশি থাকে। টিনটিনের এইরকম পরিবর্তন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। সবার সাথে বেশ সুন্দরভাবেই মিলেমিশে গিয়েছে। আমাদের দেশে অতিথিদের সুন্দরভাবেই আমন্ত্রণ করা হয়। আপনি যে খুশি হয়েছেন এটাই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ছোটবেলা থেকে গ্রামে বড় হয়েছি গ্রামে নিঃশ্বাস নিয়েছি গ্রামের মতো কোথাও শান্তি পাওয়া যায় না। শীতের প্রকৃতি অনুভূব করতে হলে গ্রাম বাংলার সৌন্দর্য অনুভব করতে হলে গ্রামে যেতে হয়।মজার করে ঘোরাফেরা করেছেন এবং টিনটিন বাবুও তো অনেক খুশি করেছে দেখে বেশ ভালো লেগেছে।বাংলাদেশে এসে ঘোরাফেরা করেছেন এবং সুন্দর একটি অনুভূতি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

বৌদি, সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছুই হারিয়ে যায়। অনেকে এগুলো আবার পুনরায় ফিরে পাওয়ার সুযোগ পাই আবার অনেকে পায় না। খেজুরের রস খাওয়া ,খেজুরের গুড় খাওয়া আমারও বেশ পছন্দের একটা বিষয় ছিল কিন্তু সেগুলো করার সুযোগ এখন আর হয় না। যদিও আমাদের দাদার জন্য তুমি এগুলো পুনরায় ফিরে পেয়েছো জেনে বেশ ভালো লাগলো। আর দাদা যে গ্রাম ভালোবাসে আমরা সেটা বিভিন্ন পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছি দাদার কাছ থেকে। বৌদি, তোমার আজকে শেয়ার করা গ্রাম বাংলার প্রকৃতির ফটো গুলো বেশ অসাধারণ ছিল । ফটোগ্রাফি গুলো আমায় গ্রামের কথাগুলো মনে করিয়ে দিচ্ছে বারবার।

 2 years ago 

আশা করি বৌদি ভালো আছেন। শীতের সময় গ্রামের অপরূপ সৌন্দর্য সত্যি হৃদয় ছুঁয়ে যায়। গ্রামে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আসলে শহর থেকে গ্রামে শীতের আমেজ অনেক বেশি। আপনি গ্রামে এসে ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59022.17
ETH 2569.27
USDT 1.00
SBD 2.53