ধলি বেটি
ধলি বেটির সঙ্গে খুব একটা আমার রক্তের সম্পর্ক নেই, তারপরেও তার ব্যাপারটা সমসাময়িক সময়ে আমাকে বেশ নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে কতগুলো কাছের মানুষের বিদায় স্বচক্ষে দেখেছি কিন্তু কিছুই করতে পারিনি, আসলে কিছু করারও ছিল না, কারণ ব্যাধিটা যে ক্যান্সার।
এই মরণব্যাধি শুধু যে আক্রান্ত মানুষটাকে মেরেই ক্ষান্ত হয় তেমনটা না বরং সাজানো-গোছানো যেকোন পরিবারকে মুহূর্তেই সবদিক থেকে নিঃস্ব করে ফেলে।
দুদিন আগেই গ্রাম থেকে ফিরেছি, ফিরেই যে এমন একটা সংবাদ শুনতে হবে, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। হয়তো পরিচিত দুটো ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে ব্যাপারটা জানতে পেরেছিলাম বিধায় বিষয়টা তে একটু গুরুত্ব দিয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম, ছোট ভাই দুটোর মাধ্যমে ধলি বেটির সর্বশেষ খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। তবে যা শুনলাম, তা আমাকে বড্ড ব্যথিত করেছে।
আসলে ক্যান্সারের গল্প যতই, আমি আপনাদের আবেগমেখে কিংবা কাকুতি-মিনতি করে শুনাই না কেন, সত্যিই আপনাদের মন গলবে না। কেননা মরণব্যাধি ক্যান্সারের ভুক্তভোগী তো আর আপনি না।
আমাদের এলাকার অনেক বাসাতেই ধলি বেটির যাতায়াত ছিল, সেই বহু আগে থেকেই। যতদিন শরীরটা তার ভালো ছিল ততদিন চেষ্টা করেছিল মানুষের বাড়িতে ঠিকঠাক মতো গৃহস্থালীর কাজ করার জন্য। তবে কখন যে তার শরীরে ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে, তা যেন সে ভুলেও টের পায়নি। তাছাড়া টের পেয়েই বা কি লাভ হতো, ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ তো আর সহজলভ্য না !
পৃথিবীর ভিন্ন রূপটা সে যেন মুহূর্তেই দেখতে শুরু করল, বেঁচে থাকতেই পৃথিবীটা তার কাছে নরকের মত হয়েছে । আত্মীয়-স্বজন যারা ছিল তারাও ছেড়ে গিয়েছে, ছেড়ে গিয়েছে নিজের কাছের মানুষরাও , এখন কোন রকমে ঠাঁই হয়েছে মেয়ের বাড়িতে। একদম শয্যাশায়ী সে, তার মেয়েই এর-ওর কাছ থেকে কিছুটা সহযোগিতা নিয়ে চিকিৎসা খরচ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগের সঙ্গে, ধলি বেটি যেমন ক্রমাগত যুদ্ধ করছে, তেমনটা মাকে বাঁচানোর জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছে তার মেয়ে।
তবে এভাবে আর কতদিন, হয়তো সবকিছুই একদিন শেষ হয়ে যাবে। ধলি বেটি নামে যে কেউ একজন ছিল, সেটাও একটা সময়ের পরে সবাই ভুলে যাবে, এটাই হয়তো চিরন্তন সত্য।
তাকে ঘিরে আমার অল্পস্বল্প কিছু স্মৃতি জড়িয়ে আছে, তাতেই খবরটা শোনার পর থেকে মনটা আমার বেশ ভারাক্রান্ত ।
আচ্ছা, ধলি বেটি যাদের বাসা-বাড়িতে জীবনের বেশিরভাগ সময়টা গৃহস্থালীর কাজ করে কাটিয়ে দিয়েছে, তাদের কি তার জন্য বিন্দুমাত্র মন পোড়াচ্ছে না, এই ব্যাপারটা বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে। নাকি তার এই কঠিন সময়ে, সে কারো সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার রাখে না, প্রশ্নটা আপনাদের কাছেই রেখে গেলাম ?
যদিও ব্যাপারটা বড্ড জটিলতা সম্পন্ন, তারপরেও শুধু কি মরণব্যাধির শিকার ধলি বেটি একাই নাকি এমনটা হাজারো মানুষ এই মরণব্যাধির ভুক্তভোগী।
যুগ কত দূর এগিয়ে গিয়েছে, মানুষের জীবনযাত্রার মানেও কত পরিবর্তন চলে এসেছে। তবে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধির চিকিৎসা খরচ, কেন যে সর্বসাধারণের হাতের নাগালে আসছে না কিংবা সর্বত্র এই চিকিৎসা সেবা এখনও যে, কেন পাওয়া যায় না, এটা ভাবতেই যেন আমি অনেকটা চিন্তিত হয়ে যাই।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1741372480374390922?t=S1jI0E0pAiFXk41--2wAAQ&s=19
ভাইয়া, ধলি বেটির মরণ ব্যাধি ক্যান্সারের কথা শুনে আমার কাছেও খুবই খারাপ লাগছে। যদিও বা আমি তাকে একদমই চিনি না, তাকে কখনো দেখিনি, শুধুমাত্র আপনার পোস্ট পড়েই তাকে চেনা। তবু কেন জানি ধলি বেটির জন্য আমার মনটা কেঁদে উঠছে। কেননা এই মরণব্যাধি ক্যান্সার আমার অর্ধাঙ্গিনীর বড় দুলাভাইকে কেড়ে নিয়েছে। নিতান্ত ভালো মানুষ ছিল। অথচ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেল, আর সর্বস্ব করে দিয়ে গেছে দুলাভাইয়ের সংসার টাকে। এত ব্যয়বহুল খরচ এই ক্যান্সার রোগের তা খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। তাই কারো ক্যান্সার হয়েছে জানতে পারলে সত্যিই ভীষণ ভয় করে।
আপনার নিকট আত্মীয়ের ব্যাপারটা জেনে বেশ ব্যথিত হলাম ভাই।
আমাদের তো সরষের মধ্যেই ভুত ভাই! আমরা যা খাই, তাতেই তো ক্যান্সারের বাসা। সে ফল থেকে শুরু করে সব্জি, এমনকি ওষুধ এর ক্ষেত্রেও ২ নম্বরি। সেদিন খবরে দেখলাম অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন ও মেয়াদউর্ত্তিন ব্যবহার করা হচ্ছে! যেখানে আলু পেয়াজই অনেকের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, সেখানে ক্যান্সার এর চিকিৎসা হাতের নাগালে হওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না! উদ্ভট উটের পিঠে চলছে দেশ...
বেশ ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা। পিষে মরছি তবে তাও মুখ খুলছি না। কি একটা অবস্থা 🙏
আসলেই ক্যান্সার নামক মরণব্যাধি একটি সাজানো গোছানো পরিবারকে একেবারে নিঃশেষ করে দেয়। তবে ধলি বেটি যাদের বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করতো, তাদের উচিত ছিলো এমন দুঃসময়ে ধলি বেটির পাশে দাঁড়ানো। আসলে বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ হচ্ছে একেবারে মনুষ্যত্বহীন। তাইতো খারাপ সময়ে কাউকে পাশে পাওয়া যায় না। কিন্তু ভালো সময়ে আশেপাশে মানুষের অভাব হয় না। প্রযুক্তি কতো উন্নত হচ্ছে দিনদিন, কিন্তু ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের একেবারে বাহিরে। দিনদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য ক্যান্সারের চিকিৎসা সহজলভ্য করা উচিত। যাইহোক ধলি বেটি এবং উনার পরিবারের জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল ভাই।
পৃথিবীটা বড্ড অদ্ভুত একটা জায়গা ভাই, এখানে যতক্ষণ যার প্রয়োজন, ততক্ষণ তাকে পাশে রাখে। প্রয়োজন ফুরালেই, সবাই ছুড়ে ফেলে দেয়। তাই হয়তো তার কঠিন সময়ে কেউ পাশে নেই।
বর্তমানে ক্যান্সার যেন সর্বত্র ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর যাকে ধরছে একদম শেষ করে দিয়ে যাচ্ছে। ধলি বেটির কঠিন সময়ে মেয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মেয়ে কত দিনই বা চিকিৎসা করাতে পারবে? সমাজের মানুষদের উচিত ধলি বেটির পাশে দাড়ানো! একটা আক্ষেপ নিয়ে যেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ না করতে হই! ধলি বেটির সুস্থ্যতা কামনা করছি
এমন আক্ষেপ গুলো থেকেই যায় ভাই, কেননা বাস্তবতা বড্ড কঠিন।
এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া।
কথাটা ঠিক ভাই ঐ নামের কেউ ছিল এটা একসময় ভুলে যাবে মানুষ। ক্যান্সার ব্যাপার টা খুবই মারাত্মক। এটা হলে যেন আর কিছু করারই থাকে না। আর এই শেষ সময়ে ঐ মানুটার পাশে কেউ নেই নিজের বলতে। সবাই ছেড়ে চলে গিয়েছে। এই ব্যাপার টা যেন আরও বেশি কষ্টের। আশাকরি সৃষ্টিকর্তা উনাকে এইভাবে খুব বেশিদিন রাখবেন না। মুক্তি দিবেন খুব দ্রুতই।