পরিবার নিয়ে পদ্মার পাড়ে ঘোরাফেরা।
কয়েকদিন ঢাকা থাকার পরে গত দুদিন হল বাড়িতে ফিরেছি। বাড়িতে ফেরার পর থেকে জরুরি কাজ ছাড়া খুব একটা বাইরে যাওয়া হয়নি। এদিকে আবার রোজাও প্রায় চলে এলো। তাই চিন্তা করছিলাম রোজার মাসে যেহেতু আর বাইরে যাওয়া হবে না পরিবার নিয়ে। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে রোজার আগে একবার বাইরে থেকে ঘুরে আসি। আমি তো প্রায়ই ঘোরাঘুরি করি। তবে পরিবারের বাকি লোকজন সবসময় বাসাতেই থাকে। তাদের বাইরে যাওয়া হয় খুবই কম। এজন্য মাঝে মাঝে চেষ্টা করি ওদের নিয়ে আশেপাশে কোথা থেকে ঘুরে আসতে। তাতে সবার মনটাও ভালো থাকে পারিবারিক বন্ধন টাও দৃঢ় হয়।
সেই চিন্তা থেকেই আমি আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম শুক্রবার বিকেলে বাইরে ঘুরতে গেলে কেমন হয়? সে উত্তর দিয়েছিল খারাপ হয় না। তখনই আমি পরিকল্পনা করেছিলাম শুক্রবার বিকালে স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাবো। কোথায় ঘুরতে যাব এটা নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে হয়নি। কারণ আমি দীর্ঘদিন হলো পদ্মার পাড়ে যাই না। তাই প্রথমে চিন্তা করে রেখেছি পদ্মা নদীর পাড়ে ঘুরতে যাব। যদিও এ সময়ে নদীর যে চেহারা থাকে সেটার সাথে ভরা বর্ষার চেহারার কোন মিল পাওয়া যাবে না। বছরের এই সময়টাতে নদীটা শুকিয়ে একটা খালের মতো আকৃতি ধারণ করে। নদীর বুক জুড়ে পড়েছে বিশাল চর।
আমাদের শহরে ঘোরাফেরার মতো তেমন কোন জায়গা না থাকায়। শহরের বেশিরভাগ লোকজন এই চরে এসে ঘোরাফেরা করে। যাই হোক আমরা বিকাল চারটার দিকে তৈরি হয়ে বাসা থেকে বের হলাম। পদ্মা নদী আমার বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূর না হওয়ায় রিকশা করে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে পৌঁছে নদীর অবস্থা দেখে তো আমরা সবাই অবাক। কারণ এবারের চর পড়েছে গতবারের থেকেও বেশি। পার থেকে নদীর পানি দেখা যাচ্ছিল না। নদীর পানি পর্যন্ত পৌঁছাতে আমাদেরকে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়েছে। তবে এই হাঁটাতে আমাদের খুব একটা কষ্ট লাগেনি। আমাদের মত আরও অনেক মানুষকে দেখলাম নদীতে ঘুরতে এসেছে। তবে আমার মেয়ের হাঁটতে একটু সমস্যা হচ্ছিল। কারণ পুরো পথটা চরের বালির ভেতর দিয়ে হাঁটতে হয়েছিল তাকে। যাই হোক এত বড় চরের একমাথা থেকে অন্য মাথায় যেতে আমাদের অনেকটা সময় লেগেছিল।
তবে সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম অনেকেই জুতা স্যান্ডেল খুলে পানিতে পা ভেজাচ্ছে। লোকজনের এ অবস্থা দেখে আমার মেয়েও বায়না ধরল সে পানিতে পা ভেজাবে। তবে তার কিছুটা ঠান্ডার সমস্যা থাকার কারণে আমরা তাতে রাজি হইনি। কারণ আমার মেয়ের অল্পতেই ঠান্ডা লাগে। এই বিকাল বেলায় নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে যদি সেই ঠান্ডাটা আরো বেড়ে যায় তাহলে সমস্যা তৈরি হবে। সেজন্য আর তাকে নদীর পানিতে পা ভেজাতে দেইনি। পা ভেজাতে না পেরে সে বায়না ধরল নৌকায় ঘুরবে। তবে আশেপাশে ছোট কোন নৌকা না পাওয়াতে আমি ঠিক করলাম খেয়া পারাপারের জন্য যে ইঞ্জিন চালিত নৌকা আছে। সেই নৌকায় করে একবার ওপার যায়। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে আসা যাবে। তাতে একসাথে দুটি কাজ হয়ে যাবে। নৌকায় চড়াও হবে। আবার ওপারের চরাঞ্চলটা দেখাও হবে।
নৌকায় চড়ার পরিকল্পনা করার সাথেই দেখতে পেলাম খেয়া নৌকায় লোকজন প্রায় ভরে গিয়েছে। আমরা তাই তাড়াতাড়ি করে নৌকায় উঠে বসলাম। আমরা ওঠার কিছুক্ষণের ভেতরে নৌকা ছেড়ে দিল। নৌকায় দেখতে পেলাম আমাদের মত দু চারজন আছে যারা ওপারে ঘুরতে যাচ্ছে। আর বেশিরভাগই চরের বাসিন্দা। তারা তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম শেষ করে বাড়ি ফিরছে। যাইহোক অল্প সময়ে আমরা ওপারে পৌঁছে গেলাম। প্রথমে পরিকল্পনা করেছিলাম যে নৌকাতে যাব সেই নৌকাতে করেই আবার সাথে সাথে ফিরে আসবো। তবে ওপারে গিয়ে আমার মেয়ে বলতে লাগলো সে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করবে তারপর ফিরবে। অগত্যা কি আর করা? তার জিদের কাছে হার মানতে হলো আমরা। নৌকা থেকে নেমে চরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলাম। সাথে কিছু ছবিও তুললাম। কিছুক্ষণ এভাবে এলোমেলো ঘোরাফেরা করার পর দেখতে পেলাম আরো একটি নৌকা এ পারে এসেছে। আমরা সেই নৌকাতে উঠে ওপারের দিকে ফিরতে লাগলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার চর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
@tipu curate 2
Upvoted 👌 (Mana: 5/7) Get profit votes with @tipU :)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কাজটি ভালোই করেছেন পরিবারকে একটু সময় দিয়েছেন। অনেকেই পরিবারকে সময় দিতে চায় না তবে আপনি এই দিক থেকে অনেকটাই ব্যতিক্রম তা জেনে অনেক ভালোলাগলো। এছাড়া পদ্মার পাড়ে আমি কয়েকবার গিয়েছিলাম, জায়গাটাও বেশ মনোরম।
রোজা আসার আগে পরিবারকে নিয়ে বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছেন ভাইয়া। আসলে সবারই উচিত মাঝেমধ্যে পরিবারকে নিয়ে ঘোরাঘুরি করা। এতে করে মনের একঘেয়েমি ভাবটা দূর হয় এবং পারিবারিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। ছবি দেখেই বুঝা যাচ্ছে পদ্মার চর বিশাল বড়। আপনারা দেখছি নৌকা দিয়েও বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছেন। নৌকা দিয়ে ঘুরতে আমারও খুব ভালো লাগে। সব মিলিয়ে বিকেল বেলার সময়টা পরিবারের সাথে বেশ ভালই কাটিয়েছেন দেখছি। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল।
পরিবারকে নিয়ে পদ্মা নদীর পাড়ে অনেক ভালো সময় পার করেছেন।। আমিও মাঝে মাঝে সময় পেলেই বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নিয়ে চলে যাই পদ্মার পাড়ের হাওয়া খেতে এবং সুন্দর কিছু মুহূর্ত পার করবো বলে।।
আসলে এমন জায়গা ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে যদিও এখন নদী প্রায় মৃত। যেও নেই স্রোত নেই বদ্ধ পানিতে পরিণত হয়েছে।।
ধন্যবাদ ভাইয়া পদ্মার পার ভ্রমণ করে সুন্দর অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।।
বর্ষার সময় নদীর এক রূপ থাকে আর এই সময়ে নদীর ভিন্ন রূপ দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে চরাঞ্চলগুলোতে গেলে দেখা যায় পানি অনেকটা শুকিয়ে গেছে। আর পুরোটা রাস্তা বালি দিয়ে ভরে গেছে। আর সেই বালিতে হাটা সত্যি অনেক কষ্টকর। কিছুদিন আগে আমি এক জায়গায় গিয়ে খুবই বিপদে পড়ে গিয়েছিলাম। মাঝ রাস্তায় গিয়ে আর কোন দিকে যেতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল যেন সেখানেই দমটা বেরিয়ে যাবে। যাইহোক ভাইয়া নৌকায় ঘোরাঘুরি হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আর মামনির যেহেতু ঠান্ডার সমস্যা আছে তাই পানিতে না নামাই ভালো হয়েছে। আর বিকেলবেলার পানি অনেক ঠান্ডা থাকে।
পদ্মার পাড়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে খুব সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন। পদ্মা নদী দেখছি একবারে খালের মতো ,শুকিয়ে গেছে। বর্ষাকালে পানিতে টুই টুম্বুর, এই সময়টাতে একেবারে শুকিয়ে যায়। ভালো হয়েছে নৌকাতেও চড়তে পেরেছেন এবং চরও দেখা হয়েছে। আপনারা তিনজন খুব ভালো একটা মুহূর্ত উপভোগ করেছেন।
আপনার এই ভাবনাটাই অনেক ভালো ভাই। সত্যিই তো আপনি বাসার বাইরে বের হলেও আপনার স্ত্রী আর সন্তানের তো খুব একটা হয়না। আর পদ্মার পাড়ে এখন বিশাল চর থাকলেও খুব সুন্দর জায়গাটা। আর আপনার মেয়ে নদীর জলে পা ভেজাতে না পারলেও নৌকায় ঘুরে নিশ্চয়ই অনেক মজা করেছে।
যেখানে পদ্মার মতো একটা চর আছে সেখানে আর ঘোরাঘুরির জায়গার দরকার আছে ভাই। বিকেলে নদীর পাড়ে ঘোরাঘুরি এর থেকে ভালো
আর কী হতে পারে। নদীর পানিতে পা দিয়ে হাটাহাটির মধ্যে আলাদা একটা মজা আছে। যদিও আপনার মেয়ের ঠান্ডার জন্য সে সেটা করতে পারেনি। চমৎকার সময় কাটিয়েছেন ভাই। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।