বন্ধুদের সাথে অপ্রত্যাশিতভাবে ঈদ পরবর্তী আড্ডা (শেষ পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক


আমরা যেখানে আড্ডা দিচ্ছিলাম সেখান থেকে সেই রাস্তার দূরত্ব একেবারে কম নয়। প্রায় সাত-আট কিলোমিটার দূরে ছিলো রাস্তাটি। তবে আমাদের সাথে মোটরসাইকেল থাকায় সেখানে পৌঁছতে আমাদের খুব একটা বেশি সময় লাগেনি। আমরা যখন সেই রাস্তাটাতে পৌঁছলাম তখনও দেখি সেখানে কিছু মানুষজন রয়েছে যারা বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মূলত এই রাস্তা তে দুই ধরনের মানুষ বেশি আসে। এক হচ্ছে যারা নিরিবিলি গ্রামীন প্রাকৃতিক পরিবেশ পছন্দ করে তারা। আর দ্বিতীয়ত প্রেমিক প্রেমিকা যুগল। তবে সেখানে পৌঁছে আমি যেটা চিন্তা করেছিলাম সেটাই হোলো। আমরা যখন সেই রাস্তা দিয়ে পৌঁছলাম তখন দিনের আলো প্রায় নিভু নিভু। যার ফলে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমরা তেমন একটা দেখতে পারিনি।

IMG_20230702_185044.jpg

তবে আমরা যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন রাস্তাটা একেবারে নিরিবিলি দেখতে পেলাম। সেখানে লোকজন নেই বললেই চলে। নিরিবিলি শুনশান রাস্তায় চলতে আমাদের বেশ ভালই লাগছিলো। সেখানে পৌঁছানোর পর আমাদের বন্ধু হারুন বলল সামনে কিছু দূরে একটি চায়ের দোকান আছে। আমরা সেখানে গিয়ে চা খেতে পারি। যেহেতু ইতিমধ্যে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে তাই হারুনের চা খাওয়ার প্রস্তাবটি সকলেরই মনঃপুত হোলো। হারুন প্রস্তাব দেয়ার পর আমরা সেই চায়ের দোকানের দিকে আগাতে লাগলাম।

IMG_20230702_185031.jpg

দুই মোটরসাইকেলে আমরা মোট ছয় জন মানুষ ছিলাম। ছয় বন্ধু মিলে ধীরেসুস্থে গল্প করতে করতে আমরা যাচ্ছিলাম। কিছুদূর আগানোর পরেই আমরা দেখতে পেলাম রাস্তার দুপাশে দু-তিনটি দোকান রয়েছে। আমরা যে রাস্তাতে গিয়েছিলাম সেখানকার আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে সেই রাস্তার আশেপাশে লোকজনের বাড়ি ঘর প্রায় নেই বললেই চলে। অনেক দূরে দূরে একটা দুটো করে বাড়ি দেখা যায়। যাই হোক আমরা সেই দোকানের কাছে পৌঁছে চায়ের অর্ডার দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ইতিমধ্যে মাগরিবের নাম আযান দিয়ে দিয়েছিলো। আজান শোনার পর আমি পাশের এক দোকানদারের কাছে মসজিদ আশেপাশে কোথায় আছে সেটা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন একটু সামনে এগিয়ে হাতের ডানে গেলেই মসজিদ দেখতে পাবেন।

IMG_20230702_185022.jpg

তখন আমি বন্ধু ফেরদৌস কে সাথে নিয়ে সেই মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তারপর দুই বন্ধু সেখানে পৌঁছে নামাজ পড়ে আবার বন্ধুদের কাছে ফিরে এলাম। আমরা ফিরে এসে দেখি ততক্ষণে বন্ধুদের চা খাওয়া শেষ। তারপর আমি গিয়ে আমার আর ফেরদৌসের জন্য দুটো চায়ের অর্ডার দিলাম। তবে চায়ের অর্ডার দিতে গিয়ে দেখি সেখানে কোন রং চায়ের ব্যবস্থা নেই। সেখানে দুধ চা বিক্রি হচ্ছে। রং চা পেলে আমাদের জন্য ভালো হতো। তবে যেহেতু সেখানে রং চা পেলাম না অগত্যা কি আর করা? দুই বন্ধুর জন্য আমি দুধ চা নিয়ে এলাম। তারপর রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে গল্প করতে করতে চায়ের কাপে চুমু দিতে লাগলাম।

চায়ের টেস্ট কেমন হবে সেটা নিয়ে আমার কিছুটা সন্দেহ ছিল তবে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে আমার সেই সন্দেহ একেবারে দূর হয়ে গেলো। চায়ের স্বাদটা ছিল বেশ মজার। দীর্ঘদিন পর বেশ কিছু বন্ধু-বান্ধবকে কাছে পেয়ে আমার দারুন লাগছিলো। বারবার মনে হচ্ছিল আবার যে কবে এমনভাবে অনেক বন্ধু একসাথে হতে পারবো? তবে জানি চাইলেও এটা সম্ভব নয়। দুই ইদ ছাড়া বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ খুব একটা হয় না। শুধু ফেরদৌস যখন ফরিদপুরে থাকে তখন আমি ফেরদৌস আর বন্ধু রাফসান মাঝে মাঝে আড্ডা দেই। কখনো কখনো আমাদের সাথে বন্ধু প্রদিপ যোগ দেয়। নানা নানা রকম জিনিস চিন্তা করতে করতে হঠাৎ করে এক বন্ধু বলল চলো এখন ফেরা যাক। আমাদের আবার আগামীকাল ঢাকা যাওয়ার গোছগাছ কাজ করতে হবে। বুঝতে পারলাম এ বছরের মত এটাই বন্ধুদের সাথে হয়তো শেষ আড্ডা। মন কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু মন খারাপ হলেও তো কিছু করার নেই। এটাই জীবনের নিয়ম। আর এভাবেই শেষ হয়ে গেল এবারের মত আমাদের ঈদ পরবর্তী আড্ডা।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানগেরদা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 86273.50
ETH 3305.14
USDT 1.00
SBD 2.81