এলাকার বন্ধুদের সাথে ভুরিভোজ ও ঘোরাফেরা করা (দ্বিতীয় পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক


আমরা কয়েকজন মিলে বন্ধু রাসুর বাসায় পৌঁছে খাওয়া-দাওয়া শুরু করলাম। এদিকে বন্ধু রাসু শোভন আর অন্য দুজন বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলো। আমরা বারবার বলেও ওকে আমাদের সাথে খাওয়াতে পারিনি। আমাদের খাওয়া দাওয়া যখন প্রায় শেষের দিকে তখন রাজন নামের আমাদের এক ছোট ভাই সেখানে এলো। সেখানে এসে সে খাওয়া-দাওয়ার এক পর্যায়ে জানালো সে আমাদের সাথে যেতে পারবে না। কারণ হিসেবে বলল তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু আসছে ঢাকা থেকে। তার সাথে ওকে সময় দিতে হবে। এদিকে আমাদের খাওয়া-দাওয়া প্রায় শেষ হয়ে এলেও অন্য দুই বন্ধুর কোন দেখা নাই।

IMG_20230818_163805.jpg

তাদেরকে বন্ধু রাসু বারবার ফোনে চেষ্টা করেই যাচ্ছিলো। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। যাই হোক আমাদের খাওয়া দাওয়া শেষ হলে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম শোভনের বাড়িতে একজন গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে আসবে আসলে কি হয়েছে। তারপর শোভনকে যদি না পাওয়া যায় তাহলে আমরা যে কয়জন হই আমরা চরভদ্রাসনের দিকে রওনা দেবো। বন্ধু রাসু একটা বক্সে করে খাবার নিয়ে শোভনের বাড়িতে গেলো। এদিকে আমরা সবাই রাশুর বাসা থেকে বের হয়ে রুবেলের দোকানের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এর ভিতরে রাশু ফিরে এসে জানালো শোভনের সামান্য শারীরিক সমস্যা হয়েছে। তারপরেও সে বলেছে কিছুক্ষণের ভেতরেই সে প্রস্তুত হয়ে আসছে।

IMG_20230818_163542.jpg

এর ভেতরে দেখতে পেলাম আমাদের আর এক বন্ধু এরশাদ সেখানে এসে উপস্থিত হয়েছে। এরশাদ আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তবে দীর্ঘদিন যাবত ও নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। অনেক দিন পর ওকে পেয়ে বেশ ভালো লাগলো। শোভন তৈরি হওয়ার জন্য ১৫ মিনিট সময় নিলেও আধা ঘন্টা পার হয়ে যাওয়ার পরও তার দেখা পাচ্ছিলাম না। অবশ্য শোভনের সময় জ্ঞান এমনই। যে কোন জায়গায় যাওয়ার আগে তার তৈরি হতে অনেক সময় লাগে। শুধু শোভন যে এমন তা নয়। আমাদের বন্ধু রুবেলও অনেকটা একই রকম। রুবেল আমাকে বলছিলো বাড়িতে গিয়ে একটু কাপড় চোপড় পাল্টে আসি। আমি রুবেলকে কিছুতেই বাড়িতে যেতে দিতে রাজি হচ্ছিলাম না। আমি বললাম তোকে আমি খুব ভালোভাবে চিনি। এখন যদি তুই বাড়িতে যাস তাহলে তোকে আর বাড়ি থেকে বের করা যাবে না। তারপরে ও আমাদেরকে কথা দিয়ে বাড়িতে গেলো পাঁচ মিনিটের জন্য।

IMG_20230818_175333.jpg

পাঁচ মিনিটের কথা বলে গেলেও আমরা ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও দেখি রুবেল আসছেনা। পরে আমি আর আমাদের আরেক বন্ধু মিলে গেলাম রুবেলের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে দেখি রুবেল কাপড়চোপড় পাল্টে বিছানায় শুয়ে পড়েছে। এটা রুবেলের পুরোনো অভ্যাস। যাই হোক আমরা মোটামুটি জোর করে ওকে কাপড় চোপড় পরিয়ে সাথে করে বাইরে নিয়ে এলাম। রুবেলকে নিয়ে বাইরে আসার পর আমরা একটি অটো রিজার্ভ করলাম। তারপর আমি বন্ধু রাসু কে সাথে নিয়ে শোভনের বাড়ির দিকে গেলাম। যাওয়ার সময় অন্য বন্ধুদের কে বলে গেলাম গিয়ে দেখি শোভনের কি অবস্থা। যদি ওর বেশি দেরি হয় তাহলে আমরা আর অপেক্ষা না করে চলে যাবো।

IMG_20230818_175327.jpg

আমি আর রাসু কথা বলতে বলতে যখন শোভনের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছেছি। তখন দেখি শোভন গেট দিয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছে। শোভন আমাকে দেখেই দুঃখ প্রকাশ করলো। বলল আসলে আমার জন্য তোমাদের দেরি হয়েছে। এজন্য আমার নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। আমরা তখন ওকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি ১৫ মিনিটের কথা বলে এতটা দেরি করলে কেনো। ও বলল আর বোলো না আমি বের হব এমন সময় আমার ভাতিজা এসে আমার জুতার উপরে পানি ঢেলে দিয়েছে। সে কারণে আমার কিছুটা দেরি হোলো বের হতে। যাইহোক শোভনকে নিয়ে আমরা অটো রিক্সার কাছে আসার পরে আর দেরি না করে রওনা দিয়ে দিলাম।

IMG_20230818_173611.jpg

আমাদের এলাকা থেকে চরভদ্রাসনের সেই জায়গাটা প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। আমরা ধারণা করেছিলাম অটো রিক্সা করে সেখানে যেতে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ মিনিট সময় লাগবে। আমরা সেই হিসাব করেই আগাচ্ছিলাম। অনেকদিন পর এলাকার এতগুলো বন্ধু-বান্ধবের সাথে একসাথে ঘুরতে বেরিয়ে বেশ ভালো লাগছিল। সবাই মিলে দারুন আড্ডায় মেতে উঠেছিলাম। দুপুরে ভারী খাওয়া দাওয়া হওয়ার কারণে আমাদের সবারই কিছুটা হাঁসফাঁস লাগছিল। তা ছাড়া খাওয়া দাওয়ার পর আমরা খুব একটা রেস্ট নেয়ার ও সুযোগ পাইনি। তাই আমাদের এক বন্ধু বলল সামনে কোন একটা জায়গা থেকে অটো থামিয়ে পানি কিনতে হবে। আমরা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার আগানোর পরে একটি দোকান দেখে সেখানে থামলাম। তারপর সেই দোকান থেকে ২ লিটারের একটা কোক, দুই লিটার পানি, চিপস, আরো টুকিটাকি কিছু জিনিস কিনে নিয়ে আবার আমরা রওনা দিলাম। আমরা যে জায়গায় যাবো অটোওয়ালা সে জায়গাটা চেনে। যার ফলে আমাদের কোন চিন্তা করতে হচ্ছিলো না। সে তার নিজের মতো করে আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আগাচ্ছিলো। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানচরভদ্রাসন

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 10 months ago 

একেকজনকে রেডি করতে আর অপেক্ষা করতে করতেই তো আপনাদের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছিলো। সব সার্কেলে মনে হয় এমন কয়েকজন থাকে, যাদের রেডি হতে প্রচুর সময় লাগে। যাইহোক অবশেষে অটো নিয়ে আপনাদের গন্তব্যের দিকে রওনা দিয়েছেন, এটা দেখে খুব ভালো লাগলো। সবাই একসাথে ঘুরতে গেলে সত্যিই খুব ভালো লাগে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

ভাইয়া আসলে কোথাও যাওয়ার হলে কারো জন্য অপেক্ষা করা বেশ কষ্টকর।একেক জনের একেক সমস্যা হয়েই থাকে।এজন্য কেথাও ঘুরতে গেলে অ্যাক্টিভ মানুষের সাথে যাওয়া খুব ভালো। অবশ্য এটা ও ঠিক বেশী মানুষ জন না হলে ঘুরাঘুরি করতে আনন্দ পাওয়া যায় না।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে অনেক কিছুই জানলাম।যাক শেষ পর্যন্ত সবাইকে নিয়ে রওনা দিতে পেরেছেন জেনে ভীষন ভালো লাগলো। আশাকরি সামনের পর্বে আরো ভালো কিছু অপেক্ষা করছে।

 10 months ago 

আসলে বন্ধু সার্কেলের মধ্যে এরকম কয়েকটি বন্ধু থাকবে যাদের সময়ের জ্ঞান খুব ভালো। ৫ মিনিটের কথা বলে ৩০ মিনিটেও তাদের খোঁজ পাওয়া যায় না।যাই হোক, বন্ধুর বাড়িতে বন্ধুকে ডাকতে পাঠানো এবং বন্ধুর জন্য ওয়েট করে সকলে একত্রিত হয়ে কোথাও যাওয়ার আনন্দটা অনেক বেশি।আনেক কাহিনীর পর আপনারা চরভদ্রাসনের সেই জায়গায় যাওয়ার জন্য অবশেষে রওনা হলেন।সেই জায়গায় গিয়ে কেমন মজা করেছেন তা নিশ্চয়ই আমরা পরবর্তী পর্বে জানতে পারবো। পরবর্তী পর্বে পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66195.81
ETH 3505.33
USDT 1.00
SBD 3.18