নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রাম সফল করা (শেষ পর্ব)।
আমি শুয়ে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটতে লাগলাম। তারপর ছয়টার একটু পরে যখন বাইরে কিছুটা ভোরের আলোর দেখা পাচ্ছিলাম তখন আমি তাবু থেকে বাইরে এলাম। তাবু থেকে বাইরে এসে একটি জিনিস দেখে অবাক হয়ে গেলাম। খেয়াল করে দেখলাম আমরা রাতে বারবিকিউ খাওয়ার পরে যে হাড়গোড় অবশিষ্ট ছিল তার একটাও সেখানে নেই। আর আমাদের টাবুগুলোর বাইরে এক ধরনের দড়ি দিয়ে স্টিলের কিছু বড় আকারের পেরেকের মতো জিনিসের সাথে বেধে রাখা ছিলো। সেই দড়িগুলোর ভেতরে কয়েকটা কেটে দিয়েছে। আমরা ধারণা করলাম রাতে শেয়াল এই কাজগুলো করেছে । তাবু থেকে বের হয়ে মুগ্ধ বিস্ময়ে সামনের দৃশ্যটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। দীর্ঘদিন পর এইভাবে ভোর বেলায় নদীর পাড়ের সৌন্দর্য দেখার সৌভাগ্য হোলো। আমার তখন মনে হচ্ছিল সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে তুলি। কারণ চমৎকার এই দৃশ্যটি সবাইকে দেখাতে ইচ্ছা করছিলো। অবশ্য ভোরবেলায় বাইরে প্রচন্ড ঠান্ডা ছিলো সাথে ছিলো হালকা বাতাস। এই প্রচন্ড ঠান্ডার ভিতরে ওযু করতে আমার বেশ কষ্ট হয়েছিলো। যাইহোক আমি নামাজ শেষ করার পরে সবাইকে ডেকে তুললাম। বেশিরভাগই ডাকার সাথে সাথেই উঠে গেলো দু একজন বাদে।
তারপর সবাই মিলে তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে গল্প করতে লাগলাম। এর ভিতরে আমাদের সাথে থাকা রাফসানদের এলাকার এক ছোট ভাই ও রাতের বারবিকিউ করার সময় বেঁচে যাওয়া কাঠগুলোতে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলো। ভোরের প্রচণ্ড শীতের ভেতরে আগুনটা বেশ আরামদায়ক লাগছিলো। আমরা সবাই গোল হয়ে আগুনের চারপাশে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখনও প্রচুর লাকড়ি অবশিষ্ট ছিলো। তার ভেতর থেকে বেশ কিছু লাকড়ি পুড়িয়ে আমরা আগুনের ব্যবস্থা করলাম। ঘুম থেকে উঠে সবাই মিলে সময়টা বেশ ভালই কাটালাম। একবার চিন্তা করছিলাম এখন সবকিছু গুছিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেই। পরবর্তীতে খেয়াল করে দেখলাম তাবুটা রাতের কুয়াশায় পুরো ভিজে রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম সূর্য ওঠার জন্য। সূর্য উঠলে তাবুটা কিছুটা শুকিয়ে যাবে। তাবু গোছানো তখন অনেক সহজ হবে।
তবে দেখলাম পূব আকাশে সূর্য উঠলেও তাতে তেজ ছিলো না একেবারেই। তবে নদীর পাড়ের বাতাসে তাবুটা শুকাতে লাগলো। তাছাড়া আরও একটা সমস্যা ছিলো। এত সকালে কোন যানবাহন পাওয়া যাবে না। আমাদের সাথে ছিলো প্রচুর জিনিসপত্র। সেগুলো নেয়ার জন্য নূন্যতম একটি ভ্যানের প্রয়োজন ছিলো। যার ফলে আমরা সেখানে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। বেলা আটটার দিকে রাফসানের এক পরিচিত ভ্যানওয়ালাকে ফোন দিয়ে সেখানে আসতে বললো। সে ভ্যানওয়ালা এলে আমরা তাবুটা গুছিয়ে ফেললাম। তারপর সবকিছু সেই ভ্যানে উঠিয়ে নিলাম। ভ্যানে করে আমি আর রাসেল রওনা দিলাম। বাকি সবাই পেছনে পড়ে রইলো। সেই জিনিসগুলো উঠানো হয়েছিল যেগুলি আমরা সাথে করে এনেছিলাম। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সেদিনের মতো ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রামটা সেখানেই শেষ করলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অবশেষে তাহলে সফলভাবে ক্যাম্পিং শেষ করতে পেরেছেন ভাই। রাতের বেলা তাহলে শিয়ালেরা বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছে আপনাদের তাঁবুর বাহিরে। বারবিকিউ করে যে হাড় গুলো ফেলে রেখেছিলেন,সেগুলোর গন্ধেই শিয়ালেরা গিয়েছিল। সকালবেলা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে এমন দৃশ্য দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু আমরা তো ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেই সকালটা। তাইতো এতো চমৎকার দৃশ্য মিস করে ফেলি। যাইহোক সবমিলিয়ে আপনারা এককথায় দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন ভাই। পুরো ব্লগটি পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লেগেছে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি ব্লগ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার মন্তুব্যের জন্য ।
নানাবিধ সমস্যা কাটিয়ে সফলভাবে তাহলে আপনারা ক্যাম্পিং শেষ করেছেন ভাইয়া। আমাদের রংপুরে বর্তমান ঠান্ডার পরিমাণ অনেক কম যদিও বা শীতের সকালে ওযু করতে অনেক সমস্যা হয় কিন্তু নামাজ পড়ার পর সমস্যাটা আনন্দে পরিণত হয়। আসলে সকালবেলা উঠে নদীর পাড়ে যাওয়া স্নিগ্ধ বাতাস উদিত সূর্যকে দেখা এটা সবার কপালে বা ভাগ্যে থাকে না। দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভাইয়া আপনি ক্যাম্পিংয়ের শেষ মুহূর্তের সকালটা অনেক আনন্দের সাথে কাটিয়েছেন। আর শীতের সকালের আগুন পোহানো এটি একটি অন্য রকম আমেজ। তাও যদি বন্ধুদের সাথে হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। যাইহোক ক্যাম্পিংয়ের পর্ব গুলো পড়ে সত্যি অনেক ভালো লেগেছে আমার ভাইয়া।