ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমাদের শহরে মানুষের বিনোদনের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। হাতে গোনা দু চারটি পার্ক রয়েছে। তার ভিতরে বেশিরভাগেরই মান খারাপ। আবার সে সমস্ত পার্কে বাচ্চাদের নিয়ে গেলে টাকা-পয়সাও খরচ হয় অনেক। প্রত্যেকটা পার্কের এন্ট্রি ফি প্লাস রাইডের দাম অনেক বেশি। যার ফলে শহরের মানুষ সবসময় বিকল্প কোন কিছুর চিন্তা করে। সারা বছর তেমন কিছু না হলেও শীতের মৌসুমে আমাদের শহরে বেশ কিছু মেলার আয়োজন হয়। তবে তার ভেতরে সবচাইতে বড় মেলা হচ্ছে পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের নামানুসারে আয়োজিত জসিম মেলা। এই মেলাটি দীর্ঘদিন থেকে ফরিদপুরের মানুষের বিনোদনের একটা ভালো মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। মেলাটা বেশিরভাগ সময় এক মাস ব্যাপী হয়।

IMG_20240220_154544_1.jpg

এই মেলা শুরুর আগে থেকেই শহরের মানুষের ভেতর মেলা নিয়ে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করে। প্রতিবছর আমি একাধিকবার এই মেলায় যেয়ে থাকি। কখনো বন্ধু-বান্ধবদের সাথে, কখনো এলাকার ভাই ব্রাদারদের সাথে, আবার কখনো পরিবারের সাথে। তবে এবার বিভিন্ন সমস্যার কারণে মেলায় গিয়েছিলাম শুধু একবার। আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে মেলা ভ্রমণের ছবি এবং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। এবার একদিনই মেলায় গিয়েছিলাম সেটা আবার পরিবার নিয়ে। পরিবার নিয়ে আমি যখনই মেলায় যাই তখন চেষ্টা করি একটু আগে মেলায় যেতে। কারণ বিকালের সময় থেকে শুরু করে সন্ধ্যার দিকে মেলায় প্রচুর ভিড় হয়। সেই ভিড়ের ভেতরে মেলাটা ভালোভাবে ঘুরেফিরে দেখা যায় না। স্টল গুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকে সেই কারণে জিনিসপত্রগুলো নেড়েচেড়ে দেখতে সমস্যা হয়। তাছাড়া আরো কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা তৈরি হয়। সেই কারণে আমি পরিবার নিয়ে মেলায় গেলে সবসময় চেষ্টা করি তিনটা সাড়ে তিনটার দিকে মেলায় যেতে।


IMG_20240220_154620.jpg

এই সময়ে মেলার দোকানগুলো সব চালু হয়ে যায় আবার লোকজনও খুব একটা বেশি থাকে না। যার ফলে পুরো মেলাটা খুব ভালোভাবে ঘুরেফিরে দেখা যায়। যেহেতু আগে থেকেই মেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম তাই পরিবারের লোকজন তৈরি হয়েই ছিলো। বেলা তিনটার কিছুক্ষণ পরে আমরা বাসা থেকে রওনা দিলাম। আমার বাড়ি থেকে মেলার দূরত্ব তিন কিলোমিটার মতো হবে। যার ফলে ইঞ্জিন চালিত রিক্সায় সেখানে যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে নি। মেলার গেটের সামনে রিকশা থেকে নেমে প্রথমে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। তারপর আমরা ঠিক করলাম মেলার ভিতর ঢুকে একদিক থেকে সবগুলো স্টল দেখতে থাকবো। সে হিসেবে মেলায় প্রবেশ করে প্রথমে আমরা ডান দিক থেকে স্টলগুলো দেখতে লাগলাম। এই মেলায় একসময় হাতের তৈরি অনেক জিনিসপত্র পাওয়া যেতো যেগুলো গ্রামীন ঐতিহ্যের অংশ। কিন্তু বর্তমান মেলাগুলোতে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ছাড়া আর তেমন কিছুই পাওয়া যায় না। প্লাস্টিকের খেলনা এবং চাইনিজ প্লাস্টিকের জিনিসপত্রে পুরো মেলাটা ভরা থাকে। এখন অবশ্য পুরো দেশের সবগুলো মেলার চরিত্র প্রায় একই রকম হয়ে গিয়েছে।


IMG_20240220_154812.jpg

একটা সময় মেলায় সার্কাস, পুতুল নাচ এরকম আরো নানা আয়োজন থাকতো। তবে এবার মেলায় গিয়ে দেখলাম সার্কাস বাদে অন্য আর তেমন কিছু নেই। তবে বাচ্চাদের জন্য কিছু রাইড এর ব্যবস্থা ছিলো। অবশ্য সেগুলোর অবস্থা দেখে আমার কাছে খুব একটা ভালো মনে হয়নি। কিছু কিছু রাইড দেখে মনে হয়েছিলো এগুলোতে চড়া কিছুটা অনিরাপদ। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর আমাদের এই মেলাটাতে সবচাইতে বড় যে সমস্যা থাকে সেটা হচ্ছে খাবারের জন্য কোন ভালো দোকান পাওয়া যায় না। মেলায় যে সমস্ত লোকজন খাবারের স্টল দেয় তারা বেশিরভাগই বাইরে থেকে আসে। শহরের নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় স্টল নেয় না। যার ফলে মেলায় অবস্থিত খাবারের স্টল গুলোর খাবারের মান থাকে খুব খারাপ। সেটাও আবার উচ্চমূল্যে কিনে খেতে হয়। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 months ago 

আসলে যে কোন বিষয়ের মেলা হোক না কেন সেই মেলাগুলোতে মূলত একদম বিকেলের দিকে প্রচুর পরিমাণে জ্যাম থাকে যার কারণে আপনি তিনটার দিকে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত টা ঠিকই নিয়েছিলেন। আর মেলার মধ্যে বর্তমান সময়ে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র দিয়েই ভর্তি। আর মেলার মধ্যে যেকোনো জিনিসের দাম একদম আকাশ ছুই ছুই। পরিবারকে সাথে নিয়ে যেয়ে ভালোই করেছেন ভাইয়া। কারণ পরিবারকে সাথে নিয়ে এরকম মেলা উৎসবে ঘুরতে আসলেই অনেক ভালো লাগে।

 3 months ago 

আসলেই ভাই পরিবার নিয়ে মেলায় গেলে দুপুরের পর অর্থাৎ ৩ টার দিকে গেলে সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ সন্ধ্যার পর যেকোনো মেলায় প্রচুর ভিড় হয়ে থাকে। তখন সবদিক দিয়েই সমস্যা হয়ে যায়। আমিও সবসময় চেষ্টা করি এমন সময়ে পরিবার নিয়ে মেলায় যেতে। যাইহোক মেলায় ঘুরাঘুরি করতে ভালো লাগে, তবে আগের মতো ততোটা ভালো লাগে না। মেলায় এখন হস্তশিল্প দেখা যায় না বললেই চলে। সাধারণত আমরা মার্কেটে যেসব জিনিসপত্র সারা বছর দেখি,সেগুলোই এখন মেলায় বিক্রি করা হয়। তেমন স্পেশাল কিছু খুবই কম পাওয়া যায়। যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এবং পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

প্রতিবার মেলায় সবার সাথে অনেকবার গেলেও এবার মাত্র একবার গিয়েছিলেন।মেলায় বিকেলের দিকে গেলেই ভালো।কারণ সন্ধ্যার দিকে আসলেই প্রচুর ভিড় যেটা সমস্যার কারণ।এবার মেলার গেট টি দারুন করেছে।আমার কয়েক বছর আগে যাওয়া হয়েছিল এই মেলায়।খুব বিশেষ আকর্ষণ নেই বলে মেলায় যাওয়া হয়না আমার।ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

এখনকার মেলা গুলো আসলে এমন হয়ে গেছে যে, পুরোটাই ব্যবসা ক্ষেত্র। আগের যে মেলাগুলো হতো সেখানে মাটির তৈরি বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী জিনিস পাওয়া যেত, তবে এখন সব কিছু প্লাস্টিকে রূপান্তরিত হয়ে গেছে, এটা সত্যি কথা দাদা। আর মেলার যে রাইড গুলোর কথা বলছেন, ওইগুলোতে উঠা এমনিতেই অনেক বেশি রিস্কি হয়ে থাকে। তাছাড়া প্রায় সব মেলার খাবার গুলোই অস্বাস্থ্যকর ভাবে তৈরি হয় যা আমাদের জন্য ভালো না। যাইহোক, আপনি যেহেতু পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে গেছিলেন তার মানে ভালো সময়ই কাটিয়েছিলেন, এটাই আশা করছি দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66433.10
ETH 3607.66
USDT 1.00
SBD 2.69